কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমরা ইতিমধ্যেই অনেকগুলি কালী মায়ের পূজোর প্যান্ডেল দেখে ফেলেছি। আরো কিছু প্যান্ডেল দেখেই আমরা চলে যাব নৈহাটির প্রধান আকর্ষণ বড়মার কালীপুজো দেখতে। আসলে প্রতিবছর কালীপুজোর সময় নৈহাটিতে কোন দিক থেকে কোন রাস্তা দিয়ে যেতে হবে পুরো নির্দেশ করা থাকে অন্য কোন রাস্তা দিয়ে শর্টে এদিক ওদিক যেতে পারবে না। তাই এমন পথ নির্দেশ করে দিয়েছে যে এই প্যান্ডেলগুলো দেখতে দেখতেই সোজা বড়মার মন্দিরে পৌঁছে যাওয়া যাবে। তাই আমরা পথ চলা শুরু করলাম এবার হাঁটতে হাঁটতে আরেকটি প্যান্ডেলের সামনে পৌঁছে গেলাম। প্যান্ডেলটি একটি বড় মাঠের মধ্যে করেছে। মাঠে ঢুকেই দেখতে পাচ্ছি চারপাশের অনেক দোকানপাট বসেছে। বিভিন্ন খাবারের দোকান বিভিন্ন সাজগোজের দোকান এবং বিভিন্ন আসবাবপত্রের দোকান বসেছে। এইসব দোকান পেরিয়ে আমরা চলে আসলাম প্যান্ডেলের সামনে। বেশ লাল কালো এবং তার মধ্যে আবার সাদা এবং সোনালী কালার দিয়ে সুন্দর করে সামনেটা কারুকার্য করা।
মাথার উপরে আবার দেখতে পাচ্ছি সূর্য দেবতা তার উপরে অনেকগুলি ত্রিশূল।ভেতরে প্রবেশ করতেই সামনে গণেশ ঠাকুরকে দেখতে পেলাম। গণেশ ঠাকুর বসে আছেন এবং তার চারপাশ থেকে নিচের দিকে গাঁদা ফুল দিয়ে সাজানো আছে। গণেশ ঠাকুরের মাথার ওপরে এবং পেছনের দিকে সুন্দর করে লাইটিং করা হয়েছে সাদা নেটের কাপড়ের মাধ্যমে। দেখতে খুবই অসাধারণ সুন্দর লাগছে। গণেশ ঠাকুরের চারপাশটা বেড়া দিয়ে আটকে রেখেছে যেন ভেতরে কেউ প্রবেশ না করতে পারে। গণেশ ঠাকুর টা প্যান্ডেলের ঠিক মাঝখানে করেছে তাই আমরা এক পাশ দিয়ে কালী মায়ের প্রতিমা দর্শন করতে এগিয়ে গেলাম। মায়ের সামনে গিয়ে দেখি মায়ের পেছনের দেয়ালটা অনেক ফুল দিয়ে সুন্দর করে সাজানো আছে। যদিও এগুলো আসল ফুল নয় নকল ফুল। তবুও দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিল। মায়ের প্রতিমা এখানে পুরোই ভিন্ন ধরনের করেছে। দুর্গা মায়ের মত দশ হাত, আবার কৃষ্ণের মতো বাঁশি বাজাচ্ছে। কালী মা বসে আছেন আর তার একটু সামনে শিব ঠাকুর শুয়ে আছেন।
মায়ের প্রতিমার পাশে আরো একটি প্রতিমা দেখতে পেলাম। সেই কালী মায়ের প্রতিমাকেই পুজো করা হয়েছে। আমরা কালী মাকে প্রণাম জানিয়ে বেরিয়ে এলাম। সামনে আরেকটু হাটতেই দেখলাম কয়েকটা আইসক্রিমের দোকান বসেছে। আর আমার বাইরে বেরোলে আইসক্রিম না খেলে হয় না। তাই দুজন দুটো আইসক্রিম কিনে নিলাম। এবার খেতে খেতে হাঁটা শুরু করলাম। সামনে দেখলাম আরো একটি প্যান্ডেল। এই প্যান্ডেলের সামনে সুন্দর বাঁশ বাধা, মনে হচ্ছে যেন এটা ঘরের মতো আকৃতি দেওয়া। বাঁশ এর গায়ে লাল কাপড় পেঁচিয়ে একটার সাথে আরেকটা বাঁশ বেঁধে তার ভেতরে যে চৌকো জায়গা তৈরি হয়েছে সেখানে ছোট ছোট ঘর বেঁধে রেখেছে। দেখতে যদিও অনেক সুন্দর লাগছে। এর একটু সামনে কাঠের দুটি মেয়ের পুতুল বানিয়েছে, রাজস্থানে যেমন পুতুল নাচ হয় ঠিক তেমনই দেখতে এই পুতুল দুটি। দুটি পুতুলের মাঝখানে আবার একটি পেঁচা। পেঁচাটিকেও দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে।এই তিনটি পুতুলকে ঘিরে দুইপাশ থেকে উপরে উঠে গেছে কয়েকটি বাঁশ। আর সেই বাঁশ এ বাধা আছে গোল গোল কিছু মাটির থালা এবং তার মধ্যে সুন্দর কিছু দৃশ্য অংকন করা।
বাইরের কারুকার্য দেখে আমরা ভেতরে ঢুকে গেলাম। ভেতরে দেখি এখানে মা কালীকে আরো অত্যাধুনিক করে প্রতিমা বানানো হয়েছে। কালী মা বসে আছেন চাঁদের উপরে। এবং এখানে দেখা যাচ্ছে কালী মায়ের আটটি হাত। শিব ঠাকুর এখানে কালী মায়ের পায়ের কাছে বসে আছেন। আসলে আগে আমরা যে কালি মায়ের প্রতিমা দেখতাম, সেই প্রতিমা তেই কিন্তু আসল পূজো এখনো হয়। কিন্তু ভগবান আসলে আমাদের চিন্তাভাবনায় বা আমাদের মনে বিভিন্ন রূপে বিভিন্নভাবে দেখা দেন যেগুলি এই মন্ডপের প্রতিমা রূপে তার বহিঃপ্রকাশ হয়। আমাদের মনে কিন্তু ভগবান নানান ভাবে নানান রূপেই ধরা দেয়। প্যান্ডেলের ছাদের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সেখানেও অনেক সুন্দর কারুকার্য করা হয়েছে। বড় বড় বেতের ঝুড়ি তার মধ্যে লাইট লাগানো এবং কোনটা লাল আবার কোনটা হলুদ রঙের কাপড় দেওয়া। দেখতে বেশ ভালই লাগছে। পাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সেখানে কালী মায়ের প্রতিমা, এবং এখানেই পূজো করা হয়েছে। আমরা মায়ের প্রতিমা দর্শন করে বেরিয়ে এলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit