ঈশ্বরের নিজের দেশ । কেরালা ভ্রমন পর্ব -৩

in hive-129948 •  3 days ago 

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,


সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।


Onulipi_01_23_08_17_40.jpg






আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।



IMG_8598.jpeg

বিবেকানন্দ রক থেকে নেমে আসার পর আমরা সবাই রোদের তাপে বেশ কাহিল হয়ে পড়েছিলাম৷ সবারই মনে হচ্ছিল একটু ঠান্ডা কিছু খেতে। তাই জেটি থেকে নামার পরই সামনে যে রেস্টুরেন্ট পেয়েছি তাতেই ঢুকে পড়েছিলাম। একগ্লাস করে লস্যি খেয়ে এবং এসি তে বসার ফলে বেশ ভালো লাগছিল। বেশিক্ষণ তো বসা যায় না তাই অল্প সময় কাটিয়েই বেরিয়ে পড়ি৷

IMG_8563.jpeg

IMG_8564.jpeg

IMG_8565.jpeg

আমাদের টিমের বাকি সদস্যরা সমুদ্রে স্নান করতে চলে গিয়েছিল। কন্যাকুমারীর সমুদ্রতট ঠিক স্নানের উপযুক্ত নয়। কারণ এখানে তীরের সামান্য দূরেই সমুদ্র যে ভীষণ গভীর তার সাবধান বোর্ড লাগানো আছে৷ কিন্তু ওদের বাচ্চারা আয়না করার জন্য চলে গেল। সময় হাতে কিছুটা ছিল তাই অ্যাকোয়ারিয়াম দেখতে যাবো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার সাথের মানুষরা প্রত্যেকেই বয়স্ক আমরা তিনজন ছাড়া৷ তাই আস্তে ধীরেই হাঁটতে হয়। ফলে দশ মিনিটের পথ হয়ে যায় প্রায় কুড়ি পঁচিশ মিনিটের৷

IMG_8566.jpeg

IMG_8568.jpeg

অ্যাকোয়ারিয়ামের পঞ্চাশ টাকা করে টিকিট ছিল। আমরা টিকিট করেই ঢুকলাম। আর শুরুতেই দেখলাম একটা বড় ঘরে অনেকগুলো ছোট বড় মাপের অ্যাকোয়ারিয়ামে রয়েছে নানান ধরণের মাছ। সব কটা মাছের নাম আমার যদিও এখন মনে নেই। তবে শুরুতেই চোখ পড়েছিল কিসিং ফিসের দিকে। কিসিং ফিস বড্ড অদ্ভুত! ওরা নিজেদের মতো এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ালেও প্রায় প্রতিটি প্রদক্ষিণে এক একবার করে সামনে আসে আর একে অপরকে চুমু খায়। ওরা হয়তো কথা বলে কিংবা এমনি ঠোঁটে ঠোঁট লাগায়৷ কিন্তু আমার মতো অনেকেই ভাবে চুমু খায়৷ তাই তো কিসিং ফিস নাম দেওয়া হয়েছে৷ কিসিং ফিসের ভিডিও করেছি পরে আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

IMG_8569.jpeg

IMG_8570.jpeg

IMG_8571.jpeg

এছাড়াও একটি মাছের ভিডিও করেছিলাম সেটিও বেশ অদ্ভুত ছিল। কেন জানেন? যখনই অ্যাকোয়ারিয়ামের কাচে হাত দিচ্ছিলাম তখনই সে কামড়াতে আসছিল।

IMG_8573.jpeg

IMG_8574.jpeg

IMG_8575.jpeg

এছাড়াও ছিল নানান ধরণের স্টার ফিশ। স্টার ফিশ আমি পশ্চিমবঙ্গের উদয়পুরে সী বিচে দেখেছি কিন্তু এতকম বড় আর রঙিন দেখিনি৷

IMG_8577.jpeg

IMG_8580.jpeg

IMG_8581.jpeg

আরে একটা জলজ প্রাণী বা উদ্ভিদ কিছু ছিল যার ভেতর দিয়ে মাছ যাতায়াত করছিল৷ কী অদ্ভুত থলথলে দেখতে৷

চিংড়ি মাছ থেকে কাঁকড়া কিছুরই অভাব ছিল না৷ কাতলা রুই ক্রোকোডাইল ফিসও ছিল।

IMG_8583.jpeg

IMG_8587.jpeg

অ্যাকোয়ারিয়ামের মাছগুলো দেখে দেখে ভাবছিলাম এই সমুদ্রের নীচেই এরা স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর এখানে এরা বন্দী৷ আদৌ কি কোন অপরাধ ছিল যে কারণে এভাবে জেলবন্দী হল?

IMG_8591.jpeg

আমার আবোলতাবোল মাথায় এমন অনেক কিছুই আসে কিন্তু এই অ্যাকোয়ারিয়াম আমাদের মত পর্যটকদের কাছে যেমন চমৎকার বিনোদন তেমনি সামনের মানুষগুলোর কাছে রুজিরোজগার। আর এভাবেই চলে যাচ্ছে আমাদের বর্তমান সমাজ ও সভ্যতা৷

IMG_8596.jpeg

আজ এই অ্যাকোয়ারিয়ামের স্বাদটুকুই আপনাদের জন্য রইল। সেদিন রোদে ঝলসে গিয়ে আর থাকতে পারিনি। সোজা বাড়ি গিয়ে রেস্ট করেছিলাম। আর দুপুরে দক্ষিণভারতের বিখ্যাত কার্ড রাইস অর্থাৎ দইভাত খেয়েছিলাম। দইভাতের রেসিপি আপনাদের সাথে কখনও শেয়ার করব। গরম কালে খেয়ে দেখবেন শরীর জুড়িয়ে যাবে৷

যাইহোক বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই থাক৷ ক্লান্তির শরীর নিয়ে এখন গ্রামের বাড়িতে মুক্ত বাতাসে নিচ্ছি। আগামীকাল মাঝরাতে আমার ফেরার ট্রেন। ফিরে গিয়ে নিয়মিত পুরনো ছন্দে ফিরতে পারব আশা করছি।

টা টা।

1000205476.png


1000216462.png

পোস্টের ধরণভ্রমণ ব্লগ
ছবিওয়ালানীলম সামন্ত
মাধ্যমআইফোন ১৪
লোকেশনকন্যাকুমারী https://what3words.com/impersonates.posing.brandy
ব্যবহৃত অ্যাপক্যানভা, অনুলিপি


1000216466.jpg


১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে


1000192865.png


~লেখক পরিচিতি~

1000162998.jpg

আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিত গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।

🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾


1000205458.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNq11oNEiVHeYi1dFPZdD9DtfDnLSeGtLw3tXF7pNDf1KxPvxfffo2xboPm7wR8jPkKYie3LXrW.png

5q1knatRafuz9XwMuuEKUktArqLQpY9ERHvTUkr4H3M7EJa5zmYjd88Mgg7ucDLaoRyBbuk6ZDoBxSEqGcM8f9gtL5ff3dELA5FFXhfdJMy3CLVqCeBiUcuHt1GpdcrweUGxxxmGTC4nBtUhD1QWuxAAkWX8iy55cDyLQMmixxBjRCHLY6iMvDqgWQXyeinoLTe3.png

1000205505.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

0a0e2fb5-4b93-4f05-a1d2-68c567943b9c.jpeg

81372129-8379-4ca2-9682-6b783b34a3b0.jpeg

একুরিয়াম এর গ্লাস এর ভেতরে থাকা মাছের এত সুন্দর স্পষ্ট ছবি দেখে বেশ ভালো লাগলো দিদি। অনেকগুলো মাছ ই প্রথম দেখলাম আপনার পোষ্ট এর মাধ্যমে। কিসিং ফিশ এর ব্যাপারেও নতুন করে জানলাম। ভিডিও গুলো দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

হ্যাঁ এই সমস্ত মাছ আমি নিজেও প্রথমবার দেখেছি। তবে আন্ডার ওয়াটার ওয়ার্ল্ড বড় অ্যাকুরিয়াম আমি আগে সিঙ্গাপুরে দেখেছিলাম সেখানে আরো অনেক রকমের মাছ ছিল। সেসবের নাম আমার এখন একদমই মনে নেই। আর এই মাছগুলোরও নাম মনে নেই তাই শেয়ার করতে পারিনি।

অও,অসাধারণ দিদি।অ্যাকোয়ারিয়ামের মাছগুলো দেখার পর মুগ্ধ হলাম, বিশেষ করে গোল্ডেন ফিসগুলি বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে।তাছাড়া দারুণ সময় পার করেছো বুঝতে পারছি, ফটোগ্রাফিগুলি দারুণ ছিল।

একোয়ারিয়ামটস আমার বেশ ভালো লেগেছিল একসাথে এত রকমের মাছ দেখলে ভালো লাগে বেশ। ধন্যবাদ নিও গ্রিন।

☺️☺️