বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ৩১

in hive-129948 •  last year 

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।


IMG_20230105_160107.jpg


আসলে মনের দুঃখ কষ্টে আর কি করবো। এদিকে তোমার গিন্নি রেগে ফায়ার কারণ তার সাথে কোন সেলফি তোলা হয়নি। তাই আর কাজ খুঁজে না পেয়ে আমি বসে বসে পাথর করাতে লাগলাম। তো হাতের কাছে কোন ব্যাগ না থাকায় আমি নৌকার মাঝিকে বললাম যে, দাদা আপনার কাছে কোন ব্যাগ আছে কিনা। তখন তিনি তার নৌকা থেকে আমাকে একটা ক্যারিব্যাগ বের করে দিলেন।


IMG_20230105_160113.jpg


আমি বিভিন্ন ধরনের পাথর সংগ্রহ করতে লাগলাম। এখানে এত পরিমাণে পাথর যে কোনটা রেখে কোনটা নেব সেটা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কারণ সব পাথরগুলোই দেখতে অনেক সুন্দর ছিল। যদিও আমি অনেক বাছাই করে আলাদা আলাদা ধরনের পাথর ব্যাগে রাখছি। আসলে লোকজন এখানে পাথর নিতে নিতে ভালো কোন পাথরের সন্ধানে আমি পাচ্ছিলাম না। কিন্তু জলের নিচের পাথর গুলো অনেক সুন্দর ছিল। যদিও আমি জলের ভেতর নেমে পাথর কুড়াতে পারছিলাম না।


IMG_20230105_160117.jpg


আসলে আমি বাংলাদেশের এখান থেকে দূরে একটা ইন্ডিয়ান সৈনিকের ঘাঁটি দেখতে পেলাম এবং দূর থেকে লক্ষ্য করলাম যে, তারা ইন্ডিয়ান বর্ডার কে সুরক্ষিত রাখার জন্য পাহারা দিচ্ছিল। যদিও তারা এক জায়গায় চুপচাপ বসেছিল এবং দূর থেকে চারিদিকে নজর রাখছিল।


IMG_20230105_165817.jpg


যেহেতু আমরা একদম দিনের শেষে এই জায়গাটিতে ঘুরতে এসেছিলাম তাই এই জায়গা থেকে আমাদের বাড়ি যেতে রাত হয়েছিল। অবশ্যই এই জায়গার বিকালের মুহূর্তটা অসাধারণ ছিল। সূর্যাস্ত যাওয়ার দৃশ্যটি সত্যিই অসাধারণ ছিল। আমি এই সূর্যাস্ত দেওয়ার ছবিটি আমার ফোনে বন্দি করলাম। চারিদিকে যেন এক সোনালী আলোর আভা পুরো বালিটাকে সোনার মতো করে দিয়েছিল।


IMG_20230105_165830.jpg


একদিকে যেমন সূর্য অস্ত হচ্ছিল এবং অন্যদিকে একই সাথে চাঁদের দেখাও মিলন। আসলে আবহাওয়াটা এত সুন্দর এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়েছিল যে আমাদের চোখ আমি এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে দূরে সরাতে পারছিলাম না। আসলে একই সাথে সূর্যাস্ত এবং চাঁদের উদয় সত্যিই সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমরা তখন আর ওই জায়গাটাতে দেরি করলাম না। কারণ চারিদিকে অন্ধকার নেমে আসছিল।


IMG_20230105_171358.jpg


আসলে জাফলংকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট দোকান গড়ে উঠেছিল। মনে হচ্ছিল যেন এখানে মেলা লেগেছে। অবশ্য একটা দুঃখের বিষয় হলো এই যে এখানে বাংলাদেশের জিনিসপত্রের তুলনায় ইন্ডিয়ান জিনিস বেশি বিক্রি হচ্ছিল। কারণ কিছু অসাধু ব্যক্তিরা চুরি করে ইন্ডিয়া থেকে মালামাল কিনে নিয়ে এসে এখানে বেশি দামে বিক্রি করছিল। কিন্তু এখানের আরেকটা জিনিস আমার খুব ভালো লাগলো যে, পাথরের উপরে খোদাই করে বিভিন্ন ধরনের আলপনা তৈরি করেছে এখানে কিছু লোকজন।


IMG_20230105_173512.jpg


এরপর আমরা এই জাফলং এর শুল্ক স্টেশনে গেলাম ভ্রমণ করার জন্য। যদি ওইখান দিয়ে লোকজন খুব কম পারাপার করে। এটি হলো বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়ার সীমান্তের একটি বর্ডার। এখানে সাধারণত বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন মালামাল ইন্ডিয়ায় যেমন যাচ্ছে তেমনি একই সাথে ইন্ডিয়া হতে বিভিন্ন ধরনের মালামাল বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। একটু রাত হওয়ার কারণে এখানে কর্মরত বর্ডার গার্ড আমাদের ভিতরে প্রবেশ করতে দিল না।


IMG_20230105_182616.jpg


এরপর আমরা চলে এলাম একটা রেস্টুরেন্টে। অবশ্য এটাকে রেস্টুরেন্ট বলে না কারণ এটি একটা ছোট দোকান ছিল। আমরা আসবো বলে ওখানকার ওই স্থানীয় প্রধান শিক্ষক আমাদের জন্য এই হোটেলে আগে থেকেই খাবারের অর্ডার করে রেখেছিলেন। আমরা এসে প্রথমে ইলিশের ভর্তা খেলাম। আসলে ইলিশ মাছের ভর্তার স্বাদ অসাধারণ ছিল।


IMG_20230105_183145.jpg


এরপর এই এলাকার একটা জনপ্রিয় খাবার আমাদের সামনে নিয়ে এলো। সেটি হল চুইঝাল দিয়ে হাঁসের মাংস। আসলে বাংলাদেশে খাওয়া সব থেকে বেশি স্বাদের মাংস আমার কাছে এই মাংসটি লেগেছিল। এককথায় এই মাংসটি টেস্ট অসাধারণ ছিল। কিন্তু একটু বেশি ঝাল ছিল এই মাংসতে। মাংসের কালারটা একদম কালো রঙের ছিল। আমি একাই প্রায় দু বাটি মাংস খেয়ে নিলাম এবং খাওয়া-দাওয়া শেষে আমরা আবার পুনরায় হোটেলের দিকে রওনা দিলাম।


ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 10/11/2022


তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আপনি তো দেখছি আমাদের দেশে এসে অনেক জায়গা ভ্রমণ করেছেন। একদম গ্রাম থেকে দর্শনের স্থানগুলো খুব সুন্দর করে দেখার চেষ্টা করেছেন এবং পাশাপাশি অনেক ফটো ধারণ করেছেন। তবে যাই হোক অজানা অচেনা দেশের বিভিন্ন স্থানের ফটো গুলো দেখেও কিন্তু আমার বেশ ভালো লাগে। আশা করি সমস্ত পোস্ট আমাদের মাঝে খুব শীঘ্রই শেয়ার করে দিবেন।

বাংলাদেশে ভ্রমন পর্ব-৩১ পড়ে ফেললাম। জাফলং জায়গাটা সত্যি অসাধারন। সারাদিন ঘোরাঘুরি করে অনেক পাথর জমিয়েছেন। শেষে হোটেলে এসে চুইঝাল দিয়ে হাঁসের মাংস খেলেন। আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে অনেক ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ।