"বন্ধুর বিয়ের তোড়জোড় " পর্ব -১। //১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in hive-129948 •  3 years ago 

নমস্কার বন্ধুরা,


আশা করি সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন।আজকে আমি আপনাদের সামনে আমার এক খুবই কাছের বন্ধুর বিয়ের আগের বিভিন্ন কাজের যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে সেই নিয়ে কাটানো ব্যস্ততম কিছু ঘটনার কথা তুলে ধরলাম।


কথাগুলো বলতে গেলে প্রথমেই যেটা না বললেই নয় তা হচ্ছে আমার বন্ধুর কথা। ওর নাম দেবাঞ্জন ঘোষ। বয়সে ও আমার থেকে তিন বছরের বড় হলেও ছোটবেলা থেকেই আমরা একসাথেই খেলাধুলা করে ও সময় কাটিয়ে বড় হয়েছে। দেখতে দেখতে বন্ধুটা এত বড় হয়ে গেল যে আর দু সপ্তাহ পরেই তার বিয়ে। আর ব্যাস যে ভয়টা ছিল তাই হল। সমস্ত কাজের দায়িত্ব এসে পড়ল আমাদের উপর।


DEBANJAN BIYE (4).jpeg


বিয়ের বাড়ি বুক করা থেকে কার্ড পছন্দ করা পর্যন্ত সবই আমাদেরই করতে হচ্ছে। এমনকি বউয়ের শাড়ি, বরের শেরওয়ানি আর বিভিন্ন ছোট খাটো কেনাকাটাও আমাদের মাথা থেকে সরছে না।

প্রথমে বলি, বিয়ে বাড়ি বুক করার কথা। আমাদের এখানে মানে কোলকাতায় বিয়ের কোন অনুষ্ঠান থাকলে মোটামুটি চার থেকে ছয় মাস আগে বাড়ি বুক করে রাখতে হয়। না হলে কম পয়সায় ভালো বাড়ি পাওয়ার খুব একটা আশা থাকেনা। এমত অবস্থায় বিয়ের এক মাস আগে দেবাঞ্জন ফোন দিল বলল ভাই বিয়েতে এসে গেল এবার বাড়ি বুক করতে হবে। শুনে বুঝলাম এখনো বাড়ী বুক হয়নি মানে আর কোন কাজ হয়ে থাকার তো কোনো প্রশ্নই নেই। ফোনেই পরিষ্কার বলে দিলাম যে কম খরচে এখন আর ভালো বিয়েবাড়ী পাওয়া যাবে না। তাও দেখছি যদি কোন বাড়ি ফাঁকা থাকে। আমার বন্ধুটার কপাল আছে বলতে হবে সমস্ত তারিখ বুক শুধুমাত্র আমার বন্ধুর যেদিনকে দরকার সেই দিন অন্য কেউ বুকিং করে রেখেছিলেন সেটা ক্যানসেল করেছেন। তাই অদ্ভুতভাবে আমরা কম পয়সায় যে বাড়িটা বুক করার ইচ্ছে ছিল সেটা পেয়ে যাই।

সেতো নয় একটা ঝামেলা মিটলো। এখন থেকে এক সপ্তাহ আগে আমরা যাই বিয়ের কার্ড পছন্দ করতে। দেখে শুনে একটা কার্ড পছন্দ হয় কিন্তু শুধু তো পছন্দ করলেই হল না তাকে আবার ছাপাতে দিতে হবে। তার জন্য উনারা কয়েকটা দিন সময় নেবেন। তার মাঝখানে আবার লেখার মধ্যে কোন বানান বা কোন লেখা ভুল হল কিনা সেটা একদিন দেখে আসতে হবে। এত কথা না ভেবে আমরা কার্ড পছন্দ করে ফাইনাল করে চলে এলাম। তার দুদিন পর আমাকেই আবার যেতে হলো সমস্ত লেখা এবং বানান ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য। অবশেষে গত মঙ্গলবার অর্থাৎ কালী পূজার দুদিন আগে বিয়ের কার্ডগুলো হাতে পাওয়া গেল।

DEBANJAN BIYE (16).jpeg


কার্ড হাতে পেয়ে বাড়ির আশেপাশের সকল কে এই কদিন নিমন্ত্রণ করা প্রায় হয়ে গেছে বললেই চলে। তাই আজ আমি আর দেবাঞ্জন বাইকে করে বেরিয়ে পড়লাম সল্টলেকে ওর অফিস কলিগ এবং একজন বন্ধু বাড়িতে কার্ড দেওয়ার জন্য।

প্রথমেই চলে গেলাম ওর এক কলিগের বাড়ি যে সল্টলেক এই থাকে। ওখানে গিয়ে দেখলাম কোন কার্ডে নাম লিখে আনেনি। ওই প্রথম বন্ধুটাকে দিয়েই সমস্ত কার্ডে আমরা নাম লিখে দিলাম এবং তাকেও কার্ডটা দিয়ে দিলাম।


DEBANJAN BIYE (5).jpeg

DEBANJAN BIYE (1).jpeg

এরপর আমরা গেলাম আরেক বন্ধুর বাড়িতে। সেই বন্ধুটা তার বাড়িতে ছিল না, ছিল শুধু তার মা। তার মা কদিন হলো ডেঙ্গু থেকে উঠেছে তাই তাকে আর অকারণে বিব্রত করলাম না। গিয়ে ৫ কি ১০ মিনিট বসেই বেশি কথা না বাড়িয়ে নিমন্ত্রণ শেরে বেরিয়ে গেলাম।

DEBANJAN BIYE (3).jpeg


তারপর গেলাম দেবাঞ্জন এর পুরনো অফিসে। সেখানে যাদের সাথে দেবাঞ্জন বেশ কয়েক বছর কাজ করেছে তাদেরকে তো আর বাদ দেওয়া যায় না। সেই অফিসে সবাইকেই নিমন্ত্রণ করা হলো উপস্থিত দুজনের মাধ্যমে।

DEBANJAN BIYE (12).jpeg

DEBANJAN BIYE (6).jpeg



সেখান থেকে বেরিয়ে দেবাঞ্জন এর এখনকার অফিসে যাওয়ার পথে দুজনেরই খুব খিদে পেয়ে গেল। রাস্তার ধারে দেখলাম রোলের দোকান বেশি না ভেবে দুজনেই একটা করে চিকেন রোল খেয়ে ফেললাম। খাওয়া শেষ হতে পৌঁছে গেলাম দেবাঞ্জন এর এখনকার অফিসে। সেখানে সকলকে নিমন্ত্রণ শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় রাত দশটা।

DEBANJAN BIYE (8).jpeg

DEBANJAN BIYE (15).jpeg

DEBANJAN BIYE (13).jpeg

DEBANJAN BIYE (14).jpeg



সবে তো শেষ হলো নিমন্ত্রণ এর পর্ব। এরপর বিয়ের একদিন আগে থেকে শুরু হবে আসল তোড়জোড়। এছাড়াও এখনো বিয়ের গাড়ি বুক করা বিভিন্ন খাবার বুক করা ডেকোরেটরের সাথে কথা বলা এসমস্ত বাকি আছে। চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে অন্তত এই সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত কাজ গুছিয়ে নেওয়া যায়।

DEBANJAN BIYE (10).jpeg

DEBANJAN BIYE (11).jpeg



এত কথা বলার কারণ এটাই, যে আজ আমি আমার বন্ধুর বিয়ের যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তার জন্য আমার ব্যস্ততা টা আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম।

আশা করি আমার এই ঘটনাক্রম টা আপনাদের খুব খারাপ লাগবে না। আজকের মত এখানেই শেষ করলাম। ধন্যবাদ এতটা মূল্যবান সময় দিয়ে আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দাদা আপনি অনেক সুন্দর করে আপনার বন্ধুদের বিয়ে আয়োজন নিয়ে অনেক ব্যস্থময় একটা সময় কাটাচ্ছেন।আর অনেক দায়িত্ব পালন করছেন।এতে কম সময় কি করবেন না করবেন, সেটাও বুঝিয়ে উঠতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু সবশেষে আপনি কম বেশি সব কাজ শেষ করে ফেলেছেন।আর আমি আশাবাদী আপনি যেহুতু সব কাজে কর ফেলছেন।পর কাজটুকু শেষ করতে পারবেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দাদা আপনার বন্ধুর বিয়ের আয়োজনর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

সবার প্রথমে আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ আমার কারেন্ট সিচুয়েশন টা বোঝার জন্য এবং এত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে একটা মন্তব্য করার জন্য। আবারো ধন্যবাদ আপনার শুভকামনার জন্য। আশা করি আপনার এই পোস্ট টা ভালো লেগেছে। স্টার করব আরও সুন্দর সুন্দর পোস্ট আপনাদের সামনে তুলে ধরতে।