ছাত্রজীবন। steemCreated with Sketch.

in hive-129948 •  last year 

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ ছাত্রজীবন সম্পর্কে আমার কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png



সোর্স


দেশ গঠনের প্রধান হাতিয়ার হল ছাত্ররা। তাই ছাত্ররা আমাদের এই সমাজ গঠনে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ছাত্ররা হল আমাদের দেশের সম্পদ। দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ছাত্রদের অবদান অনস্বীকার্য। আর এজন্যই এই ছাত্রদের সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। যদিও শিক্ষার কোন বয়স নেই। কিন্তু প্রথম অবস্থায় অর্থাৎ জন্মের পর থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পর্যন্ত এই শিক্ষার সময়সূচিকে আমরা ছাত্র জীবন বলে থাকি। আর এই সময়ে ছাত্ররা যেসব শিক্ষা গ্রহণ করে সেসব শিক্ষার থেকে জ্ঞান লাভ করে তারা সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


আসলে ছাত্র জীবন থেকে বিভিন্ন ছাত্রের ভবিষ্যতের পথ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা গ্রহণ করে ছাত্ররা দেশের বিভিন্ন কাজে লিপ্ত হয়। এছাড়াও সুষ্ঠু শিক্ষা গ্রহণ না করলে এই ছাত্রটাই একসময় দেশের সবথেকে বড় শত্রু হয়ে দাঁড়ায়। তাইতো ছাত্র জীবনে সঠিক শিক্ষার প্রয়োজন অনস্বীকার্য। আসলে ছাত্রদের শিক্ষা গঠনে পরিবেশের ভূমিকা যথেষ্ট রয়েছে। আমরা যদি এই ছাত্রদের সঠিক পরিবেশে শিক্ষা দিতে না পারি তাহলে দেশ এবং সমাজের সবথেকে বড় ক্ষতি হয়।


আসলে ছাত্ররাই কিন্তু দেশের ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যতের প্রতিটা ক্ষেত্রে এই ছাত্ররা তাদের নিজেদের অবদান রেখে দেশের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে নিজেদের পরিচিতি লাভ করে। আসলে ছাত্র জীবনে ছাত্ররা কিন্তু নরম মাটির মতো হয়ে থাকে। আসলে আমরা নরম মাটি কে ইচ্ছামতো যে কোন ধরনের আকার দিতে পারি। তেমনি ছাত্রদের এই শিক্ষার সময়সূচিতে আমরা ছাত্রদের বিভিন্ন ধরনের আচার-আচরণ, মূল্যবোধ ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা দিতে পারি।


আসলে ছাত্র জীবনে ছাত্রদের আমরা যদি উৎসাহিত করি তাহলে তারা যে কোন অসাধ্য জিনিসকে সাধন করতে পারে। কারণ এই ছাত্র জীবনে ছাত্রদের ভিতর যে মনোবল থাকে তা সব থেকে বেশি শক্তিশালী। আসলে ছাত্র জীবন হলো একটা সেনসিটিভ সময়। কারণ এই সময় ছাত্রদের মন খুব নরম থাকে। আর এই নরম মনে বিভিন্ন ধরনের দেশপ্রেম শিষ্টাচার ইত্যাদি সহজেই প্রবেশ করানো যায়। এছাড়াও তাদেরকে মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করা যায়।


কিন্তু বর্তমান সময়ে আমরা লক্ষ্য করলে দেখতে পাই যে বেশিরভাগ ছাত্ররাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়ে। এছাড়াও তারা বিভিন্ন ধরনের অবৈধ কাজে লিপ্ত হচ্ছে। এর প্রধান কারণ হলো মোবাইল। আসলে এটা কিন্তু ছাত্রদের দোষ নয়। এই দোষ সম্পূর্ণ আমাদের নিজেদের। কারন আমরা অর্থাৎ প্রতিটা সন্তানের বাবা-মা এই ছাত্র বয়সে তাদের হাতে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র যেমন মোবাইল কিনে দিচ্ছে। মোবাইলের এক দিক থেকে যেমন ভালো দিক রয়েছে তেমনি অন্য দিক থেকে খারাপ দিক রয়েছে।


আসলে পৃথিবীতে খারাপ জিনিসটার প্রতি আমাদের একটু টান বেশিই থাকে। কারণ খারাপ জিনিস অনেক আকর্ষণীয় হয়। আর মোবাইলের ফলে দেশের ছাত্র সমাজ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হচ্ছে। ছাত্র জীবনটা হলো পড়াশোনার সময়। আর এই পড়াশোনার সময় যদি তারা বাইরের খারাপ দিকে প্রতি ঝুঁকে পড়ে তাহলে সেসব ছাত্রকে সেই খারাপ দিক থেকে ভালো দিক থেকে টেনে না আনা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।


এছাড়াও আরেকটি প্রধান সমস্যা হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা। কারণ একটি ছাত্রের পুরো ভবিষ্যৎ নির্ভর করে এই শিক্ষার উপর। একটা ছাত্র তার শৈশব কাল থেকে যেসব শিক্ষা গ্রহণ করে সেসব শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে তারা ভবিষ্যতে বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করে। তাইতো ছাত্র জীবনের মানসিক বিকাশের প্রধান মাধ্যম হলো শিক্ষা। তাই একজন ছাত্র যদি প্রকৃত শিক্ষা না পায় তাহলে সে ছাত্র কখনো একজন সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার কারণে প্রতিবছর বিভিন্ন ছাত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।


কারণ বর্তমান সময়ের শিক্ষা কিন্তু অর্থের উপর নির্ভর করে। যেসব স্কুলের বেতন অনেক বেশি সেসব স্কুলে ভালো শিক্ষা দেওয়া হয়। আর যেসব সরকারি স্কুল রয়েছে সেসব স্কুলে তেমন ভালো কোন শিক্ষা দেওয়া হয় না। এছাড়াও শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির ফলে বিভিন্ন মূর্খ ব্যক্তিরা এসব শিক্ষার প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার ফলে শিক্ষাক্ষেত্র সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ তারা নিজেই প্রকৃতি শিক্ষিত নয়। তাহলে তারা ছাত্রদেরকে কি করে প্রকৃত শিক্ষা দান করবে। আসলে এর ফলেও কিন্তু ছাত্র সমাজ নষ্ট হয়ে যায়।


আসলে ছাত্র জীবনকে কিন্তু মানব জীবনের বীজ বপনের সময় বলে ধরা হয়। কারণ এই সময়ে উপযুক্ত পরিবেশে যদি সঠিক বীজ বপন না করা হয় তাহলে সেই শস্য কখনোই ভালো হতে পারে না। তাইতো এই সময়ে একজন শিক্ষিত শিক্ষকের দ্বারা যদি শিক্ষাদান না করা হয় তাহলে সেসব ছাত্ররা কখনোই একজন ভালো ছাত্র হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। এছাড়াও সমাজের শিক্ষিতের হার বাড়ানোর জন্য অবশ্যই কিন্তু পরিবারের ভূমিকা রয়েছে।


আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাকে একটি শিক্ষিত জাতি দেব। জ্ঞানী মনীষীদের এ ধরনের বক্তব্যের প্রধান কারণ হলো একজন ছাত্র তার পরিবার থেকে সর্বপ্রথম শিক্ষা পেয়ে থাকে। আরে জন্যই পরিবারকে সর্বপ্রথম শিক্ষার কেন্দ্রস্থল বলা হয়ে থাকে। আর পরিবারের ব্যক্তিরা যদি শিক্ষিত হয় তাহলে তাদের সন্তানও শিক্ষার দিকে অনেকটা ঝোঁক থাকবে। কারণ একজন ছাত্র তার মা-বাবার কাছ থেকেই সর্বপ্রথম শিক্ষা লাভ করে থাকে। আসলে একজন শিক্ষিত লোকই বোঝে শিক্ষার মর্ম।


আমাদের প্রথম শিক্ষাগুরু হচ্ছে মা-বাবা। আর মা বাবা যদি শিক্ষিত হয় তাহলে সন্তানও ভবিষ্যতে সুষ্ঠ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। কারণ একজন শিক্ষিত মা-বাবা কখনোই চায়না যে তার সন্তান সুষ্ঠু শিক্ষা গ্রহণ না করুক। তাই মা-বাবারা সবসময় চেষ্টা করে তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করার জন্য। আর মা-বাবার মত শিক্ষকরাও সবসময় চেষ্টা করে তাদের ছাত্ররা শিক্ষিত হোক। আসলেই শিক্ষকরা কিন্তু ছাত্রদের চরিত্র গঠনেও যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। কারণ একজন চরিত্রহীন শিক্ষক কখনোই তার ছাত্রদেরকে চরিত্র সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে পারে না।


আগেরকার সময়ে শিক্ষকরা ছিলেন মা-বাবার মত। তারা ছাত্রদেরকে নিজেদের সন্তানের মত শিক্ষাদান করতেন এবং ছাত্ররা যদি বিভিন্ন খারাপ দিকে ধাবিত হতো তখন এসব শিক্ষকরা তাদের শাসন করে আবার পুনরায় ভাল পথে নিয়ে আসতেন। আর সে সময়ের শিক্ষকরা ছাত্রদের কাছে কিন্তু ভগবানের মতো ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে ছাত্ররা এই শিক্ষকদের সামান্য সম্মান করে না। আসলে যেসব ছাত্ররা শিক্ষাগুরুকে সম্মান না করে তারা কখনোই জীবনে উন্নতি লাভ করতে পারে না। তাইতো সর্বপ্রথম ছাত্রদের প্রধান দায়িত্ব এবং কর্তব্য হলো শিক্ষকদের সম্মান করা।


আসলে কথায় আছে না, সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, আর অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। তাইতো ছাত্রদেরকে বন্ধু নির্বাচনেও অবশ্য সতর্ক হতে হবে। কারণ একদল ভালো ছাত্রের ভিতরে যদি একজন খারাপ অসৎ ছাত্র থাকে তাহলে সেই ছাত্রদল পুরোই খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাইতো ছাত্রদেরকে বন্ধু নির্বাচনে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। কারণ এসব খারাপ ছাত্ররা এসব ভালো ছাত্রদেরকে খারাপ পথে আনার জন্য বিভিন্ন ধরনের লোভ-লালসার সৃষ্টি করবে। আর এই লোভ লালসাকে কাটিয়ে উঠিয়ে যখন ভালো ছাত্ররা ভালো করে পড়াশোনা করবে তাহলে তারাই কিন্তু দেশে প্রকৃতির শিক্ষিত ব্যক্তি হয়ে গড়ে উঠতে পারবে।



আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।



সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।



11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো বাংলা। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

দাদা আপনি ঠিকই বলেছেন, আগেকার সময় ছাত্ররা শিক্ষককে মন থেকে সম্মান করতেন। তবে এখনকার সময়ে শিক্ষক সম্পর্কে ছাত্রের মাঝে সম্মানবোধটা কমই দেখা যায়। অথচ একজন ছাত্রের জীবনে শিক্ষকের গুরুত্ব কিংবা ভূমিকা অপরিসীম। ছাত্রের ভবিষ্যৎ ত্বরান্বিত করার জন্য শিক্ষকের চেষ্টা থাকে অপরিসীম। যাই হোক দাদা, আজ আপনি ছাত্র জীবন নিয়ে খুব সুন্দর লেখা লিখেছেন। আপনার লেখনী পড়ে আমার ছাত্র জীবনের কথা ভীষণ মনে পড়ে গেল। খুবই যুক্তিযুক্ত কথা এবং ছাত্র জীবন নিয়ে আপনার মনের অনুভূতিটুকু তুলে ধরার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

একটি দেশের বা একটি জাতির মেরুদন্ড শক্ত করলে হলে সেই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা বা শিক্ষা ভালো হতে হয়। প্রতিটি ব্যক্তির জীবনে ছাত্র জীবন সবথেকে মধুর ও আনন্দের হয়। প্রতিটি ছাত্রই তার শিক্ষকের থেকে সুশিক্ষা নিয়ে বড় হয়ে দেশ সেবায় ব্রতী হয়। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।