কালীপূজা। পর্ব:- ২

in hive-129948 •  14 days ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000017005.jpg



ভূত চতুর্দশীর দিন বাড়ি আসার পর আমরা রাতের খাওয়া-দাওয়া সেরে নিলাম। তারপর ও ঘুম আসছিল না তাই ভাবলাম একটু ছাদে গিয়ে বসা যায়। যেহেতু সামনেই কালীপুজোর প্যান্ডেল করেছে তাই আমাদের ছাদেও সেই আলোটা এসে পড়েছে। ঠিক প্যান্ডেলের পেছনের দৃশ্যটা আমরা ছাদ থেকে দেখতে পারছিলাম। পুরো স্পষ্টভাবে সব নাগরদোলনা এবং পুরো মেলাটাই দেখা যাচ্ছিল ছাদ থেকে। বর মশাই আবার একটা ফানুস কিনে এনেছে। বলল কখনো ফানুস ওড়ানো হয়নি তাই আজকে একটাই মানুষ কিনে আনলাম ট্রাই করে দেখি কেমন হয়। ভালো লাগলে আরও কিনে আনব। কিন্তু আমি ওকে আর কিনতে বারণ করলাম। সত্যি কথা বলতে আমার ফানুস একদমই পছন্দ হয় না। কারণ ফানুস আগুন দিয়ে আকাশে ওড়াতে হয়। সেই আগুন অনেক সময় নেভে না, আগুন থাকা অবস্থাতেই অনেক সময় কারো বাড়ি বা কোন দাহ্য জায়গায় পড়ে আগুন লেগে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেই জন্য আমার মনে হয় যে ফানুস ওড়ানো বন্ধ করা উচিত।

1000016887.jpg



তবে আমরা এই প্রথম একটি ফানুস উড়িয়েছি। আর কখনো মানুষ ওড়াবো না সেটাও ভেবে রেখেছি। ফানুস ওড়ানোর পর ছাদে আমরা আরও কিছুক্ষণ বসে ছিলাম। আর সামনে প্যান্ডেলের দৃশ্যটা উপভোগ করছিলাম। কিন্তু কিছুক্ষণ পর দেখলাম আমাদের মাথা চুল একটু ভেজা ভেজা লাগছে। অর্থাৎ শিশির পড়ছে বলে মনে হচ্ছে। আস্তে আস্তে কেমন ঠান্ডা পড়ে যাচ্ছে। যাইহোক এবার ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন আবার সন্ধ্যা হতেই বেরিয়ে পড়লাম নৈহাটি এর বিখ্যাত বড়মাকে দেখার জন্য। আমরা আজকেও বেরিয়েছি অনেক রাত করে কারণ নৈহাটির বড় মাকে দেখতে অনেক মানুষের ভিড় হয়। নৈহাটিতে গিয়ে দেখি রাত করে বেরিয়েও মনে হচ্ছে সবে সন্ধ্যা হল। প্রচুর মানুষের ভিড় সেখানে। আমরা যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি সেই রাস্তায় বড়মা কালী ঠাকুরের আগে আরো অনেকগুলি প্যান্ডেল দেখতে পাওয়া যায়।

1000017046.jpg


1000017047.jpg



তাই আমরা আগে সেই প্যান্ডেল গুলো দেখতে দেখতেই বড়মার প্যান্ডেলের দিকে যাব। সেইমতো আমরা হাঁটতে লাগলাম। এই কালীপুজোর সময় একটা জিনিসই সবথেকে বেশি আকর্ষণীয় এবং সুন্দর করে তোলে চারিদিকের পরিবেশ টাকে সেটা হল চারিদিকের এত আলো। প্রতিটা বাড়ি সুন্দর করে আলোকিত করা, বিভিন্ন রকমের লাইট দিয়ে পুরো বাড়ি সাজানো থাকে। গুরুজনদের কাছে শুনেছিলাম এই কালীপুজোর এই সময়টাতে নাকি বিভিন্ন পোকামাকড় এবং সাপদের উপদ্রব হয়। সেই জন্যই নাকি এই সময়টাতে বাজি ফাটানো হয়, এবং চারিদিকে প্রদীপ জ্বালানো হয়। আগেকার যুগে সব জায়গায় বিদ্যুৎ ছিল না এবং আলোর ব্যবস্থাও খুব একটা ভালো ছিল না বলে প্রদীপ জ্বালানো হত। কিন্তু এখনকার যুগে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা খুব ভালো হয়েছে সেই জন্য আমরা বিভিন্ন আলো দিয়ে নিজেদের বাড়ি এবং রাস্তাঘাট এত সুন্দর করে আলোকিত করে রাখতে পারি। সুন্দর এই আলোকিত রাস্তা দেখতে দেখতে আমরা প্যান্ডেলের সামনে পৌঁছে গেলাম।

1000017049.jpg


1000017051.jpg



প্যান্ডেলটি খুবই অল্প জায়গার মধ্যে করা হয়েছে। সামনে দেখলাম সুন্দর একটি শিব ঠাকুরের মূর্তি মাথার ওপরে বসে ধ্যানে মগ্ন। এবং এক হাত তুলে আবার আমাদের আশীর্বাদ করছেন। তার উপরে অসংখ্য ঘন্টা বাধা আছে। সেই ঘণ্টার সঙ্গে আবার বাধা আছে মায়ের চুনরি। শিব ঠাকুরের নিচে দুটি হাতপাখা যেন উপর থেকে কেউ হাওয়া করছে। ভেতরে ঢুকতেই মনে হচ্ছে যেন নীল আকাশ আর তার মধ্যে উড়ে বেড়াচ্ছে অসংখ্য পাখি। দুই পাশে বাঁশ বাধা আছে সুন্দর লাল কাপড় দিয়ে আর তার সাথে বাধা আছে চুনরি দিয়ে ঘন্টা। আরেকটু সামনে এগোতেই কালী মায়ের মূর্তি দর্শন করতে পারলাম। কালী মায়ের সুন্দর একটি প্রতিমা দেখতে পেলাম। মায়ের পেছনেই আবার দেখা যাচ্ছে পঞ্চমুখী সাপ মাকে রক্ষা করছে। কালী মায়ের এই বড় প্রতিমা এর সামনেই একটি ছোট প্রতিমা এনে সেখানেই পূজা করা হয়েছে। মায়ের দুপাশে গিটার, বিনা, এবং একতারা দিয়ে কারুকার্য করা হয়েছে। আমরা প্রতিমা দর্শন করে মাকে প্রণাম জানিয়ে বেরিয়ে এলাম।

ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

দারুন সুন্দর সব কালী পূজার মন্ডপ ছবি তুলে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করলেন। আমিও ঐ দিন বেরিয়েছিলাম ঠাকুর দেখতে। তবে আপনার ছাদ থেকে কালীপুজোর মেলার যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তা সত্যি মায়াময়। আমি কিছুটা ধারণা করতে পারছি দূরে এমন সুন্দর মেলা এবং প্যান্ডেল দেখতে কত সুন্দর লাগে।

ফানুস ওড়াতে ভালোবাসেন না তার একটা যথাযথ যুক্তি আপনি দিয়েছেন। তবে ফানুস কিন্তু বেশিরভাগ সময় যতক্ষণ আগুন না নেভে ততক্ষণ পড়ে যায় না। আমার আবার ফানুস ওড়াতে বেশ লাগে। কিন্তু এটা রিস্ক এরোপ্লেনের পক্ষে বা পাখি পক্ষীদের জন্য। কালী পূজার অন্যান্য ছবিগুলো দেখে এবং আপনার কথা পড়ে বেশ ভালোই লাগলো ।