বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ৪৪steemCreated with Sketch.

in hive-129948 •  10 months ago 

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।


IMG_20230107_154712.jpg


যেহেতু আমরা দুপুরে খাওয়ার জন্য রেস্টুরেন্টে অর্ডার করলাম তাই আমাদের একটু দেরি হচ্ছিল। তাই ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর আমাদের খাবার প্রস্তুত হয়ে গেল। যদিও আমরা তেমন কোন মসলার খাবার অর্ডার করিনি। আসলে ওই অঞ্চলের যেসব খাবার অর্থাৎ যেসব শাকসবজি পাওয়া যায় সেইসব শাকসবজি দিয়ে আমরা খাবার তৈরি করতে বলেছিলাম। আসলে এই কয়দিন আমরা এত মসলাযুক্ত খাবার খেয়েছিলাম যে তাই আমরা আর কোন মাছ-মাংস অর্ডার করিনি। যদিও এই রেস্টুরেন্টের খাবারের মান অতটা ভালো ছিল না। কিন্তু আমাদের সবার খুব খিদে লেগে গিয়েছিল। তাই আমরা খাবারের গুণগত মান বিচার না করে খেতে আরম্ভ করে দিলাম।


IMG_20230107_154707.jpg

আসলে সবাই মিলে একসাথে গল্প করতে করতে খাওয়ার মজাটাই আলাদা। এরপর খাওয়ার পরে আমরা একটু বিশ্রাম করে নিলাম। অর্থাৎ এই রেস্টুরেন্টে কিছুক্ষণ সময় বসে রইলাম। কারণ খাবার দাবার খেয়ে এই পাহাড়ি অঞ্চলে হাঁটাহাঁটি করতে খুব কষ্ট হয়। এরপর আমরা সেই ঝর্ণার দিকে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম। কিন্তু এই রেস্টুরেন্ট থেকে এই ঝর্ণার দিকে যাওয়ার জন্য প্রায় আমাদের ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটতে হবে তাই আমরা আর সময় নষ্ট না করে বেরিয়ে পড়লাম। যেহেতু বোনের পায়ের ব্যথার জন্য আমরা দ্রুত হাঁটতে পারছিলাম না তাই আমরা একটু আগেই রওনা দিয়ে দিলাম। আসলে এখানের চারিদিকের প্রাকৃতিক পরিবেশ সত্যিই খুব ভালো ছিল।


IMG_20230107_154952.jpg


কারণ আমাদের সবাইকে যেহেতু আস্তে আস্তে হাঁটতে হচ্ছিল তাই আমরা সবাই মিলে আস্তে আস্তে হাঁটতে হাঁটতে গল্প করছিলাম এবং সবাই মিলে বিভিন্ন ধরনের ছবি তুলছিলাম। যেহেতু বোন আমার হাত ধরে হাঁটছিল তাই আমি আর তেমন কোন ছবি তুলতে পারলাম না। এরপরে প্রায় কুড়ি মিনিট পর আমরা পৌঁছে গেলাম সেই ঝরনার জায়গাতে। আসলে দূর থেকেই আমরা বুঝতে পারছিলাম যে সামনে ঝর্ণা রয়েছে। কারণ ঝর্ণার জলের আওয়াজ অনেক দূর পর্যন্ত শোনা যাচ্ছিল। তাই আমাদের দুজনকে রেখে সবাই একটু তাড়াতাড়ি হেঁটে চলে গেল সেই ঝর্ণার কাছে। আমরা আস্তে আস্তে এগোতে লাগলাম সেই ঝর্ণার দিকে।


IMG_20230107_154954_edited.jpg


আসলে চারিদিকের এই সোনালী বর্ণের রোদের আলো এবং এত গাছ গাছালি দেখে সত্যিই আমার মনটা খুব ভালো লাগছিল। আসলে এই ঝর্ণার জল কিন্তু ভীষণ ঠান্ডা ছিল। এরপরে বোনকে একটা জায়গায় বসিয়ে রেখে আমিও চারিদিকটা ঘুরে দেখতে শুরু করলাম। আসলে চারিদিকে দেখবো কি। সবাই আমাকে ডাকলো যে তাদের ছবি তুলে দেওয়ার জন্য। আসলে আমার একটা ভুল হয়ে গিয়েছিল যে আমি যখন বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছিলাম তখন যদি আমি আমার ক্যামেরাটা নিয়ে আসতাম তাহলে হয়তোবা অনেক ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারতাম। যাইহোক সবার ফোনে তাদের ছবি আমি তুলতে শুরু করে দিলাম।


IMG_20230107_160732.jpg


আসলে এই ছবির ফাঁকে ফাঁকে আমিও নিজের দুই একটা ছবি তুলে নিলাম। এরপরে আমি আরেকটু বেশি ঝর্ণার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। অবশ্য সবাই আমাকে বারণ করছিল যে এই পাহাড়ী অঞ্চলে যেখানে জল রয়েছে সেখানে পিচ্ছিল হয়ে গেছে। তাই আমাকে যেতে বারণ করছিল সবাই। এর কারণ হলো আমি যদি কোন ভাবে পা স্লিপ করে পড়ে যাই তাহলে হয়তোবা আমি বড় কোনো ধরনের ব্যথা পেতে পারি। কারণ এখানে চারিদিকে শুধু পাথর আর পাথর। আর এই পাথরের উপরে পড়লে তো আর কোন কথা নেই। আসলে এই পাহাড়ি অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই দেখার মত।


যদি ওই পাহাড়ি অঞ্চলে আপনার অনেকদিন থাকতে ইচ্ছে করবে না। কারণ আধুনিক সভ্যতা হতে এখানে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এছাড়াও এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা অতটা কিন্তু ভালো নয়। আর এসব অঞ্চলের সন্ধ্যার সময় প্রায় সবাই ঘরে ঢুকে যায়। রাতের বেলায় এইসব অঞ্চলের দোকানপাট কিন্তু সবই বন্ধ থাকে। যদিও ভোর হতে না হতেই সবাই আবার কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ে। এরপর আমি পাহাড়েরও কিছু ছবি তুলতে লাগলাম। আসলে প্রকৃতি তার নিজের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নিজে নিজেই তার অবস্থানকে পরিবর্তন করে নেয়।


IMG_20230107_160735.jpg


আসলে আমার কাছে মনে হচ্ছিল যে আমরা কোন একটা বড় গর্তের ভিতর রয়েছি। কারণ চারিদিকে এত উঁচু বড় পাথরের পাহাড় যে ওই উপর থেকে যদি কেউ নিচে একবার পড়ে যায় তাহলে তার বাঁচার সম্ভাবনা একদম নেই বললেই চলে। কিছু কিছু লোক আবার এই ঝর্ণার জলে অনেক আনন্দ করছিল। আবার দেখলাম কিছু কিছু লোক এই ঝর্ণার জলে স্নান করার জন্য জামা কাপড় নিয়ে এসেছিল বাড়ি থেকে। আসলে এই ঝর্ণার জল পাহাড়ি অঞ্চলের চূড়া থেকে বরফ গলে গলে নিচু ভূমির দিকে অগ্রসর হয়। আর কেউই বলতে পারে না যে এই ঝর্ণার উৎপত্তি কোথা থেকে।


ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 17/11/2022


তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

কথাটা ঠিক ভাই শহর থেকে বাইরে নেটওয়ার্কের সমস্যা ঠিকমতো কারেন্ট থাকেন এসব কারণে হয়তো পাহাড়ে আমরা বেশিদিন থাকতে পারব না। কিন্তু সেখানে গেলে অসাধারণ একটা শান্তি কাজ করে মনের মধ্যে। আর পাথরের মধ্যে হাঁটলে পায়ে ব‍্যাথা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক। ঝলমলে রোদে ঝরণা টা বেশ লাগছে দেখতে। সবমিলিয়ে দারুণ ছিল আপনার বাংলাদেশ ভ্রমণের এই পর্বটা দাদা।

Posted using SteemPro Mobile