লাইফস্টাইল পোস্ট || জীবনে প্রথম বারের মতো রক্তদানের অভিজ্ঞতা এবং অনূভুতি(শেষ পর্ব)

in hive-129948 •  last year 

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।


প্রথম পর্বের লিংক


প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। গত পর্বে আপনারা পড়েছিলেন এক ঘন্টা লাগবে ক্রস ম্যাচিং টেস্ট করতে, এই ফাঁকে আমরা দুপুরের লাঞ্চ করতে চলে গিয়েছিলাম। যাইহোক আমরা তিন বন্ধু এবং বন্ধুর ভাগিনা সহ মোট চারজন হসপিটালের অল্প একটু সামনের একটি রেস্টুরেন্টে চলে গেলাম। সেই রেস্টুরেন্টের খাবারের মান খুবই ভালো। আমরা প্রায়ই সুগন্ধা প্লাস রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করি। যাইহোক আমরা সুগন্ধা প্লাস রেস্টুরেন্টের দোতলায় চলে গেলাম। তারপর মাটন লেগ পিস অর্ডার করলাম আমরা। কিন্তু ওয়েটার বললো একটি মাত্র মাটন লেগ পিস রয়েছে। তারপর তিন প্লেট মাটন কারি,একটা মাটন লেগ পিস, মাছের ভর্তা, সবজি এবং ডাল নিলাম।


Notes_231019_075930_ede.jpg

Notes_231019_075932_e1c.jpg


আমাকে সবাই জোর করে মাটন লেগ পিস দিলো এবং ওরা তিনজন মাটন কারি নিয়েছে। প্রতিটি খাবার বেশ সুস্বাদু লেগেছিল খেতে। যাইহোক খাওয়া দাওয়া শেষ করে ফিরনি নিলাম। সুগন্ধা প্লাস রেস্টুরেন্টের ফিরনি খুবই ইয়াম্মি লাগে খেতে। আমি এই রেস্টুরেন্টে গেলে সবসময়ই ফিরনি খেয়ে থাকি। যাইহোক ফিরনি খেয়ে হসপিটালে যারা আছে, তাদের জন্য ৪ প্যাকেট তেহারি পার্সেল নিলাম। সবমিলিয়ে বিল আসলো ২৭০০ টাকা। বিল মিটিয়ে হসপিটালের দিকে গেলাম। এরপর খবর নিলাম ক্রস ম্যাচিং হয়েছে নাকি। তারপর বললো যে সবকিছু ঠিক আছে এবং আমি রক্তদান করতে পারবো। এটা শুনে সবাই বেশ খুশি হয়েছিল। কারণ আমি ছাড়া অন্য কোনো ডোনার ম্যানেজ করা ছিলো না। যদি কোনো কারণে আমার সাথে ক্রস ম্যাচিং না করতো, তাহলে বিরাট ঝামেলায় পরতে হতো।


Notes_231019_075916_302.jpg

Notes_231019_075917_ff8.jpg


কারণ বন্ধুর ওয়াইফ এর ট্রিটমেন্ট চলছিল,আর তখন অবশ্যই ব্লাড লাগতো। কোনো ঝামেলা হলে যেভাবেই হোক ব্লাড ম্যানেজ করা লাগতো। যাইহোক আমাকে বেডে শুয়ে পরতে বললো। তারপর রক্ত নেওয়া শুরু করলো আমার শরীর থেকে। যখন ব্লাড নিচ্ছিল তখন ডক্টর আমাকে অনেক কিছুই জিজ্ঞেস করলো। এই যেমন কোন পেশায় জড়িত আছি,এর আগে কয়বার রক্তদান করেছি এইসব। যখন বললাম প্রথম বারের মতো রক্তদান করছি,তখন আমাকে বলল যে তাহলে চার মাসের আগে আর রক্তদান করবেন না। আর বললো যে রক্ত দেওয়ার পর শরীরের তাপমাত্রা একটু কমে যাবে, তাই ঠান্ডা লাগলে যেন ওনাদেরকে বলি। তাহলে এয়ার কন্ডিশন এডজাস্ট করে দিবে। যাইহোক মাত্র ৬/৭ মিনিটের মধ্যেই ব্যাগ ভরে গেল।


Notes_231019_075919_623.jpg

Notes_231019_075921_d62.jpg


নার্স আমার ছবি তুলে দিলো আমার ফোন দিয়ে। এরপর আমার বন্ধুরা সেই রুমে প্রবেশ করলো এবং আমরা অল্প কিছুক্ষণ গল্প করলাম। তারপর আমার বন্ধু জিজ্ঞেস করলো নিচে গিয়ে বোতলে করে ডাবের পানি নিয়ে আসবে কিনা। তখন আমি বললাম দরকার নেই, আমরা নিচে গিয়ে ডাব খেয়ে নিবো। এরপর ৫/৬ মিনিট শুয়ে থেকে আমরা সবাই নিচে গিয়ে ডাব খেলাম। সবাই একটি করে খেলেও, আমি ২টা ডাব খেলাম। তারপর সেই বন্ধু এবং তার পরিবারকে রেখে ২.৩০ টার দিকে আমি এবং আমার আরেক বন্ধু বাসায় চলে আসলাম। পরে ফোন দিয়ে জানতে পারলাম যে ব্লাড নাকি বন্ধুর ওয়াইফ এর শরীরে একটু পরেই পুশ করে দিয়েছে। তারপর সবকিছুই ঠিকঠাক মতো হয়েছে। পরের দিন বাসায় নিয়ে এসেছে বন্ধুর ওয়াইফকে।


Notes_231019_075923_60c.jpg

Notes_231019_075925_afa.jpg


ওয়াশ করার জন্য ১২ হাজার টাকা কন্ট্রাক্ট হয়েছিল এবং ঔষধ ও যাবতীয় খরচ সহ আমার বন্ধুর ১৭/১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো আছে বন্ধুর ওয়াইফ। সবমিলিয়ে প্রথম বারের মতো রক্ত দান করে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। এটা আসলেই ভালো লাগার মতো একটি ব্যাপার। কারণ মানুষ মানুষের জন্য। আমাদের সবার উচিত রক্তদান করে একে অপরকে সাহায্য করা। এতে করে অনেক মানুষের মূল্যবান জীবন বেঁচে যায়। রক্তদান করলে শরীরের জন্যও খুব ভালো। বিভিন্ন ধরনের অসুখ বিসুখের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। আর কয়েকদিন পর দান করা রক্ত শরীরের মধ্যে এমনিতেই পূরণ হয়ে যায়। সুতরাং প্রয়োজনে সবাই রক্তদান করবেন সেই কামনা করছি।


Notes_231019_075927_b5c.jpg

Notes_231019_075929_5d3.jpg


2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিলাইফস্টাইল
ফটোগ্রাফার@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy Note 20 Ultra 5g
তারিখ১৯.১০.২০২৩
লোকেশনw3w

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG_20220605_234413_388.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমরা জানি কোথায় আছে মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য আর জীবনের জন্য যদি আমরা হাত আগিয়ে দিই তাহলে দোষ কি। আমরা সকলেই জানি রক্তদান কর্মসূচির মত একটি মহত কাজ। আর এই কাজে যারা অংশগ্রহণ করে তারা অবশ্যই মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট থেকে অনেক সম্মান এবং ভালোবাসা পাবেন। আপনার এই সুন্দর কাজ দেখে আমি মুগ্ধ হলাম ভাইয়া।

হ্যাঁ ভাই রক্তদান অবশ্যই মহৎ একটি কাজ। আমাদের সবার উচিত কারো প্রয়োজনে রক্তদান করা। যাইহোক পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

ক্রস ম্যাচিং না হলে সত্যিই অনেক ঝামেলা হয়ে যেত। হঠাৎ করে ডোনার জোগাড় করার ভীষণ মুশকিল। যাই হোক আপনার বন্ধুর ওয়াইফকে আপনি রক্ত দিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। যদিও কখনো কাউকে রক্ত দেওয়া হয়নি। তবে এই ধরনের কাজগুলোর সাথে যুক্ত থাকতে পারলে অনেক ভালো লাগতো।

হ্যাঁ আপু ঠিক বলেছেন, ক্রস ম্যাচিং না হলে আসলেই অনেক ঝামেলায় পড়তে হতো। জীবনে প্রথম বারের মতো কাউকে রক্ত দিলাম। সবমিলিয়ে আসলেই খুব ভালো লেগেছিল। যাইহোক পোস্ট পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।