আজকের বিষয় এমন এক জাতিকে নিয়ে যাদের নিয়ে ছড়িয়ে আছে নানা কন্সপিরেসি আর মুখরোচক লোককাহিনী
#ড্রুইডস
প্রথমেই শুরু করি ড্রুইড শব্দটির মানে কি? এর অর্থ আর উৎপত্তি নিয়ের অনেক মতভেদ আছে। অনেকের মতে এর মানে হচ্ছে ' ওক গাছের সাথে পরিচিত'। আবার অনেকের মতে ' যাদের জ্ঞান খুবই মহান'। প্লিনীরা ড্রুইডদের ম্যাজাই বলে। ড্রুইডদের নিয়ে প্রথম লেখালেখি করেন স্ট্রাবো, ডিওডোরাস সিকুলিস, পসিডোনিয়াস আর জুলিয়াস সিজার। অনেকের মতে ড্রুইডরা দুই হাজার খ্রীস্টপূর্ব এর আগেও বিদ্যমান ছিলো। কিন্তু তাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি প্রসার হয় দুইশ খ্রীস্টপূর্ব এর দিকে৷ ড্রুইডারা ছিলো খুবই ক্ষমতাবান এমনকি তারা তাদের রাজ্যের রাজার থেকেও ক্ষমতাবান ছিল। তারা ছিল শান্তিপ্রিয়। কথিত আছে যে, ড্রুইডরা চাইলে যেকোন যুদ্ধ থামাতে পারত। যদি দুটো গোত্রে ঝগড়া লাগত, তাহলে তারা তাদের মাঝখানে গিয়ে দাড়াত আর যুদ্ধ থেমে যেত। কিন্তু তারা মানুষ বলি দিত। যাকে বলি দেওয়া হবে, তার পিঠে প্রথমে ছুরি মারা হত, তারপর মানুষটার হাত পায়ের কম্পন আর রক্তপ্রবাহ দেখে নানান ভবিষ্যৎ বাণী করা হত। তাদের ধর্মবিশ্বাস ছিল যে মহাবিশ্বের মত মানুষের আত্মাও অবিনশ্বর। তারা চারটা কালে বিশ্বাস করে, আইয়েস্তি নেমেতি, আইয়েস্তি উইরিওনাস, আইয়েস্তি ডানুইন, আইয়েস্তি মিলেটনিওন। ড্রুইডদের ধর্মে অগ্নিকুন্ড অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। ড্রুইডদের শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল মুখে মুখে। তাড়া বিজ্ঞান বা জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কে কখনো লিখে রাখত না। রোমানরা ড্রুইডদের পছন্দ করত না। এমনকি জুলিয়াস সিজার আইনও করেছিলেন যে, রোমের নাগরিক হতে চাইলে অবশ্যই বাধ্যতামূলকভাবে ড্রুইডবাদ চর্চা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অনেকদিন রোমানরা ব্রিটেন বা ড্রুইডদের জালাতন করেনি৷ কিন্তু ব্রিটেন জয় করার পর তারা ড্রুইডদের সমূলে উচ্ছেদ করতে চায়। তারা ওয়েলস পর্যন্ত তাদের তাড়া করে। ষাট খ্রিস্টাব্দে রোমানরা ড্রুইডদের অ্যাং লিসিতে পরাজিত করে। সর্বশেষ চুরাশি খ্রিস্টাব্দে ড্রুইডদের শেষ প্রতিরোধও ভেঙ্গে পড়ে।