দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি।

in hive-129948 •  2 days ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17317798519713493592540548394805.jpg


সোর্স


আগেকার মানুষেরা অল্প টাকা নিয়ে গিয়ে ব্যাগ ভরে বাজার করে নিয়ে আসতো। মায়ের মুখে শুনেছিলাম সে ৫ টাকায় এক কেজি চাল কিনে এনেছিল তার যখন কম বয়স ছিল। আর বাজারে শাকসবজির দামও অনেক কম ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজারে ৫ টাকায় একটি লজেন্স কিনতে পাওয়া যায় না। আমার এখনো মনে পড়ে আমি স্কুলে টিফিনে 5 টাকা নিয়ে যেতাম আর সেই পাঁচ টাকা দিয়ে অনেক কিছু খাবার কিনে খেতাম, এবং আমার পেট ভরে যেত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে জিনিসপত্রের দাম এত বেড়েছে এখন যারা স্কুলে যায় তারা হয়তো অনেক বেশি টাকা নিয়ে যায় টিফিন করার জন্য। আর বাজারে তো যেন আগুন লেগে গেছে। প্রত্যেকটা জিনিসের এত বেশি দাম যে সাধারণ মানুষ চাইলেই অনেক কিছু কিনতে পারেন না। আর গরিব মানুষেরা কিভাবে কি খেয়ে বেঁচে আছেন সেটা ভাবতেই কষ্ট লাগে। মাছ, মাংসের দাম যেমন দিন দিন বেড়েই চলেছে তেমনি শাকসবজির দাম অনেক বেশি বেড়ে গেছে।

অনেকদিন ধরে বাবার মুখে শুনছি বাজার মূল্য এত বেড়ে গেছে যে কদিন বাদে না খেয়ে থাকার অবস্থা হয়ে পড়বে। হঠাৎ কি ইচ্ছা হল আমি গেছিলাম একদিন বাজার করতে, যে জিনিসের দাম জিজ্ঞাসা করি সেটাই এত বেশি মূল্য যে আমার আর কেনার সাহস হয়ে উঠছিল না। এত কম পরিমাণ জিনিসের এত বেশি দাম যে, ওই দামে আমি আগে অনেক পরিমাণ কিনতে পারতাম। পুরো বাজার ঘুরে অল্প কিছু বাজার করে বাড়ি ফিরে যেন মন খারাপ হয়ে গেল। বাজার মূল্য তো বেড়েছে কিন্তু উপার্জন যেন বাড়তেই চাইছে না। যেসব পরিবারের একটিমাত্র মানুষ অর্থ ইনকাম করেন এবং পুরো পরিবার চালান তাদের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর বলে মনে হচ্ছে। আর শুধুমাত্র মাছ মাংস বা শাকসবজির মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে সেটা নয়। বৃদ্ধি পাচ্ছে মানুষের প্রত্যেকটি প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। অনেক গরিব মানুষ আছেন যারা জামা কাপড় কিনতে গিয়েও দাম শুনে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।

আগেকার সময়ে দেখেছি মানুষ অসুস্থ হলে ডাক্তাররা রোগীদের সুস্থ করার জন্য ওষুধ বিনা টাকায় দিয়ে দিতেন। কিন্তু এখন বিনা টাকায় ওষুধ পাওয়ার কথা তো ভাবাই যায় না বরং ওষুধের দামও এত পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে যে মানুষ ডাক্তার দেখাতেও ভয় পায়। ডাক্তার দেখাতে গেলেও ডাক্তারের মোটা টাকা ফি দিয়ে দেখিয়ে তারপর আবার যে ওষুধ লিখে দেবে সেই ওষুধ কিনতে গিয়ে পকেট পুরো ফাঁকা হয়ে যায়। আসলে এই ডাক্তারি পেশাটাও এখন এমন একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে সবকিছুর পারসেন্টেজ ভাগ করা থাকে। যেমন ডাক্তার দেখালেই ডাক্তার বলে দেন যে কোথা থেকে টেস্ট করাতে হবে এবং কোন দোকান থেকে ওষুধ কিনতে হবে। এবং আমরা যখন সেই সব ল্যাব থেকে টেস্ট করাবো আর সেই সব দোকান থেকে ওষুধ কিনবো তখন ডাক্তার তার ভাগ পেয়ে যায়। আর আমাদের কাছ থেকে মোটা টাকা ইনকাম করে আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সর্বস্বান্ত করে দেয়। আমরা কিছুটা পরিস্থিতির শিকার, তাছাড়া এর থেকে বেরোনোর কোন উপায় নেই।

তাই যেভাবে দিনের পর দিন সবকিছুর দাম বাড়ছে, আমার মনে হয় এখনকার এই সময়ে পরিবারে যিনি আয় রোজগার করেন শুধু এই একটি মানুষের উপর নির্ভর করে না থেকে প্রত্যেকটা মানুষের চেষ্টা করা উচিত নিজে স্বনির্ভর হয়ে অর্থ উপার্জন করার। তাহলে হয়তো একটু সংসারে স্বচ্ছলতা আসতে পারে এবং একজনের উপর সংসার চালানোর অতটা চাপ পড়বে না। এছাড়াও বাচ্চাদের স্কুল এবং কলেজের ফি দিন দিন বেড়েই চলেছে। আগে ছিল বছরে একবার করে ভর্তি হওয়ার নিয়ম। এখন সেটা পরিবর্তন হয়ে ছমাস অন্তর অন্তর ভর্তি হওয়ার নিয়ম চালু হয়েছে। অর্থাৎ এখানেও অর্থ উপার্জনের নতুন পদ্ধতি চালু হল। আর ভর্তি ফি যে একই আছে বা কম আছে তা কিন্তু নয় সেটাও বেড়েছে। সেই সাথে বাবা মার সন্তানকে পড়াশোনা করানোর খরচও বৃদ্ধি পেল। তাই বাবা মা দুজনেই অর্থ উপার্জনে সক্ষম হলে সন্তানকে একটু ভালোভাবে পড়াশোনা করানো সম্ভব হতে পারে।


আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আপনি ঠিকই বলেছেন। বর্তমানে বাজারে জিনিসের দাম যেভাবে বেড়েছে জীবনযাপন হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকার জন্য সামান্য কিছু জিনিস কেনাই কষ্টকর হয়ে উঠছে। আর বাচ্চাদের স্কুলের কথা যদি বলি, আজকাল তো পড়াশোনা করে নম্বর পাওয়া যায় না? টাকা দিয়ে নম্বর এবং ডিগ্রি সবই কিনে নেওয়া যায় । পরিস্থিতি আরো যে কত রসাতলে যাবে সে কথাই ভাবি।

দ্রব্যমূল্যের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর আগে ৬০ টাকা দিয়ে আলু কিনতাম গ্রামে বসে। এখন ৭০ টাকা কেজি। বাজারেও নাকি ৭০ টাকা করে। কয় দিনের মধ্যে ১০ টাকা বেড়ে গেছে। আর এভাবে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম অনেক বেশি।