পাহাড় অভিযানে বাইক নিয়ে।||রাঙ্গামাটি||

in hive-129948 •  2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম।

আমি রাহুল হোসেন। আমার ইউজার নেমঃ@mrahul40।বাংলাদেশ থেকে।আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

আজ -৩১ই, আশ্বিন ,|১৪২৯ বঙ্গাব্দ||রবিবার||শরৎকাল||


PhotoEditor_20221016213654994.jpg


আমার ভালো লাগার জায়গাগুলোর মধ্যে পাহাড় অন্যতম। তাইতো সময় পেলেই ছুটে চলে যায় পাহাড় দেখতে। সবুজ শ্যামলের ঘেরা পাহাড় গুলো সব সময় আমার মুগ্ধ করে আর পাহাড়ের উপর থেকে আশেপাশের পরিবেশটা অসম্ভব সুন্দর লাগে বড় শহরকেও যেন অনেক ছোট মনে হয়। যখন পাহাড়ের উপর থেকে মেঘের আনাগোনা দেখা যায় তখন এক মিনিটে পাহাড়ে ওঠার সকল কষ্ট দূর হয়ে যায়। পাহাড়ের উপরে উঠে যখন মেঘের আনাগোনা দেখি অথবা যদি মেঘ নাও থাকে তাও ওইখান থেকে আশেপাশের পরিবেশ দেখলে মনের সকল দুঃখ-কষ্ট বিলীন হয়ে যায়। তাই মন খারাপ থাকলেই আমি বেরিয়ে যাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এটা একটি মন ভালো করার অনেক বড় ওষুধ। এবারও গিয়েছিলাম পাহাড়ের রাজ্যে হারিয়ে যেতে। আজকে যে পাহাড়টি নিয়ে আলোচনা করব এটা রাঙ্গামাটি শহরের সব থেকে বড় পাহাড় পাহাড়টির নাম ফুরোমন পাহাড় এর উচ্চতা ১৫১৮ ফুট। এখানে সাধারণত বর্ষা মৌসুমে তেমন পর্যটক আসেনা আর রাস্তাটি বেশ বিপদজনকও বটে রাস্তাটা ইট দিয়ে তৈরি করা।


IMG20220921124830_00-01.jpeg

IMG_20220921_101445-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

বর্ষা মৌসুম শেষের দিকে গিয়েছিলাম তাই পুরা রাস্তাটায় ঘাস জন্ম নিয়েছিল এই রাস্তাতে বাইক চালানো অনেক রিস্কি তারপরও আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমরা দুই বাইকার পাহাড় জয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করি। রাস্তাটা শুরুই হয়েছে একটি উঁচু পাহাড়ের উপর দিয়ে প্রথমে উঠতে ভয় লাগছিল কারণ পাহাড়টি অনেক উঁচু আর ইটের রাস্তা হওয়াতে বেশ রিস্কি ছিল। আমরা যে রাস্তা দিয়ে পাহাড়ে উঠবো এটা দিয়ে শীত মৌসুমে বেশ ভালই গাড়ি চলে এখন যেহেতু বর্ষা মৌসুম শেষ এখনো রাস্তাটি পুরোপুরি যাতায়াতের উপযোগী হয়নি।


IMG_5776-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

আর এই দিক দিয়ে পায়ে হেঁটে পাহাড়ে পৌঁছাতে তিন থেকে চার ঘন্টা সময় লাগে। ছোট-বড় উঁচু নিচু পাহাড় গুলো পেরিয়ে আমাদের পৌঁছাতে হবে। আমাদের দুটো বাইকে ই কম সিসি হলেও আমাদের যাতায়াতে কোন সমস্যা হয়নি। বেশ কিছু পথ অতিক্রম করার পর একটু স্থানে দাঁড়িয়ে আশেপাশের পরিবেশ দেখতে অসম্ভব ভালো লাগছিল। ইটের রাস্তাগুলোতে ঘাস ভালোই জন্ম নিয়েছিল তাই অনেক সাবধানতার সাথে বাইক রাইড করতে হচ্ছিল। আমরা দীর্ঘ এক ঘন্টা বাইক রাইড করার পর পাহাড়ের নিচে এসে পৌঁছায়। সাধারনতো এ পর্যন্তই গাড়ি নিয়ে আসা যায়।


IMG20220921104518_00-01.jpeg

IMG20220921114402_00-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

এখানে একটি দোকান ছিল দোকানের বাইরে বাইক রেখে আবার প্রায় তিন থেকে চারশো সিঁড়ি বেয়ে আমাদের পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে হবে অনেক কষ্টকর ছিল। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে আমরা সবাই অনেক হাপিয়ে গিয়েছিলাম অনেক বিশ্রাম গ্রহণের পর আমরা পাহাড়ের চূড়াতে উঠতে সক্ষম হয়। পাহাড় চূড়াতে একটি বৌদ্ধ মন্দির রয়েছে এখানে সাধারণত শীত মৌসুমে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা পূজা করতে আসে।


IMG_20221016_134516_054.jpg

IMG20220921110558_00-01.jpeg

IMG20220921105833_00-01.jpeg

IMG_5743-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

যেহেতু আমরা অনেক ক্লান্ত ছিলাম তাই ওখানে একটি বড় বটগাছ আছে এই গাছের নিচে আমরা আশ্রয় গ্রহণ করি। ওখানে কিছু সময় বিশ্রামের পর আশেপাশের প্রকৃতি দেখতে থাকি প্রকৃতি দেখেই আমাদের সকল কষ্ট এক নিমিষেই উধাও হয়ে যায়। কারণ এই পাহাড়ের চূড়া থেকে রাঙ্গামাটি শহরটাকে একদম ছোট লাগছিল আর পাহাড়ের চূড়া থেকে রাঙ্গামাটি শহরের প্রচুর লেক আছে লেক গুলো দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। আমাদের ওখানে গিয়ে পরিচয় হয় আরো তিন পর্যটক এর সাথে। তারা পায়ে হেঁটে পাহাড়ের গা ঘেঁ এসে ট্রেকিং করে উপরে এসেছে তারাও এসে অনেক হাপিয়ে গিয়েছে। এই পাহাড়ের একটি স্থান দিয়ে গাড়ি নিয়ে ওঠা যায় আরেকটি সাইডে পুরাই পায়ে হেঁটে উঠতে হয়। আমরা তাদের সাথে অনেক সময় গল্প করি। তারপর কেমন যেন আশেপাশের মেঘ মেঘ লাগছিল তাই বৃষ্টি হওয়ার ভয়তে আমরা আগেই নেমে চলে আসি। কারণ যদি একবার বৃষ্টি শুরু হয় তাহলে আমরা ওই রাস্তা দিয়ে বাইক নিয়ে নামতে পারব না। আমরা সেই সিড়ি বেয়র আবার নিচে নেমে চলে আসি। সিড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় বেশি কষ্ট হয়নি। তারপর আমরা বাইক নিয়ে আবার রওনা করি। এবারকার রাস্তা আরো বেশি কঠিন কারণ এই পিচ্ছিল রাস্তাই বাইক নিয়ে নামতে অনেক রিস্কি।


IMG20220921115852_00-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

আমার সাথে আর একজন যে বাইকার ছিল তার বাইক তো নামাতে খুব ভয় পাচ্ছিল তাই ধরে ধরে পিচ্ছিল রাস্তাগুলো নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে যেন স্থির ভাবে দাঁড়ানো যাচ্ছিল না। আমরা পাহাড় থেকে সকল বিপদজনক রাস্তা পার করে একটি মনোরম পরিবেশে এসে অনেক ফটোগ্রাফি করি নিজেদের ছবি উঠায় তারপর আমরা বাসার দিকে রওনা করি।



এ পাহাড়ের এই ভ্রমণটা আমার একটি নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। এর আগে কখনো পাহাড়ি রাস্তায় বাইক রাইড করা হয়নি। আমরা অনেক সাবধানতার সাথে আমরা সম্পূর্ণ পথ কোন বিপদ ছাড়াই পার করি। এটা আমাদের জীবনের অনেক একটি বড় পাওয়া। আমি এই পোস্টে কিছু ভিডিও দিয়ে দিব তাহলে বুঝতে পারবেন রাস্তাটি কতটা বিপদজনক ছিল ধন্যবাদ সবাইকে


standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার পাহাড় অভিযানে বাইক নিয়ে গল্পটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আমার কাছে। পাহাড়ে ঘোরাঘুরির মজাটাই আলাদা। আপনি তো আরো বাইক নিয়ে গিয়েছেন অনেক ভালো সময় কাটিয়েছেন দেখে বোঝা যাচ্ছে। তার সাথে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য বেশ দারুন দারুন ফটোগ্রাফিও করেছেন। সত্যি এক কথায় অসাধারণ ছিল আপনার আজকের এই পোস্টটি।

জ্বী ভাইয়া পাহাড় ভ্রমণ অনেক মজার এবং সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মতামত প্রকাশের জন্য

একজন বাইক লাভার জানে বাইক নিয়ে দূর-দূরান্তে ঘুরতে যাওয়ার অনুভূতিটা কেমন। আমারও বাইক নিয়ে সারা দেশে ঘোরাঘুরি করার খুব ইচ্ছা আছে জানিনা কবে পূরণ হবে। রাঙ্গামাটির খুবই বিপদজনক রাস্তা গুলোতেও আপনি খুবই সুন্দর ভাবে বাইক রাইড করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। আমারও খুব ইচ্ছে আছে রাঙ্গামাটিতে বাইক নিয়ে যাওয়ার।

একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া একজন বাইক লাভার জানে বাইক নিয়ে ঘুরাঘুরি মজা। মতামত প্রকাশের করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

ভা্ই পাহাড় ভ্রমণ করতে আমারো অনেক ভালো লাগে তবে বাইক নিয়ে এমন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমার আজ পযর্ন্ত হয় নি। ছবিগুলো দেখেই মন ভরে গেল না জানি বাস্তবে জায়গাটা দেখতে কত সুন্দর। টাকা নাই তা না হলে আপনাদের গ্রুপে নাম লিখাতাম। হা হাহা

পাহাড়ি রাস্তায় বাইক ড্রাইভ করা অনেক আনন্দের একটি বিষয় আমার কাছে এটি অনেক ভালো লাগে আপনিও একদিন ট্রাই করে দেখতে পারেন।

রাঙামাটি কখনো যাওয়া হয়নি। কিন্তু আমিও শুনেছি রাঙামাটির রাস্তাগুলো একটু রিস্ক। আর আমি মনে করি বাইক চালানো আরেকটু বেশি কঠিন কাজ। আমি মনে করি আপনাদের এত বেশি রিস্কে গিয়ে পাহাড়ি এলাকায় বাইক চালানো একদমই উচিত হয়নি। কিন্তু ঘোরাঘুরি মুহূর্তটা বেশ ভালোই লেগেছে।। আবার দেখছি অনেক উঁচুতে উঠেছেন। পাহাড়ের উপরে উঠতে সত্যি ক্লান্ত হয়ে যায়। ক্লান্ত হয়ে একটা বটগাছের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। অসাধারণ কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। সবকিছু বেশ ভালো লেগেছে কিন্তু বাইক চালানোটা একটু রিস্ক।

রাঙ্গামাটির রাস্তাটা অনেক সুন্দর কিন্তু রিক্স তেমন নেই তারপর বাইক নিয়ে ঘুরাঘুরি করতে বেশ মজাই লাগে।

পাহাড় ঘোরাঘুরি করতে সকলের অনেক বেশি ভালো লাগে আমরাও প্রায় এক বছর আগে পাহাড় ঘুরতে গিয়েছিলাম বান্দরবান এলাকাতে। আপনি একজন ঘোরাঘুরিপ্রেমী মানুষ আর বাইক নিয়ে যদি ঘোরাঘুরি করা হয় তাহলে তার কোন কথাই নেই। চট্টগ্রামে বাইক নিয়ে ঘুরাঘুরি মুহূর্তে অনেক সুন্দর মুহূর্ত অবিবাহিত করেছেন বিশেষ করে অনেক উঁচুতে উঠেছেন যদিও কখনো অতটা উঁচুতে ওঠার সৌভাগ্য হয়ে ওঠেনি। বিশেষ করে আপনার এই পোষ্ট এর মাঝে ফটোগ্রাফি সহ ভিডিওটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।

নেক্সট টাইম অবশ্যই গেলে আপনাকে বলব বাইক নিয়ে ঘুরাঘুরির জন্য আপনি রেডি থাইকেন।

পাহাড়ি অঞ্চলে অনেকবার যাওয়া হয়েছে কিন্তু এইভাবে বাইক নিয়ে কখনো যাওয়া হয়নি। আসলে পাহাড়ি অঞ্চলে যেতে গেলে বাইক পারফেক্ট কারণ পাহাড়ে অঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় শুধুমাত্র বাইকে যেতে পারে অন্যান্য গাড়ি যেতে পারে না। তাছাড়া ঘুরাঘুরি করে বেশ মজা পাওয়া যায়। অনেক মজা করেছেন আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম।

একদম ঠিক বলেছেন পাহাড়ে অঞ্চলে বাইক নিয়ে ঘুরাঘুরি মত মজাই আর নেই। অবশ্যই নেক্সট টাইম আমরা সবাই এবার একসাথে যাব