N“ ঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্য চিত্রাংকন ’’ By nasrin111 [10% shy-fox + 5% abb-school]

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

আসসালামুয়ালাইকুম/আদাব

প্রিয় বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আমি বাংলাদেশের 🇧🇩 সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি।

IMG_20220705_143209.jpg

ও বউ ধান ভানো রে, ঢেঁকিতে পার দিয়া...।’ ঢেঁকির পাড়ে পল্লিবধূদের এমন গান বাংলার গ্রামীণ জনপদে সবার মুখে মুখে থাকত। ধান থেকে চাল, তা থেকে আটা। একসময়ে চাল আর আটা প্রস্তুতের একমাত্র মাধ্যম ছিল ঢেঁকি। নবান্ন এলেই ঢেঁকির পাড়ে ধুম পড়ত নতুন ধানের চাল ও আটা তৈরির। আর শীতের পিঠা তৈরি চলত গ্রামের প্রায় সব বাড়িতে।

তবে কালের বিবর্তনে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঢেঁকি। আর নতুন প্রজন্মের কাছে ‘ঢেঁকি’ শব্দটি শুধু অতীতের গল্প মাত্র। বাস্তবে এর দেখা মেলা ভার। দেশের দু–এক জায়গায় থাকলেও ব্যবহার তেমন একটা নেই। আশির দশক থেকে ক্রমে বিলুপ্তির পথে ঢেঁকি।

ঢেঁকিতে তৈরি করা আটা দিয়ে ঘরে ঘরে প্রস্তুত হতো পুলি, ভাপা, পাটিসাপটা, তেলে ভাজা, চিতইসহ নানা ধরনের বাহারি পিঠা-পুলি। পিঠার গন্ধ ছড়িয়ে পড়ত এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে। উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্‌যাপন করা হতো নবান্ন উৎসব। গ্রামীণ জনপদগুলোতে এখন বিরাজ করছে শহুরে আবেশ। তাই গ্রামে গ্রামে আর ঢেঁকি নেই, নেই পল্লিবধূদের মনমাতানো গান। কিছু জায়গায় নবান্ন উৎসব হলেও পিঠা-পুলির সমাহার আর চোখে পড়ে না। গ্রামবাংলার এমন চিরায়ত সব ঐতিহ্য এখন শুধুই স্মৃতি।

ঢেঁকিছাঁটা চাল শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী হওয়ায় তা দিয়ে গ্রামের শিশুদের জাউ তৈরি করে খায়ানো হতো। কিন্তু কাল চক্রের বিবর্তন ও যান্ত্রিক সভ্যতার আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে ধান থেকে চাল-আটা তৈরির একমাত্র মাধ্যম গ্রামীণ ঢেঁকি।

একসময় গ্রামের প্রায় সব সম্ভ্রান্ত পরিবারেই ঢেঁকি ছিল। ধান ভাঙা কল আমদানির পর গ্রামাঞ্চল থেকে ঢেঁকি বিলীন হওয়া শুরু হয়। ফলে গ্রামের মানুষ ভুলে গেছেন ঢেঁকিছাঁটা চালের স্বাদ। যান্ত্রিক সভ্যতা গ্রাস করেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কাঠের ঢেঁকিশিল্পকে। বর্তমান যুগের অনেকেই ঢেঁকি চেনে না। কালের পাতায় স্মৃতি হয়ে যাচ্ছে ঢেঁকি। যেখানে বসতি সেখানেই ঢেঁকি, কিন্তু আজ তা আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য থেকে মুছে যাচ্ছে। হাতের কাছে বিভিন্ন যন্ত্র আর প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ায় ঢেঁকির মতো ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই এখন হারিয়ে যাচ্ছে।

ঢেঁকি বড় কাঠের গুঁড়ি দিয়ে তৈরি। লম্বায় অন্তত ছয় ফুটের মতো। এর অগ্রভাগের মাথার কাছাকাছি দেড় ফুট লম্বা মনাই। মনাইয়ের মাথায় পরানো লোহার রিং (আঞ্চলিক ভাষায় চুরনও বলা হয়)। চুরন বারবার

বর্তমান সময়ে কিছু কিছু বাড়িতে ঢেঁকি থাকলেও তা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য ব্যবহার করা হয়। আগের তা হতো না। এখন প্রতি কেজি চাল থেকে আটা প্রস্তুত করতে নেওয়া হয় ১০–১২ টাকা। ঢেঁকির মালিক নিজের লোকবল দিয়েই ওই আটা প্রস্তুত করেন। আধুনিক মেশিনে প্রস্তুত করা আটার তৈরি পিঠায় স্বাদ না থাকায় কিছু মানুষ টাকা দিয়েই ঢেঁকিতে আটা তৈরি করতে আসে।তো চলুন শুরু করা যাক ঢেঁকিতে ধান ভানার সেই পুরনো দৃশ্যর চিত্রাংকন।

IMG-20220705-WA0001.jpg

প্রয়োজনীয় উপকরণ -ঃ

  • সাদা কাগজ

  • পেন্সিল

  • প্যাস্টেল রং

  • স্কেল

ধাপ-১

IMG-20220705-WA0003.jpg

প্রথমে একটি সাদা কাগজ নিলাম।

ধাপ-২

IMG_20220705_143102.jpg

এরপর একপাশে ঘর আকিয়ে নিলাম আর একপাশে একটি লম্বা দাগ টানিয়ে নিলাম।

ধাপ-৩

IMG_20220705_145000.jpg
এবার একটি বাঁশ আঁকিয়ে নিলাম।

ধাপ-৪

IMG_20220705_144644.jpg

এরপর দুইটা বাঁশ সহ একটি মহিলা আঁকিয়ে নিলাম।

ধাপ-৫

IMG-20220705-WA0006.jpg
এরপর একটি মহিলা, দুইটি বাঁশ, একটি ঝুড়ি, একটি ছোট ঘর, মেঘ আঁকিয়ে নিলাম।

ধাপ-৬

IMG-20220705-WA0007.jpg
এবার প্রথমে ঘর রং করে নিলাম।

ধাপ-৭

IMG_20220705_143110.jpg

এরপর সম্পন্ন ঘর রং করে নিলাম ।

ধাপ-৮

IMG_20220705_143331.jpg
এরপর আকাশ রং করে নিলাম।

ধাপ-৯

IMG-20220705-WA0019.jpg
এবার আকাশের নিচের আংশ রং করে নিলাম।

ধাপ-১০

IMG_20220705_143241.jpg

এবার দূরের গাছ গুলো রং করে নিলাম।

ধাপ-১১

IMG_20220705_143142.jpg
এবার ছোট ঘর আর গাছ রং করে নিলাম।

ধাপ-১২

IMG-20220705-WA0011.jpg

মাঠ রং করে নিলাম।

ধাপ-১৩

IMG-20220705-WA0012.jpg

এবার একটি মহিলাকে রং করে নিলাম।

ধাপ-১৪

IMG-20220705-WA0013.jpg

এবার দ্বিতীয় মহিলাটিকে ও রং করে নিলাম রং করে নিলাম।

ধাপ-১৫

IMG_20220705_143155.jpg

এবার ঢেঁকি , ঢেঁকির গোলা আর ঝুড়ি রং করে নিলাম।

ধাপ-১৬

IMG_20220705_143224.jpg

পুরো উঠান রং করে নিলাম।

শেষ ধাপ

IMG_20220705_143209.jpg

আর এর মাঝেই শেষ হয়ে গেল ঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্য। আজ কাল আর এই দৃশ্যটি দেখা যায় না ।
বর্তমান যুগের অনেকেই ঢেঁকি চেনে না। কালের পাতায় স্মৃতি হয়ে যাচ্ছে ঢেঁকি। যেখানে বসতি সেখানেই ঢেঁকি, কিন্তু আজ তা আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য থেকে মুছে যাচ্ছে। হাতের কাছে বিভিন্ন যন্ত্র আর প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ায় ঢেঁকির মতো ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই এখন হারিয়ে যাচ্ছে।
আপনাদের কেমন লেগেছে কমেন্ট এর মাধ্যমে তা জানিয়ে দিবেন।
image.png

ফোনের বিবরণ

ফোনRealme C17
ধরণঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্য
ক্যমেরা মডেলC17
ক্যাপচার@nasrin111
অবস্থানসিরাজগঞ্জ- বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

20210722_185350.jpg

আমি মোছা.নাসরিন খাতুন।বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি একজন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। ঘোরাফেরা করতে আমি খুবই ভালোবাসি।সুযোগ পেলেই পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হই। আমার ইচ্ছা বাংলাদেশের সকল দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করব। ভ্রমণ করার পাশাপাশি আমি বাগান করতে খুব ভালোবাসি।আমার বাসায় ফুলের বাগান আছে। অবসর সময়ে আমি বাগানের পরিচর্চা করি। আমার বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ রয়েছে। এছাড়াও অবসর সময়ে আমি বই পড়ি।বই পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে।সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

👉সবার প্রতি শুভেচ্ছা এবং পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ও ধান ভানিরে ঢেঁকিতে পা দিয়া
ঢেকি নাচে আমি নাচি হেলিয়া দুলিয়া

আসলে চিরাচরিত এই গানটি মনে পড়ে গেল আপনার চিত্রটি দেখে। এত সুন্দর চিত্র যে বুঝেই যাচ্ছে না হাতে আঁকা। মনের মাধুরী মিশিয়ে রং তুলিতে একে ফেলেছে আসলেই অসাধারণ।

ঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্য চিত্রাংকন অসাধারণ হয়েছে। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে এই চিত্রটি অংকন করেছেন। আপনার দক্ষতা আমার কাছে ভালো লেগেছে। দারুন এই চিত্র অঙ্কন করে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্য বান বক্তব্য আমাকে জানার জন্য। দোয়া করবেন পাশে থাকবেন।

বড়দের থেকে গল্প শুনেছি আগে নাকি এভাবেই ঢেঁকিতে ধান ভানা হতো। অসাধারণ চিত্র অংকন করেছেন আপনি। পুরনো দিনের কথা মনে করে দিলেন। ধন্যবাদ আপনাকে এবং সেই সাথে শুভকামনা রইল।

ঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্য চিত্রাংকন দেখে খুব ভালো লাগলো। বাংলাদেশের পুরান একটাই ঐতিহ্যবাহী চিত্রাংকন করেছেন আপনি। বিশেষ করে ঢেঁকির চিত্রাংকন আমার কাছে খুব ভালো লাগলো। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ এবং অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।

আপনি যে চিত্রাংকনটি আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন আসলে এটি আমাদের দেশের একটি ঐতিহ্য,যেটি বহু আগে হারিয়ে গেছে। এখন আর এই রকম চিত্র চোখে পড়ে না। শুধুমাত্র বই এর পাতায় বা ইতিহাসের পাতায় রয়ে গেছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ঐতিহ্যবাহী একটি চিত্র উপহার দেওয়ার জন্য।

আপনি ঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্য চিত্রাংকন করেছেন এক কথায় দুর্দান্ত হয়েছে। আসলে এরকম পোস্ট দেখতে খুবই ভালো লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

আপনার চিত্রাংকন দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম আপু। খুবই চমৎকার লেগেছে আমার কাছে। এই দৃশ্যগুলো এখন আর দেখা যায় না। আমাদের এলাকায় এখন প্রায় বিলুপ্ত। এত চমৎকার একটি চিত্র অংকন আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

image.png

এককথায় মাইন্ড ব্লোয়িং একটি চিত্র প্রস্তুত করেছেন খুবই খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে আমি ছোটবেলায় দেখেছি আমাদের বাড়িতে একটি ঢেঁকি ছিল যেখানে মানুষ ধান মাড়াই করত আপনার চিত্রটি দেখে ছোটবেলার কথা মনে হয়ে গেল এখনো মাঝে মাঝে দেখা মেলে অনেক বাড়িতেই এরকম ঢেঁকি

বাস্তবে ঢেঁকিতে ধান ভাঙার দৃশ্য আমি কখনো দেখিনি। সব সময় ছবিতেই দেখে এসেছি। খুবই সুন্দর হয়েছে আপু আপনার ড্রয়িং টি। বরাবরই খুব সুন্দর সুন্দর ড্রইং আমাদের মাঝে শেয়ার করেন। আপনার ড্রয়িং গুলো আসলেই খুব ভালো লাগে। শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্য চিত্রাংকন খুবই সুন্দর হয়েছে। আপনি গ্রামীণ ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন এই চিত্রের মাধ্যমে। সত্যি আমার অনেক ভালো লেগেছে। সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে উপস্থাপনা অসাধারণ ছিল।

গ্রামে আগে এই রকম দৃশ্য অনেক দেখা যেতো। তবে বর্তমানে ঢেঁকির ব্যবহার খুব কমই দেখা যায়। এখন মানুষ মেশিনের মাধ্যমে সব কাজ করে। আমার সব গুলো কাজক জরুরী বিষয়।

আপনার চিত্রাংকন টি দেখি আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। এটা দেখতে অসাধারণ হয়েছে। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি চিত্রাংকন আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ‌।

ওয়াও আপু ঢেকিতে ধান ভাঙ্গার অনেক সুন্দর চিত্রাংকন করেছেন। দেখেই তো মনে জুড়িয়ে গেল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি চিত্রাংকন আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। এমন গ্রামীন চিত্রাঙ্কন অনেকদিন দেখা হয় না।তাই দেখে খুব ভালো লেগেছে।