সিন্ডিকেটের অত্যাচার।

in hive-129948 •  10 months ago 

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ সিন্ডিকেটের অত্যাচার সম্পর্কে আমার কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png



সোর্স



বর্তমান সময়ে আমরা বাজারে গিয়ে লক্ষ্য করছি যে প্রতিটা জিনিসের দাম প্রায় আকাশ ছোঁয়া। অর্থাৎ আগে যেমন আমরা প্রায় বাজারে গেলে ৫০০ টাকার ভিতরে আমাদের ব্যাগ সম্পূর্ণ ভর্তি হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমান সময়ে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে গেলেও সেই বাজারের ব্যাগ এখন ভর্তি হয় না। আসলে এইসব বাজারের পণ্যের চাহিদা দিন দিন যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি একদল অসাধু ব্যক্তিরা এই চাহিদার উপরে ভিত্তি করে তারাও কিন্তু জিনিসপত্রের দাম দ্বিগুণ দামে বিক্রয় করছে। অর্থাৎ তারা কিন্তু তাদের ন্যায্য মূল্যের থেকেও অনেক বেশি দামে বাজারে এসব পণ্য বিক্রয় করছে। আর অতিরিক্ত দামে এসব পণ্য বিক্রি করার ফলে দেশের সর্বসাধারণ লোকেরা এসব জিনিসপত্র ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। এছাড়াও গরিব মানুষের পক্ষে এখন আর সম্ভব হচ্ছে না বাজার থেকে অতিরিক্ত দামে জিনিসপত্র কিনে নিয়ে ব্যবহার করা।

আসলে পণ্যের চাহিদা একদিকে যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি অন্যদিকে মানুষের ইনকাম অনেকটা সীমিত হয়ে গেছে। আর এই সীমিত ইনকাম করা লোকেদের পক্ষে বাজারে গিয়ে বেশি দামে এই জিনিস ক্রয় করা মোটেও সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও এইসব অসাধু ব্যক্তিদের অর্থাৎ সিন্ডিকেট টাইপের লোকেদের জন্য আজ সর্বসাধারণ লোকেরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আসলে শাকসবজি এবং যেসব পণ্য কৃষকরা তৈরি করে তারা কিন্তু তাদের সঠিক পারিশ্রমিক কখনোই পায় না। অর্থাৎ তারা যে দামে পণ্য বিক্রি করে সেই দামে কিন্তু বাজারের এইসব সিন্ডিকেট লোকেরা বিক্রি করে না। বরং তারা কৃষকের কাছ থেকে যে দামে জিনিসপত্র ক্রয় করে সেই দামের প্রায় তিন চার গুণ বেশি দামে বাজারে এসব পণ্য বিক্রি করে। আর এর ফলে যেসব কৃষকরা ফসল উৎপাদন করে তারা কিন্তু তাদের ন্যায্য মজুরি কখনোই পায় না।


আর এর ফলে দেশের কৃষকের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। আসলে কৃষক যখন তার ফসলের দাম সঠিকভাবে না পায় তাহলে কিন্তু তাদের এই চাষবাসের উপর থেকে তাদের আস্থা সরে যায়। আসলে আমাদের দেশের সর্বস্তরের লোকেরা কিন্তু এই বাংলার কৃষকদের উপর নির্ভরশীল। আসলে একটা জিনিস আপনারা কখনো খেয়াল করে দেখেছেন যে কৃষকরা যদি মাঠে ফসল না ফলায় তাহলে আমাদের কি অবস্থা হবে। আসলে এসব কৃষকরা কিন্তু নিঃস্বার্থভাবে এবং তাদের লোভ ত্যাগ করে কিন্তু তারা সৎ পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করে এবং সেই ফসল তারা তাদের ন্যায্য দামে বিক্রি করতে চায়। কিন্তু এসব সিন্ডিকেট টাইপের অসাধু ব্যক্তিরা তারা এই কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য দাম অপেক্ষা অনেক বেশি কম দামে এইসব পণ্য তারা ক্রয় করে। এছাড়াও এইসব কৃষকদের দ্বারা নানাভাবে ভয় ভীতি দেখায়।


আসলে বাংলার কৃষকেরা এখনো অনেকেই অশিক্ষিত রয়েছে। আসলে অশিক্ষিত থাকার ফলে তারা শুধুমাত্র ফসল উৎপাদন করে যায়। বাইরের জগতের বাজার সম্পর্কে তাদের তেমন কোন ধ্যান-ধারণা থাকে না। এছাড়াও তারা যে ফসল উৎপাদন করবে সেই ফসল বহন করার মতো কোনো যানবাহন তাদের কাছে না থাকার দরুন তারা বাধ্য হয় এই সিন্ডিকেট টাইপের লোকেদের কাছে সেই সব ফসল বিক্রি করার জন্য। এছাড়াও অনেকে আছে এসব কৃষকদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে জোর করে ফসল ক্রয় করে অল্প মূল্যে। আসলে এইসব সিন্ডিকেট লোকেরা দেশের জন্য সবথেকে বড় ক্ষতিকারক। কারণ তাদের জন্য সবথেকে দেশের বড় ক্ষতি হচ্ছে। তারা নিজেরা সকল অর্থ আত্মসাৎ করে এইসব গরীব লোকেদের পেটে লাথি মারার চিন্তাভাবনা সবসময় থাকে।


আসলে আমাদের সরকারকে অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে যে বাংলার কৃষকেরা যেন তাদের ফসলের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত না হয়। এছাড়াও তাদের কাছে গিয়ে তাদের উৎপাদিত ফসল ক্রয় করে সেই সব ফসল যদি বাজারে অল্প দামে বিক্রি করা যায় তাহলে সকল শ্রেণীর লোকেরা সকল ধরনের পণ্য ক্রয় করতে সামর্থ্য থাকবে।আসলে সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে একদিকে যেমন বাংলার কৃষকেরা বেঁচে থাকবে তেমনি অন্যদিকে বাংলার সাধারণ মানুষেরা সকল কিছু ক্রয় করার ক্ষমতার ভিতর থাকবে। আসলে এই সিন্ডিকেট টাইপের লোকেদের জন্য বাংলার এই দুই শ্রেণীর লোকের অর্থাৎ কৃষক এবং মধ্যবর্তী যেসব লোকেরা বসবাস করে তাদেরই সবথেকে বেশি ক্ষতি হচ্ছে। আর আমরা যদি সবাই একত্রিত হয়ে এই সিন্ডিকেট টাইপের অসৎ লোকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তাহলে আমাদের দেশ থেকে এই সিন্ডিকেট টাইপের লোকেদের নাম চিরতরে মুছে যাবে। এছাড়াও তারা আর কখনো সাহস পাবে না যে অতিরিক্ত দামে কোন কিছু বিক্রয় করা এবং কম দামে কোন কিছু ক্রয় করা।


তাইতো দেশের সরকার এবং জনগণ যদি একত্রিত হয়ে বাংলার এই কৃষকদের পাশে দাঁড়ায় এবং এসব কৃষকদের কাছ থেকে সুলভ মূল্যে অর্থ ক্রয় করে তাহলে দেশে কখনোই আর অরজগতার সৃষ্টি হবে না। বরং এই কৃষকরা একদিক থেকে লাভবান হবে এবং তাদের দুঃখ কষ্ট দিন দিন দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও কৃষকদের সব সময় উৎফুল্ল করতে হবে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদনের জন্য। এছাড়া বর্তমান সময়ের সরকার এসব কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি বিতরণ করছে এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার সম্পর্কে তাদের জ্ঞান দিচ্ছেন। এছাড়াও ফসল উৎপাদনের জন্য যেসব বীজের প্রয়োজন তাও কিন্তু সরকার বিনামূল্যে এই কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। আসলে আমাদের দেশে যদি কৃষক না থাকে তাহলে আমাদের দেশ আর সামনের দিকে কখনোই এগিয়ে যেতে পারবে না। অর্থাৎ যে দেশ খাদ্য সংকটে ভোগে সে দেশ কখনো উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে পারে না।


আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।



সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।



11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। আমার ভাষা হলো বাংলা। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আপনার পোস্ট পড়ে সত্যিই ভালো লাগলো কারণ বাস্তবতা সম্পর্কে তুলে ধরেছেন। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের যে উদ্যগতি নিম্ন শ্রেণীর মানুষের জন্য সবকিছু কেনা খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এক সময় দেখেছি ৫০০ টাকার নোট নিয়ে গেলে বাজার নিয়ে আসাটাই কষ্ট করছিল আর এখন পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে গেলেও হয় না মনের মত করে বাজার করা। খুবই খারাপ অবস্থা অন্যদিকে কৃষকেরা তাদের ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় চাষাবাদ কমিয়ে দিয়েছে । যেটা একটি দেশের অর্থনৈতিক ভাবে ঝুঁকির দিকে নিয়ে যাচ্ছে । সামনে কি পরিস্থিতি হবে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায় অনেক ভালো আলোচনা করেছেন ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

খুব সুন্দর ও সময়োপযোগি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। বিভিন্ন কারণে নিত্যপণ্য সহ অনেক কিছুই সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি। ক্ষমতার চেয়েও ক্ষমতাধর তারা। আপনি ঠিক বলেছেন ভাইয়া, দিন দিন কৃষক কমছে বা কৃষিপণ্য চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে কৃষক। এজন্য সরকারকে আরো কোঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে, সিন্ডিকেট ভেঙ্গে কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে। ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আসলে আজ থেকে তিন বছর আগে আমরা যে দামে পণ্য ক্রয় করতাম, এখন তার তিন গুণ বেশি দিয়ে যে কোন পণ্য ক্রয় করতে হচ্ছে আমাদের কে। আসলে এসবের মূলে রয়েছে সিন্ডিকেট। আসলে কৃষকেরা তাদের আবাদ কৃত ফসল দিয়ে তেমন একটা লাভ করতে পারছে না। কিন্তু অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছে।

বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে আপনার পোস্টে সবকিছুই বিদ্যমান।যে জিনিসটার চাহিদা আছে সেই জিনিসের দাম আরও বৃদ্ধি করছে ব্যবসায়ীরা।সাধারণ জনগণকে একপ্রকার জিম্মি করে রেখেছে।সিন্ডিকেট করে সকল কিছুর দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। আর এখন রমজান মাস,সবকিছুর দাম যেন বাতাসের গতিতে বৃদ্ধি হয়ে গেল। কৃষকরা ন্যায্য দাম পায় না কিন্তু ব্যবসায়ীরা দ্বিগুণ, তিনগুণও লাভ করছে।