চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁইশাকের ঘন্ট।

in hive-129948 •  20 days ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000017763.jpg



আজকে আপনাদের সাথে যে রেসিপিটা আমি শেয়ার করতে চলেছি, এই রেসিপিটা আমার খুবই পছন্দের। আমি এই একটা রেসিপি দিয়েই পেট ভরে ভাত খেয়ে নিতে পারি। এটি খুবই স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। সেই জন্য আমার এই খাবারটি আরো বেশি পছন্দ। এই রেসিপিতে আমি যে পুঁইশাক ব্যবহার করেছি, এটি আমাদের বাগানে লাগানো পুঁইশাক। আর যে লঙ্কা গুলি আমি রান্নায় দিয়েছি সেগুলিও আমাদের বাগানে হওয়া গাছের লঙ্কা। এবার তবে রান্না শুরু করা যাক।

1000017745.jpg

1000017750.jpg

-:পুঁইশাক রান্নার উপকরণ :-

১. পুঁইশাক
২. কুমড়ো
৩. গাজর
৪. টমেটো
৫. আলু
৬. চিংড়ি মাছ
৭. পেঁয়াজ কুচি
৮. কাঁচা লঙ্কা
৯. পাঁচফোড়ন
১০. হলুদ
১১. লবণ


1000017746.jpg

1000017747.jpg


1000017748.jpg

প্রথমেই আমি এই সবজি গুলি একটু ছোট ছোট সাইজ করে কেটে নিয়েছি। কিন্তু কুমড়ো তুলনামূলক একটু বড় সাইজের কেটেছি। কারণ কুমড়ো তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়ে যায়। বেশি সেদ্ধ হয়ে গেলে গলে গিয়ে পরে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই একটু বড় সাইজ রেখেছি।

1000017752.jpg

1000017751.jpg


রেসিপি: -

একটি কড়াইতে অল্প তেল দিয়ে নিলাম। তেল গরম হতেই কেটে রাখা আলু, কুমড়ো, গাজর, এবং চিংড়ি মাছ পর্যায়ক্রমে ভেজে নিলাম। দেখলাম অবশিষ্ট যে তেল টুকু আছে তাতে আমার বাকি রান্না হয়ে যাবে। সেই তেলের মধ্যেই পাঁচফোড়ন দিয়ে দিলাম। পাঁচফোড়ন একটু ভাজা হতেই পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিলাম। এবার পেঁয়াজ কুচি গুলো ভাজতে লাগলাম। পেঁয়াজ কুচি গুলো একটু লাল রং ধরতেই এরমধ্যে ভেজে রাখা আলু, কুমড়ো, গাজর দিয়ে দিলাম। একটু নাড়াচাড়া করে চার টুকরো করে রাখা টমেটো দিয়ে দিলাম। দু চার বার নাড়াচাড়া করেই পুঁইশাকের ডাটা গুলো এবং মাঝখান থেকে চিড়ে রাখা লঙ্কা দিয়ে দিলাম। এ পর্যায়ে একটু হলুদ এবং স্বাদ অনুযায়ী একটু লবণ দিয়ে দিলাম। এবার ভালো করে নাড়াচাড়া করতে লাগলাম। মোটামুটি চার পাঁচ মিনিট নাড়াচাড়া করার পর ভেজে রাখা চিংড়ি মাছ এবং পুঁইশাকের পাতাগুলি দিয়ে দিলাম।

1000017753.jpg

1000017749.jpg

এই সময় একটু নাড়াচাড়া করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম। ৫ থেকে ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে দেখলাম পুঁইশাক থেকে একটু জল বেরিয়েছে। আবার একটু নাড়াচাড়া করে ঢেকে দিলাম। চার পাঁচ মিনিট পর ঢাকনা খুলে দেখলাম, সব উপকরণ ভালোভাবে মিশে গেছে এবং একটু সেদ্ধ হয়ে গেছে। শাকের জল শুকিয়ে গেছে, তাই শাক এবং বাকি তরকারি যেন ভালো করে সেদ্ধ হয়ে যায় সেই জন্য পরিমাণ মতো আরেকটু জল দিয়ে দিলাম। এই জলটা পুরো শুকিয়ে যাবে আবার শাক সুন্দর সেদ্ধ হয়ে যাবে। আমি এখানে কোন শুকনো লঙ্কা ব্যবহার করিনি। আর কোনরকম মসলা ও ব্যবহার করিনি। কারণ কিছু কিছু রান্নায় কোন প্রকার মসলার প্রয়োজন হয় না। মসলা ছাড়াই দুর্দান্ত সাধের হয়ে থাকে এই প্রকারের রান্না গুলি।

1000017755.jpg

1000017756.jpg



মাঝে মাঝে একটু নাড়াচাড়া দিয়ে নিচ্ছি, না হলে কড়াইতে শাক লেগে গিয়ে পুড়ে যেতে পারে। এ পর্যায়ে এক চিমটি চিনি দিয়ে দিলাম, ওই ৫-৬ দানা চিনি। অনেকেই রান্নায় চিনি দেয় না। কিন্তু আমি আবার পুঁইশাকে একটু মিষ্টি দি। এতে পুঁইশাক এর ঘন্ট খেতে একটু মিষ্টি লাগে। কিছুক্ষণ ভালো করে নাড়াচাড়া করার পর দেখতে পেলাম পুঁইশাক বেশ গা মাখা হয়ে এসেছে। সুতরাং আমার রান্না সম্পন্ন হল। এবার খাবার টেবিলে পরিবেশনের পালা।

1000017765.jpg

ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

অনেক সুন্দর রেসিপি তৈরি করার চেষ্টা করেছেন আপনি। আমি আশা করব আপনি কিভাবে রেসিপি তৈরি করতে হয় কিভাবে উপস্থাপন করতে হয় সে সমস্ত বিষয়গুলো দেখবেন এবং শিট পড়ে জানার চেষ্টা করবেন। আর এভাবেই একদিন সুন্দর পোস্ট উপস্থাপন করার সুদক্ষ ব্লগার হয়ে উঠবেন।

বেশ কয়েকটি পুষ্টিকর সবজি দিয়ে চিংড়ি মাছের মজাদার একটি রেসিপি তৈরি করেছেন। দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হবে।আসলে মাঝে মাঝে বিভিন্ন রকমের পুষ্টিকর সবজি দিয়ে এরকম রেসিপি তৈরি করে খাওয়া আমাদের জন্য উচিত। কেননা এগুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।মজাদার রেসিপিটি আমাদের মাঝে এত সুন্দর হবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এটা আমার সবচাইতে পছন্দের খাবারের মধ্যে একটা। চিংড়ি মাছ পুইশাক এবং মিষ্টি কুমড়ার রেসিপি সত্যি চমৎকার হয়। যদিও আপনি আরও কয়েক প্রকার সবজি যোগ করেছেন। দারুণ ছিল আপনার রেসিপি টা। চমৎকার উপস্থাপন করেছেন আপনি। সবমিলিয়ে চমৎকার ছিল। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

যে কোন মাছের রেসিপির মধ্যে পুঁই শাকের মিশ্রণ থাকলে অনেক বেশি মজাদার হয়। আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর করে চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁইশাকের ঘন্ট রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা রেসিপি টি দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার হয়েছিল। আপনি আপনার রেসিপির প্রতিটি ধাপ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, দেখে বেশ ভালো লাগলো।

চিংড়ি মাছ খেতে আমি ভীষণ ভালোবাসি।চিংড়ি মাছ খেতে আমার বরাবরই ভালো লাগে।তবে আজ আপনি পুই শাক দিয়ে চিংড়ি মাছের ঘন্ট করেছেন।দেখেই ভীষণ লোভ লেগে গেল।ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

বিভিন্ন প্রকারের সবজি একসাথে রান্না করলে খেতে অনেক ভালো লাগে। আর সাথে যদি চিংড়ি মাছ হয় তাহলে তো কথাই নেই। চিংড়ি মাছ আমার অনেক ভালো লাগে। অসাধারণ একটি রেসিপি উপস্থাপন করেছেন আপনি। খুবই লোভনীয় লাগছে।

চিংড়ি মাছ আর পুঁইশাক আমার ভীষণ পছন্দের। এ দুটো একসাথে রান্না করে খাওয়া হয়েছে তবে এরকম ঘন্ট তৈরি করে কখনো খাওয়া হয়নি। বেশ ভালো লাগলো আপনার আজকের রেসিপি টা দেখে। চিংড়ি মাছের যে কোন রেসিপি এমনিতেই ভীষণ সুস্বাদু হয়। খুবই লোভনীয় লাগছে এই রেসিপিটা দেখতে। সুস্বাদু এই রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে চিংড়ি মাছের এমন লোভনীয় রেসিপি দেখে লোভ লেগে গিয়েছে। আপনার রেসিপি দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল। গরম ভাতের সাথে এমন রেসিপি হলে দারুন হয়। আমার তো দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। আপনার উপস্থাপনা লোভনীয় হয়েছে। ধন্যবাদ আপু মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালীদের মধ্যে জনপ্রিয় একটি রান্না। এত খেয়েছি এত খেয়েছি! এখন রান্না হলেই গন্ধ শুকেই বলে দিতে পারি কুমড়ো পুইশাক আর চিংড়ি মাছের ঘন্ট রান্না হচ্ছে। পদ্ধতিও যথা যথ দেখিয়েছেন।