প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmQM7ayrukKZDk2yVe3HRUU8bR7poJUCjzjtVg95o28vGV/1000217199.png)
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmUMcyUFvuLnKBTNhLz5eSRbQYTFLghwQHrcqTbUpQDLPE/1000217200.png)
আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
দীর্ঘ বছর পর এমন দিনে দেশের বাড়িতে রয়েছি। এই সময়টা আমাদের গ্রামে ভীম পুজো হয়। এবং ভীম পুজো উপলক্ষে গ্রামের মাঠে ছোটখাটো মেলা বসে সাথে পরপর কয়েকদিন সন্ধ্যেবেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
গতকাল আমি এসেছি আমার শ্বশুরবাড়ির গ্রামে। এবং আজ আমি সেখানকারই গল্প করব।
আমাদের এই বাড়িতে বিরাট উঠোন আছে। আর সেখানে আমার দিদিভাই বেশ সুন্দর যত্ন করে শীতের বাগান করেছে। যা আজ আমি আপনাদের দেখাবো না। আজ বলবো এই গ্রামের বহু পুরনো বা বহু বছর ধরে চলে আসা ভীম পুজোর কথা। মাঘী পূর্ণিমার আগে যে একাদশী তিথি পরে সেই একাদশী হলো ভীম একাদশী।এই তিথি ধরেই ভীমের পূজো হয়। প্রবাসে থাকার কারণে আমি যে খুব একটা বেশি এই পুজো দেখেছি তা নয় আগে একবারই মাত্র দেখেছিলাম। আমার মেয়ে বড় হয়ে এই পুজোটা কখনোই দেখেনি। তাই আজ যখন পুজোর মাঠে গিয়েছিলাম তখন ওকে ভিডিও কল করে দেখলাম। একটু অবাক হয়ে বলেছিল ভীম তো কোন ঠাকুর নয় একটা মানুষ ছিল তার আবার পূজো কেন! কথাটা ফেলে দেবার মত নয়। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে আমরা আসলেই যাদের পুজো করে থাকি তারা প্রত্যেকেই কখনো না কখনো মানব রূপে পৃথিবীর ভূমিতে বাস করে গেছেন। সেই শ্রীকৃষ্ণই হোক কিংবা শিব। আর ভীমের কথা কে না জানে। পঞ্চপান্ডবের দ্বিতীয় পাণ্ডব রাজা বৃকোদর হলেন ভীম। পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে সব থেকে বেশি আবেগপ্রবণ এবং শক্তিশালী ভাই ছিলেন তিনি। তার খাবার দারুন দেখে অনেকেই তাজ্জব হয়ে যেত। মহাভারতের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমি যখন ভীম নিয়ে পড়াশোনা করছি আমার তখন ভীম কে মজাদারই লাগতো।
পড়তে পড়তে ভীমের একটা চিত্র মনের মধ্যে আঁকা হয়ে গিয়েছিল ঠিকই তবে তার সাথেই ঠাকুরের কোন মিল নেই। থাকবার কোথাও নয়।
আজ ভীম দর্শন উদ্দেশ্য ছিল না, উদ্দেশ্য ছিল বাচ্চাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখবার। আজ এখানে যোগব্যায়ামের নৃত্য অনুষ্ঠান প্রদর্শন হয়েছিল। ছোট ছোট বাচ্চা বাচ্চা মেয়েরা কি অসাধারণ যোগ ব্যায়াম করে তা দেখে আমি সত্যিই অবাক হয়ে গিয়েছি। কারণ আমাদের ঘর অনেক গ্রামে। এত গ্রামের ভিতর মেয়েদের আজকাল এইভাবে যোগব্যায়াম শেখানো হচ্ছে এবং স্টেজে পারফর্ম করতে পারছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
এই বাচ্চা গুলোর মধ্যেই কেউ কেউ ন্যাশনাল লেভেলে পারফর্ম করে গোল্ড মেডেল নিয়ে এসেছে। এই সমস্ত বাচ্চার বাবা-মাদের ধন্যবাদ জানাই যারা মোবাইলের যুগে দাড়িয়েও বাচ্চাদের একটি সুন্দর শৈশব দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা যখন বড় হয়েছি তখন বাড়ির মেয়ে রাস্তায় যে উঠে কোন কিছু করছে সে যেন অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। আমার মাকে দেখেছি আমার জন্য অনেক লড়াই করতে। কিন্তু আজকের যুগ পরিবর্তন হয়েছে এবং গ্রামগঞ্জে পরিবর্তন দেখা গেছে। মজার বিষয় আজকের যতগুলো গ্রুপ পারফর্ম করেছিল তাদের মধ্যে একটি ছেলে ছিল যে প্রত্যেকটা পারফরম্যান্স এই ভুল করছিল। তখন ভাবছিলাম মেয়েরা হয়তো সত্যিই একটু বেশি ফোকাসড৷ সমাজ যদি বহু যুগ ধরে ছেলে মেয়ে দুজনকেই এগিয়ে যাওয়ার সমান অধিকার দিতো তাহলে প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়েদের বড় কিছু করতে দেখতে পেতাম। কারণ আমি তো ভাবি যোগ্যতা সবারই আছে হয়তো একই বিষয় নয় কিন্তু প্রত্যেকের কোন না কোন বিষয়ে দক্ষতা অবশ্যই রয়েছে।
এসব ভাবতে ভাবতেই সন্ধ্যাবেলায় যোগ ব্যায়ামের নাচ গুলো দেখলাম। পরিচিত অনেকের সাথে দেখা হয়েছে যাদের আমি স্বল্প চিনি। আসলে এখানে কখনোই টানা থাকা হয় না তো মাঝেমধ্যে যেমন বেড়াতে আসি তখনই টুকটাক দেখা-সাক্ষাৎ হয়। তাই ওই রাস্তায় দাঁড়িয়ে যতটুকু কথা বলার ততটুকুই বলা হয়। আজ তাদের সাথে দেখা হল হাসি ঠাট্টা হলো। বেশ ভালো লাগলো।
মেলাতে আমাদের এক প্রতিবেশী খাজা ও গজার দোকান দিয়েছেন। আমাকে দেখে প্যাকেটে করে দুটোই বেঁধে দিলেন যাতে আমি নিয়ে যেতে পারি। গ্রামের মানুষের এই সরলতা আমাকে বরাবরই মুগ্ধ করে। আর শহরের মধ্যে থেকে বারবারই মনে হয় ওদের যেন মনটাই নেই। অনেক বেশি আত্মকেন্দ্রিক।
যাইহোক অনেকদিন পর গ্রামের মাটিতে একটি সুন্দর সন্ধ্যে কাটালাম। আর আপনাদের জন্য দিলাম এই সন্ধ্যের টুকটাক ছবি। কেমন লাগলো জানাবেন। আজ এ পর্যন্তই।
টাটা
![1000216462.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmbTmsAWchBrQyZBU699MdQen613UF9pcXQpLiuEW51tn3/1000216462.png)
পোস্টের ধরণ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
কলমওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | স্যামসাং এফ৫৪ |
ব্যবহৃত অ্যাপ | ক্যানভা, অনুলিপি |
১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিত সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://x.com/neelamsama92551/status/1889388630105530711?s=46
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছো ভীম পূজায়।বাংলাদেশে এই ভীমপূজা হয় বলে আমার জানা নেই তাই তোমার এই ভীমের মূতিও পূজা সম্পর্কে জেনে খুবই ভালো লাগলো।ভীব উৎসবের সব পারফরমেন্সের ফটোগ্রাফি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ শাপলা সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকলে। আমাদের এদিকেও গ্রামে গ্রামে পুজো হয় এমন নয় তবে এখানেই হয় আমি দেখেছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit