অরিগ্যামি বুকমার্ক সিরিজ -১ | কাগুজে বো বুকমার্ক

in hive-129948 •  28 days ago 

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,



আশাকরি আপনারা বেশ ভালোই আছেন৷ আমিও ভালো আছি। অল্পবিস্তর ঠান্ডা পড়েছে। আর ব্যস্ততাও বেড়েছে। শীতকাল এলে দুপুর বেলায় ছাদে বসে বই পড়তে ভীষণ ভালো লাগে। ভাগ্যক্রমে পুনের বাড়িতে যে ব্যালকনি রয়েছিস সেটা ছোট্ট একটা ছাদ বলা চলে। আর সেখানে রোদের যাতায়াত অবাধ। তাই আজকাল সময় পেলেই ব্যালকনিতে গিয়ে বই পড়ি। তাই আজকাল বুকমার্কটা বেশ ভালো মতন প্রয়োজন পড়েছে৷ এদিকে আজ কি নিয়ে পোস্ট করব সারাদিনে ভাবিনি। রাতেই তাই মনে হল একটা বুকমার্ক বানিয়ে নিই।

IMG-20241130-WA0052.jpg

তাছাড়া প্রতি সপ্তাহেই প্রায় একটা করে অরিগেমি পোস্ট করি আমি। যে কাজটা আমি একেবারেই জানতাম না সেই কাজটাই আমার কন্যার সাহায্যে শিখে নিয়ে অল্প বিস্তর করতে পারি। তো আগের দুটো পোস্টে আমি ফুল বানিয়েছি। সেটার নাম তো আর ফুল সিরিজ দিতে পারিনি, বুকমার্ক বানানোর সময় মনে হল অনেক ধরনের যেহেতু বুকমার্ক বানানো যায় তাই একটি সিরিজ করি।

আচ্ছা চলুন দেরি না করে দেখে নিই কি লাগলো আর কিভাবে বানিয়েছি।

🔖উপকরণ🔖



IMG-20241130-WA0083.jpg

  • সবুজ রঙের বর্গাকার কাগজ।


🔖বুকমার্ক তৈরি করার পদ্ধতি 🔖


ধাপ-১
IMG-20241130-WA0082.jpgIMG-20241130-WA0084.jpgIMG-20241130-WA0081.jpg
IMG-20241130-WA0085.jpgIMG-20241130-WA0086.jpgIMG-20241130-WA0080.jpg
  • দুই বিপরীত দিক ভাঁজ করে নিলাম শুরুতেই। ফলে দু'দিকেই সুন্দর দেখতে ত্রিভুজ তৈরি হল।

  • ভাঁজ খুলে নিয়ে আবার আরে দুই দিকেই ভাঁজ করে নিলাম।

  • এবার সমস্ত ভাঁজ খুলে, মাঝখানে বিন্দু কি পয়েন্ট করে কাগজটি এমনভাবে মরলাম যাতে দুই দিক ভাঁজ হয়ে ভেতরে চলে যায় এবং উপর থেকে একটি ছোট্ট বর্গক্ষেত্র তৈরি হয়।

ধাপ-২
IMG-20241130-WA0087.jpgIMG-20241130-WA0088.jpgIMG-20241130-WA0089.jpgIMG-20241130-WA0079.jpg
IMG-20241130-WA0062.jpgIMG-20241130-WA0061.jpgIMG-20241130-WA0063.jpgIMG-20241130-WA0064.jpg
  • খুব সুন্দর দেখতে একটি বর্গক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।

  • বর্গক্ষেত্রের নিচে যে দিকটা খোলা অংশ রয়েছে, সেই অংশটাকে পয়েন্ট করে ত্রিভুজ বানিয়ে একটি ভাঁজ করব। ছবিটা দেখলে স্পষ্ট বোঝা যাবে ভাঁজটা কেমন ভাবে করেছি।

  • দুই পিঠেই সুন্দর করে ভাঁজ করেছি।

  • ভাঁজ টাকে খুলে নিয়ে, ভেতর দিকে মুড়ে করে ঢুকিয়ে দিলাম। একইভাবে সামনের দিকের আরেকটি ত্রিভুজের ভাঁজ ভেতরে ঢুকালাম এবং উল্টো পিঠেও করে নিলাম।

  • শেপটা একই রয়েছে কিন্তু উপরের যে ত্রিভুজ অংশটা, তা ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়ার ফলে বাইরে থেকে আর বোঝা যাচ্ছে না।

ধাপ-৩
IMG-20241130-WA0060.jpgIMG-20241130-WA0065.jpgIMG-20241130-WA0059.jpgIMG-20241130-WA0066.jpg
IMG-20241130-WA0058.jpgIMG-20241130-WA0067.jpgIMG-20241130-WA0068.jpgIMG-20241130-WA0069.jpg
  • যেদিকে ভাঁজটা ঢুকিয়েছে সেই দিকেই খুলে নিচ্ছি লম্বা করে।

  • মাঝে যে দাগটা তৈরি হয়েছে সেটাকে উপলক্ষ করে নিচের লম্বা অংশটা ভাঁজ করে নেব, পাখির ডানা যেভাবে বার করে সেরকম। ছবিটা দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যায়।

  • একইভাবে আরও একটি দিক করে নিয়েছি৷

  • এবার ওই ভাঁজকেই খুলে উপরের অংশটার ভাঁজ খুলে ওপর দিকে করে মুড়ে দিলাম।

  • দুই রকম ভাবে ছবিতে দেখিয়েছি। আশা করি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে৷

ধাপ-৪
IMG-20241130-WA0070.jpgIMG-20241130-WA0056.jpgIMG-20241130-WA0057.jpg
IMG-20241130-WA0071.jpgIMG-20241130-WA0072.jpgIMG-20241130-WA0055.jpg
  • এবার উপরের অংশটা সমান করে উল্টোদিকে ভাঁজ করে নিলাম।

  • মাঝে যে দুটো ডানার মতো অংশ বেরিয়েছিল তাকে কিছু করবো না সেটা সেরকমই থাকবে।

  • কাগজটা কি উল্টে দিলাম।

  • যে অংশটা পেছনদিক থেকে মুড়েছিলাম সেটাকেই আবার উপর থেকে সামান্য একটু বাদ দিয়ে ভাঁজ করলাম। খুব সুন্দর দেখতে একটি ত্রিভুজ তৈরি হলো।

  • কাগজটা আবার উল্টে দেবো।

  • আগের ধাপেই যে অংশটা ভাঁজ করেছিলাম সেটাকেই খানিকটা ছেড়ে আবারও ভাঁজ করে সামনে আনলাম।

ধাপ-৫
IMG-20241130-WA0073.jpgIMG-20241130-WA0074.jpg
IMG-20241130-WA0075.jpgIMG-20241130-WA0076.jpg
  • বাকি অংশটা দু দিকের ডানার মত অংশের মাঝখানে মাপ করে মুড়ে ভেতরে ঢুকিয়ে নিলাম।

  • দুদিকের ডানার মতো অংশটা মাঝ বরাবর ভাঁজ করে প্রান্তিক কোণগুলো মাঝের অংশে ঢুকিয়ে দিলাম। ছবিটা দেখলে স্পষ্টই বোঝা যায় ঠিক কোথায় আটকেছি।

  • দু দিকের অংশে সমানভাবে করার পর তৈরি হয়ে গেল খুব সুন্দর দেখতে একটি বো। সাথে আমার বুকমার্কটিও তৈরি।

🔖🔖অন্তিম দর্শন🔖🔖


IMG-20241130-WA0076.jpg

IMG-20241130-WA0077.jpg

IMG-20241130-WA0078.jpg

IMG-20241130-WA0052.jpg

IMG-20241130-WA0053.jpg

বন্ধুরা, কেমন লাগল আমার আজকের বো বুকমার্ক? আশাকরি ভালো লাগবে৷ আমি সবুজটা বানানোর পর মেয়ের আবদারে ওকেও একটা বানিয়ে দিয়েছি। ভালো হয়েছে?

আচ্ছা আবার আসব নতুন কিছু নিয়ে৷ আজ এ পর্যন্তই।
টা টা

1000205476.png


1000216462.png

পোস্টের ধরণঅরিগ্যামি পোস্ট
ছবিওয়ালানীলম সামন্ত
মাধ্যমআইফোন ১৪
লোকেশনপুনে, মহারাষ্ট্র
ব্যবহৃত অ্যাপকোন এডিট নেই, তাই অ্যাপের ব্যবহার করা হয়নি


1000217106.jpg


১০% বেনিফিসিয়ারি লাজুক খ্যাঁককে


1000217198.png


1000227693.png


1000162998.jpg

আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।

🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾


1000205458.png

Untitled_design-1.png

downloadfile.webp

1000205505.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অসাধারণ হয়েছে আপু। অরিগ্যামি বুকমার্ক তৈরির ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা এবং ছবি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ভালো থাকবেন।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Screenshot_20241201_000537_Samsung Internet.jpgScreenshot_20241130_235825_X.jpg
Screenshot_20241130_152212_Samsung Internet.jpgScreenshot_20241130_152141_Samsung Internet.jpg

বুকমার্ক খুবি সুন্দর ভাবে অল্প সময়ে মধ্যে এই ডাই পোস্ট তৈরি করেছেন। ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

না না খুব অল্প সময় লাগেনি৷ একটু সময় তো লেগেইছে। আপনাকে ধন্যবাদ জানাই৷

@tipu curate

;) Holisss...

--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.

image.png

শীতের দিনে বেলকুনিতে রোদে বসার মজাই আলাদা। তুমি দেখছি সুযোগ পেলেই বেলকুনিতে বসে বই পড়ো।মামনির সাহায্য নিয়ে দারুন বানিয়েছো কাগজের সুন্দর কাগুজে বো বুকমার্ক।ধাপে ধাপে বুকমার্ক বানানো পদ্ধতি আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছো।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর বুকমার্ক তৈরি পদ্ধতি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

হ্যাঁ৷ আমারও খুব ভালো লাগে রোদ পোহাতে৷
আসলে মেয়েরো এখন উৎসাহ মা ব্লগে কি লিখবে বা কি টা ব্লগের জন্য বানাবে৷ হা হা হা

কাগজের বো তো দারুন সুন্দর বানিয়েছিস। অসাধারণ একটি ভাবনা প্রকাশ ঘটেছে এই ধরনের অরিগামির কাজে। প্রত্যেকটি ধাপ খুব পরিষ্কার এবং এই পোস্ট দেখলে খুব সহজেই একজন এমন বো তৈরি করতে পারবে। খুব সুন্দর ভাবে পোস্টটা উপস্থাপনা করলি।

চেষ্টা করেছি। জানো তো এই সব করতে আমার কেমন ভালো লাগে৷

যারা মোটামুটি বই পড়ে তাদের কাছে এই বুকমার্ক বেশ আকর্ষণীয় এবং প্রয়োজনীয় একটা জিনিস। অনেক সময় অনেকে চেষ্টা করে ভিন্ন ধরনের বুকমার্ক সংগ্রহ করতে। রঙিন কাগজ দিয়ে বুকমার্ক এর অরিগ‍্যামি টা বেশ চমৎকার তৈরি করেছেন আপু। সুন্দর লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

একদমই তাই। বইপ্রিয় মানুষদের কাছে বুকমার্কের খুজই প্রয়োজনীয়তা আছে৷ আপনার ভালো লাগল জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ নেবেন৷

কাগজের তৈরি বুকমার্ক খুবই সুন্দর হয়েছে। আপনি চমৎকারভাবে বুকমার্ক তৈরি করেছেন আপু। কাগজের ভাঁজে কোন কিছু তৈরি করলে দেখতে অনেক ভালো লাগে।

চেষ্টা করেছি আপু। আসলে অরিগ্যামি টা এখানে আসার পরেই করতে শুরু করেছি। খুব একটা আইডিয়া আগে থেকে ছিল না৷ মেয়ে ভালো করে। আমি না পারলে ও আমায় দেখিয়ে দেয়৷

আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ নেবেন আপু।

জাস্ট ওয়াও আপু আপনি অনেক সময় নিয়ে ধৈর্য্য সহকারে রঙিন কাগজ দিয়ে দুটি বুকমার্ক তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আসলে রঙিন কাগজ দিয়ে কোন কিছু তৈরি করা দেখতে এবং তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আপনি আপনার মেয়ের কাছ থেকে কাজগুলো শিখেছেন জেনে আমার আরো ভালো লেগেছে। যাইহোক আপু আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ রঙিন কাগজ দিয়ে দুটি বুকমার্ক তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

হ্যাঁ দাদা সব সময় বড়দের কাছে শিখতে হয় তা কিন্তু নয়, আমি তো আমার মেয়ের কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখে থাকি। বেশ ভালই লাগে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।

রঙিন কাগজ দিয়ে অনেক সুন্দর করেও সল্প সময়ে দারুন একটি বুকমার্ক তৈরি করে ফেললেন। বুকমার্ক তৈরি করা প্রতিটি ধাপ অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ

সত্যিই বুকমার্কটা করতে খুব একটা বেশি সময় লাগেনি। ঝটপট বানিয়ে ফেলেছি। বরং পোস্টটা লিখতে অনেকটা সময় লেগে গেছিল। আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ধন্যবাদ নেবেন।

পোস্ট লিখতে একটু সময় নেওয়ারই কথা কারণ বুকমার্ক তৈরি করার পদ্ধতিটা বর্ণনা করতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। শুকরিয়া ভালো থাকবেন দিদি।