সম্পর্কে বিশ্বাসঘাতকতা।

in hive-129948 •  12 days ago 


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17405557105704329708317420709619.jpg


সোর্স


আমরা ছোটবেলা থেকেই খুব সহজ সরল মন মানসিকতা নিয়ে বড় হতে থাকি। আর সব সময় আশা করি আমরা বড় হয়ে যাদের সংস্পর্শে থাকবো এবং যাদের সাথে বিভিন্ন সম্পর্কে থাকবো তারাও যেন এমন সহজ সরল মানসিকতার হয়ে থাকে। কারণ যারা সহজ সরল প্রকৃতির চিন্তাভাবনা করে তারা কখনোই বেশি প্যাঁচানো কথা বোঝেনা, সব সময় সহজ সরল ভাবে জীবনটাকে পরিকল্পনা করে এবং সহজ সরল ভাবেই চিন্তা ভাবনা করে থাকে। আর এইসব সহজ সরল মানুষ যখন কোন বন্ধুত্ব অথবা প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে তখন সেই সম্পর্ক খুবই পবিত্র হয়ে থাকে এবং এইসব মানুষ খুবই নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে। আর এইসব ব্যক্তি আশা করে যে তার যার সাথে সম্পর্ক হবে সেই ব্যক্তিও তার মতনই নিষ্ঠার সাথে সম্পর্কটা বজায় রাখার চেষ্টা করবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আমরা যতটা মানুষকে ভালো মনে করি প্রত্যেকটা মানুষই যে ভালো হবে তার কোন মানে নেই। আসলে আমরা প্রত্যেকটি সম্পর্ক যেভাবে দেখি বা আমাদের কাছে সম্পর্কের মর্যাদা যতটা বেশি অন্যদের কাছে সম্পর্কের মর্যাদা নাও থাকতে পারে। তাই দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্কের একটি মানুষ সৎ এবং নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করলেও অপর ব্যক্তি সেটা কখনোই করে না। যার ফলে কিছু কিছু সম্পর্কের পরিনাম অনেক বেশি ভয়াবহ হয়ে ওঠে।


আমরা যেমন এক হাতে তালি বাজাতে পারব না তেমনি কোন সম্পর্ক একা টেনে নিয়ে বেশিদূর যেতে পারবো না। কারণ হয়তো কোন বস্তু আমরা অনেক দূর একা টেনে নিয়ে গেলেও সম্পর্ক যেহেতু কোন বস্তু নয়, তাই একার দ্বারা কখনোই সম্ভব হয় না সেটা বজায় রাখা। আর এমন অবস্থায় যদি একটি মানুষ মন থেকে অপর মানুষকে ভালোবাসে আর সেই ভালোবাসার ব্যাপারটা জেনেও সেই মানুষটি যদি অবহেলা করে তাহলে এই অবহেলা ভালোবাসার মানুষের কাছে অনেক বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে। অনেক সময় এমন হয় যে দীর্ঘ বছর সম্পর্কের মধ্যে থাকার পর একজন হঠাৎ করে পরিবর্তন হতে শুরু করে এবং তারপর হঠাৎই একদিন বলে বসে যে তার আর এই সম্পর্কের মধ্যে থাকা সম্ভব নয়। সে আর তাকে আগের মত ভালবাসতে পারবে না এবং আগের মত একসাথে থাকতে পারবেনা, এমন কথা শুনলে যে কেউই অনেক বেশি আঘাত পাবে। কারণ একজন ব্যক্তি যখন তার মনের মানুষকে নিজের সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসে তখন সেও মনে করে যে অপর ব্যক্তিও তাকে ঠিক ততটাই ভালোবাসবে। কিন্তু যখন সে জানতে পারে যে তার ভালোবাসার মানুষ তাকে আর আগের মত ভালবাসে না তখন তার কাছে এই পৃথিবীতে থাকার জন্য কোন কারণ থাকে না। আর এমন ব্যক্তি দেখা যায় নিজেকে বিভিন্নভাবে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে। এমনকি আত্মহত্যার চেষ্টা পর্যন্ত করে থাকতে দেখা যায়।


দীর্ঘ জীবনের প্রেমের ভালোবাসা থেকে যখন মানুষ বিচ্ছেদ হয়ে যায় তখন কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা এই ব্যথা সহ্য করে নিজের মতো ভবিষ্যতে এগিয়ে যায়। আবার কিছু কিছু মানুষ আছে যারা সারা জীবন ওই ভালোবাসার মানুষের ভালবাসাটাকেই আগলে রাখে এবং সারা জীবন একাই থেকে যায়। আসলে এইসব মানুষ ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে যে বিশ্বাসঘাতকতা পেয়ে থাকে তা কখনোই সহ্য করতে পারেনা এবং সবকিছু ভুলে ভবিষ্যৎ জীবনে এগিয়েও যেতে পারেন। কারণ তারা নতুন কাউকে আর বিশ্বাস করে না। তবে দীর্ঘ প্রেমের পর যখন দুটি মানুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং তারপর দীর্ঘ বছর সংসার করার পর যখন স্বামী স্ত্রীকে অথবা স্ত্রী স্বামীর বিশ্বাস ভেঙে ফেলে অর্থাৎ অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তখন এই বিশ্বাসঘাতকতার কোনো ক্ষমাই থাকে না। তবে তারপরও কিছু কিছু মানুষ আছে যারা ক্ষমা করে দেয় এবং পুনরায় সম্পর্ক নতুন করে শুরু করে। তবুও একবার মানুষের বিশ্বাসে আঘাত আসলে সম্পর্ক কখনোই পূর্বের মতো ভালো থাকে না। অনেকে আছে যারা বিয়ের পরও স্বামীকে ছেড়ে বা স্ত্রীকে ছেড়ে অন্য কারো সাথে সম্পর্কে এমন ভাবে জড়িয়ে পড়ে যে তার নিজের স্বামী বা স্ত্রীকে ছেড়ে অন্যের কাছে সারা জীবনের মতো চলে যায়। তবে যে কোন স্বামী বা স্ত্রী তার প্রিয় মানুষের কাছ থেকে অর্থাৎ তার জীবন সঙ্গিনীর কাছ থেকে এরকম বিশ্বাসঘাতকতা কখনোই আশা করেনা, তাই এরকম বিশ্বাসঘাতকতা পেলে যে কোন মানুষেরই স্বাভাবিকভাবে জীবনটা ধ্বংসের পথে নেমে যেতে থাকে।


আর প্রিয় মানুষের কাছ থেকে এমন চরম আঘাত পেলে অনেক সময় মানুষ তার মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে না এবং অনেক সময় আমাদের চারপাশে দেখা যায় অনেকে পাগল হয়ে যায়। আবার অনেক মানুষ আছে যারা নিজের জীবনসঙ্গী ছেড়ে বাঁচার কথা চিন্তাও করতে পারে না তারা তো আত্মহত্যা পর্যন্ত করে নেয়। তবে অনেকে দেখা যায় খুবই শক্ত মানসিকতার হয়ে থাকে এবং তারা শান্ত মাথায় ভেবে চিন্তে দুজন দুজনের মত আলাদা হয়ে যায়। কোন প্রতারক বা বিশ্বাসঘাতকতার সাথে সারাজীবন থাকার থেকে এইভাবে আলাদা হয়ে যাওয়াই অনেক ভালো বুদ্ধিমানের কাজ। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় যে বিয়ের কিছুদিন পরেই তাদের একটি সন্তান তাদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। এবং সন্তান জন্ম হওয়ার পরে যদি বাবা-মা এইভাবে আলাদা হয়ে যায় তাহলে এই কর্মের সম্পূর্ণ প্রভাব পড়ে ওই সন্তানের ওপর। তাই আমার মনে হয় প্রত্যেকটা সম্পর্কে মানুষের একটু সচেতন থাকা উচিত। কখনো যদি মনে হয় যে সম্পর্কের মধ্যে কোন প্রাণ আর বেঁচে নেই তাহলে নতুন একটি প্রাণ জন্ম নেওয়ার আগেই তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া উচিত। প্রত্যেকটি সম্পর্কে আমরা যদি আশা-আকাঙ্ক্ষা একটু কম রাখি তাহলে হয়তো আমাদের সাথে কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করলে আমরা কষ্ট কম পাবো। তবে আমাদের প্রত্যেকেরই প্রত্যেকটা সম্পর্কে বিশ্বস্ত হওয়া উচিত এবং নিষ্ঠার সঙ্গে প্রত্যেকটি সম্পর্ক বজায় রাখা উচিত। তাহলে আমরা নিজেরাও ভালো থাকবো এবং আমাদের ভালবাসার মানুষও অনেক বেশি ভালো থাকতে পারবে।



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

1000031638.jpg

1000031637.jpg

1000031636.jpg

আপনার কথা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত। সম্পর্কের মধ্যে সততা এবং বিশ্বস্ততা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি কখনো সম্পর্কের মধ্যে জীবনের আনন্দ না থাকে, তবে বিচ্ছেদ হতে পারে ভালো সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে যখন সন্তানও থাকে। তবে আমাদের উচিত সম্পর্কের প্রতি সচেতন থাকা, যাতে কোনো বিশ্বাসঘাতকতার সম্মুখীন হলে আমাদের কষ্ট কম হয়। সম্পর্কের প্রতি সত্যিকার দায়িত্বশীলতা ও নিষ্ঠা আমাদের জীবনকে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ করতে সহায়ক হতে পারে।

একটি সম্পর্কের মধ্যে বিশ্বাসঘাতকতা করা খুবই জঘন্য একটি কাজ। কারণ যে বিশ্বাসঘাতকতা করবে সেই নয় যে বিশ্বাস করেছিল তার মনে প্রচুর আঘাত হানে। যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করা কাউকে মনে কষ্ট না দেওয়া। আসলে এখনের মানুষগুলো খুবই ধোঁকাবাজ। কিভাবে মানুষকে যে ঠকাবে মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে তা নিয়ে সবসময় উতপেতে থাকে। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।