বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ৪১steemCreated with Sketch.

in hive-129948 •  11 months ago 

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।


IMG_20230107_111726.jpg


সেদিনকার মত আমরা হযরত শাহাজালাল এর মাজার থেকে বাড়িতে চলে এলাম। আসলে খুব ভালো লাগছিল কারণ এমন একটা পবিত্র স্থান আমরা সবাই ঘুরতে পেরে। এই মাজারে বহু দূর-দূরান্ত থেকে লোক আসে তাদের মনোকামনা পূরণের জন্য। যেহেতু মাজারটি অনেক বড় তাই আমাদের পুরো মাজারটি সম্পূর্ণ ঘুরে দেখতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছিল। এরপর আমরা পুনরায় হোটেলে চলে গেলাম বাইরে থেকে কেনাকাটি এবং রাতের খাবার শেষ করে। আসলে একটানা এত জার্নিতে আমরা সবাই খুব ক্লান্ত ছিলাম। পরের দিন আমরা প্ল্যান করলাম যে আমরা এই সিলেট অঞ্চলের যেখানে চা বাগান রয়েছে সেই জায়গাগুলো ঘুরে দেখার জন্য।


IMG_20230107_111750.jpg


পরের দিন সকালবেলা আমরা সবাই হাতমুখ ধুয়ে সকালের খাবারটা সেরে ফেললাম। যেহেতু আমরা আজ পুরো দিনটাই শুধুমাত্র চায়ের বাগানে ঘুরে বেড়াবো তাই আমরা অতটা ব্যস্ত ছিলাম না। যথা সময়ে কাকা আমাদের হোটেলের সামনে এসে হাজির হলো। এরপর আমরা হোটেল থেকে নেমে চা বাগানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আসলে আজকে আমাদের কোন গন্তব্যস্থান নেই। যেদিকে দুচোখ যাবে আমরা সেদিকেই ঘুরতে যাব। এরপরে আমরা সর্বপ্রথম মালনিচেরা চায়ের বাগানে প্রবেশ করলাম।


IMG_20230107_111753.jpg


আসলে এখানে চায়ের বাগান গুলো উঁচু ঢিপির উপর থেকে ক্রমশ নিচের দিকে নেমে এসেছে। দূর থেকে এই পাহাড়ের টিলাগুলো দেখতে আমাদের সবার খুব ভালো লাগছিল। আসলে এত কাছ থেকে চায়ের বাগান এই সর্বপ্রথম আমার দেখা। যদিও আমরা সিকিমে যাওয়ার পথে চায়ের বাগান দেখতে পেয়েছিলাম। কিন্তু সেই চায়ের বাগানে আমরা নামিনি। তাই আজ চায়ের বাগানের ভিতর ঢুকতে পেরে আমাদের সবার খুব ভালো লাগছিল। যদিও প্রথমে এই চায়ের বাগানের ঢোকার অনুমতি আমরা পাচ্ছিলাম না।


IMG_20230107_111926.jpg


আসলে চায়ের পাতা গুলো রোদের আলোয় ঝকমক করছিল। তখন একটা পাতা ছিড়ে আমি হাতে ধরে একটু তার গন্ধ শোকরার চেষ্টা করছিলাম। যদিও চায়ের পাতায় তেমন কোন গন্ধ নেই। আসলে এই পাতা থেকেই নাকি আমাদের সকালের পানীয় তৈরি হয়। আসলে এরকম পাতা থেকে কিন্তু ডাইরেক চা পাতি তৈরি হয় না। আসলে চা পাতি তৈরির জন্য এই পাতাকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে হয়।


IMG_20230107_112231.jpg


আসলে এই চায়ের একদম কুড়ি থেকে নিচে অব্দি পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের চায়ের পাতি তৈরি হয়। আসলে একদম কুড়ি থেকে দামের পার্থক্য অর্থাৎ কুড়ির অংশের দাম সব থেকে বেশি এবং যত নিচের দিকে নামতে হয় তত চায়ের দাম কমতে থাকে। আসলে এই চা কিন্তু আমাদের প্রায় সকলের জীবনে একটি নিত্য প্রয়োজনীয় পানীয়। আসলে একটা দিক আমি বিশেষ করে লক্ষ্য করেছি যে, বাংলাদেশের বেশিরভাগ লোক এই চা পান করে। বিশেষ করে তাদের ক্লান্তির দূর করার জন্য তারা বেশি বেশি করে চা পান করে।

IMG_20230107_112237.jpg


আসলে সর্বপ্রথম আমরা যখন বাগাটি ঘুরে দেখছিলাম তখন বাগানটিতে লোকের সংখ্যা অনেক কম ছিল। কিন্তু আমাদের দেখাদেখি বিভিন্ন পর্যটক এই জায়গায় এসে এই চা বাগানে প্রবেশ করছিল। যদিও তারা সহজে ঢুকতে পারছিল না কারণ তাদের এই চা বাগানে ঢোকার জন্য তাদেরকে পারমিশন নিতে হবে। যেহেতু আমরা চারিদিকে চা বাগান ঘুরে দেখছিলাম। তখন হঠাৎ করে আমি দূর থেকে দেখে পেলাম যে একটা জায়গায় চা বাগানের ভেতরে কতগুলো ফুল ফুটে আছে।


IMG_20230107_112435.jpg


আসলে এগুলো অন্য কোন ফুল নয় এগুলো হলো চা গাছের ফুল। আমি এর আগে কখনো এই চা গাছের ফুল দেখিনি। আর আমার ধারণাই ছিল না যে এই চা গাছে এত সুন্দর ফুল ফোটে। আসলে আমি যখন এই ফুলগুলো দেখতে পেলাম তখন সবাইকে ডাকলাম যে তারাও এসে যেন এই চা গাছের ফুল দেখতে পায়। আসলে এই চা গাছের ফুল কিন্তু সচরাচর দেখা যায় না। অনেক গাছ আছে যে গাছে কখনোই ফুল ধরে না। আরেকটা জিনিস হল এই চা গাছের ফুলে কোন গন্ধ নেই।

আমি ফুলটি একটু হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দেখতে লাগলাম। এই ফুলের প্রায় চারটি পাপড়ি রয়েছে। এই ফুলের উপরের অংশে হলুদ বৃন্তগুলি গুলি সত্যিই দেখার মত। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় এসে এই চায়ের ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে উড়ে বেড়াচ্ছে। আসলে আমি সবাইকে বারণ করলাম যে তারা যেন এই চা গাছের ফুল না ছেড়ে। কারণ গাছেই ফুলকে অনেক সুন্দর দেখায়।



IMG_20230107_112446.jpg

এরপর আমরা আরও উপরের দিকে উঠতে লাগলাম। আসলে উপরে ওঠা শেষে সবাই খুব হাঁপিয়ে গেলাম। তাই আমরা আর বেশি উপরে উঠতে চেষ্টা করলাম না। যদিও সবাই নিচের দিকে রয়েছে। আমরা ভাই-বোনেরা দুষ্টুমি করে উপরের দিকে উঠে একদম ক্লান্ত হয়ে গেলাম। তাই পুনরায় আমরা নিচের দিকে নামতে লাগলাম। আসলে এই নিচের দিকের আমার সময় আমি একটি সেলফি তুলে নিলাম।


ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 15/11/2022


তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

দাদা বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আপনি যে জায়গায় গিয়েছেন দাদা। আমি ওই জায়গায় গিয়েছিলাম। জায়গাটা বেশ সুন্দর এবং বেশী ওপরে আমিও উঠতে গিয়ে আমি হাপায় গেছিলাম।সর্বোপরি ভালো ছিল দাদা ভ্রমন

হযরত শাহজালাল এর মাজার আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ পবিত্র স্থান মনে করে। চায়ের দামের বিষয়টি বেশ ইন্টারস্টিং। এবং চায়ের বাগানে উপরের দিকে উঠতে উঠতে আপনি হাফিয়ে গেছেন বিষয়টি স্বাভাবিক দাদা। পানির পরে বিশ্বে সবচাইতে বেশি পান করা পানীয় হচ্ছে চা। সিলেটে চায়ের বাগানে ঘোরাঘুরির পোস্ট টা আমার কাছে খুব ভালো লাগল দাদা। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

Posted using SteemPro Mobile

হ্যাঁ সিলেটের পাহাড়ী অঞ্চলের উপরে চায়ের বাগানে সৌন্দর্য পর্যটকদের বেশি আকৃষ্ট করে আর আপনার এই পর্ব থেকেই আমি চা গাছের ফুল দেখতে পেলাম। আগে কখনো চা গাছের ফুল দেখিনি তাই সৌন্দর্যটা একটু বেশি ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile