প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
বেশ কয়েক মাস আগে যখন প্রবল বৃষ্টিতে আমরা নাজেহাল হয়ে যাচ্ছিলাম, সেই সময় হঠাৎ এক রবিবার দু তিনটি পরিবার মিলে ঠিক করলাম মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে ছোট্ট একটি পাহাড়ি অঞ্চলে মর্নিং ওয়াক করতে যাব। হঠাৎই প্ল্যান ঠিক হয়েছিল মাঝরাতে আর ভোর বেলায় বেরিয়ে পড়েছিলাম। সাধারণ ট্র্যাক প্যান্ট আর হাতে ছাতা নিয়ে। আমাদের যিনি টিম লিডার তিনি যথারীতি বেশ কয়েক কিলোমিটার ভুল পথে নিয়ে গিয়ে আবার ফিরিয়ে এনে সঠিক মন্তব্যে পৌঁছে দিল। মর্নিং ওয়াকের জন্য এখানে সবাই আসে তবে অদ্ভুত সৌন্দর্যের একটি জলাশয় রয়েছে যা দেখলে মনে হবে কোন এক যুগে মানুষ এই জায়গা থেকে পাথর কেটে পুকুর বানিয়েছে। আসলে কিন্তু তা নয় বহু বছর আগে কোন এক ভূমিকম্পে নির্দিষ্ট একটু জায়গা নেমে যায়। বর্ষার জল জমে ওই নিচু জায়গায় জলাশয় সৃষ্টি করে এবং নানান গাছপালা ফুল মিশিয়ে প্রকৃতি নিজেই নিজের শোভা বাড়িয়ে নিয়েছে। তবে শুধু ফুল গাছপালা বললে ভুল হবে এখানে আমরা ময়ূর দেখেছি আর অনেক হনুমান দেখেছি। ময়ূর বা হনুমান এরা তো প্রাকৃতিক তাই যেখানে খোলা প্রকৃতি নিজের মত বাঁচে সেখানে এদের তো দেখা যাবেই। ও হ্যাঁ হরেক রকমের পাখিও ছিল বটে। ময়ূর গুলো উঁচু গাছে উঠে বসেছিল ছবি তুলতে পারিনি।
আজকে যখন ভাবছি ফটোগ্রাফি পোস্ট করব গ্যালারিতে দেখলাম এই ছবিগুলো রয়েছে। তাই নিয়ে চলে এলাম শীতের সকালে কিছু বৃষ্টিস্নাত আহ্লাদী আলোকচিত্র।
ভুল পথের বাঁক
ছবির বিবরণ-
ঘুমের ঘোরে যে মানুষ ভুল করে তা আমরা অনেকেই জানি, কিন্তু বাড়ি থেকে বেশ কিছু পথ গাড়ি চালিয়ে এসেও পথ ভুল করল এ বেশ হাস্যকর। রাস্তা মোটেই ভালো ছিল না জল কাদায় ভরা। অনেকটা সময় নষ্টের পরেও যখন দেখলাম জঙ্গলের মধ্যে অনেকগুলো ময়ূর তাদের বিশাল ল্যাজ ঝুলিয়ে বসে বসে ডাকছে আর রাগ করলাম না।
ছবি সম্পর্কে আমার অনুভূতি-
কিছু ভুল পথে হেঁটে গেলে পৃথিবী ফিরে দেখুক বা না দেখুক আমরা পাশ কাটিয়ে চলে যাই আরও একটা পথের দিকে, যেখানে অনন্ত ভেবে একাকী ভেবে ঢুকে পড় মস্ত ভুলের গর্ভগৃহে৷
পথিক নাকি পাথেয়
ছবির বিবরণ -
ভদ্রমহিলাকে দেখতে এরকম ছিপছিপে হলেও আসলে কিন্তু তা নয়। সবার শেষে হাটার অভ্যেস, তাই আমাকে আরো পিছিয়ে পড়তে হয়। কারণ ওকে ফেলে এগিয়ে যাব সেই সাহস নেই। দিনশেষে যাই হোক মা তো। তবে প্রকৃতির বুকে আমরা সকলেই সন্তান, সেদিনও ছিলাম আজও আছি।
ছবি সম্পর্কে আমার অনুভূতি -
ইতিহাস থেকে প্রাগৈতিহাস বাউলের ঔদাসিন্য-
এই সমস্ত পথ ধরে তুমি ফিরে আসো
অথচ হেটে গেছো বহুদূর,
ছোট্ট ছোট্ট ছেলেবেলা থেকে বৃহৎ দুপুরে,
তোমার মত আমি, আমার মত তুমি...
যেমন বাঁচি তেমনই সুখ
ছবির বিবরণ -
মেয়ের পেছন পেছন হাঁটতে হাঁটতে বাঁ দিকে চোখ ঘোরাতেই দেখলাম অবাক পৃথিবী৷ অবহেলায় পড়ে আছে অথচ সুন্দর হতে তার কোন বাঁধা নেই৷ সকাল সকাল।এমন দৃশ্য দেখলে মন কিভাবে ভালো না হয়ে পারে বলুন। যাবার পথেই দুই জায়গা থেকে দুটো ছবি৷ তাই এক সাথে দিলাম।
ছবি সম্পর্কে আমার অনুভূতি-
সুখ বড়ই নিজের, সকাল বেলায় গোলাপ পাতা ফুটিয়ে কাপে ঢেলে যখন সূর্য মাখতে বসি আমাকে কেউ বলে না আরও একটু সুন্দর হতে। অবহেলায় ফেটে পড়া পা, শুকনো ত্বক, উসকো চুল... কোথায় থেকে জানি চোখ গেল পাখি ডাকে আজকাল। বড্ড জোর তার কন্ঠে৷ কি ভাবে কি জানি! এতোই বিরক্তি, যদি সামনে আসত বলতাম জোরে, 'তোর কি রে? আমি এমনই সুন্দর, আমি যে আস্ত পৃথিবী'
লুকোচুরি
ছবির বিবরণ -
উপরের ছবিতে যে জলাশয় টা দেখলেন ওই জলাশয় কিন্তু নেমে যাওয়া যায়। আমরাও নেমেছিলাম। সামনে বেশ কিছু পাথর আর বড় বড় গাছের ফাঁক দিয়ে ভীষণ ভালো লাগছিল। প্রকৃতির খেলায় আমরা যেন বারবারই হেরে যাই। এইসব ভাবতে ভাবতেই ছবিটা তুলে নিয়েছিলাম।
ছবি সম্পর্কে আমার অনুভূতি-
থান ইটের মাপ অনুযায়ী উল্কাপাত ঘটাতে উদ্ধৃত সোনামুখ প্রয়োজনে সেমিজ খুলে দাঁড়িয়ে পড়ে৷ অধিকারের জবানবন্দীতে লিখে রাখে ব্ল্যাকমেইলের রকম ফের৷ শূন্যে তুলে রাখা পা, বাড়ন্ত নখ, বাহারি চুল সকলেই যোগ দেয় লুকোচুরি রুটমার্চে। যেভাবে তার আত্মার অশুদ্ধি থেকে নামতে নামতে দাঁড়িয়ে পড়ে খাদের ধারে। খাদ দেখে না৷ দেখে দীর্ঘ চাঁই চাঁই পাথর, মুহুর্মুহু আছড়ে পড়ছে বিষন্ন পশ্চিমঘাট৷ সে ছুটছে একটি পুরুষের দিকে, হাত বাড়িয়ে আছে - জ্বলন্ত বৈরাগ্য। যতই এগোয় পুরুষটি মিলিয়ে যায় গভীর অরণ্যে৷ অযুত নিযুত নক্ষত্রের সারি। নয় গ্রহ, গ্রহাণুপুঞ্জ মাথায় করে তুলে ধরছে আয়ুরেখার গৃহনির্মাণ৷
পরিত্যক্ত পিপাস
ছবির বিবরণ-
লুকোচুরি ছবিতে যে পাথরগুলো দেখা যাচ্ছে, ওই পাথরের উপর বসেই জলাশয়ের আরো কয়েকটা ছবি তুলে ছিলাম। এইদুটো তার মধ্য থেকে আপনাদের দেখালাম। এত সুন্দর জায়গা কারুর হস্তক্ষেপ পড়েনি, হয়তো কেউ ছুঁয়ে দেখেনি বলেই স্নিগ্ধ হয়ে বেঁচে আছে।
ছবি সম্পর্কে আমার অনুভূতি -
কোন কোন ঘুম মাদুরের মত
সবই সাজানো অথচ ঘরের পরিত্যক্ত কোনে
একা, অন্ধকারে গোটানো
কেউ তো বলেনি খারাপ থাকার কথা
অন্তত হাতটা মাথার ওপর রাখতেই পারো
ঘুমোনোর আগে...
বিনয়ী রাধা
ছবির বিবরণ-
কেউ কেউ জঙ্গলের মধ্যে অবহেলায় ফুটে থাকে ঠিকই কিন্তু তার রূপ সৌন্দর্যের কাছে মাথা নত করতে হয়।আমি মাথা নত করার কথা বলছি ঠিকই তুমি তো ফুলটি দেখুন কী সুন্দর বিনয়ী, যেন মাথা নত করে কার অপেক্ষা করছে।
ছবি সম্পর্কে আমার অনুভূতি -
অথচ মন্দিরেই যাবার কথা ছিল
অথচ,
The temple is just a known or unknown cycle.
শব্দে-শঙ্কায় -
আচ্ছা,
প্রাণনাথ সিরিজটা কতদূর
রাধা কি এখনও কৃষ্ণের দামাল প্রেমের নীচে
অঞ্জনিপুত্র
ছবির বিবরণ-
প্রকৃতি মানেই প্রাকৃতিক জিনিসের দেখা পাওয়া যায়। চিনতে পারছেন নিশ্চয়ই এ সম্পর্কে আমি বা আলাদা করে কি বলি।
ছবি সম্পর্কে আমার অনুভূতি -
পৃথিবীটা আমাদেরও, বাঁচতে দাও। অসম্ভব চাহিদার মাঝে ভারি ভারি চাকায় পিষে যেতে যেতে কার কথা যে ভাবো, দেখতেই পাওনা কত জীবন নষ্ট হয়ে যায়। আমরাও বাঁচতে চাই।খানিক বাঁচতে দাও।
এই ছিল আজকের নিবেদন, আপনাদের সাথে ফটো শেয়ার করতে করতে নানান ধরনের অনুভূতি মনের মধ্যে খেলে গেল। কেমন লাগলো আজকের পোস্ট অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন অপেক্ষায় থাকবো। আসি?
টাটা
পোস্টের ধরণ | ফটোগ্রাফি পোস্ট |
---|---|
ছবিওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | স্যামসাং এফ ৫৪ |
লোকেশন | পুনে, ভারতবর্ষ(https://what3words.com/merit.reefs.editor) |
ব্যবহৃত অ্যাপ | ক্যানভা, অনুলিপি |
১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
আপনার বর্ণনা পড়ে মনে হচ্ছে জায়গাটা বেশ সুন্দর । যেহেতু সভ্যতার ছোঁয়ায় কৃত্রিমতায় রুপ ধারন করেনি। তাইতো বেশ সুন্দরভাবে নিজেই নিজের রুপ তৈরি করে নিয়েছে প্রকৃতি। তবে ছবিগুলো বেশ সুন্দর হয়েছে। প্রকৃতির এমন রুপ দেখলে কি ফটোগ্রাফি না করে পারা যায়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ। অনেকটা সেরকমই আপু। প্রকৃতি নিজের মতক নিজেই সেজে উঠেছে৷ তাই তো সাজে৷ আমরাই মাঝে থেকে ঝামেলা জুড়ে দিই৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রকৃতি একেক সময় একেক রূপ ধারণ করে। আর প্রকৃতির ভিন্ন ভিন্ন রূপ দেখতেও ভালো লাগে। ফটোগ্রাফি গুলো সত্যিই অসাধারণ হয়েছে। আর দারুন ভাবে ফটোগ্রাফি গুলো উপস্থাপন করেছেন আপু। দেখে অনেক ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক তাই৷ প্রতিটি ঋতুতে প্রকৃতির আলাদা আলাদা রূপ।
ধন্যবাদ নেবেন আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর করে বেশ কয়েকটি এলোমেলো ফটোগ্রাফী আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার তোলা প্রতিটি ফুলের ফটোগ্রাফি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফী গুলো একটু বেশি ভালো লেগেছে। আসলে প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফী গুলো একটু বেশি ভালো লাগে আমার কাছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রকৃতি আমার ছবির থেকে অনেক সুন্দর৷ আমি শুধু আমার মতো ছেষ্টা করেছি ভাইয়া৷ আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম৷ ভালো থাকবেন৷ ধন্যবাদ জানবেন৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু ফটোগ্রাফির পাশাপাশি আপনার অনুভূতিগুলো পড়ে ও ভীষণ ভালো লাগলো । আপনি যেকোনো কথা খুব সুন্দর ভাবে ছন্দের সাথে গুছিয়ে লিখতে পারেন। কেনো যানি মনে হয় সবকিছুই কবিতা । ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি চেষ্টা করি আপু। আমার চেষ্টা আপনার মনে জায়গা করেছে এই টুকুই আমার প্রাপ্তি৷ অনেক ধন্যবাদ জানবেন৷ ভালো থাকবেন আপু৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://x.com/neelamsama92551/status/1858942127360930143?t=hD6HVvkBGH5x2WRjvcyaSw&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যেমন চমৎকার ফটোগ্রাফি করেছেন, ঠিক তেমনি বর্ণনা দিয়েছেন। ফটোগ্রাফি দেখে যেমন মুগ্ধ হয়েছি,ঠিক তেমনি বর্ণনা পড়ে আরো বেশি ক্রাশ খেয়েছি। আপনার পোস্টের কোয়ালিটি খুবই ভালো। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আপনারা যখন বুঝতে পারলেন আপনারা ভুল রাস্তায় চলে এসেছেন তখন হয়তো অনেক রাগ হয়েছিল ।যাইহোক আপনি অনেক সুন্দর কিছু জলাশের ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। যেটি দেখতে অসাধারণ লাগছে ধন্যবাদ আপু শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit