বসন্তকালীন ফুল : আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-১৩|| 10% beneficiary to @shy-fox 🦊}]

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)

সবাইকে ফাল্গুনের শুভেচ্ছা।

আমার বাংলা কমিউনিটির সকল সদস্যের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করে শুরু করছি বসন্তে ফুটে বিভিন্ন ধরনের ফুলের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ কর্তিক আয়োজিত প্রতিযোগিতার লেখনি । বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। শীতের শেষে শুরু হয় ঋতুরাজ বসন্ত। ফাল্গুন-চৈত্র এ দুই মাস নিয়ে বসন্তকাল। বসন্তে প্রকৃতি যেন এক নতুন উদ্যমে সেজে ওঠে। ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে বসন্ত ফুটে বিভিন্ন-ধরনের-ফুল বিষয়ে একটি চমৎকার প্রতিযোগিতা আয়োজন করার জন্য। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বসন্তের ওঠা বিভিন্ন ধরনের ফুল ছবির সংগ্রহ করতে কি আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। দিনে অফিস রাতে ফুলের ছবি সংগ্রহের অভিযান সত্যি এটা একটা রোমাঞ্চকর ছিল আমার জন্য। কয়েকটি দিন খুব ব্যস্ততার মধ্যে কাটিয়েছি। মনে হচ্ছে আমার জীবনে নতুন চেতনা এনে দিয়েছে কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকার জন্য।
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত। বসন্ত, বাংলা ভাষা গোষ্ঠীর লেখক -লেখিকা এবং কবিদের নিকট অনন্ত লেখনীর একটি উৎস।

লোকেশন সংক্রান্ত বক্তব্য-

আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা- ১৩ এর নির্দেশিকায় যে শর্তাবলী আরোপ করা হয়েছে, তা আমি ভালোভাবে পড়েছি তবে লোকেশন সংক্রান্ত বিষয়টি আমি ভুলভাবে বুঝেছি। তাই আমি যখন বিভিন্ন ফুলের ছবি তুলি তখন জিপিএস ক্যামেরা লোকেশন এর মাধ্যমে ছবি তুলিনি। আমি বিভিন্ন ফুলের ইমেজ গুলো বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে উঠিয়েছি আজ সকাল ৩ মার্চ ২০২২ তারিখে যখন প্রত্যাশিত ফুলগুলোর ইমেজ উঠিয়ে লিখতে বসি এবং এ প্রতিযোগিতায় অন্যান্যদের লেখা পর্যবেক্ষণ করি তখন লোকেশন সংক্রান্ত বিষয়টি আমার নিকট স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাই একপর্যায়ে চিন্তা করি নিজেকে এ প্রতিযোগিতা হতে বিরত রাখার। কিন্তু এত কষ্ট করে এতগুলো ইমেজ সংগ্রহ করলাম শুধু কি পুরস্কারের আশায় ? তাই পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টি মাথা থেকে বাদ দিয়ে নতুন উদ্যোমে এই লেখা আবার শুরু করলাম। আমি যে প্লাগারিজম করিনি তার প্রমাণস্বরূপ ফুলের ফটোগ্রাফির সাথে আমার সেলফি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। লোকেশন সংক্রান্ত সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল ব্যাখ্যার জন্য এবং আমার বাংলা ব্লগ সোসাইটির একজন নবিন সদস্য হিসেবে কর্তৃপক্ষ আমার লেখাটি বিশেষভাবে বিবেচনা করবেন এ প্রত্যাশা করছি।

এখানে আমি ফুলের ধারাবাহিক বর্ণনা নিম্নোক্ত ভাবে সাজিয়েছি-
১. গাঁদা বা গন্ধা
২. নয়নতারা
৩. বেলী
৪. শিমুল
৫. ভাঁটিফুল

১. গাঁদা বা গন্ধা

1.২জজজ.jpg

ডিভাইস- Oppo A15s, Location- Bangladesh, Cumilla District, Muradnagar Upazilla.

গাঁদা বা গন্ধা ফুল মানুষের নিকট একটি জনপ্রিয় ফুল। বৈজ্ঞানিক নাম Tagetes erecta। এই ফুল সাধারণত উজ্জ্বল হলুদ ও গারো খয়েরী রং এ দেখা যায়। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় সর্বত্রই দেখা যায়। ইহা সহজে ফোটে এবং গৃহসজ্জায় ব্যবহৃত হয়। এ ফুল প্রায় সব ঋতুতে ফোটে বিশেষ করে বসন্তকালে ইহা প্রকৃতিকে নতুনভাবে সাজায়। গাঁদা ফুল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামে ব্যবহৃত হয়। ফুলের মালা তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়।

গাঁদা ফুলের রয়েছে অনেক ভেষজ গুণাবলী, ইহা কোন কারনে কেটে গেলে ক্ষতস্থানে তার ব্যবহৃত হয় এবং রক্ত পড়া বন্ধ করে।

২. নয়নতারা

নয়নতরা বাঙালি জাতি গোষ্ঠীর নিকট একটি পরিচিত ফুলের নাম । একটি লালচে ও গোলাপি আকৃতির হতে পারে । এই ফুল শীতের শেষে বসন্তের শুরুতে দেখা যায় । এর বৈজ্ঞানিক নাম Catharanthus roseus,

এটি একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ । ইয়া সাধারণত বাড়ির ছাদে, বারান্দায় আঙ্গিনায়, ফুলের টবে চাষা বাদ করা যায়। এর অনেক রাসায়নিক গুণাগুণ রয়েছে । এরমধ্যে অনেক উপক্ষার রয়েছে। ভিনক্রিস্টিন ও ভিনব্লাস্টিন নামের উপক্ষার দুটি লিউকেমিয়া রোগে বিশেষ ব্যবহার রয়েছে।
ব্যবহার
১.ক্রিমি রোগে এর বহুল ব্যবহার রয়েছে।
২.মেধা শক্তির বিকাশে।
৩. লিউকোমিয়া রোগের ব্যবহার রয়েছে।
৪. রক্ত প্রদরে ও রক্তচাপ বৃদ্ধিতে ইহা ব্যবহার করা হয়।
তাছাড়া সন্ধিবাত, বহুমূত্র সহ নানা রোগে গ্রামবাংলার মানুষ নয়নতরা উদ্ভিদ ব্যবহার করে।

৩. বেলী ফুল

বেলী ফুলকে ইংরেজিতে বলা হয় Arabian jasmine। ইহা একটা সুগন্ধী জাতীয় ফুল। এ ফুলটি সাধারণত দেখতে সাদা। সন্ধ্যায় ফুটে পরদিন দুপুরের মধ্যে ঝরে পড়ে। ইহা বাসা বাড়ির ছাদে, আঙ্গিনায়, টবে, বারান্দায় চাষাবাদ করা যায়। বাঙালি জাতি গোষ্ঠী এই ফুল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ব্যবহার করে থাকে। অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য এর চাষাবাদ রয়েছে। বেলি ফুলের পাপড়ি হতেবান তৈল পাওয়া যায়।

৪. শিমুল

শিমুল বাঙালি জাতি গোষ্ঠীর নিকট একটি অতি পরিচিত ফুলের নাম। এর কাঠ ব্যবহার করা হয় । এর রয়েছে নানা অর্থনৈতিক ব্যবহার। এটি সাধারণত লাল আকৃতির হয়ে থাকে। ইহা সুগন্ধ জাতীয় ফুল নয়। তবে এর মনমুগ্ধকর সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হবে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
শিমুল গাছের ছাল ভেষজ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় ইহা শরীরের ঘা সারাতে সহায়তা করে।
গ্রাম বাংলার অভাবী মানুষেরা ফোড়া হলে ব্যথানাশক হিসেবে শিমুল ছাল ফোড়ার উপর প্রলেপ দেয়।

এই ফুলের ফটোগ্রাফ গত বছর সুনামগঞ্জ এলাকার বাধাঘাট উপজেলা হতে নেয়া হয়।

৫. ভাঁট ফুল

5.2.jpg

গ্রাম বাংলার একটি পরিচিত ফুলের নাম ভাঁটফুল। ভাঁটফুল যে বসন্তকালীন ফুল তা আগে জানতাম না। আমার ব্লগ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে গিয়ে জানতে পারি ভাঁটফুল একটি বসন্তকালিন ফুল। গ্রাম বাংলায় এটি অবহেলায় অযত্নে বেড়ে ওঠা একটি ফুল। এই ফুল ক্রমশ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখায় ভাঁটফুল উঠে এসেছে । তিনি ফুলটিকে ‘ভাঁটি’ নামে অভিহিত করেছেন। প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় এই ফুলে বৈশিষ্ট্য উঠে এসেছে। রূপসী বাংলার কবি লিখেন ‘বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিল পায়...।’
ডিভাইস- Oppo A15s, Location- Bangladesh, Cumilla District, Muradnagar Upazilla.

সড়িষা ফুল বসন্তের শুরুতে প্রকৃতিতে দেখা যায়

ডালিয়া ফুল- বসন্তেরশুরুতে ডালিয়া ফুলকে প্রকৃতিতে চমৎকারভাবে ফুটতে দেখা যায়।

ধন্যবাদ সকলকে লেখাটি সর্বশেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ভাইয়া আপনার পোস্ট খুবই সুন্দর হয়েছে, অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করছেন। তবে আপনি ১০% বেনিফিশিয়ারি দেননি। যার কারণে এই পোস্ট কিউরেশন করা হবে না। পরের বার থেকে খেয়াল রাখবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

  ·  3 years ago (edited)

ধন্যবাদ আপু। আমি বিষয়টি বুঝতে পারিনি। পরবর্তীতে এ ধরনের ভূল হবেনা

ভাইয়া খুব ভালো প্রচেষ্টা ছিলো আপনার।কিন্তু একটা কথা বলি কিছু মনে কইরেন না।ফটোগ্রাফির সাথে শুধু নিজের ছবি দেয়া টাকে ফটোগ্রাফি বলে না।যখন নিজের ফটোগ্রাফি করবেন তখন দিতে পারবেন।

ধন্যবাদ পরামর্শ দেওয়ার জন্য।

ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর সুন্দর ফুলের ফটোগ্রাফি করেছেন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ জেনে অনেক খুশী হলাম ধন্যবাদ আপনাকে