প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
আপনারা তো জানেনই মাত্র কয়েকদিন আগেই ফিরেছি কেরালা ভ্রমণ করে। সেই রেশ যেন আর কাটে না৷ তাছাড়া শীতকালে আমি ঘুরে বেড়াতেই বেশি ভালোবাসি। এখন মেয়ের পড়াশুনোর কারণে অহরহ দূরে কোথাও যাওয়া হয় না৷ তবে ছোটখাটো আমনে সামনে চলে যাই হঠাৎ করেই।
গত রবিবারই সকাল সকাল উঠে বেরিয়ে পড়লাম ভিত্তল কামাটে খেতে। ভিত্তল কামাট একটি ব্র্যান্ড। মুম্বাই থেকে পুনের ওপর দিয়ে হাইওয়ে ধরে গোয়া যাবার পথে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট দেখতে পাওয়া যায়৷ অর্থাৎ এদের অনেক আউটলেট রয়েছে। এর রেটিংও খুবই ভালো। বেশ কিছু বছর আগে মুম্বাইতে যখন থাকতাম তখন মুম্বাই থেকে গোয়া পর্যন্ত গিয়েছিলাম ড্রাইভ করে। তখনই ভিত্তল কামাটের কথা শুনেছিলাম। আর পুরো রাস্তাতে যতবার খেতে দাঁড়িয়েছি এখানেই খেয়েছি৷ আর রীতিমতো ফ্যান হয়ে গেছি৷
আমি আসলে বাইরে বেরলে খুব একটা ননভেজ খাবার খেতে পারি না৷ আর ভিত্তল কামাট সমস্ত ধরণের খাবার বানালেও সবই ভেজ খাবার৷ আর এখানে সব থেকে ভালো লাগে মারাঠি খাবার গুলো। যেমন মিশেল পাও৷ রবিবার আমার হঠাৎ করেই খুব মিশেল পাও খেতে ইচ্ছে হয়েছিল। তাই চলে গেলাম। বর্তমান পুনের বাড়ি থেকে খুব একটা দূরে না, ঘন্টা খানেকও লাগে না৷
পৌঁছেই টেবিলে বলে আগেই অর্ডার দিয়ে দিলাম৷ মিশেল পাও আর সাবুদানা বড়া। মিশেল পাও এক অদ্ভুত খাবার। আপনারা হয়তো কল্পনাই করতে পারবেন না এমন খাবারও কেউ খায়৷ পাও মানে পাওরুটি৷ কিন্তু সাইজটা গোল। খুবই পাতলা ও নরম হয়। আর সাথে যে ঝোলটা দেখছেন তা আসলে অঙ্কুরিত মটকি(একধরণের ডাল জাতীয় দানা)র লাল টকটকে ঝোল৷ যা বাটিতে দেওয়ার পর ওপর থেকে বড় বড় গাঠিয়ার ফরসান অর্থাৎ চানাচুর দেওয়া হয়। ওপর থেকে পেঁয়াজকুচি আর লেবু ছড়িয়ে দিলেই আহ! অসাধারণ লাগে খেতে।
মহারাষ্ট্রের কিছু খাবার সত্যিই মুখে লেগে থাকার মতো। এটিও তার মধ্যে একটি। কেরালার খাবার খাওয়ার পর মিশেল পাও খেয়ে মুখের স্বাদ বদলালো যেন। মিশেল পাও ঝাল হয় বলেই এক প্লেট সাবুদানা বড়া নিয়েছিলাম৷ বড় বড় সাবুদানা ভিজিয়ে রেখে তাতে আলু সেদ্ধ মেখে চীনাবাদামের গুড়ো পেয়াজ ধনেপাতা নুন কারিপাতা ইত্যাদি আরও কিছু উপকরণ সহযোগে মেখে নিয়ে গরম তেলে ডুবিয়ে ভাজা হয়। মিষ্টি দই দিয়ে খেতে দেয় ভিত্তল কামাটে৷ সেও যেন অমৃত সমান।
তো এই ছিল হঠাৎ প্রাতঃরাশের গল্প। অনেক মজার ছিল সব কিছু। আর বেড়ানোর রেশ কাটছিল না বলে এই ছোট্ট আউটিংটা আমাদের সবাইকে বেশ চনমনে করে তুলেছিল। আর সকাল সকাল হাইওয়ে ড্রাইভিংটাও মনোরম করে তুলেছিল। শীতের নীল আকাশ দেখে মন প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছিল।
বিনা পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া এরকম বেরিয়ে পড়া মানেই চমক আর উচ্ছ্বাস নিয়ে আসে। সামান্য ছুটির দিনও হঠাৎ করেই বিশেষ দিন হয়ে ওঠে। আপনারা কি বলেন? কি মনে হচ্ছে বন্ধুরা বড্ড হুজুগে আমি? কোন কোন সময় একটু হুজুগে হতে যা জীবনে রঙ এনে দেয়। নইলে তো সবই একই নিয়মে চলতে হয় তাই চলার মতো অবস্থা।
যাইহোক বন্ধুরা আপনারাও ভালো থাকবেন আর জীবনকে নিজ নিজ জায়গা থেকে রঙিন করে তুলবেন এমন প্রত্যাশা রাখি৷ আবার আসব আগামীকাল। আজ এই পর্যন্তই।
টা টা
পোস্টের ধরণ | লাইফস্টাইল ব্লগ |
---|---|
ছবিওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | স্যামসাং এফ৫৪ |
লোকেশন | পুণে,মহারাষ্ট্র |
১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাদের দেশে অনেক সুস্বাদু ইউনিক খাবার পাওয়া যায়। আপনি আজকে যে খাবারটি খেয়েছেন এটি আমাদের দেশে পাওয়া যায় কিনা সন্দেহ। আমার তো দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুব ভালোই লাগবে। যাই হোক আপনার পোস্টটি পড়ে নতুন এক ধরনের খাবারের সন্ধান পেলাম। মিশেল পাও নামটাও খুব অদ্ভুত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু এখানে অনেক ধরনের খাবার পাওয়া যায় যেহেতু প্রতিটা রাজ্যের সংস্কৃতিগুলো আলাদা আলাদা তাই খাওয়া-দাওয়াও পাওয়া যায় ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://x.com/neelamsama92551/status/1877774363543458162?t=h77xnyLyPoT2vkpDspb-Hw&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দিদি আপনার হঠাৎ প্রাতঃরাশ সারতে সকাল সকাল ভিত্তল কামাট-এ যাওয়ার অনেক তথ্য জানতে পারলাম। আসলে মাঝে হুটহাট বের না হলে প্লান করে সব কিছু হয় না। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন। হঠাৎ বেরনোতে অভিজ্ঞতা খারাপ হয়নি। এভাবেই তো জীবনের ছোট ছোট অধ্যায়কে স্মরনীয় করে তোলে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit