বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ০৬

in hive-129948 •  2 years ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ" পরিবারের সবাই। আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ ভ্রমণের ষষ্ঠ পর্ব শেয়ার করব। আজকের পোস্টটিতে আপনারা সম্পূর্ণ অন্যরূপে আমায় দেখতে পাবেন। এক মাছ শিকারি আমি। আশাকরি আজকের পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


IMG_20221226_131953.jpg


তো পরের দিন সকালে একই রকম ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে নিলাম। আগের দিন রাতে জ্যেঠু এই বড় পুকুরের জল ছেড়ে দিয়ে এসেছিল। সারারাত ধরে এই বড় পুকুরের পানি খালে নেমে গিয়েছিল। পরের দিন সকালে জল অনেকটাই কমে গিয়েছিল পুকুরের।

IMG_20221226_132053.jpg

তখন জ্যেঠু আমায় বলল, যা তুই মামার সাথে গিয়ে মাছ ধরে আয়। তো পাশের বাড়ির থেকে মাছ ধরার এই জালটি নিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম। প্রথম অবস্থায় আমরা খুব একটা বেশি মাছ পেলাম না। তো আমি বারবার চেষ্টা করতে লাগলাম।

IMG_20221226_132953.jpg

আর কাদার ভিতর হাঁটার অভ্যাস আমার ছিল না বিধায় আমি বারবার পড়ে যাচ্ছিলাম। এই মাটির ভিতরে অনেক শামুক থাকায় আমাদের খুব সাবধানে হাঁটতে হচ্ছিল। আমার তো পা একবার কেটেই গিয়েছিল। অবশ্য বেশি কাটেনি। তাই আমার এই কাদার ভিতর হাঁটতে খুব কষ্ট হচ্ছিল।

IMG_20221226_133421.jpg


মামা কিন্তু দ্রুতই হাঁটতে পারছিলেন। কারণ ওনাদের পা অনেকটা শক্ত আমাদের পা থেকে। তো আমরা প্রথমে জালটিকে একটা জায়গায় রেখে অন্য জায়গার চারিদিক বাঁধ দিয়ে দিলাম। তারপরে প্রথমে একটা প্লেট দিয়ে আমি কিছুটা সময় জল সেচ দিতে লাগলাম।

IMG_20221226_133434.jpg

এই শহরে জীবন কাটাতে কাটাতে আমাদের শরীরটা অনেকটা পোল্ট্রির মুরগির মত হয়ে গেছে। কারণ একটু কাজ করতেই হাপিয়ে যাই। তখন মামা বলল তোর দ্বারা কাজ হবে না। তুই এই জল সেচতে সারাদিন লাগিয়ে দিবি। তো মামা আমার হাত থেকে প্লেটটি নিয়ে নিজেই সেচ দিতে লাগলো।

IMG_20221226_140843.jpg


এদিকে আমি চারদিক ঘুরে দেখছিলাম কারণ কোথাও থেকে জল ঢুকছে কিনা। সাথে সাথে আমি মাছ ধরতেও শুরু করলাম। প্রথমে আমি কিছু পুঁটি মাছ ধরতে পারলাম। তখন মামা আমায় বলল একটা জায়গায় এই জালটি পেতে তুই দাঁড়িয়ে থাক দেখবি অটোমেটিক মাছ জালে চলে আসবে।

IMG_20221226_140918.jpg

কিছুক্ষণ পর জল অনেকটা কমে এলো। মাছগুলো তখন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। আমিও ঠিক মাছের জায়গাগুলোতে গিয়ে জালে মাছগুলো তুলছিলাম। মাছ ধরতে কিন্তু আমার বেশ ভালো লাগছিল। কিছুক্ষণ পর একটা লেটা মাছ দেখতে পেলাম। বাংলাদেশে এই মাছটিকে শোল মাছ বলে।

IMG_20221226_140016.jpg


যাইহোক মাছটি ধরা কিন্তু বেশ কঠিন। মাছটিকে আমি বিভিন্নভাবে ধরার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু মাছটি ধরার সাথে সাথেই হাত পিছলে বারবার চলে যাচ্ছিল। বেশ মুশকিলে পড়া গেল। তখন দূর থেকে মামা বলল মাছটিকে প্রথমে জালে তোল এবং একটি শুকনো জায়গায় নিয়ে যা। তারপর আস্তে করে মাছটিকে হাঁড়ির ভিতরে রাখ।

IMG_20221226_143025.jpg


মামার কথামতো আমি মাছটিকে ধরে একটা শুকনো জায়গায় নিয়ে রাখলাম। তারপর হাড়িতে আস্তে আস্তে মাছটিকে রেখে সাথে সাথে আমি হাড়ির মুখটি বন্ধ করে দিলাম। সারা গায়ে কাদায় একদম ভরে গেল।

IMG_20221226_143123.jpg


আমি আর মামা মিলে সারাদিন অনেক মাছ ধরলাম। তারপর মাছ ধরে হাত-পায়ের কাদাটা কোনমতে ধুয়ে নিলাম। কারণ এই কাদা হাত-পায়ে শুকিয়ে গেলে নাকি তুলতে খুব কষ্ট হয়। বাড়িতে গিয়ে হাঁড়ির মাছগুলো একটা নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দিলাম। পাশের বাড়ির একটি বোন এবং বড়মা মিলে মাছ কাটতে শুরু করল। তখন আমরা পুকুরে গিয়ে স্নান সেরে নিলাম।


IMG_20221226_144848.jpg


আজ এ পর্যন্তই। আশাকরি আপনাদের সকলের আজকের পোস্টটি খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।


11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

মাছ ধরতে আমারও অনেক ভালো লাগে আপনি তো দেখছি পানি সেচ দিয়ে অনেকগুলো মাছই ধরেছেন জাল দিয়ে।।
তাহলে তো মনে হচ্ছে এখন বাংলাদেশে ছসে আপনি খুবই সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন।।

হ্যাঁ দাদা।

বাংলাদেশে বেশ ভাল সময় কাটিয়েছেন দেখছি। মাঝে মাঝে এভাবে বেড়িয়ে পড়লে নতুন উদ্যোমে কাজ করা যায়। জাল দিয়ে বেশ ভালই মাছ ধরেছেন দেখছি। বাংলাদেশে কাটানো সুন্দর মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ আপু।

আপনার বাংলাদেশ ভ্রমণ পর্ব -৬ পড়ে অনেক ভালো লাগলো।এর আগে আপনার ভ্রমণের পোস্ট পড়েছিলাম।গ্রামে যারা থাকেন,তারা কাঁদায় হাঁটতে একটু অভ্যস্ত হয়ে থাকেন স্বভাবিক।যাক অবশেষে আপনার মামার কথা মতো মাছটি ধরতে পেরেছিলেন।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

গ্রামের খালগুলো থেকে এরকম টাটকা মাছ ধরার মজাই আলাদা। আপনার ছবিগুলো দেখতে কিন্তু দারুন লাগছে। এরকম আমিও মাছ ধরেছি অনেক আমাদের গ্রামের পুকুরে।

আমার অনেক ভালো লেগেছে আপনার এত সুন্দর মাছ ধরার দৃশ্য দেখে। আমরাও কিছুদিন আগে দুই ভাই মিলে পুকুর থেকে মাছ ধরেছিলাম। অবশ্য সেই ফটোগুলো আমার নিকটে নেই যদি পায় তাহলে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।