অনু-কবিতা :- ২৯

in hive-129948 •  last year 

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আপনাদের আশীর্বাদে আমিও সুস্থ আছি। আজ আমি আমার লেখা আর একটি অনু-কবিতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png



সোর্স


আসলে আমাদের সমাজের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরাই বেশি সবথেকে কষ্ট পায়। আসলেই মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকেরা তাদের কষ্টের কথা কখনো সমাজে প্রকাশ করতে পারেনা। কারণ তাদের মান-সম্মানের ভয়ে। আর এই মান-সম্মানের ভয়ে তারা কাউকে কোন কিছু না বলে সব সময় কাজে লেগে থাকে নিজের জীবনের উন্নতির জন্য। তবুও তারা অন্যের কাছে কখনো মাথা নত করে না।


এছাড়া মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের সব আবদার চাহিদার কখনোই পূরণ হয় না। কারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মা-বাবাদের ক্ষমতা থাকে না যে তাদের সন্তানদের সব ধরনের চাহিদা পূরণ করার জন্য। তবুও চেষ্টা করে যে তাদের সন্তানদের কোন ধরনের আবদার অপূরণ না থাকে। কিন্তু তবুও সব সময় তারা ব্যর্থ হয় তাদের আবদার পূরণের জন্য।


আসলেই মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকেদের জীবন শুরু হয় কর্মের মধ্য দিয়ে। তারা সবসময় চেষ্টা করে তাদের পরিবারকে কি করে একটু ভালো রাখা যায়। আরে জন্য তারা কোন সময় বসে থাকে না। তারা ভাবে যে আর একটুকু বেশি ইনকাম করলে তাদের পরিবার আর একটু ভালো থাকবে। অথবা সমাজে বড় হতে হলে তাদের আরো অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে।


কিন্তু তারা যতই পরিশ্রম করুক না কেন তাদের পরিবারের তেমন কোন উন্নতি সাধন তারা করতে পারে না। কারণ তারা যতই ইনকাম করে না কেন তাদের ইনকামের সবটুকুই তাদের পরিবারের পিছনে লেগে যায়। তাদের সঞ্চিত অর্থ একদম থাকে না বললেই চলে। তাই জীবনের শেষ বয়সে এসে তারা ভাবতে থাকে তারা পুরো জীবনটা একটুও উপভোগ করতে পারেনি।


অর্থাৎ তাদের পুরো জীবনটাই বৃথা হয়ে যায়। কারণ তারা পরিবারের বাইরে আর অন্য কিছু কখনোই করতে পারে না। যদিও এই পৃথিবীর সৌন্দর্য তারা কখনোই উপভোগ করতে পারে না। কারণ পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে বেশি অর্থের প্রয়োজন। আপনি কোথাও ঘুরতে গেলে আপনার কাছে অবশ্যই টাকা থাকার প্রয়োজন। ঘোরার মন মানসিকতা থাকলে কিন্তু ঘোরা যায় না। সর্বশেষে কিন্তু অর্থের প্রয়োজন হয়।


আর এই মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকেরা ভাবে যে কোথাও ঘুরতে না গিয়ে এই টাকা যদি তার সংসারের পিছনে লাগানো যায় তাহলে তার সংসারের আরেকটু উন্নতি হবে। আসলে তাদের এসব চিন্তা ভাবনা কিন্তু কখনোই খারাপ নয়। কারণ নিজের পরিবারের সুখ দেখেই বাইরের সুখকে উপভোগ করার ভিতরে চরম সার্থকতা রয়েছে। এদিকে নিজের পরিবার না খেয়ে রয়েছে আর আপনি অন্যদিকে পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখতে বেরিয়েছেন এটা কিন্তু উচিত নয়।


বেশিরভাগ সময় মধ্যবিত্ত পরিবারের মা-বাবারা সারা জীবন খুব পরিশ্রম করে তাদের সন্তানদের ভালো একটা জায়গায় উত্তীর্ণ করার জন্য চেষ্টা করে। এই কষ্টের হলে তাদের সন্তানরা যদি কোন ভাল জায়গায় পড়াশোনা করে মানুষের মত মানুষ হয় তবে তাদের মধ্যবিত্ত জীবনের অবসান তখনই ঘটে। কারণ তার সন্তানরা আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত। তাদের আর সেই কঠোর পরিশ্রম করতে হয় না।


যদিও বাবা-মায়ের যদি সুষ্ঠু সন্তানরা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তাহলে সেই বাবা-মায়ের কষ্ট পুরোটাই দূর হয়ে যায়। কিন্তু তারা যদি বাবা মায়ের সুস্থ সন্তান না হয় এবং তারা জীবনে উন্নতির পর তারা তাদের বাবা-মাকে ভুলে যায় তাহলে তাদের বাবা-মার জীবনের কষ্টের আর কখনো শেষ হয় না। বরঞ্চ তাদের কষ্ট আরও কয়েকশ গুণ বেশি বেড়ে যায়।


আমার মতে জীবনের প্রতিটা সময় আমাদের পরিশ্রম করা উচিত এবং মাঝে মাঝে জীবনের একটু বিরতি নেওয়া উচিত। এতে পরিশ্রম করার মতো মনোবল পুনরায় সৃষ্টি হতে পারে। যদি তুমি একটানা কাজ করে যাও তাহলে সেই কাজে তোমার আগ্রহ অনেকটা কমে যাবে। কিন্তু তুমি যদি কিছু সময় বিরতি নিয়ে আবার সেই কাজ একই রকম ভাবে শুরু কর তাহলে সেই কাজের উদ্দীপনা তোমার বৃদ্ধি পাবে। আর আমরা সবাই জানি, পরিশ্রম সাফল্যের চাবিকাঠি। তাই আমাদের সবাইকে পরিশ্রম করতে হবে এবং নিজের জীবনটাকে উপভোগ করতে হবে।

✠ ০১ ✠


জীবনের এই শেষ সময়,
ভাবছি বসে তাই।
সবই কি ভুল করেছি,
সঠিক কি কিছু করি নাই?


এত সময় ধরে আমরা,
করেছি জগৎ সংসারের কাজ।
এখনোও করে যাচ্ছি,
শেষ হচ্ছে না কাজ।


কাজের জন্য কি জন্ম নিয়েছি,
এই পৃথিবীতে আমরা।
তবে সুখ-শান্তি কি মিথ্যা ছিল,
সবই কি তাহলে আলেয়া।


✠ ০২ ✠


মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্ম নিয়ে,
এই পৃথিবীতে বড় হয়েছি আমি।
ছোটবেলা থেকে শিখেছি আমি,
কর্মে নিযুক্ত হও এখনই।


নিজেদের সব চাহিদা পরিবার,
পূরণ করেনি কখনো।
নিজেদের চাহিদা পূরণের জন্য,
কর্ম করছে এখনো।


একটুকু সুখের আশায়,
ছুটে চলেছি দিবা রাত্রি।
তবুও দেখা পাচ্ছি না তার,
শুধুই হচ্ছে বেকার খাটনি।


আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে আজকের পোস্টটি । ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করতে ভুলবেন না।


আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আপনার কবিতাটি অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তাদের উচ্চ স্বপ্ন অনেক সময় পূরণ করতে পারে না , হয়তোবা টাকার অভাবে। তাদের ইচ্ছা গুলোকে ইচ্ছে করে রাখতে হয়। আপনি খুবই সুন্দর একটি বিষয় আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন ভাইয়া। আপনার অনু কবিতাটি আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো।

দেখতে দেখতে ভাই আপনি ২৯ তম অনু কবিতা লিখে ফেললেন। মাঝেমধ্যে আপনার কোন কবিতা গুলো আমি পড়ে থাকি। আজকের অনু কবিতাটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। কবিতার প্রতিটা লাইন আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে এবং আপনি খুব চমৎকার ভাবে লিখেছেন। আসলে কবিতা লেখা হলো মনের আর্ট। এত সুন্দর করে অনু কবিতাটি লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

আপনার অনু কবিতা দুটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। মধ্যবিত্ত ফ্যামিলি নিয়ে খুব সুন্দর কবিতা লিখেছেন। তবে ঠিক বলেছেন আপনি মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির লোকগুলো কারো কাছে কিছু বলতে পারেনা আত্মসম্মানের কারণে। তারা খাওয়া-দাওয়া করছে কিনা সেটাও কারো কাছে প্রকাশ করতে পারে না। সত্যি অনু কবিতার দুটি পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে অনু কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি কবিতা লিখে শেয়ার করেছেন। আপনার লেখা কবিতাটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে ভাই। আমার কাছে মনে হয় নিজের চাহিদা নিজের পরিবারের কাছ থেকে পূরণ না করে নিজে নিজেই পূরণ করা অনেক বেশি ভালো। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি কবিতা শেয়ার করার জন্য।

দাদা কবিতা পড়তে যেমন ভালো লাগে। লিখতে ও তেমন ভালো লাগে।কিন্তু আমি কবি নই।আপনার আজকের অনুকবিতা দুটো খুব ভালো লাগলো। আসলে আমরা মধ্যবিত্তরাই সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছি। আমরা পরিশ্রম করেই যাচ্ছি।কিন্তু তারপরেও আমাদের অবস্থার কোন উন্নতি নেই।আমরা সেই মধ্যবিত্ত নামে আজ ও আছি।আমরা দুচোখে স্বপ্ন নিয়েই বেঁচে আছি। আপনার লেখা কবিতা পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর কবিতাগুলো শেয়ার করার জন্য।