আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই ভালো আছেন
"আজকে আমি আপনাদের কে হেরা গুহার ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলার চেষ্টা করবো'
গল্পের শিরোনাম: "গার-ই-হেরা'তে ওহী লাভ"
গার-ই-হেরা'তে ওহী লাভ করা ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুওয়াত লাভের সাথে সম্পর্কিত। এই ঘটনার মাধ্যমে ইসলামের সূচনা হয় এবং মানবজাতির জন্য একটি নতুন যুগের দ্বার উন্মোচিত হয়।
ভূমিকা
মক্কা নগরীর এক শান্ত প্রান্তে অবস্থিত হেরা গুহা ছিল একটি নির্জন স্থল। নবী মুহাম্মদ (সা.) প্রায়ই এই গুহায় চলে যেতেন এবং সেখানে ধ্যান ও প্রার্থনা করতেন। তিনি সমাজের অন্যায় ও অসঙ্গতির প্রতি অতিষ্ঠ ছিলেন এবং সত্য ও ন্যায়ের পথ খুঁজছিলেন।
গার-ই-হেরা'তে ওহী লাভ
মুহাম্মদ (সা.) যখন চল্লিশ বছর বয়সে পৌঁছান, তখন তিনি আরও বেশি সময় গার-ই-হেরা'তে কাটাতে শুরু করেন। ৬১০ খ্রিস্টাব্দের রমজান মাসের এক রাতে, তিনি গভীর ধ্যানে লিপ্ত ছিলেন। হঠাৎ তিনি অনুভব করলেন যে, একজন দেবদূত তার সামনে উপস্থিত হয়েছেন।
এই দেবদূত ছিলেন ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.)। তিনি মুহাম্মদ (সা.)-কে বললেন, "পড়ো।" মুহাম্মদ (সা.) বললেন, "আমি পড়তে জানি না।" জিব্রাইল (আ.) তাকে তিনবার বললেন এবং তারপর প্রথম কুরআনের আয়াত নাযিল করলেন:
"পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট বাঁধা রক্তপিণ্ড থেকে। পড়ো, তোমার প্রভু মহিমান্বিত, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।" (সূরা আলাক, আয়াত ১-৫)
পরবর্তী ঘটনা
এই ঘটনা মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি ভয় ও বিস্ময়ে ভরা অবস্থায় গুহা থেকে বেরিয়ে আসেন এবং দ্রুত তার স্ত্রী খাদিজা (রা.)-এর কাছে যান। তিনি তার স্ত্রীকে সব কিছু খুলে বলেন এবং খাদিজা (রা.) তাকে শান্ত করেন ও বিশ্বাস দেন যে, এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।
নবুওয়াতের সূচনা
এই ওহী লাভের মাধ্যমে মুহাম্মদ (সা.) নবী ও রাসূল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। তিনি আল্লাহর বার্তাবাহক হিসেবে মানবজাতির কাছে ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেন। প্রথমে তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা ইসলাম গ্রহণ করেন। ধীরে ধীরে তার অনুসারী বাড়তে থাকে, যদিও তিনি মক্কার কুরাইশদের থেকে প্রচুর বাধা ও নির্যাতনের সম্মুখীন হন।
উপসংহার
গার-ই-হেরা'তে ওহী লাভের ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি শুধু মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের পরিবর্তন নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য একটি নতুন দিগন্তের সূচনা। ইসলামের প্রাথমিক বার্তা ছিল একত্ববাদ, ন্যায়বিচার ও মানবতার কল্যাণ, যা পরবর্তীতে একটি বৈশ্বিক ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।