লাইফস্টাইল পোস্ট || ঈদের শপিং করার অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি

in hive-129948 •  7 months ago 

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।



প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি লাইফস্টাইল পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই আমি এবং আমার ওয়াইফ শপিং মলে গিয়ে সবার জন্য ঈদের কেনাকাটা করে ফেলেছিলাম। সেই গল্প আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। এই পোস্টটি আগেই শেয়ার করার ইচ্ছে ছিলো,তবে করা হয়ে উঠেনি। তাই ভাবলাম আজকে শেয়ার করি। আসলে ঈদের সময় শুধুমাত্র নিজেদের জন্য শপিং করলেই হয় না, বরং আত্মীয়-স্বজন এবং কাছের মানুষদের জন্যও কেনাকাটা করতে হয়। এবার মোটামুটি ১৭/১৮ জনের জন্য শপিং করতে হয়েছিল। কিন্তু কেনাকাটা করার পর সবগুলোর ছবি তোলা হয়নি।


GridArt_20240411_103648263.jpg

Notes_240411_102944_0ec.jpg

Notes_240411_102949_600.jpg


কারণ এতো কেনাকাটার ছবি তোলাটাও অনেক ঝামেলা। মূলত আমার এবং আমার ওয়াইফ এর পরিবার, আত্নীয় স্বজন এবং কাছের মানুষদের জন্যই শপিং করতে হয়েছিল। তবে সব কেনাকাটা একদিনে শেষ করতে চেয়েছিলাম,কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। তাই পরবর্তীতে আবারও একদিন ইস্টার্ন মল্লিকা শপিংমলে যেতে হয়েছিল। সাধারণত রমজান মাসে শপিং মলে প্রচুর ভিড় হয়ে থাকে। তাছাড়া রোজা রেখে সারাদিন শপিং মলে ঘুরাঘুরি করার পর, রাতের বেলা খতম তারাবিহ পড়তে ভীষণ কষ্ট হয়ে যায়। সেটা ভেবেই আমি রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই শপিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। বিগত তিন বছর যাবৎ রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই শপিং এর ঝামেলা শেষ করে ফেলি।


Notes_240411_102951_6b5.jpg

Notes_240411_102954_e92.jpg

Notes_240411_102956_9d3.jpg

Notes_240411_102959_716.jpg


যাইহোক আমরা ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে ঈদের শপিং করতে প্রথমে গিয়েছিলাম এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং মলে। ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং মল মেয়েদের কেনাকাটার জন্য একেবারে পারফেক্ট। এই শপিংমলে সব সময় যাওয়া হয় আমাদের। তাই পরিচিত বেশ কয়েকটি দোকানও রয়েছে সেখানে। সেদিন সকাল ১০ টার দিকে শপিংমলে পৌঁছে গিয়েছিলাম। তারপর অনেকগুলো দোকান ঘুরাঘুরি করে আমার ওয়াইফ এর জন্য ৫ টা ড্রেস কিনেছিলাম। এরমধ্যে ২ টি দামী ড্রেস ছিলো এবং বাসায় পড়ার জন্য মোটামুটি দামের মধ্যে ৩ টি ড্রেস নিয়েছিল। আসলে একসাথে এতো শপিং করার কারণে, কোনটা কতো দাম নিয়েছিল সেটা সঠিকভাবে মনেও নেই। তাই প্রাইস সম্পর্কে হয়তোবা সেভাবে বলতে পারবো না। তবে কিছু কিছু জিনিসপত্রের দাম মনে আছে।


Notes_240411_102947_0f2.jpg

Notes_240411_102946_c01.jpg

Notes_240411_103001_8dc.jpg

Notes_240411_103003_9d8.jpg


যাইহোক এরপর আমার মা এবং শ্বাশুড়ির জন্য থ্রি পিস ও বোরকা কিনলাম। তারপর ওয়াইফ এর কয়েকজন কাজিন (ছোট ও বড়) এর জন্য ড্রেস কিনলাম। এরপর পরিবার এবং আরও কয়েকজন আত্নীয় স্বজনের জন্য কেনাকাটা করতে করতে দুপুর হয়ে গিয়েছিল। ইস্টার্ন মল্লিকা শপিংমল থেকে মেয়েদের কেনাকাটা শেষ করার পর, আমরা বের হয়ে নিউ মার্কেটে চলে গিয়েছিলাম ছেলেদের পাঞ্জাবি, শার্ট এবং প্যান্ট কেনার জন্য। যদিও আমি পাঞ্জাবি বেশিরভাগ সময় পীর ইয়ামেনী মার্কেট থেকে কিনে থাকি,তবে সেদিন ৪/৫ টা পাঞ্জাবি নিউমার্কেট থেকেই কিনেছিলাম। যাইহোক নিউমার্কেটে যাওয়ার পর প্রথমে একটি ফাস্ট ফুডের দোকানে ঢুকে লাঞ্চ করে নিলাম।


Notes_240411_103007_01c.jpg

Notes_240411_103009_f7b.jpg

Notes_240411_103005_508.jpg


খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পর, আমার ওয়াইফের জন্য ২০০০ টাকা দিয়ে একটি ভ্যানিটি ব্যাগ কিনলাম বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে। এরপর কয়েকজনের জন্য শার্ট, প্যান্ট এবং পাঞ্জাবি কিনেছিলাম। এরমধ্যে কয়েকজন বাচ্চা ছেলেদের জন্যও শার্ট এবং প্যান্ট কিনতে হয়েছিল। বাচ্চাদের কেনাকাটা করতে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ঝামেলা মনে হয়। কারণ তাদের সাইজ নিয়ে সমস্যা হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। এরপর আমার জন্য কয়েকটি টি-শার্ট, শার্ট,একটি পাঞ্জাবি এবং দুটি প্যান্ট কিনলাম বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে। আমি লং স্লিভের টি-শার্ট পড়ে গিয়েছিলাম সেদিন। কিন্তু পরবর্তীতে অনেক গরম লেগেছিল বলে, সেখান থেকে পাতলা টি-শার্ট কিনে পরেছিলাম। যাইহোক ইতিমধ্যেই সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। তারপর গেলাম জুতার দোকানে। আমার জন্য এক জোড়া লোফার জুতা কিনলাম ২০০০ টাকা দিয়ে এবং আরও দুই জোড়া জুতা কিনেছিলাম অন্যদের জন্য।


Notes_240411_103015_528.jpg

Notes_240411_103013_48b.jpg

Notes_240411_103017_71d.jpg

Notes_240411_103011_c9b.jpg


সেদিন রাত প্রায় ৯ টা বেজে গিয়েছিল বলে,আমরা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। কারণ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শপিং করে অনেকটাই ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তবুও ওয়েদার কিছুটা ঠান্ডা ছিলো বলে,ততোটা খারাপ লাগেনি। রমজান মাসে গেলে তো আরও বেশি কষ্ট হয়ে যেতো। তাছাড়া সেদিন মিনিমাম ৮/১০ বার পানি পান করতে হয়েছিল। পরবর্তীতে আরও একদিন গিয়ে বাকি কেনাকাটা শেষ করেছিলাম এবং বাচ্চাদের জন্য কেনা ড্রেস গুলোর কয়েকটির সাইজে সমস্যা হয়েছিল বলে,পরবর্তীতে আবারও পরিবর্তন করতে হয়েছিল। যাইহোক নিজেদের জন্য এবং সবার জন্য কেনাকাটা করতে পেরে ভীষণ ভালো লেগেছিল। আসলে কাউকে কিছু দিতে পারলে নিজের কাছেই খুব ভালো লাগে। সবাই বেশ খুশি হয়েছিল গিফট পেয়ে।


Notes_240411_103019_182.jpg

Notes_240411_103021_449.jpg

Notes_240411_103025_27f.jpg

Notes_240411_103023_c06.jpg



2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিলাইফস্টাইল
ফটোগ্রাফার@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy Note 20 Ultra 5g
তারিখ১১.৪.২০২৪
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG-20240212-WA0036.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক। ঈদ উপলক্ষে বেশ অনেক কিছু কেনাকাটা করেছেন। আর সেই সুন্দর অনুভূতিটা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। বেশ ভালো লাগলো আপনার কেনাকাটার মুহূর্তটা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে। আশা করবো ঈদের দিন সুন্দর উদযাপন করবেন।

ঈদ মোবারক ভাই। হ্যাঁ ভাই ঈদ উপলক্ষে অনেক কেনাকাটা করেছি। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

ঈদ উপলক্ষে আপনি অনেক কিছুই কেনাকাটা করেছেন এবং তা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ এখানে আপনি যা কিছু কিনেছেন তা আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন৷ আপনার কাছ থেকে সবকিছু দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷

আপনাদের কাছে ভালো লাগলেই পোস্ট করার সার্থকতা ভাই। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

ঈদ উপলক্ষে ১৭/১৮ জনের জন্য শপিং করা মানে সে তো অনেক টাকার ব্যাপার ভাই! তাছাড়া রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই আপনারা যে শপিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, এটা নিঃসন্দেহে ভালো। কারণ ওই সময় ভিড় কম থাকে এবং দামও কিছুটা কমে পাওয়া যায়। যাইহোক, আপনার ওয়াইফের জন্য কেনা ভ্যানিটি ব্যাগটা বেশ সুন্দর হয়েছে দেখতে। সবশেষে বলতে হয়, আপনি সবাইকে যে পরিমাণ গিফট দিয়েছেন, তাতে সবার খুশি হওয়াটাই স্বাভাবিক ভাই।

হ্যাঁ ভাই ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার জন্য আলাদা বাজেট রাখতে হয় সবসময়। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

তাহলে তো ভাই ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার জন্য অনেক বড় বাজেট রাখতে হয় আপনাকে যা বুঝতে পারছি।

হ্যাঁ ভাই শুধু আমার না,প্রায় সবারই আলাদা বাজেট রাখতে হয় দুই ঈদের জন্য।

দুই ঈদ মিলে তো তাহলে লাখ টাকার উপরে খরচ হয়ে যায় ভাই!

হ্যাঁ ভাই বর্তমান বাজারে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বাজেট রাখতে হয়।