ভ্রমন||মায়াবী ঝর্ণা||জাফলং, সিলেট।

in hive-129948 •  10 months ago 

আসসালামু আলাইকুম।

আমি রাহুল হোসেন। আমার ইউজার নেমঃ@mrahul40।বাংলাদেশ থেকে।আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

  • মায়াবী ঝর্ণা
  • ০৮,ফেব্রুয়ারি ,২০২৩
  • বৃহস্পতিবার

হ্যালো আমার বাংলা ব্লকবাসি কেমন আছেন আপনারা? বেশ কিছুদিন পর আপনাদের মাঝে আবারো হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। অনেকদিন হয়ে গেল ভ্রমণ পোস্ট আপনাদের মাঝে সেভাবে শেয়ার করা হয়নি। বেশ কয়েক মাস আগে সিলেট ভ্রমণ করেছিলাম তার কিছু সুন্দর যে আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি এখনো বেশ কিছু জায়গা সৌন্দর্য তুলে ধরা বাকি আছে। আজকে আবারো সেই সিলেটের সৌন্দর্য নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে গেলাম।

জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে ছোট নদীটি পার হয়ে পশ্চিমে এক কিলোমিটার গেলেই দেখা মিলবে মায়াবী ঝর্ণার এই ঝর্ণার আরেকটি নাম সংগ্রামপুঞ্জি জলপ্রপাত। বর্ষা মৌসুমে পর্যটকের অনেক আকর্ষণীয় একটি জায়গা হল এই ঝর্ণাটি। জাফলং জিরো পয়েন্টে সবাই ঘুরতে গেলে প্রথমে ঝরনার দিকে পা বাড়ায় তার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। এখানে যেতে নৌকাতে করে ছোট নদীটি পার হয়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট হেঁটে যেতে হয়। ঘাটে অনেক নৌকা পাওয়া যাবে জনপতি চল্লিশ টাকা দিলেই ওইপারে নামিয়ে দিয়ে আসবে আবার আসার সময় নিয়ে আসবে। আবার মানুষ বেশি হলে আপনারা চাইলে নৌকা রিজার্ভ করে নিয়েও যেতে পারেন।


IMG20230903141402-01.jpeg

IMG20230903141731-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

আমরা যেহেতু চারজন ছিলাম তাই আমরা যে নৌকা ভাড়াতে চলে সেটাতে করেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। নৌকা ভ্রমণটা সবসময় অনেক বেশি ভালো লাগে। তাইতো আর দেরি না করে নৌকার উপরে উঠে বসলাম তবে বেশ রোদ লাগছিল। এখানকার নৌকাগুলোর ভিতরে বসার থেকে উপরে ছাদের উপর বসে প্রকৃত ভোগ করতেই অনেক বেশি ভালো লাগে। তাইতো রোদ যতই হোক প্রকৃতির সৌন্দর্য মিস করা যাবে না সেজন্য উপরে বসে ছিলাম। ১০ মিনিটের মধ্যেই আমাদের নামিয়ে দিল মায়াবী ঝর্ণার পশ্চিম প্রান্তে। আমাদেরকে এখন ১৫ মিনিট মতো হেঁটে হেঁটে যেতে হবে ঝরনার কাছে।


IMG20230903141817-01.jpeg

IMG20230903154446-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

ক্লান্ত দুপুরে আমাদের শরীরটা অনেক বেশি ক্লান্ত ছিল। কারন আমরা প্রকৃতি সৌন্দর্য দেখতে দেখতে দুপুরের সময় পৌঁছেছি জাফলং জিরো পয়েন্টে। তাইতো ক্লান্ত দূর করার জন্য একটি ছায়াযুক্ত স্থানে দাঁড়িয়ে লেবুর শরবত খাওয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। ক্লান্ত শরীরের লেবুর শরবত অনেক ভালো কাজে দিবে। আমরা যদি গরমের মধ্যে পর্যাপ্ত পানি পান না করি তাহলে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাইতো লেবুর শরবত টাকা আবশ্যক হয়ে পড়েছিল।


IMG_20240208_21331560.jpg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

আমরা গিয়েছিলাম আগস্ট মাসে তখন বেশ গরম ছিল। আর বর্ষার শেষ সময় নদীর পানিও শুকিয়ে গিয়েছে ভাবছিলাম ঝরনা গিয়ে পানি পাব কিনা তারপরেও সামনের দিকে এগোচ্ছি ঝর্ণার সৌন্দর্য দেখার জন্য। ক্লান্ত শরীরে যখন লেবুর শরবত খুঁজছিলাম তখন দেখি এক ছোট ছেলে লেবুর শরবত বিক্রি করছে তাই আর দেরি না করে দ্রুত পান করি। তারপর আমরা সামনের দিকে এগোতে থাকি মায়াবী ঝরনা দেখার উদ্দেশ্যে। আমাদের কাছে ক্যামেরা এবং বেশ কিছু গেজেট ছিল সেজন্য আমরা একটি লকার ভাড়া করি আমরা সেগুলো সেখানে রেখে ঝর্ণার পানিতে ক্লান্ত শরীরটাকে শান্ত করার জন্য এগিয়ে যায়।


IMG-20240208-WA0016.jpg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

বড় বড় পাথর বেয়ে পানি পড়ার কথা ছিল কিন্তু এখন বর্ষা মৌসুম না হওয়াতে পানির দেখা মেলেনি। বর্ষা মৌসুমে ঝর্ণার সৌন্দর্যে আমরা সবাই মুগ্ধ হয়ে যেতাম কিন্তু কি আর করার আমরা ভুল সময়ে ঝর্ণা দেখতে এসেছি। পানি পড়ছে অন্য দিক থেকে অল্প কিছু সেখানে প্রচুর মানুষের ভিড় জমে আছে তাদের শরীরটাকে শীতল পানিতে ভেজানোর জন্য।


IMG-20240208-WA0017.jpg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

ঝরনা থেকে অল্প অল্প করে গড়িয়ে পড়ছে ঠান্ডা শীতল পানি ।তাই তো মানুষের ভিড় জমেছে এখানে তাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য সবাই স্নান করতে চাচ্ছে ঝর্ণা ঠান্ডা শীতল পানি দিয়ে। মানুষের অনেক ভিড় দেখে আমি আর সেখানে যায়নি দূর থেকে দাঁড়িয়ে সবার কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করছিলাম। প্রকৃতির মাঝে অনেক মানুষের ভিড় থাকলে প্রকৃতির আসল সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া যায় না তাইতো আমি ওই ভিড়ের মধ্যে না গিয়ে দূর থেকে দাঁড়িয়ে সৌন্দর্য দেখছিলাম।


IMG-20240208-WA0030.jpg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

এখানে পাথরের আকার গুলো অনেক বড় বড় ছিল পাথরের মাঝে আছে বসে বসে সময় কাটাচ্ছিলাম আমি। আমার বন্ধু এবং আমার সাথে জানা ছিল তারা বেশ ব্যস্ত ছিল ফটোশুটে আমার হাতে ক্যামেরা ধরিয়ে দিয়ে তারা ছবি উঠায় ব্যস্ত ছিল। আমিও ছবি তুলে বেশ মজা পাচ্ছিলাম যেহেতু এখানে পানি কম ছিল তাই আর আমি পানিতে ভিজিনি। তাই আমি তাদের ছবি তুললে দিতেই ব্যস্ত ছিলাম এবং বড় বড় পাথরের দিকে তাকিয়ে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির প্রশংসা করতে লাগলাম। সৃষ্টিকর্তা আমাদের জন্য কত কিছুই না তৈরি করেছেন আমাদের কল্যাণের জন্য অনেক কিছুই তৈরি করে রেখেছে। আমরা কি তার খুশির জন্য কিছু করছি?

মোটামুটি ঘোরাঘুরি শেষ করে আমরা আবার যাত্রা শুরু করি জাফলং জিরো পয়েন্টের দিকে। আবার নৌকায় করে আসতে হবে জাফলং জিরো পয়েন্টে। ঝর্ণায় পানি না পাওয়াতে মনটা বেশ খারাপ ছিল তারপরও ক্লান্ত শরীরে চলে আসলাম জিরো পয়েন্টে। আজ এই পর্যন্তই দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে অন্য কোন গল্প নিয়ে সেই পর্যন্ত সাথেই থাকুন।



আমি কে !

IMG_20231120_103032_225.jpg

আমি মোঃ রাহুল হোসেন, আমার ইউজার নেম @mrahul40। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন।

standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমি আসলে ইতোমধ্যে সংগ্রামপুঞ্জি জলপ্রপাতের নাম অনেক বার মানুষের মুখে শুনেছি, কিন্তু কখনো দেখা হয়নি। আজকে আপনার পোস্টের মাধ্যমে সংগ্রামপুঞ্জি জলপ্রপাত সম্পর্কে জানতে পারলাম । আপনারা চারজন নৌকা করে মায়াবি ঝর্ণা দেখতে গিয়েছিলেন,আর আমার ও নৌকায় ভ্রমণ করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনি অসাধারণ একটি মুহূর্ত মায়াবী ঝর্ণার মধ্যে অতিক্রম করেছেন।

আসলেই জায়গাটি অনেক সুন্দর। মতামত প্রকাশের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

বোঝাই যাচ্ছে অনেকটা পথ জার্নি করে আপনারা মায়াবী ঝরনার কাছে গিয়েছিলেন, ক্লান্ত দুপুরে শরীরটা ক্লান্ত হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। ঝরনা সৌন্দর্য উপভোগ করতে সত্যিই অনেক বেশি ভালো লাগে ঝর্ণার কাছে গিয়ে ঝর্ণা শব্দ আপন মনে নিজের মনের মধ্যে গেঁথে নিতে কতই না ভালো লাগে। এই অনুভূতি আসলে কখনো ব্যক্ত করা যায় না। বোঝাই যাচ্ছে মায়াবী ঝরনার পাশে গিয়ে দারুণ একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। ধন্যবাদ জাফলং সিলেট ভ্রমণের মুহূর্তটা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

পথটা দীর্ঘ তবে বেশ মজার ছিলো। অসংখ্য ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য।

মায়াবী ঝর্ণা অনেক সুন্দর তো দেখছি।আপনারা অনেকটা পথ অতিক্রম করে মায়াবী ঝর্ণা দেখতে গিয়েছিলেন এজন্য ক্লান্ত ছিল।আসলেই প্রকৃতির আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূরে গিয়েই ভালো করেছিলেন ভিড়ের মধ্যে কোনো কিছুই তেমন ভালো লাগেনা।অনেক সুন্দর ছিল স্পট টি।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

মায়াবী ঝর্ণার আসল রূপ দেখতে পারিনি। বর্ষার সময় গেলে দেখতে পারতাম। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য।