ইভটিজিং প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই || ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য 🇧🇩

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম

আজ ২৯ শে সেপ্টেম্বর ২০২১ইং
রোজঃ বুধবার

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সকলেই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকের বিষয়টা ব্যতিক্রম। আজকের প্রতিবেদনের বিষয়টা ছিল ইভটেজিং নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।



ইভটিজিংঃ



ইভটিজিং মানব সমাজের একটি জঘন্যতম অপরাধ। অপরাধ নয় আমার কাছে মনে হয় এটি একটি সংক্রামক ব্যাধি।ইভটিজিং নিয়ে লেখার আগে আমাদের বোঝা উচিৎ, ইভটিজিং কি?ইভটিজিং একটি ইংরেজি শব্দ। শব্দটি সন্ধিক্ষণে যুক্ত।

এর একটি হচ্ছে ইভ যার বাংলা ব্যাবহারিক অর্থ হচ্ছে নারী আর অপরটি হচ্ছে টিজ যার বাংলা ব্যাবহারিক অর্থ হচ্ছে উত্যক্ত। এর সাথে ইংরেজি ing যুক্ত হয়ে এটি হয়েছে টিজিং। অর্থাৎ উত্যক্ত করা। মোট কথা দাড়ায় ইভটিজিং শব্দের বাংলা ব্যাবহারিক অর্থ হচ্ছে নারী উত্যক্ত করণ।আমাদের দেশের ছাত্র ও যুবসমাজের দ্বারা প্রায়শই এদেশের নারীসমাজ ইভটিজিংয়ের স্বীকার হয়ে থাকে। এই ইভটিজিং কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ নয়।ইভটিজিং রাজপথ থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গন এমনকি রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও বিস্তৃত। আর যে রাষ্ট্র পুরুষ কতৃক শাসিত হয় সেখানে তো নারী শব্দটাই একটি অস্বীকৃতি জনক।অনেকাংশেই লক্ষ্য করা যায়, পুরুষেরা প্রতিনিয়তই নারীদেরকে একটু ছোট করে দেখে। তাহলে বোঝা যায়, ইভটিজিংয়ের জন্য দায়ী পুরুষের অজ্ঞ দৃষ্টিভঙ্গিও।কারণ, একটি প্রচলিত প্রবাদ-প্রবচনও রয়েছে যে,দৃষ্টিভঙ্গি বদলান,জীবন বদলে যাবে। প্রবাদটি আমার কাছে শতাধিক গ্রহণযোগ্য।এখন বিষয়টা হলো ইভটিজিং প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো।আর এটি বাস্তবায়নে প্রয়োজন সচেতনতা। সচেতনতার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধাপ।বলতে গেলে বলা যায়, ধর্মীয় অনুভূতিও সচেতনতা তৈরিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।কারণ, পৃথীবিতে নানা ধর্মাবলম্বী মানুষ রয়েছে। আর আমার মনে হয় সকল ধর্ম অবশ্যই মানুষকে নৈতিক শিক্ষা দান করে।আর সকলেরই নিজ ধর্মের প্রতি রয়েছে অঘাত বিশ্বাস। বিশ্বাসই হচ্ছে ধর্মের মূল স্তম্ভ। যেমন, আমি ধর্মীয় দিক থেকে একজন ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ। আমার ধর্মে বলা হয়েছে 'আশরাফুল মাখলুকাত'অর্থ হচ্ছে মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।আবার অন্যত্রে,বলা হয়েছে প্রত্যেক মায়ের পদতলে রয়েছে সন্তানের জান্নাত। এক্ষেত্রে বোঝাই যায় যে,নারীদের কত সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে। আর প্রত্যেক ধর্মই মানুষকে এভাবেই শিক্ষা দেয় বলে আমি বিশ্বাসী। এভাবে যদি আমরা নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব জাগিয়ে তুলতে পারি তাহলেও ইভটিজারদের মনে একটু হলেও সচেতনতা তৈরি হবে বলে আমি বিশ্বাসী।আর নারীরা তো সমাজে প্রতিনিয়তই অবহেলিত হচ্ছে। সত্যি কথা বলতে কি নারীরা সৃষ্টিগত দিক থেকেই একটু নমনীয়। তাদের হৃদয়টা পুরুষের তুলনায় অনেক কোমল।পুরুষের মতো তারা কর্কট ব্যাবহার করতে পারে না।তাদের অনেক কিছু বিষয় আছে যেগুলো চাইলেও প্রকাশ করতে পারে না বা প্রকাশ করার মতোও নয়।কিন্তু তার মানে এই নয় যে,তারা বুদ্ধিবৃত্তির দিক থেকেও দূর্বল।আমরা পুরুষেরা এভাবেই নারীদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে উত্যক্ত করে থাকি।কিন্তু বর্তমান যুগটা আর আগের মতো নেই। যে,'জোর যার মুল্লুক নাকি তার।'না।এখন দিনবদলের পালা এসেছে। এখন হবে 'বুদ্ধিবৃত্তি বেশি যার,মুল্লুকটাও এখন তার।'কারণ, প্রযুক্তির যুগে পেশি শক্তি এখন দূর্বল।মেধাপরিচয় এখন সবকিছুর উর্দ্ধে।এখন সকলেই নিজেদের অধিকার সম্পর্কে অনেক দায়িত্বশীল।প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বিশ্ব দরবারে এখন মহাবিপ্লব ঘটেছে।


Source

আর আমাদের দেশে দেখা যায় রাস্তাঘাটে মেয়েসন্তানগুলো বা ছাত্রীগুলো যখন স্কুল-কলেজে যায় তখন বখাটে ছেলেরা মুখ থেকে শিস্ দেয়।চোখের মাধ্যমে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে থাকে। এক্ষেত্রে, একজন ছাত্রী মারাত্মক আকারে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে তার বুদ্ধিমত্তায় বিশাল কালোচ্ছায় বিরাজমান হয়।এসময় সে লজ্জায় কিংবা মানসম্মান রক্ষার্থে নীরব ভূমিকা পালন করে। আবার প্রতিবাদ করতে গেলেও মহাবিপদ। উত্যক্তের স্বীকার হয়ে প্রতিবাদী মনোভাব প্রকাশ করতে গেলেই একদিকে বখাটেদের নোংরামির স্বীকার হওয়ার ভয় অন্যদিকে লোকলজ্জার আশঙ্কা। কারণ, এই অজ্ঞ সমাজ প্রকৃত কারণ না জেনেই মানুষকে অবজ্ঞা করতে পারে খুব সহজেই। আর নারী হলে তো সেটার রুপ আরো ভয়াল। কাজেই নারীরা প্রকৃতিগতভাবেও অনেকটা নিরুপায়।
নারীরা একদিকে যেমন সামাজিক বিভিন্ন স্থানে ইভটিজিংয়ের স্বীকার তেমনি পরিবারের কাছেও ভিন্নভাবে ইভটিজিংয়ের স্বীকার।এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সচেতনতার বিকল্প নেই।


[Source]

ইভটিজিং প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাংবিধানিক জায়গাতেও রয়েছে আইনী দূর্বলতা।সেখানে বলা আছে ইভটিজিংয়ের দায়ে একজন ছেলে দায়গ্রস্ত হলে সর্বোচ্চ এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে।আর এই পর্যায় পর্যন্ত যাওয়ার জন্যও একজন নারীকে চেষ্টা করতে হয় পাহাড়সম।ফলে,ইভটিজিং প্রতিরোধে আমাদের রাষ্ট্রীয় আইনের সংবিধানও আরো বলবৎ করা দরকার বলে আমি মনে করি।


[Source]

পরিশেষে একটি কথা না বললেই নয় যে, ইভটিজিং প্রতিরোধে প্রধান করণীয় হচ্ছে সচেতনতা।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অনেক সুন্দর বিষয় উপস্থাপন করেছেন,বর্তমানে আমাদের দেশে ইফটিজিং এর পরিমান অনেক বেশি, তবে সবাইকেই সচেতন এবং সাবধানতার সহিতে চলাচল করতে হবে।

জি ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে। যথোপযুক্ত একটি কমেন্ট করার জন্য। ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে আরো সোচ্চার হতে হবে।

কপিরাইট আইন লংঘন করার জন্য আপনার এই পোস্ট Mute করা হচ্ছে । আপনি নিজের ফটো অথবা কঁপিরাইট ফ্রী ফটো ছাড়া আপনার পোষ্টের মধ্যে ব্যবহার করতে পারবেন না।

কমিউনিটির নিয়মাবলী ভালোভাবে পড়ে নিন:
https://steemit.com/hive-129948/@rme/privacy-policy-last-updated-privacy-policies-of-amar-bangla-blog-community-30-sep-21

যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।

Discord server link: https://discord.gg/h4hMjcuu

Source: https://www.onmanorama.com/news/kerala/2018/04/03/kochi-eve-teasing-tvpm-violence-against-women.html