কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
সোর্স
আমরা যখন অনেক ছোট ছিলাম এবং আমাদের প্রথম স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিল আমাদের বাবা-মা, তখন হয়তো আমরা জানতামও না বা বুঝতাম না যে স্কুল আসলে কি জিনিস বা এখানে গিয়ে আমাদের কি শিখতে হবে? তবে আমি যখন প্রথম পড়াশোনা শুরু করি অর্থাৎ বিদ্যালয়ে ভর্তি হই তার অনেক আগে থেকেই আমাকে বাড়িতে টিউশন মাস্টার ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ আমার মা বাবা হয়তো ভেবেছিল যে বিদ্যালয়ে অ-আ-ক-খ শেখানোর আগে আমি বাড়ি থেকেই সেটা শিখে গেলে হয়তো তাড়াতাড়ি আরো ভালো বিদ্যালয়ের পড়াশোনা বুঝতে পারব। এবং আমার জীবনে সেটাই হয়েছিল আমি যখন বিদ্যালয় ভর্তি হয়েছিলাম তখন আমার আগে থেকেই অনেক কিছু জেনে থাকার কারণে বিদ্যালয় আমার পড়াশোনা করতে বেশ ভালো লাগতো এবং আমি শিক্ষকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারতাম। আর তার সাথে আরো ভালো লাগতো যে আমার অনেক বন্ধু বান্ধবী হয়েছিল। আর আমার এই বন্ধু বান্ধবীর সাথে বিদ্যালয়ে যেতাম এবং একসাথেই বাড়িতে ফিরতাম। বেশ মজা এবং আনন্দের সাথে কাটতে লাগলো আমার প্রাথমিক বিদ্যালয় দিনগুলো।
তারপর হঠাৎ করেই যেন কিছু বুঝতে না বুঝতেই উঠে গেলাম হাই স্কুলের গণ্ডিতে। তখন যেহেতু অনেক ছোট ছিলাম আমি সেই জেনারেশনের মেয়ে হয়ে একটু কমই চালাকচতুর ছিলাম এখনকার মত অত বুদ্ধিমান বাচ্চাদের মত ছিলাম না। তাই বুঝতে পারিনি উচ্চ বিদ্যালয়ে উঠলে বন্ধুদেরকে হারিয়ে ফেলতে হবে। আর আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বন্ধুরা, অন্য বিদ্যালয় ভর্তি হয় আমি নতুন বিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার পর পর যেন একটু একা বোধ করছিলাম। কিন্তু আমি খুব মিশুকে মানুষ হওয়ার কারণে খুব তাড়াতাড়ি আমার সবার সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গেছিল। আর তার মধ্য দিয়ে কিছু খুব ভালো বন্ধু বান্ধবী হয়ে গেছিল। আমরা খুব আনন্দ সহকারে পড়াশোনা করতাম কারণ আমাদের শিক্ষকেরা আমাদের প্রতিনিয়ত শেখাতো যে পড়াশোনা একটা ভালো লাগার জিনিস ভালোবাসার জিনিস। আর পড়াশোনা কখনোই খুবই সিরিয়াস হয়ে করার বিষয় না এটা খুবই আনন্দ এবং মজা করে করার জিনিস। আমরা যদি পড়াশোনার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাই তাহলে আমাদের পড়াশোনা করতে অনেক বেশি ভালো লাগবে এবং আমরা অনেক ভালো নম্বর নিয়ে পাশ করতে পারবো।
আমাদের শিক্ষকেরা আমাদের প্রতিনিয়ত অনেক ক্রিয়েটিভ কাজ করতে উৎসাহ দিত। যেমন আমাদের বইয়ের এবং লেখার খাতার মলাটে সুন্দর সুন্দর ছবি এঁকে বই এবং খাতাটিকে সুন্দর করে সাজাতে বলতো। বই খাতায় নাকি এইভাবে সুন্দর করে কারুকার্য করলে এটা দেখতে ভালো লাগে এবং পড়ার জন্য মন বসে। তাই আমাদের টিচারদের কথায় আমরাও বই খাতা সুন্দর করে কারুকার্য করে রাখতাম, আর এতে সত্যি আমি পড়ার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করতাম। উচ্চ বিদ্যালয়ের জীবনে আমি যেমন অনেক ভালো ভালো শিক্ষকের মাধ্যমে ভালো শিক্ষা লাভ করেছি তেমন অনেক ভালো ভালো বন্ধুদের সাথে মিশে আমার বিদ্যালয়ের জীবনটা অনেক সুন্দর স্মৃতি তৈরি করেছি। আমাদের বিদ্যালয় বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হতো যেখানে আমরা সবাই মিলে একসাথে অংশগ্রহণ করতাম। এইভাবে সবকিছু মিলেমিশে আমার উচ্চ বিদ্যালয়ের জীবনটাও অনেক সুন্দর ভাবে কাটতে লাগলো। এবং একদম শেষ বছরে অর্থাৎ দ্বাদশ শ্রেণীতে আমরা সবাই খুবই চাপের মধ্যে পড়ে গেছিলাম কারন আমাদের ভালো একটা কলেজে ভর্তি হওয়ার দরকার ছিল ভালো ভবিষ্যতের জন্য। তাই আমরা আমাদের পড়াশোনা অনেক বেশি মনোযোগী হয়ে অনেক ভালো রেজাল্ট করে দ্বাদশ শ্রেণী উত্তীর্ণ হয়েছিলাম।
এরপর যখন কলেজ এ ভর্তি হলাম তখন আবার আমার পুরনো বন্ধু বান্ধবী সবাই যেন হারিয়ে গেল। কলেজে আবার নতুন বন্ধু বান্ধবী তৈরি হল। এই সময়ে বুঝতে পারলাম জীবনে একাই চলতে হয় এবং আশেপাশে বন্ধু-বান্ধব প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে থাকে। নতুন কলেজ আর নতুন বন্ধু বান্ধবী মিলে অনেক মজায় কলেজ জীবনটা কাটছিল। আর তার পাশাপাশি পড়াশোনার চাপ। তবে কলেজেও আমি অনেক ভালো মনের মত শিক্ষক পেয়েছি, যারা আমাদের সাথে বন্ধুর মতো ব্যবহার করত। আর আমাদের সমস্যার কথা শুনে সেটা সমাধান করে দিত আর সেটা শুধুমাত্র পড়াশোনার বিষয়ে এমনটা নয়। আমরা কলেজ জীবনে যেহেতু অনেক বড় হয়ে যাই এবং আমাদের জীবনের বাহ্যিক অনেক সমস্যাও দেখা যায় তাই আমাদের শিক্ষকরা আমাদের এমন ভালো বন্ধুতে পরিণত হয় যে আমাদের জীবনের সমস্যাগুলো আমরা তার কাছে শেয়ার করতাম এবং তারা আমাদের সে সমস্যা থেকে বের হওয়ার উপায় বলে দিতেন। দেখতে দেখতে কলেজ জীবন ও আমার অনেক সুন্দর ভাবে মজা করেই কেটে গেছিল। তবে অনেক বছর পর এখন মনে হয় আমাদের জীবনের সবথেকে সুখের দিন ছিল ওই শিক্ষার্থী জীবন। যখন আমরা পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম। তবে এটাও সত্য কথা যে আর কখনো সেই সব দিন ফিরে পাওয়া যাবে না।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি ডেইলি টাস্কগুলো কমপ্লিট করেননি
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্ট টা পড়ে আমারও মনে পড়ে গেল পুরাতন দিনগুলোর কথা। স্কুলের সেই বন্ধুদের কলেজের সেই দিনগুলো এখন অনেক মিস করি। কথাগুলো এখন অনেক মনে পড়ে। বেশ ভালো লিখেছেন আপনি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit