গল্প-মায়ার বাঁধন||

in hive-129948 •  6 hours ago 

আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার


আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। মাঝে মাঝে গল্প লিখতে অনেক ভালো লাগে। তাই আজকে আমি একটি গল্প লিখে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো। আশা করছি আমার লেখা এই গল্প সবার ভালো লাগবে।


মায়ার বাঁধন:

people-2565169_1280.jpg

Source


তাকে ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছা আমার কোনোকালেই ছিল না। তবে মাঝে মাঝে ইচ্ছের বাহিরে গিয়েও পরিস্থিতি অনেক কিছু করতে বাধ্য করে। নবনীতা আনমনে জানালার বাহিরে তাকিয়ে আছে আর কথাগুলো ভাবছে। অজানা গন্তব্যে বেরিয়ে পড়েছে সে। সাজানো গোছানো সংসার আর মায়ার বাঁধন ছিড়ে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর বেরিয়ে এসেছে মেয়েটি। ভালোবেসে অয়নকে বিয়ে করেছিল নবনীতা। কিন্তু তার ভালোবাসায়ও যে কমতি ছিল বুঝতে পারেনি। সময়ের সাথে সাথে ভালোবাসা রং বদলাতে শুরু করে। ভালোবাসার মানে বদলাতে শুরু করে।


দীর্ঘদিনের পরিচয়। এরপর ঘর বাঁধা। প্রথমদিকে সংসার জীবন ভালোই চলছিল তাদের। সময়ের সাথে সাথে ভালোবাসার গভীরতা বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু কখন যে সেই ভালোবাসা অনুভূতিহীন হয়ে গেল বুঝতেই পারেনি নবনীতা। দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল পাঁচটি বছর। বিবাহিত জীবনের পাঁচটি বছরে তাদের হাজারো স্মৃতি রয়েছে। হাসি, আনন্দ, অভিমান কিংবা ভালোবাসা সব কিছুর স্মৃতি নিয়ে আজ নবনীতা নতুন উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছে। বড্ড ভালোবেসেছিল তাকে। বড্ড মায়ায় পড়েছিল সেই সংসারের।


নবনীতা মা হতে পারেনি। ডক্টর বলেছে নবনীতা কোনদিন মা হতে পারবেনা। শারীরিক অসুস্থতা তাকে কখন যে মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলেছে বুঝতেই পারেনি। তার পাশে দাঁড়ানোর মত কেউ ছিল না তার মাথায় হাত রেখে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। দীর্ঘ পাঁচ বছরের সাজানো ভালোবাসার ঘর যেন তাকে বারবার ধিক্কার দিচ্ছিলো। তার ভেতরটা আহত করছিল। বারবার নবনীতা দুমড়ে মুছে যাচ্ছিল। প্রিয় মানুষের অবহেলা আর কথার আঘাত তাকে বারবার ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছিল।


অবশেষে তার মায়ার বাঁধনের অবসান হল। বেরিয়ে এলো এক কাপড়ে। তার মায়ায় জড়ানো সংসার আর ভালোবাসার ঘর থেকে। অজানা উদ্দেশ্যে বেরিয়েছে মেয়েটা। হয়তো নবনীতা কে ছাড়া সবাই ভালো থাকবে। হয়তো অয়ন নতুন করে জীবনটা সাজাবে। হয়তো আবারও তার ঘর আলোয় আলোয় ভরে উঠবে। আর সময়ের সাথে সাথে নবনীতা অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। হয়তো কোন একদিন সেই অন্ধকার তার জীবনটাকে গ্রাস করে নিবে। হয়তো আঁধারে বিলীন হয়ে যাবে তার অস্তিত্ব।


মাঝে মাঝে গল্প লিখতে অনেক ভালো লাগে। তাই একটি ছোট্ট অনুগল্প লেখার চেষ্টা করেছি। আশা করছি সবার ভালো লেগেছে।



আমার পরিচয়

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Screenshot_2025-02-05-18-36-08-71_0b2fce7a16bf2b728d6ffa28c8d60efb.jpg

Screenshot_2025-02-05-18-38-22-78.jpg

Screenshot_2025-02-05-18-39-09-67.jpg

Screenshot_2025-02-05-18-40-00-27_23bb9e0ea952186c441897efdc323bdd.jpg

আপু আপনার গল্প পড়তে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। নবনীতার মতো এমন হাজারো মেয়ে রয়েছে যারা এভাবেই তাদের মায়ার বাঁধন ত্যাগ করে। সন্তান না মেয়েদের চারপাশের মানুষজনের কাছ থেকে যেমন কথার আঘাত পেতে হয় তেমনি আপন মানুষের কাছ থেকেও। যেই সংসারের জন্য সে তার সর্বস্ব ভালোবাসা উজাড় করে দিয়েছিল, সেই সংসারই তাকে অবহেলার অন্ধকারে ঠেলে দেয়। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

আপু, আপনার গল্পটি পড়ে খুবই মনোযোগী হলাম। নবনীতার মতো অনেক মেয়ে হয়তো নিজেদের সবকিছু উজাড় করে দেয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমাজ কিংবা কাছের মানুষের অবহেলা এবং অবজ্ঞার শিকার হয়। সংসারের জন্য যে ত্যাগ এবং ভালোবাসা দেওয়া হয়, সেই সংসারটাই মাঝে মাঝে তাদের একাকীত্বে ঠেলে দেয়। আপনার এই গল্পটি অনেক কিছু চিন্তা করতে বাধ্য করেছে, ধন্যবাদ এত সুন্দরভাবে এটি শেয়ার করার জন্য।

আসলে একটি মেয়ে যখন মা হতে পারে না, তখন তার কাছে ভীষণ কষ্ট লাগে। আর তখন যদি প্রিয় মানুষগুলো সাপোর্ট না দিয়ে কথা শোনায়, তাহলে তার জীবনটা একেবারে দুর্বিষহ হয়ে উঠে। নবনীতার জন্য বেশ খারাপ লাগলো। অয়নের উচিত ছিলো নবনীতাকে পাশে থেকে সাপোর্ট দেওয়া। যাইহোক এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।