জাদুঘর একটি দেশের প্রাচীন এবং নবীন ইতিহাস আমাদের মাঝে উপস্থাপন করে। জাদুঘর পরিদর্শনের গেলে একটি দেশের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায় এবং বর্তমান পরিস্থিতি জানা যায়। জাদুঘরে সংরক্ষিত হয় সেই দেশের প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য। দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উপাদান জাদুঘরে দেখা যায়। জাদুঘরে দেখা যায় না এমন জিনিস খুব কমই থাকে সেই দেশের মাঝে। বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরে গেলেই আপনার দেখা মিলবে বাংলাদেশের নানারকম ঐতিহাসিক জিনিসপত্র এবং সাংস্কৃতিক জিনিসপত্র।বিভিন্ন দেব দেবীর মূর্তির সঙ্গে নানা রকমের ভাস্কর্য চোখে পড়বে।
তৃতীয় তলার গ্যালারীতে গেলেই আপনারা দেখতে পাবেন বিভিন্ন ধরনের মূর্তি। দেখেই বোঝা যায় মূর্তি গুলো বেশ পুরাতন দেব দেবীর। কেননা আধুনিক সকল দেব দেবীর মূর্তি আমি চিনি। কিন্তু এগুলো দেখে বেশ অবাক হলাম। একটাও চিনতে পারলাম না ভালো করে। একটা শিবের মূর্তি শুধু চিনতে পেরেছি। বাক সবগুলোই নাম দেখে দেখে চিনতে হয়েছে। কোনোটা সরস্বতী প্রতিমা আর কোনটা মহাদেব।
এছাড়াও বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরের রয়েছে একটি অশোক স্তম্ভ। এটি ভারতের জাতীয় প্রতীক ।
জাদুঘর আসলে কোনো একটি জাতির বা দেশের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। দেশীয় জিনিস পত্রের পাশাপাশি এখানে মেলে নানা রকমের আন্তর্জাতিক ইতিহাস ঐতিহ্য। যেমন ভারতে ময়ূর সিংহাসন রয়েছে এখন অন্য দেশে। কোহিনূর হীরা রয়েছে টেমস নদীর তীরে এক দর্শনের বস্তু হিসেবে। ব্যাপারটা কিছুটা তেমনই।
এবারে এই ভাস্কর্য টা দেখুন। চোখ স্থির হয়ে যাবে। ভাবুন আমাদের সেই অতীত কোন ইতিহাসের কথা মনে পড়ছে। হ্যাঁ ঠিকই ভেবেছেন। এ আমাদের সেই ভয়াবহ মুক্তিযুদ্ধের একটি ভাস্কর্য। বুকে গুলি খেয়ে মাটিতে থুবড়ে পড়ে আছে এই তরুণ। আহা সেইসময়ে যারা আমাদের এই সোনার বাংলাদেশের জন্য এমন করে জীবন টা বিলিয়ে দিয়েছিল তাদের জন্য কি আজ আমরা একটু দোয়াও করতে পারিনা? আমি দোয়া করি সেই সকল শহীদ বীরদের জন্য। যারা দেশকে বাঁচাতে নিজেদের জীবন বলি দিয়ে দিয়েছিলো। তাদের প্রাণের বিনিময় আমাদের এই সোনার বাংলা। একজন শিল্পী কি নিখুঁত হাতে সে মূর্তি ফুটিয়ে তুলেছেন।
এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মূর্তি। বিভিন্ন ধর্মের। বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা।
এই মূর্তি টাকে বলা হয়েছে দেবীর অবয়ব। অর্থাৎ দেবীর মূর্তির কিছুটা অবয়ব সৃষ্টি করা হয়েছে।
এরপর একটু এগুলেই দেখতে পাবেন নানা রকমের প্রাচীন যুদ্ধ সামগ্রী। ঢাল তলোয়ার, কামান, যুদ্ধ পোশাক। যুদ্ধে ব্যবহৃত এসব জিনিস দেখলে গা কিছুটা ছমছম করে উঠবে। নানা রকমের মাথায় দেওয়ার লোহার টুপি গুলোও বিশাল আকৃতির। এখানে ইশা খাঁর জিনিসপত্রও রয়েছে।
একটি বিশাল আকৃতির কামানের পাশাপাশি ছিলো ছোট বড় অনেক বন্দুক। আমি এখানে খুব কমই আপনাদের দেখাতে পারলাম।
এগুলো সেই প্রাচীন যুগের ব্যবহৃত কামান। কার্তুজ দিয়ে চলতো এগুলো। নবাব সিরাজউদ্দৌলার যুদ্ধে কামানের ব্যবহার হয়েছিলো। সম্রাট আকবর ভারতবর্ষে সর্বপ্রথম কামানের ব্যবহার করেন।
এগুলো দেখলে মনে হবে সত্যি বাস্তবে সে যুগের যুদ্ধ গুলো আপনার কল্পনার মাঝে ঘটে চলেছে। অসাধারণ সব সংগ্রহ।
বলুন দেখি এবার আপনাদের কী দেখাচ্ছি? এটি হলো আরেক বাংলার করুন ইতিহাসের সাক্ষী। নীল জাল দেওয়ার বিশাল কড়াই। এটা দেখেই বোঝা যায় কীভাবে এক বাংলা সমগ্র ইউরোপের নীল জোগান দিয়েছিলো। সে করুন কাহিনি নীলদর্পণ নাটক পড়লে আপনারা অনেকটা জানতে পারবেন। জোরপূর্বক চাষীদের নীল চাষ করা হতো। ১৮৬০ সালের দিককার ঘটনা। নীল জাল দেওয়ার এই কড়াই দেখলে আপনার মনে পড়ে যাবে সেই গরীব দরিদ্র চাষীদের কথা।
আজ এ পর্যন্ত থাক। আগামী পার্টে বাকি সবটুকু অংশ আপনাদের দেখাবো।
ছবিতে :@mstnusrat
ডিভাইস :Huawei
মডেল:y7pro
লোকেশন : National Museum Dhaka.
তৃতীয় গ্যালারির মূর্তি গুলো দেখতে বেশ চমৎকার দেখাচ্ছিল অনেককে নিখুঁত হাতের কাজ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আসলে জাদুঘরে গেলে অনেক নতুন অভিজ্ঞতা হয় এবং এগুলো আমার অনেক পছন্দের। আপনার অভিজ্ঞতাগুলোর খুবই সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। সব সময় এভাবেই সৃজনশীল কাজ করুন এটাই কামনা করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জাতীয় জাদুঘরে কয়েকবার গিয়েছি । তবে শেষবার যখন গিয়েছি তারপরে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে । যার ফলে ভিতরে কি কি দেখেছিলাম ভালোভাবে মনে নেই । আপনার ছবিগুলো দেখে অনেক কিছু মনে পড়ে গেল । জাদুঘরে গেলে আসলেই মনটা একটু অন্যরকম হয়ে যায় । পুরনো দিনের জিনিস দেখতে ভালই লাগে । নিজেদের অতীত সম্বন্ধে একটি ধারণা পাওয়া যায় । ভালোই লিখেছেন । ধন্যবাদ আপনাকে ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মতামতের জন্য। দোয়া করবেন আরও অনেক ভালো লিখতে পারি যেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জাদুঘরটি ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছিল কয়েকবার, খুব ভালো লাগলো আজকে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আরেকবার ঘুরে আসলাম, সত্যিই প্রাচীনকালের নিদর্শনগুলো খুব ভালো লাগে দেখতে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মতামতের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit