প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
এতদিন ছোট ছোট করে কেরালা ভ্রমণের কিছু কিছু জায়গায় এবং কিছু কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। কিন্তু এর ফলে হয়েছে কি অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস আমি ছেড়ে গেছি। সে কারণেই ভাবলাম পুরো ভ্রমণটা আপনাদের সাথে পর্ব ভাগ করে করে শেয়ার করি। এর ফলে পুরো টুর প্ল্যানটাও শেয়ার করা যাবে। যা পরবর্তীতে যেকোনো পাঠক যদি যান বেড়াতে তার পক্ষে সুবিধা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে সরাসরি পোস্টে যাই।
তারিখটা ছিল ২০/১২/২০২৪। বছর শেষের পথে, খ্রীষ্টমাস ছুটিতে আমরা বেরিয়ে পড়েছিলাম ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। রাত্রি ১১:৩০ টায় পুনে জংশন থেকে আমরা কন্যাকুমারী পুনে এক্সপ্রেস করে সোজাসুজি কন্যাকুমারী চলে যাব বলে বাড়ি থেকে যাত্রা শুরু করি। আমাদের এখানে ওলা-বা উবের দুটো ক্যাব বুকিং অ্যাপই প্রচলিত। আমরা ওলা বুক করে নিয়েছিলাম। গাড়ি আস্তে সামান্য দেরি হচ্ছিল আর গেট কিপারদের জ্বালিয়ে রাখা আগুনে সামান্য হাত গরম করে নিচ্ছিলাম। আসলে তখন মোটামুটি শীত ভালোই ছিল।
খুব একটা বেশি দেরি করতে হয়নি মিনিট পাঁচ দশক পর এই গাড়ি চলে এসেছিল এবং আমরা স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। স্টেশনে যখন পৌঁছে তখন ঘড়িতে সাড়ে দশটা।
ভেবেছিলাম স্টেশনের ট্রেন দিতে হয়তো আরও একটু দেরি করবে কিন্তু এরকম কোন কিছুই ঘটেনি যখন পৌঁছলাম তখন দেখলাম ট্রেন দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমরা আর দেরি না করে চটপট করে ট্রেনে উঠে গেলাম। আমরা তিনটে ফ্যামিলি ছিলাম একসাথে একজনকে টিকিট একটু দূরে পড়েছিল আর আমাদের বাকি সবার টিকিট প্রায় একই সাথে ছিল। যেহেতু রাত্রি অনেক হয়ে গিয়েছিল এবং আমরা বাড়ি থেকে খাওয়া-দাওয়া করেই যাত্রা শুরু করেছিলাম তাই ট্রেনে উঠে খাওয়া-দাওয়ারের না রেখেই সরাসরি বিছানা করে শুয়ে পড়েছিলাম।
কন্যাকুমারী হলো ভারতবর্ষের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তের শহর। পুনে থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১৯০০ কিলোমিটার। তাই ট্রেনে যাত্রা করতে সময় তো অনেকটাই লেগেছিল। অনেক বন্ধু-বান্ধব সাথে থাকার ফলে দীর্ঘ ট্রেনযাত্রা একেবারেই বোর লাগেনি। আমরা টুকটাক খাবার-দাবার সকলেই নিয়ে গিয়েছিলাম তাই বলা চলে ট্রেনের মধ্যেই ছোটখাটো পিকনিক হয়ে গিয়েছিল। সকলে মিলে মুড়ি মাখলাম, ভাত খাওয়া হল। সব মিলিয়ে যাত্রা কিন্তু বেশ মজার ছিল।
গল্প করতে করতে যখন বোর হয়ে গিয়েছি তখন কিন্তু আমরা অনেকটা সময় জুড়ে তাস খেলেছি। আমার মা বলতেন তাস পাশা সর্বনাশা। কিন্তু যাত্রাপথে তাস বা লুডো এগুলো খেলতে খুবই ভালো লাগে। বাচ্চারা যেখানে গানের লড়াই বা ওদের মতো ছোটখাটো খেলা খেলে সময় কাটিয়ে দিচ্ছিল সেই জায়গায় আমরা বড়রাও নিজেদের মধ্যে খেলছিলাম। এই সময়টাও বেশ ভালো লাগে। আসলে তাস খেলতে খেলতে কিভাবে যে সময় দ্রুত চলে যায় সে কথা আমরা নিজেরাও বুঝে উঠতে পারিনা। ট্রেনে তো অনেকটাই সময়ে একটা পুরো দিন এবং তারপরের দিন যখন পৌছালাম তখন দুপুর বারোটা পেরিয়ে গিয়েছিল। এতটা সময় কতইবা আর গল্প করবো বলুন?
কেরালা পেরিয়েই আমরা কন্যাকুমারী পৌঁছেছিলাম। তখন সময় ছিল ২২ ডিসেম্বর বেলা বারোটা। স্টেশন থেকে আমরা অটো ভাড়া করে আমাদের আগে থেকে বুক করে রাখা রিসর্টে পৌঁছে যাই।
এই ট্রিপে আমাদের সাথে আমার মা মাসি এবং শাশুড়ি মাও ছিলেন। ওনারা সরাসরি খড়গপুর থেকে এসেছিলেন। এবং আমাদের আগেই পৌঁছে দিয়েছিলেন৷ ফলে দুপুরের খাবার আগে থেকে কিনে রেখেছিলেন। তাই আমাদের খুব একটা অসুবিধে হয়নি। সত্যি বলতে কি তিনজন বয়স্ক মহিলা নিজেরা খড়গপুর থেকে দুটো ট্রেন বদলে কন্যাকুমারী পৌঁছে গিয়ে খাবার নিয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দেখে আমাদের মধ্যে অনেকেই বেশ অবাক হয়েছিলেন৷ আমি ভাবি আমার মায়েরা অনেকটাই সাহসী।
কন্যাকুমারী কেমন ঘুরলাম কি দেখলাম তা নিয়ে বিস্তারিত পরের পোস্টে আলোচনা করব। আজ এ পর্যন্তই
টা টা
পোস্টের ধরণ | ভ্রমণ ব্লগ |
---|---|
ছবিওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | আইফোন ১৪ |
লোকেশন | পুণে,মহারাষ্ট্র |
ব্যবহৃত অ্যাপ | ক্যানভা, অনুলিপি |
১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিত গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অচেনা স্থান গুলো যখন কেউ ব্লক করে আমাদের সামনে উপস্থিত করে তখন আমার মনটা নিচে উঠে আনন্দে। অচেনা অজানা কিছু সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি এবং দেখতে পারি খুব সহজে। ঠিক তেমনভাবে আজকে আপনি আমাদের মাঝে নতুন একটি ব্লক উপস্থাপন করেছেন যেখানে অনেক কিছু দেখার ও জানার ছিল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://x.com/neelamsama92551/status/1882480912157614493?t=PRsgA6EoA0iILE2zu5TbLA&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কেরালার নাম শুনেছি কিন্তু সেভাবে কোন ভিডিওর মাধ্যমে বা সময় করে দেখা হয়নি কোন মাধ্যম দ্বারা। আজকে আপনার জন্য কিছুটা ধারণা পাওয়ার সুযোগ হল মনোযোগ দিয়ে। অনেক সুন্দর ভাবে আপনি বিস্তারিত গুছিয়ে লিখেছেন। আশা করব আগামীতে আরো অনেক কিছু দেখার সুযোগ করে দিবেন আমাদের।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ক্যাপশন পড়েই আগ্রহ জেগেছে লেখাটা পড়ার। এই পর্বে তো জার্নি নিয়েই কিছুটা জানলাম। আগুনের ছবিটি ভীষণ ভালো লাগলো। আর আপনার দুই মা এবং মাসির প্রশংসা আমিও করবো দিদি! যাই হোক, সামনের পর্বগুলোর জন্য অধীর আগ্রহে থাকলাম আমি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit