পুত্রের জীবন শয্যায় মায়ের আর্তনাদ। কবিতা নং:- ০৯

in hive-129948 •  2 years ago 

কেমন আছেন সবাই ? আশাকরি অনেক অনেক ভালো আছেন সবাই। আবারও ধন্যবাদ জানাই " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাইকে আমাকে অনেক বেশি সাপোর্ট দেবার জন্য। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার লেখা একটি কবিতা শেয়ার করবো।আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।



মা অক্ষরটা খুবই ছোট কিন্তু এর গভীরতা এবং আয়তন অসীম। এই মা ১০ মাস ১০ দিন আমাদের তার পেটে গর্ভধারণ করে। এই মায়ের আদর যত্নে আমরা বেড়ে উঠি।


কথায় আছে না, মায়ের এক ফোঁটা দুধের ঋণ শোধ হবেনা কোনদিন। সত্যিই মায়ের ঋণ সন্তান কখনোই শোধ করতে পারে না।

মায়ের কাছে তার সন্তান খুবই দামি। সুখে-দুঃখে এই মা-ই সব সময় সন্তানদের পাশে থাকে।

আজ আমার কবিতায় আমি এক অসুস্থ সন্তানের প্রতি মায়ের য়ে অগাধ ভালোবাসা তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। মায়ের জীবনের সব থেকে বেশি কষ্টের দিন হল, কোন সন্তান যদি তার আগে মারা যায়। একজন মা সবসময়ই তার সন্তানের জন্য ঈশ্বরের কাছে দীর্ঘায়ু প্রার্থনা করে। সন্তানের দীর্ঘায়ু জন্য সে সব বাঁধাকে অতিক্রম করতে পারে।

এই মা-ই তার সন্তান অসুস্থ হলে দিনরাত সেবা শুশ্রূষা করে সন্তানকে ভালো করে তোলেন। সন্তানের কোন সাফল্যে মা-ই সবথেকে বেশি খুশি হন। সন্তানদের মনোবল দৃঢ় রাখতে সব সময় মা সন্তানদের উৎসাহী করে তোলেন।

কথায় আছে না, আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও আমি তোমাকে একটি শিক্ষিত জাতি দেব। তাই একটি শিক্ষিত সমাজের পেছনেও মায়ের অবদান অপরিসীম।

আমার এই কবিতার শেষ অংশটুকুতে মায়ের দৃঢ়প্রার্থনায় তার সন্তান আরোগ্য লাভ করেন। তাই আমার এই প্রার্থনা, পৃথিবীর সকল মা যেন সব সময় সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন।




mother-3793521_960_720.jpg
সোর্চ

পুত্রের জীবন শয্যায় মায়ের আর্তনাদ

নিলয় মজুমদার



সারাদিন মাতা কাঁদিয়া ফিরিছে, ঘুম নাহি চোখে তার
প্রাণের টুকরো ছেলে তার, বাঁচিবে না মনে হয় আর!
চারিদিকে তার ঘনিয়ে আসছে মরণ অন্ধকার।


শহরের যত বিজ্ঞ ডাক্তার গিয়েছে তার কাছে
এসেছে সবাই, দিয়েছে বসিয়ে ব্যবস্থা,
সেবা যত্নের বিধি-বিধানের ছিল না কোন ত্রুটি।


তবুও তার সেই দুরারোগ্য রোগ হচ্ছে না আর ভালো
যতদিন যায়, দুর্ভোগ তার তত বেড়ে যায়
জীবন প্রদীপ নিভিয়ে আসছে অস্তরবির প্রায়।


শুধালো মাতা করুণ কন্ঠে ডেকে
বল বল, আজ সত্যি করে, দিস না মোরে ফাঁকি,
এই রোগ হতে ছেলের মুক্তি মিলবে নাকি?


মাথা নিচু করে রইল সবাই, বললো না কোন কথা,
মুখ ফুটিয়ে উঠল তাদের সেই নিষ্ঠুর নীরবতা
কষ্ট হয় মায়ের বুকেতে, বিধলো কিসের ব্যথা!


কেঁদে কেঁদে মাতা কহিল, হে ঈশ্বর
মোর জীবনের চেয়ে তার জীবন আপন প্রাণ,
তাই নিয়ে প্রভু ছেলের প্রাণ করো প্রতিদান।


মাতা উঠে বলল, নাহি ভয়, নাহি ভয়
প্রার্থনা মোড় করেছে পূরণ ঈশ্বর দয়াময়,
ছেলে আমার বেঁচে উঠবে মরবে না নিশ্চয়।


তো এই ছিল আমার আজকের পোস্ট। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। তো দেখা হবে পরবর্তী পর্বে। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।


ধন্যবাদ সবাইকে।


IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি আজকে এই কবিতাটির মাধ্যমে এক অসুস্থ সন্তানের প্রতি মায়ের অগাধ ভালোবাসাটা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। সত্যি কথা বলতে আপনার আজকের কবিতা লেখার টপিক অসাধারণ ছিল। আপনার কবিতাটি পড়ে মনটা ভালো হয়ে গিয়েছে। আসলে ইচ্ছে করছে বারবার কবিতাটি পড়তে। একেবারে মনটা ছুঁয়ে গেছে কবিতার প্রত্যেকটা লাইন।

কেঁদে কেঁদে মাতা কহিল, হে ঈশ্বর
মোর জীবনের চেয়ে তার জীবন আপন প্রাণ,
তাই নিয়ে প্রভু ছেলের প্রাণ করো প্রতিদান।

আপনার কবিতাটি পড়ে ভালো লেগেছে বিশেষ করে উপরের লাইনগুলো পড়তে আমার কাছে একটু বেশি ভালো লেগেছে। আসলে আপনার কবিতা লেখার টপিক আমার কাছে এত ভালো লেগেছে যে বলে বোঝানো যাবে না। এমনিতে এই কবিতাটি পড়ার সময় চোখের জল চলে এসেছিল। যাইহোক বেশ ভালো লাগলো আপনার লেখা কবিতা।

তবুও তার সেই দুরারোগ্য রোগ হচ্ছে না আর ভালো
যতদিন যায়, দুর্ভোগ তার তত বেড়ে যায়
জীবন প্রদীপ নিভিয়ে আসছে অস্তরবির প্রায়।

ছোট্ট একটি কথা মা এর মধ্যে কত ভালোবাসা কত মায়া কত মহব্বত আর কত যন্ত্রণা লুকায়িত তা শুধু গর্ভধারিনী মা এই জানে।।
মাঝে কত আপন যার পৃথিবীতে বেঁচে আছে সে হয়তো বুঝছে না কিন্তু যে মাকে হারিয়েছে সেই জানে মায়ের ব্যাথাটা কতটা প্রখর।।
আপনার কবিতাটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো আমার।।

আপনার কবিতাটি পড়ে তো মনটা অনেকটা হালকা হয়ে গেল। আসলে এরকম কবিতাগুলো পড়লে মনের ভিতর যেন একটা প্রশান্তি কাজ করে। আমার নিজেরও এরকম কবিতাগুলো লিখতে অনেক ভালো লাগে। বিশেষ করে আপনার কবিতার উপস্থাপনাটা দেখে আরো ভালো লাগলো। এত সুন্দর কবিতা লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

মায়ের একধার দুধের দাম কাটিয়া গাঁয়ের চাম,পাপোশ বানাইলেও শোধ হবে না সেই ঋণ কোনোদিন

আসলেই দাদা মা তো মায়ি। একজন মায়ের চেয়ে তার সন্তানকে কেউ মনে হয় আর বেশি ভালবাসতে পারে না। আর আপনার কবিতায় একজন মায়ের রুগ্ন ছেলের প্রতি ভালোবাসাকে এত সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন জাস্ট অসাধারণ হয়েছে । ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

বাহ্ আপনি বেশ দারুন কবিতা লিখেন তো ভাইয়া।এর আগেও আপনার একটা কবিতা পড়েছিলাম ভালো লেগেছিল,এটাও ভালো লেগেছে।অর্থবহুল কবিতা ছিল এটি।ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর কবিতা পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।