হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ভ্রমণ

in hive-129948 •  last year 

আসসালামু আলাইকুম।

আমি রাহুল হোসেন। আমার ইউজার নেমঃ@mrahul40।বাংলাদেশ থেকে।আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

  • হার্ডিঞ্জ ব্রিজ
  • ১৯, ডিসেম্বর ,২০২৩
  • মঙ্গলবার

20231219_140513_0000.png


ক্যানভা অ্যাপ দ্বারা তৈরি।


হ্যালো আমার বাংলাব্লগবাসি কেমন আছেন আপনারা ?আপনাদের মাঝে আবারো হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। অনেকদিন হলো আপনাদের মাঝে কোন ভ্রমন পোস্ট শেয়ার করা হয় না ।তাই আজকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব হঠাৎ করেই ঘুরতে যাওয়ার কাহিনী। আগের কোন এক পোস্টে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করেছিলাম রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘুরতে যাওয়ার গল্প যেটা অবস্থিত ঈশ্বরদী ।তার পাশেই পাবনা জেলা এবং কুষ্টিয়া জেলা সংযোগ করেছে যে রেলপথ সেটা হল হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। আজকে এই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নিয়ে আপনাদের সাথে গল্প করব।

অবস্থান

এই ব্রিজ পাবনা এবং কুষ্টিয়া জেলার রেলপথের সংযোগ সেতু। এটা অবস্থিত পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী নামক স্থানে এবং তার অপর প্রান্তে রয়েছে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলা।


ইতিহাস


এই হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নির্মাণ কাল ১৯০৯ সাল থেকে ১৯১৫ সাল পর্যন্ত। এটা পদ্মা নদীর উপরে অবস্থিত। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার লর্ড হার্ডিঞ্জ এর নামে এই ব্রিজটির নাম করা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ রয়েছে। এটা বাংলাদেশের সব থেকে বড় রেল ব্রিজ ছিল তবে এখন পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে রেল ব্রিজ হয়ে যাওয়ার কারণে এটা দ্বিতীয় বৃহত্তম রেল ব্রিজ। এটা নির্মাণ 100 বছরের বেশি হওয়ার পরেও এখনো ব্রিজ সচল এবং অনেক মজবুত রয়েছে। এই ব্রিজ পর্যটকের বেশ আকর্ষণ করে কারণ অনেক পুরাতন একটি ব্রিজ। ব্রিজের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য দূর দুরান্ত থেকে পর্যটকরা এসে ভিড় জমায়। রেলপথে একসাথে দুইটা ট্রেন যাতায়াত করতে পারে।


ভ্রমণ গাইড


এই সেতুটা যেহেতু পাবনা জেলা এবং কুষ্টিয়া জেলা সংযোগ মাধ্যম। তাই আমরা চাইলেই যে কোন জেলা থেকে আসতে পারবো। যেহেতু আমি কুষ্টিয়া থেকে গিয়েছি তাই প্রথমে কুষ্টিয়া থেকে কিভাবে যাব সেটা আপনাদের মাঝে সাথে আলোচনা করি। কুষ্টিয়া শহর থেকে এর দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। আমরা কুষ্টিয়ার টার্মিনাল অথবা মজমপুর গেট থেকে পাবনাগামী যে সকল বাস আছে সে বাসে উঠে চলে যেতে পারি হার্ডিঞ্জ ব্রিজের দারপ্রান্তে। সঠিক বাস ভাড়া আপনাদের সামনে বলতে পারলাম না কারণ আমি বাইক নিয়ে গিয়েছিলাম।

কুষ্টিয়া থেকে যেতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে 45 থেকে 50 মিনিট। আর আমরা যদি অন্য কোথাও থেকে আসতে চায় তাহলে আমরা ট্রেনে করেও আসতে পারি। আমাদের তখন নামতে হবে ঈশ্বরদী স্টেশন অথবা এদিকে ভেড়ামারাতেও নামতে পারে। সেখান থেকে একটা অটো রিক্সা রিজার্ভ করে চলে যেতে পারে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে। এখানে গেলে শুধু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দেখবেন এমনটা নয় পাশে রয়েছে লালন শাহ সেতু আর ঈশ্বরদীর দিকে গেলেই পেয়ে যাবেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আশেপাশে অনেকগুলো রিসোর্ট আছে ।তার মধ্যে নদীর ধারে একটি ভালো পার্ক তৈরি করেছে সেটা পোস্ট আমি পরবর্তী কোন একটি সময়ে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব। একদিনের একটি সুন্দর ভ্রমণ স্পট হতে পারে এটা।


আমার ভ্রমণ


আমার ভ্রমণ ছিল একদম হঠাৎ করেই কোন প্লান ছাড়া। বাইক নিয়ে হুটহাট প্লান ছাড়া এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করতে বেশ ভালো লাগে। একদিনের তিনটা স্পট দেখেছিলাম পুরা দিন বললে ভুল হবে সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে । আগেও অনেকবার এসেছি তাই তেমন অনুভূতি কাজ করেনি তারপরও সৌন্দর্যটা বেশ দারুন ছিল। আমি প্রথমে দেখেছিলাম রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেটার পোস্ট অলরেডি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি।


IMG20231113120832_01-01.jpeg

IMG20231113120527-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

তারপর সেতু থেকে নেমে সেতুর নিচে যাওয়ার জন্য একটি বালির রাস্তা আছে সেটা ধরে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে চলে যায়। নিচে গিয়ে আশেপাশের সৌন্দর্যটা অদ্ভুত ছিল একসাথে অনেক ধরনের সুন্দর উপভোগ করতে পেরেছি। পাশাপাশি দুইটা ব্রিজ আর রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তিনটার কম্বিনেশনের সৌন্দর্যটা বেশ ভালো ছিল। এটা যেহেতু রেল সেতু তাই এর উপরে ওঠার কোন অনুমতি নেই কারণ যে কোন মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে উপরে উঠতে পারলে সেতুটার স্ট্রাকচার সম্পর্কে আরো ভালো ধারণা পেতাম।


20200810_153211-01.jpeg

20200810_160704-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

শতবর্ষী ব্রীজটা এখনো পদ্মা নদীর বুক চিরে দাঁড়িয়ে আছে প্রতিনিয়তই পারাপার হচ্ছে বড় বড় ট্রেন। দেখে বোঝা যাবে না এটি শতবর্ষী একটি ব্রিজ। কারণ এর ডিজাইন এবং স্ট্রাকচার বেশ মজবুত দেখলে মনে হয় এই হয়তো কিছু বছর আগে করেছে এখনো চকচকা। এখানে আমরা বেশ কিছু সময় অতিবাহিত করি পরিবেশটা সত্যি বেশ ভালো লাগছিল বিশেষ করে নদীর পরিবেশটা অসম্ভব সুন্দর ছিল।


IMG20231113120257-01.jpeg

IMG20231113120518-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

আমারা যখন ব্রিজের নিচে অবস্থান করি তখন সময় ঘড়ির কাটায় বারোটা বেজে গিয়েছে ।দুপুরের রোদ নদীর শীতল হাওয়া এক অদ্ভুত পরিবেশ ছিল। আমরা অনেক সময় দাঁড়িয়ে পরিবেশটা উপভোগ করতে থাকি। যেহেতু তখনো শীত ভালোভাবে শুরু হয়নি তাই রোদে বেশ ভালই গরম লাগছিল। এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একই সাথে অনেকগুলো যানবাহনে চলাচল দেখতে পারা যায় ।নদীতে নৌকা চলছে ডান পাশের ব্রিজে বড় বড় বাস ট্রাক চলে আর ভাগ্য ভালো থাকলে ট্রেনেরও দেখা মিলতে পারে। তবে বিকেলে বসে সময় কাটানোর মত অনেক ভালো একটি জায়গা। যেহেতু আমরা দুপুরে গিয়েছিলাম রোদের কারণে পরিবেশটা কতটা সুমধুর ছিল না। এ যদি পড়ন্ত বিকেলে এখানে বসে সময় কাটানো যেত তাহলে আরো বেশি ভালো লাগতো। এই ছিল আজকের ভ্রমণ কাহিনী । আবার দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্টে অন্য কোন গল্প নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।



আমি কে !

IMG_20231120_103032_225.jpg

আমি মোঃ রাহুল হোসেন, আমার ইউজার নেম @mrahul40। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন।

standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

বাহ্ বন্ধু একটি ভ্রমণ পোষ্টের সকল প্রসেস সুন্দরভাবে তুমি উপস্থাপন করেছ এটা থেকে বেশ ভালো লাগলো। আমি এই ব্রিজে বেশ কয়েকবার গিয়েছে সত্যি এই জায়গাটি বেশ সুন্দর। অনেক সুন্দরভাবে তোমার ভ্রমণ পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

আমিও গিয়েছি অনেকবার কিন্তু ভালো লাগে জায়গাটি আবার সুযোগ পেলে চলে যাব কি বলো?

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ভ্রমণের চমৎকার একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। খুবই ভালো লাগলো আপনার এই ভ্রমণের পোস্টটি পড়ে। আমারও ইচ্ছে আছে একদিন আমার বাইকটা নিয়ে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এবং এর আশপাশের জায়গা ভ্রমণ করে আসবো। সুন্দর একটি ভ্রমণের পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

জি ভাই একদিন বাইক নিয়ে গেলে অনেক জায়গায় ঘুরতে পারবেন আশেপাশের পরিবেশটাও সুন্দর। মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতার সুন্দর একটি প্রতিবেদন আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। বিশেষ করে ব্রিজ এর ইতিহাস নিয়ে আপনার জ্ঞান প্রশংসনীয়। ধন্যবাদ আপনাকে।

  ·  last year (edited)

আমার পোস্ট আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম। মতামত প্রকাশের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

আপনি খুবই সুন্দর কিছু ভ্রমণ মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ইতিহাস ও অবস্থান সম্পর্কে আমার তেমন একটা ধারণা ছিল না,তবে আপনার পোষ্টটি পড়ে আমি ধারণা পেয়েছি। এরকম ভ্রমণ কাহিনী পড়তে এবং ভ্রমণ করতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে কিছু ভ্রমণ মুহুর্তে শেয়ার করার জন্য।

বাহ আপনিও দেখছি আমার মত ভ্রমণ প্রিয়। আমার পোস্ট আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য