কবিতা আবৃত্তি- আরএমই দাদার - "কারণ আমি ভালোবাসি তোমাকে"

in hive-129948 •  3 years ago 

১৩ জুলাই ২০২২, বুধবার
আসসালামু অলাইকু/নমস্কার

আমার বাংলা ব্লগের প্রিয় শুভাকাঙ্ক্ষীগণ আজকে আমার কবিতা আবৃত্তির শুরুতে সবার প্রতি রইল আমার ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা। চারদিকে প্রচন্ড গরমে জনজীবন চরমভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিশুদের অবস্থা খুবই নাজুক । প্রচন্ড গরমে জ্বরসহ নানাবিধ রোগ দেখা দিয়েছে। । হাসপাতালগুলোকে প্রচন্ড ব্যস্ততা । এই গরমে প্রচুর ঠান্ডা কোমল পানি পান করতে হবে আর বেশি বেশি বিশ্রাম প্রয়োজন । আজ আপনাদের নিকট একটি আরএমই দাদার লখা কবিতা আবৃত্তি শেয়ার করব।

1Capture.JPG

আরএমই দাদার কবিতা গুলো আমার সব সময় অনেক ভালো লাগে। বারবার যে কথাটি আমি বলি দাদার কবিতাগুলো আমার অনন্ত প্রেরণার উৎস। যখন কবিতা লিখতে পারি না ছন্দ হারিয়ে ফেলি তখন দাদার কবিতাগুলো পড়ি। পুনরায় নিজের মধ্যে কবিতা লেখার ভাষা খুঁজে পাই। আবৃত্তি করতে আমার সব সময় ভালো লাগে এবং নিজেকে একজন ভালো আবৃত্তিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই । তাই আপনাদের দোয়া ও অনুপ্রেরণার মাধ্যমে আমি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আর বেশি কথা না বাড়িয়ে আবৃত্তির দিকে ধাবিত হলাম।

কবিতাঃ কারণ আমি ভালোবাসি তোমাকে

রচয়িতাঃ আরএমই দাদা

মনে কি পড়ে প্রিয় ?
কতদিন আগে আমি একটি গান গাইতে চেয়েছিলাম,
আর, তুমি তাতে সুর দিতে চেয়েছিলে ?
কিন্তু, গানটাই শেষমেশ আর গাওয়া হয়ে উঠলো না,
সুরটা তাই অপাঙ্ক্তেয়ই রয়ে গেলো ।

বহুদিন আগে আমি একটি কবিতা লিখতে চেয়েছিলাম,
আর তুমি সেটা আবৃত্তি করতে চেয়েছিলে ।
কবিতাটাই আমি এখনো লিখে উঠতে পারলাম না,
তাই, তোমার আবৃত্তিটাও আর শোনা হলো না কখনো ।

কতদিন ধরে চেয়েছিলাম তুমি আর আমি দুজনে,
এই সুবর্ণরেখা নদীটির তীরে বসে সূর্যাস্ত দেখি ।
গোধূলি বেলার রাঙা আকাশ, পাখিদের কুলায় ফেরা দেখি,
আর সুবর্ণরেখার ঢেউয়ে অজস্র অস্তমিত সূর্য্যের
লাল ভেঙে যাওয়া টুকরোগুলো খুঁজি ।

সময় বড্ড দামি, জানো তো !
দু'জনের কেউই আমরা সেটি স্যাক্রিফাইস করতে তাই
এতটুকু রাজি হলাম না, নিদারুণ সময়ের অভাবে ।

সেদিনের কথা কি তোমার মনে পড়ে ?
কালবৈশাখীর ঝোড়ো হাওয়ায় ছুটে গিয়েছিলাম আমি
ওই তেপান্তরের মাঠের মধ্যিখানে ।
বাউল হাওয়ায় নিজেকে মেলে ধরতে চেয়েছিলাম ।
তোমায় ডেকেছিলাম, খুব করে ।
তুমি বললে, ঝড়ে আমার ভয় করে ।

বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল এনে তোমার হাতে দিয়ে,
বলেছিলাম তোমায় - "চলো না ভিজি দু'জনে ?"
বরষার নবধারায় সিক্ত করি তনু-মন ।
তোমার হাতে হাত রেখে ভিজতে চেয়েছিলাম ।
তুমি বললে তোমার ঠান্ডার ধাত, ভেজা আর হলো না ।

শান্তিনিকেতনে, জানো তো, পৌষ মেলায়
ঘুরে বেড়ানোর খুব ইচ্ছে ছিল তোমার সাথে মিলে ।
আদিবাসীদের গাঁয়ে, রাঙা মাটির রাস্তায় ধুলো উড়িয়ে
দু'জনে নিরুদ্দেশ হতে চেয়েছিলাম, ওই দিকশূন্যপুরে ।
তুমি বললে - "অত দূর ? সময় কোথায় ?"
আসলেই তো, সময় কোথায় তোমার ?

মনে কি পড়ে প্রিয় ? তোমার সময় ছিলো না কখনো।
কিন্তু, হাজারটা অজুহাত ছিলো শুধু ।
আজ বহুদিন পরে, তোমার সময় এখন অফুরন্ত,
অথচ, আমি আজ অন্য কারও ।

তুমি আজ গান লিখতে চেয়েছো,
আমি আজও সুর দিতে রাজি ।
তোমার অলিখিত কবিতা আজ শেষ হলে,
আমি আবৃত্তিতেও রাজি ।

সুবর্ণরেখা নদীর পাড়ে তোমার সাথে মিলে
সূর্যাস্ত দেখার আজ তোমার এই আহ্ববান,
আমি কি ফেলতে পারি, বলো ?

কালবৈশাখীর ওই উন্মত্ত ঝড়ে,
বুকে জড়িয়ে আমাকে, মাতাল হাওয়ায় তুমি মিশে যেতে চাইছো !
দেখো প্রিয়তম, আমি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি,
আমি রাজি ।

বাদল দিনের প্রথম বরিষণে,
হাতে হাত রেখে তোমার ভেজার আকুলতা আমাকে সিক্ত করেছে ।
অনিবার্য সেই আহব্বান, আমি কি সাড়া না দিয়ে পারি ?
বলো প্রিয়তম !

শান্তিনিকেতনের পৌষ উৎসব আজ তোমাকে টানে ।
আজ আমি অন্যের, তবুও যেতে চাই তোমার সাথে ।
দিকশূন্যপুরের রাঙা মাটির পথে হাঁটতে হাঁটতে,
চলো হারিয়ে যাই দু'জনে ।

আজ আমি অন্যের, তবুও প্রিয়তম যেতে চাই তোমার সাথে;
কারণ আমি যে আজও ভালোবাসি তোমাকে ।

butterflies-gc0afca758_1920.jpg
[]source(https://pixabay.com/photos/butterflies-pair-flowers-743549/)

আসলে বাস্তবতাটা এখন এমন আমরা সবাই ব্যস্ত ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। আজ যেটা আমাদের কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে কালের আবর্তনে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা না বোঝার মত। একজন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখে তাকে নিয়ে কল্পনার জগতে উড়ে বেড়ায়। অপর পক্ষ থেকে উদাসীনতার পরিচয় পেলে তখন ভালোবাসা আর টিকে না। ভালবাসাকে টিকিয়ে রাখতে হলে দুপক্ষের সমান অংশীদারিত্ব প্রয়োজন, সমান তাগাদা থাকা প্রয়োজন, অনুভূতি গুলি এক হওয়া জরুরী। নতুবা সময়ের আবর্তনে ভালোবাসা হারিয়ে যায়। কালের যাত্রায় এমন এক অবস্থা হয়ে দাঁড়ায় যখন দুটো মন এক হতে চাইলেও আর এক হবার সুযোগ থাকে না। এটা যেন একটা বিশাল নদীর দুকুলের মত দুই তীর । যেখানে দুটি তীর কখনো এক হতে পারেনা। ঠিক তদ্রূপ দুটি মন তখন আর এক হতে পারে না।

কবিতাটির আবৃত্তি এতক্ষণ শোনার জন্য পাঠক বন্ধুদের আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ।

ব্যানার.PNG

আমি মোঃ সাইদুর রহমান সরকার পেশায় একজন ব্যাংকার। হাই স্কুল জীবনে ছড়া, ছোট গল্প ও কবিতা লেখার হাতেখড়ি ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশোনা করেছি, তাই লেখালেখির কাজটি অবহ্যাত রাখতে পেরেছিলাম। বই পড়া এবং বই সংগ্রহ করতে আমার ভালো লাগে । আমি জীবনে একজন ভালো মনের মানুষ এবং ভালো মানের একজন লেখক হতে চাই । আমি প্রতিদিন ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চাই। প্রতিদিন একটু একটু করে আমার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পানে এগিয়ে যেতে চাই। আমার সমস্ত কর্ম তৎপরতা আমার স্বপ্নকে ঘিরে। এটা আমার আজন্ম সাধনা। আমার জন্য দোয়া করবেন।


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বাহ আপনি খুব সুন্দর ভাবে দাদার কবিতাটি আবৃত্তি করেছেন। আসলে দাদার কবিতাগুলো খুবই তাৎপর্যমণ্ডিত আর এগুলো আবৃত্তি করলে অনেক ভালো লাগে। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে ছন্দে ছন্দে আবৃত্তি করে আমাদের মাঝে শুনিয়েছেন তাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

জি আপু আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জেনে ভালো লাগলো দাদার কবিতা আপনার অনেক ভালো লাগে

বড় দাদার রচিত কারণ আমি ভালোবাসি তোমায় কবিতাটি আবৃত্তি করে আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন ভাইয়া। এর আগেও আমি আপনার কন্ঠে আবৃত্তি করা অনেকগুলো কবিতা শুনেছিলাম আজকেরটি শুনেও খুবই ভালো লাগলো। কবিতা আবৃত্তি করার মধ্যে অন্য রকমের একটা অভিজ্ঞতা প্রয়োজন যা আপনার মধ্যে রয়েছে বলে আমি মনে করি।

ধন্যবাদ ভাই এত চমৎকার করে প্রশংসার মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রেরণা দানের জন্য। চেষ্টা করছি কবিতা আবৃত্তি তে ভালো করার। আপনারা সাহস দিলে তা সম্ভব হবে।

আমাদের সকলের প্রিয় দাদার লেখা কবিতাটি আপনি খুবই চমৎকারভাবে আবৃত্তি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনার কবিতা আবৃতি আমি এর আগেও শুনেছি। আপনি খুবই সুন্দর আবৃত্তি করেন ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

হ্যাঁ ভাই দাদার কবিতা অনেক ভালো লাগে তাই আবৃতি করে হৃদয়ের দহন নিবাই