📱 প্রতিযোগিতা-০৬। (বর্তমান অথবা বিলুপ্ত প্রায় স্থানীয় লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য শেয়ার করুন) By mrnazrul

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)

মাটির দোতলা আর খড়ের ছাউনি ঘর

শুভেচ্ছা সবাইকে।

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন?

মহান আল্লাহর নামে আশা করছি, আপনারা তার অশেষ কৃপায় ভাল থেকে, "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে লেখা ও দেখার চেষ্টায় ব্যাস্ত আছেন

আলোকচিত্র#১

PicsArt_09-08-02.34.32.jpgPhoto Location

আমিও মহান আল্লাহর রহমতে, ও আপনাদের নেক দোয়ার বরকতে ভাল থেকে, এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনমুলক পোষ্টটি লেখা শুরু করলাম

আলোকচিত্র#২

PicsArt_09-08-02.40.13.jpgPhoto Location

পোস্টটি লেখার ইচ্ছে অনেক আগে থাকলেও, নানান জটিলতার কারনে, তা হয়ে উঠে নাই। আজ দেরিতে হলেও শুরু করতে পেরে ভালোই লাগতেছে। কেননা, আপনাদের সাথে হ্যাংআউটে দেখা করতে হবে। তানাহলে কথার বানে হ্যাংআউট জমবে কিভাবে?

"আমার বাংলা ব্লগ"কমিউনিটিতে এডমিন @moh-arif কর্তৃক আনিত প্রতিযোগিতা- ৬, যাহাতে বিলুপ্ত প্রায় ঐতিহ্য ও লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য তুলে ধরতে বলা হয়ে হয়েছে

তারই অংশ হিসেবে, আমি আমার অংশগ্রহনমুলক পোস্টি লিখছি । আমার আজকের উপস্থাপন বিষয়টিতে স্থান করে নিয়েছে, "বিলুপ্ত প্রায় গ্রামবাংলার লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য"-

মাটির দোতলা আর খড়ের ছাউনি ঘর

প্রিয় পাঠক বন্ধুগন।

>আজ থেকে বেশিদিন আগের কথা নয়। হবে হয়ত ১৫ কিংবা ২০ বছর। বাংলাদেশের অনেক জেলায় তৈরি করা হতো মাটির দোতলা ঘর। কোনটার ছাউনি ছিল টিনের আর কোনটার বা ছাউনি ছিল খড়ের। বিশেষ করে বাংলাদেশের দিনাজপুর এবং জয়পুর হাট ও বগুড়া জেলায় এসব মাটির দোতালা বেশি দেখা যেতো

কিভাবে তৈরি করা হতো এসব মাটির দোতালা?-


***এজন্য, মাটির ঘর নির্মান কারিগরেরা, প্রথমে পাটের শুতলিতে মাপজোখ নিয়ে, কোনায় কোনায় খুঁটি দিয়ে মাপের শুতলি টানাতো। এই নিয়মকে "ঝাট" বা "ঝাট ফেলা" বলা হয়ে থাকে ***।

এবার শুতলির ভিতরে দিকে, চতুর্পাশে, কোদাল দিয়ে অন্তত ১হাত(১৮ ইঞ্চি) গভির করে খোড়া হতো। তারপর খোড়া মাটিতে পানি দিয়ে, নেড়ে নেড়ে কাদা করে, শুকানোর জন্য কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ রেখে দেওয়া হতো
***এ অবস্থাকে "ভিত" দেওয়া বা "ভিত্তি"দেওয়া বলা হয়ে থাকে ***।

এবার তারা, এটেল মাটিতে পানি মিশিয়ে চিকটে চিকটে কাদা তৈরি করে নিত। ভিত্তির মাটি ভালভাবে সুকাইলে, এই কাদা দিয়ে ঘর তোলা শুরু করে দিত
এ পর্যায়ের এই পদ্ধতিটিকে "বাট"বা "বাট দেওয়া" বলা হয়ে থাকে

আলোকচিত্র#৩

PicsArt_09-08-02.31.03.jpgPhoto Location

ঘরের উচ্চতা অনুসারে, ভিত্তির উপর প্রথম "বাট"টি কমপক্ষে দেড় হাত, প্রয়োজন ৩- ৫ ও ৬ পর্যন্ত চওড়া এবং ১ হাত থেকে দু হাত উচু করা হতো।

এবার একটার পর একটা বাট শুকাতো আর তার উপর আরেকটি করে বাট দেওয়া হতো

***এভাবে একতলা মত উচু হলে, দেওয়ালের উপর চওড়া পাশে, ঘন করে কাঠের বা বাশের "বর্গা" দেওয়া হতো।
এবার এই বর্গার উপর, বাশ,বাশের চেকার, কাঠ বা কাঠের তক্তা বিছানো হতো। এবার তার উপর মাটির কাদা বিছিয়ে দেওয়া হতো। এপর্যায়ে এটিকে "ছাদ" বা "এক তলার ছাদ" বলা হতো

আমাদের এলাকায় এই ধরনের ছাদ গুলাকে "চালাম" বলে ডাকে।

*এপর্যায়টি অর্থাৎ "ছাদ"টি খুবই সতর্কতার সহিত সহিত ও ভর সহিষ্ণু বিবচনায় রেখে তৈরি করা হতো

এবার ঘরের কোনে মাটির সিড়ি তৈরি করে, দোতলায় উঠা নামা করা হতো।

আলোকচিত্র#৪

PicsArt_09-08-02.26.09.jpgPhoto Location

>আবার বাট দেওয়া শুরু করে, আরও একতলা উপরে তোলা হতো। সেখানেও হালকা পাতলা বা শক্ত করে ছাদ দিয়ে ছাদ বা চালাম দেওয়া হতো। কেউ কেউ আবার এই ছাদের উপরে সামান্য উঁচু করে, ৩লা মত করত

সর্বশেষ, উপরে টিনের বা খড়ের ছাউনি দিয়ে বসবাস শুরু করে দিত

>মাটির ঘর বলতেই এরকম ভাবেই তৈরি করা হতো বা এখনো করা হয় । যে ঘরের উপর খড় দিয়ে ছাউনি দেওয় হয় সেটাকে "খড়ের ঘর" বলা হয়ে থাকে

আজ থেকে ১৫- ২০ বছর আগেও এসব মাটির দোতালা এলাকা ভিত্তিক সকল কৃষকদের বাড়িতে মোটামুটি ভাবে দেখা যেতো।
গ্রামের আভিজাত কৃষকেরা, তাদের আভিজাত্য প্রকাশে, বিভিন্ন ধরনের, আকারের এবং বাহারের মাটির দোতালা বা একতালা ঘর নির্মান করত

এগুলোর আবার বাহারি বাহারি নামও ছিল যেমন এল (L)প্যাটার্ন, আই(I) প্যাটার্ন, জেড(Z) প্যাটার্ন, ওয়াই(Y) প্যাটার্ন,এক্স (X) প্যাটার্ন ইত্যাদি ইত্যাদি

আলোকচিত্র#৫

PicsArt_09-08-02.29.14.jpgPhoto Location এ ঘরটিও একসময় মাটির দোতলা ছিল। এখনো অর্ধেক আছে। এই অংশটির মাটি ভেঙে। লোহা লক্কড় ও ইট খোয়া লাগার চেষ্টা চলছে।

খড়ের ছাউনির ঘর গুলোও ছিল বেশ আরাম দায়ক।সে সময় গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে এসব ঘর দেখা যেতো।
মাটির ঘরে বসবাস খুবই আরাম দায়ক। এসব ঘর শীতকালে গরম ও গরম কালে ঠান্ডা থাকে

কালের বিবর্তনে ও সময়ের আবেদনে এসব আভিজাত পুর্ন ঐতিহ্য কালের গহবরে হারিয়ে যেতে শুরু করছে

আর ১৫ -২০ বছর পরে হয়ত আমরা এসব ঐতিহ্য বাহি "মাটির দোতলা" এবং "খড়ের ঘর" কোথাও দেখতে পাবোনা

আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম হয়ত, এগুলো দেখতে যাদুঘরে যাবে। বই পুস্তকের পাতা ও ইন্টারনেট দেখে আশ্চর্য হয়ে যাবে

>জানার আগ্রহে, প্রশ্নের উপর প্রশ্নবান ছাড়বে। যাদের প্রশ্ন করবে। তারাও হয়ত জানবেনা

>আমরা যারা চাক্ষুষ চোখে এখনো দেখছি, তারা আসুন, এসব বিষয় গুলা ছবি সহ বিস্তারিত লিখে প্রকাশ করি। যাতে পরবর্তী প্রজন্ম কোন প্রশ্ন ছাড়াই সহজে, তাদের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যায়

ছবি গুলো কিছুদিন , দিনাজপুর জেলার, হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার, বৈগাম থেকে, মোবাইল ক্যামেরায় ধারন করা। এসময় সময় সূর্যের আলো উজ্জ্বল ছিল

দেখুন ও মন্তব্য করুন

আলোকচিত্র#৬

PicsArt_09-08-02.27.38.jpgPhoto Location

আলোকচিত্র#৭

PicsArt_09-08-02.23.20.jpgPhoto Location

100% Original Content/Photography

Best Regard By @mrnazrul, Bangladesh.

Device : Walton Primo-6 Max.

My Location

https://w3w.co/induces.touchy.deducted

Photo Location

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এই ধরনের মাটির ঘর এবং ঘরের ছাউনি এখন উন্নত বাংলাদেশ দেখা যায় না। আর দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ

ধন্যবাদ আমাদের কমিউনিটির প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। সুন্দর উপস্থাপন করেছেন। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

আপনার জন্যও রইল অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

দেখে তো মনে হচ্ছে অনেক পুরনো ঘর। তবে অনেক ভালো লাগলো দেখে। উপস্থাপন

যেমন রুহু, তেমন ফেরেস্তা। ঐ হলো আর কি। ভাল থাকেন।