কালী পূজা। পর্ব:- ২০

in hive-129948 •  29 days ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000017484.jpg


1000017347.jpg



বারাসাতে কালী পুজো দেখতে গিয়ে সারারাত ধরে অনেক ঘোরাঘুরি হয়ে গেল। এবার আমরা বাড়ির দিকে রওনা হব। আর তেমন একটা খুব বড় এবং ভালো কালী পূজার প্যান্ডেল হয়তো নেই যেটা আমরা দেখিনি। মোটামুটি বারাসাতের ভালো ভালো সব কালী পূজার প্যান্ডেলগুলো আমাদের দেখা হয়ে গেছে। তাই আর অপেক্ষা না করে আমরা এবার ভোরের আলো ফোটার আগেই আমরা বাড়িতে যেতে চাইছি। সেই জন্যই বাড়ির পথে হাঁটা শুরু করলাম। সামনেই দেখতে পেলাম একটি আইসক্রিমের দোকান, বর মশাই কে বললাম আমার খুবই ক্লান্ত লাগছে, যতক্ষণ না একটা আইসক্রিম খাই ততক্ষণ এনার্জি পাচ্ছি না বাড়ির দিকে হেঁটে যাওয়ার। সে আমার কথা শুনে বুঝেই গেছে যে আমার আইসক্রিম খেতে ইচ্ছা করছে। তাই সাথে সাথে দোকান থেকে আমরা দুজন দুজনের পছন্দমত আইসক্রিম কিনে নিলাম। আবার খানিকটা দূর হাঁটতে হাঁটতেই সামনে পড়লো একটি চাউমিন এগরোলের দোকান, বর মশাই দোকানটি দেখিয়ে বলল এই দোকান থেকেই আমি মাঝেমধ্যে খাবার খাই। আর এই দোকানে খাবার নাকি ভালো করে।

1000017468.jpg


1000017485.jpg



এসব কথা বলেই বড় মশাই বলল চলো একটা এগরোল খাই এই দোকান থেকে। আমিও রাজি হয়ে গেলাম এবং দোকানের দিকে এগিয়ে গেলাম। দোকানে অনেক ভিড় থাকার জন্য আমাদের কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল এবং তারপর চলে আসে আমাদের এগরোল। তবে যেহেতু পুজোর সময় চলছে সেহেতু এখন খাবার গুণগতমান অনেকটাই কম হয়ে যাবে বলে আমাদের ধারণা হয়েছিল, এবং এগরোল খাওয়া শুরু করার পর আমাদের ধারণাটি সত্য প্রমাণ হলো। এমনি সময় খাবার যতটা ভালো ছিল পুজোর সময় খাবারের গুণগত মান অনেকটাই কমে গেছে। আর প্রতি বছর এমনই হয় সেই জন্য আমরা কিছু মনে না করে তাড়াতাড়ি খাবার শেষ করে আবার হাঁটা শুরু করি। এবার হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করে সামনে দেখতে পেলাম আরও একটি কালী মায়ের পূজোর প্যান্ডেল রয়েছে। তবে এটি অনেক ছোট একটি প্যান্ডেল। প্যান্ডেলটা দেখতে অনেকটাই সুন্দর এবং বিভিন্ন রঙে পুরো প্যান্ডেল টাই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের রাস্তার দুপাশে অনেকগুলি গাছপালা রাখা ছিল যেটা দূর থেকে দেখে প্যান্ডেলটা অনেক সুন্দর লাগছে এবং রাস্তার অনেক সুন্দর্য বৃদ্ধি হয়েছে।

1000017489.jpg


1000017490.jpg



আমরা কালী মায়ের প্যান্ডেলের ভেতরে প্রবেশ করলাম। ভেতরে ঢুকতেই চারপাশ দেখতে পেলাম পুরাই সোনালী রঙের প্যান্ডেলের ভেতরটা। সোনালী রঙের মধ্যে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে যে মূর্তিগুলিও সোনালীর মধ্যে গোলাপি সাদা রং দিয়ে কারুকার্য করা হয়েছে। মাথার ওপরে ছাদে বেশ কয়েকটা ছোট ছোট ঝুমুর লম্বা করে লাগানো রয়েছে। এবং তার পাশে দুটি রং দিয়ে লম্বা লম্বা করে টানা রয়েছে পুরো ছাদ জুড়ে। প্যান্ডেলের চারপাশ ঘুরে দেখে যেই মা কালীর উপর নজর গেল, প্রথম দেখাতেই আমার কেমন মনে হচ্ছিল বেশ কয়েক দিন এবং রাত ধরে মা কালীর ঘুম হয়নি তাই চোখের নিচে অনেকটা কালি পড়ে গেছে। এবং চোখটা যেন পুরো গর্তে ঢুকে গেছে। সত্যি কথা বলতে মায়ের মুখটা দেখে আমার খুবই কষ্ট হচ্ছিল। আমি যেন মায়ের মুখে কোন হাসি দেখতে পারছিলাম না। মায়ের প্রতিমার দুপাশে কিছু দেব-দেবীর মূর্তি আছে যা কিছু কাহিনী বর্ণনা করছে। একদিকে শিব এবং পার্বতীর বিবাহের দৃশ্য এবং অন্যদিকে শিব ঠাকুর পার্বতীকে কাঁধে তুলে নিয়ে আছেন। আমরা প্রতিমা দর্শন করে প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে এলাম।

1000017487.jpg



আবার আমরা বাড়ি যাবার উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করলাম। এবার হাঁটতে হাঁটতে রাস্তার পাশেই আমার বর মশায়ের একজন বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে গেল যার নিজস্ব রেস্টুরেন্ট রয়েছে। বরের বন্ধু জোরাজুরি করায় আমরা রেস্টুরেন্টের মধ্যে প্রবেশ করলাম কিছু খাওয়া-দাওয়া করার উদ্দেশ্যে। তারপর কিছুক্ষণ পর চলে আসলো আমাদের জন্য ফ্রাইড রাইস আর চিলিফিশ। এর আগে আমি কখনো চিলি ফিশ খেয়ে দেখিনি কেমন খেতে লাগে। তাই আজ প্রথমবার চিলি ফিশ খেয়ে দেখলাম ভালোই লাগলো। আমরা খাওয়া দাওয়া শেষে আবার বেরিয়ে পড়লাম বাড়ি যাবার উদ্দেশ্যে। বারাসাতের বাড়ি থেকে বাইক নিয়ে আবার নিজের বাড়ি চলে এলাম। কালীপুজোর ঘোরাঘুরি এবছরের মত শেষ হলো। আবার এক বছর অপেক্ষা এই পুজোয় আনন্দ করার জন্য। আসলে আমরা সারা বছর টাই অপেক্ষা করে থাকি এই দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোর জন্য, যেন আমরা সুন্দর করে সেজেগুজে বিভিন্ন প্যান্ডেলে ঘুরতে পারি এবং পছন্দমত খাওয়া দাওয়া করতে পারি। এই আনন্দ আর আবেগের জন্যই আবার এক বছরের অপেক্ষা।

1000017483.jpg


1000017482.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png