বাংলাদেশ ভ্রমণ (জামদানি শাড়ি কিনে ফকির হয়ে গেলাম )। পর্ব : ১৫

in hive-129948 •  2 years ago 

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।



IMG_20221022_105349.jpg



আসলে কয়েকদিন পর আমরা গেলাম ঢাকা ঘুরতে। ঢাকায় আমার এক পিসির বাসাতে আমরা গিয়ে উঠেছিলাম। উনার বাসাটা চিড়িয়াখানার একদম কাছেই ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়ে এই হল তখন চিড়িয়াখানা কয়েক দিনের জন্য বন্ধ ছিল।

IMG_20221022_105157.jpg



তো আমরা বারদী লোকনাথ ঠাকুরের সমাধি স্থান দর্শনের জন্য একদিন পরে গাড়ি ভাড়া করে বের হলাম। বারদী যাওয়ার পথে আমরা কিছু খাবারও নিয়ে নিলাম। কারণ ঢাকা থেকে বারদী যেতে হলে প্রায় তিন ঘন্টা সময় লাগে। আর দাদা কি বলবো ঢাকার জ্যামের কথা আমি কখনোই ভুলবো না। এত বড় জ্যাম আর এত সময় লাগায় যে আমি এটা কখনোই ভুলবো না।



IMG_20221022_105145.jpg

ঢাকার এই জ্যাম আমাদের এক-দেড় ঘণ্টা সময় লেগে গেল। ঢাকা থেকে বারদী যাওয়ার পথে জামদানি শাড়ি তৈরি কারখানা দেখা যায়।



IMG_20221022_105200.jpg

আসলে বাংলাদেশী জামদানি শাড়ির নাম ডাক সারা পৃথিবীতেই বিখ্যাত। তো আমার গিন্নি খুব শখ হলো জামদানি শাড়ি কিভাবে তৈরি হয় সেটা দেখবে। তো আমরা রাস্তার পাশের কয়েকজন লোককে জিজ্ঞাসা করলাম যে, এখানে জামদানি শাড়ি কোথায় তৈরি করা হয়। ওনাদের দেখানো পথ ধরে আমরা যেতে লাগলাম। কিছু দূরে যেতেই আমরা শাড়ি তৈরির মেশিনের আওয়াজ শুনতে পেলাম। তারপরে দেখতে পেলাম বিভিন্ন ধরনের জামদানি শাড়ির দোকান।

IMG_20221022_105205.jpg

ওরা প্রথমে দু একটা দোকানে শাড়ি দেখতে লাগলো। কিন্তু আমার ইচ্ছা এই শাড়ি কিভাবে তৈরি হয় সে মেশিন গুলো দেখার। তারপরে দোকানের এক কর্মচার আমাদের জামদানি তৈরীর কারখানায় ঘুরে দেখাতে লাগলেন। আমি প্রথমে দেখে হতবাক। কারণ এই আধুনিক যুগেও মানুষ হাতের তৈরি যন্ত্রপাতি দিয়ে এই জামদানি শাড়ি তৈরি করেন।


IMG_20221022_105211.jpg

একটা ছোট ছেলে লাটাই উপরে সুতো পেচাচ্ছে । অন্যদিকে আরেকটা বাচ্চা ছেলে জামদানি শাড়ি তৈরি করছে। একটা জামদানি শাড়ি তৈরি করতে দুজন ব্যক্তির প্রয়োজন হয়। সবচেয়ে বড় ব্যাপারটা হল, এত কম বয়সে এই বাচ্চাটি জামদানি শাড়ি তৈরি শিখে গেছে সেটা রহস্যের ব্যাপার।



IMG_20221022_105220.jpg



এরপর আমি ওইসব কারিগরদের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম, একটা শাড়ি বানাতে কতদিন সময় লাগে। তখন উনার আমাকে বললেন, একটা শাড়ি তৈরি করতে প্রায় ৭ থেকে ১২ দিন সময় লাগে। আমি তো শুনে হতবাক। আসলে জামদানি শাড়ির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এই শাড়ি অতি সূক্ষ্ম এবং এই শাড়ি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি করা হয়।



IMG_20221022_105225.jpg

তো আমি কিছুক্ষণ এই শাড়ি তৈরির পদ্ধতি গুলো দেখতে লাগলাম। খুবই নিখুঁতভাবে তারা এই শাড়ি তৈরি করছিল।



IMG_20221022_105232.jpg



কিছুক্ষণ পর দোকান থেকে আমার ডাক আসলো। বুঝতেই পারছি যে এবার আমার পকেট থেকে টাকা খরচ হবে। এদিকে আমার গিন্নি একটা শাড়ি পছন্দ করে বসেই আছে। ভাইরে এই শাড়ির যে এত দাম আগে জানলে এখানে আর গাড়ি থামাতাম না। যাইহোক গিন্নির আবদার মত শাড়িটি কিনে দিলাম। আর পকেট থেকে বের হয়ে গেল অনেকটা টাকা।

IMG_20221022_105431.jpg

ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 08/01/2023



তো আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আমরা আবার পুনরায় বেরিয়ে পড়লাম বারদীর উদ্দেশ্যে।



তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।

সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বাংলাদেশের জামদানি শাড়ি সবার কাছেই অনেক পছন্দের। তবে দামটা একটু বেশি। অনেকদিন সময় নিয়ে এই শাড়ি তৈরি করতে হয়। তাই তো দামের দিক থেকে বেশ পয়সা গুনতে হয়। বৌদির যেহেতু শাড়ি পছন্দ হয়েছে তাহলে তো আর কথাই নেই। অনেক অনেক শুভকামনা রইল দাদা।

আপু অনেকগুলো টাকা তো বেরিয়ে গেছে এজন্য মনে কষ্ট নিয়ে শাড়িটা কিনে দিলাম। যাইহোক ঢাকার জামদানি শাড়িটা পেয়ে সে খুব খুশি।

দাদা আপনি আমার বাসার সামনে দিয়েই বারদী গিয়েছেন। বারদী যেতে আমার বাসা থেকে ৪০/৫০ মিনিটের মতো সময় লাগে। বারদী আশ্রমের দিকে কিছুদিন আগেও গিয়েছিলাম। ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম আসলেই খুব বিরক্তিকর। জামদানী শাড়ির কারখানায় গিয়েছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। তবে সোনারগাঁও জাদুঘরের ভিতরে আরো ভালো মানের জামদানী শাড়ি তৈরি করা হয়। পোস্টটি দেখে খুব ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।