ঘুমের প্রয়োজনীয়তা।

in hive-129948 •  4 months ago 


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17384873276203542312863246597827.jpg



সোর্স


ঘুম আমাদের জীবনের খুবই প্রয়োজনীয় একটা জিনিস। যেমন আমাদের শরীরে খাদ্যের প্রয়োজন হয় তেমন আমাদের ঘুমেরও সমান প্রয়োজনীয়তা আছে। তাই অনেক সময় দেখা যায় আমরা এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়ি যে আমাদের খাদ্যের প্রয়োজন না হলেও মনে হয় যে একটু ভালো ঘুম হলেই আমাদের শরীরটা আবার ভালো লাগতে শুরু করবে। যেমন সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পর আমাদের মনে হয় যে আমরা খাবার খাই বা না খাই আগে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। অর্থাৎ আমাদের শরীরে খাদ্যের পাশাপাশি ঘুমের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আসলে ভালো ঘুম হলে আমাদের শরীরে আমরা শক্তি অনুভব করি। ঘুমের জন্য আমাদের শরীরে একটা আলাদাই এনার্জি আসে যা আমাদের সারাদিনের কাজকর্ম করতে সাহায্য করে। তাই বলা হয় প্রত্যেকটা মানুষের পর্যাপ্ত ঘুমের দরকার আছে। যেমন:-
০-৩ মাসের বাচ্চাদের ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা,
৪-১২ মাসের বাচ্চাদের ১২ থেকে ১৬ ঘন্টা,
১-২ বছরের বাচ্চাদের ১১ থেকে ১৪ ঘন্টা,
৩-৫ বছরের বাচ্চাদের ১০ থেকে ১৩ ঘন্টা,
৬-১৩ বছরের বাচ্চাদের ৯ থেকে ১২ ঘন্টা,
১৪-১৭ বছর বাচ্চাদের ৮ থেকে ১০ ঘন্টা, এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ৮ থেকে ৯ ঘন্টার একটা সুন্দর ঘুমের প্রয়োজন হয়। কিন্তু দেখা যায় ৬০ বছর পরবর্তী বয়সে মানুষ যেহেতু বৃদ্ধ বয়সের গণ্ডিতে পৌঁছে যায় তাই তখন আবার ঘুমের সময় বৃদ্ধি পেতে থাকে।


কারণ এই বয়সে মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগ দেখা যায়, আর সেই জোর বা কাজকর্ম করার ক্ষমতা থাকে না যা কম বয়সে বা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে থাকে। তাই এই বয়সে মানুষ একটু বেশি ঘুমায়, যা স্বাভাবিকের মধ্যেই ধরা হয়। আমাদের এই ঘুমের প্রয়োজন শুধুমাত্র শরীরের শক্তি সঞ্চয়ের জন্যই নয়। আমরা যদি ভালোভাবে রাতে না ঘুমায় এবং পরিপূর্ণ একটি ঘুম না দিতে পারি তাহলে ধীরে ধীরে আমাদের স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এবং আমাদের ক্রিয়েটিভ চিন্তাভাবনার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আমার যেহেতু সৌভাগ্যক্রমে এডুকেশন অনার্স ছিল কলেজ জীবনের তাই আমি এই বিষয় থেকে মানব জীবন সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করেছি। আর সেখানেই কোথাও পড়েছিলাম যে, আমাদের ব্রেনের অনেক ছোট ছোট শিরা উপশিরা এবং খুব সূক্ষ্ম কিছু টিস্যু থাকে, আর ঘুমের অভাব হলে এবং পর্যাপ্ত জল না খেলে আমাদের ব্রেনের এই টিস্যুগুলি শুকিয়ে যায়। আর এই কারণে আমাদের মস্তিষ্ক বিভিন্ন কাজ করতে ব্যাহত হয়। তাই আমাদের শরীরের জন্য খাদ্য যেমন খুবই প্রয়োজনীয় একটি জিনিস তেমন ঘুমেরও কোন বিকল্প হয় না। আর এই ঘুম অবশ্যই একটানা ৮ থেকে ৯ ঘণ্টার হতে হবে। রাতে অল্প সময়ে কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়ে দিনের বেলা আর বাকি কয়েক ঘণ্টা ঘুমালেই হবে না। আমরা অনেক সময় দেখা যায় রাতে ফোন ঘাটতে ঘাটতেই ঘুমিয়ে পড়ি।


এছাড়া অনেক রাত অব্দি ফোন ঘাটতে থাকি, যে কারণে রাতের বেলা আমাদের ঠিকঠাক ভাবে ঘুম আসতে চায় না এবং দিনের বেলায় আমরা অপ্রয়োজনীয় ভাবে ঘুমাতে থাকি যেহেতু আমাদের রাতের ঘুম অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কিন্তু ঘুমের একটা সঠিক সময় এবং সঠিক নিয়ম আছে যা আমাদের মেনে চলা অতি আবশ্যক। আমাদের সঠিক সময়ে ঘুমাতে হবে এবং রাতেই আমাদের সম্পূর্ণ ঘুমটা সম্পন্ন করতে হবে। কারণ দিনের বেলা ঘুম শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। অন্যদিকে ঘুম যেমন আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং প্রয়োজনীয় একটি জিনিস তেমনি অতিরিক্ত ঘুম আবার আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতি করে। কম ঘুমালে যেমন আমাদের শরীরের এনার্জি থাকে না কোন কাজ করার বেশি ঘুমালেও আবার দেখা যায় শরীরটা কেমন ঝিমিয়ে থাকে। এবং সারাদিন কাজ করার কোন উদ্যম পাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই আমরা যদি রাতের বেলা সঠিক সময় ঘুমিয়ে পড়ি অর্থাৎ ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে ঘুমিয়ে সম্পূর্ণ ৮ থেকে ৯ ঘন্টার একটা সুন্দর ঘুম দিয়ে সকালবেলা উঠি তাহলে আমাদের সারাদিনের কাজকর্ম অনেক সুন্দর ভাবে করা সম্ভব হবে। এবং এই কাজকর্ম ভালোভাবে সম্পন্ন করার ফলে আমাদের জীবনের ভালোভাবে উন্নতি করাও সম্ভব।


আমরা যদি রাত্রে গভীরভাবে সুন্দর একটা ঘুম দিতে পারি তাহলে আমাদের সারাদিনের টেনশন থেকে অনেকটাই দূরে থাকতে পারবো। আসলে অনেক মানুষ আছে যাদের রাতে গভীরভাবে ঘুম আসে না এবং অবচেতন মনে তারা বিভিন্ন জিনিস নিয়ে চিন্তা করতে থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য মোটেও ভালো না, তাই আমরা যদি গভীরভাবে ঘুমাতে পারি তাহলে আমরা সেইসব চিন্তা থেকে দূরে থাকতে পারবো এবং সকালবেলা আমরা একটা সুন্দর দিনের সূচনা করতে পারব। এছাড়াও দেখা গেছে গভীরভাবে পর্যাপ্ত ঘুমালে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে এবং বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যেমন আমার মাথা যন্ত্রণা করলে আমি কোনো ওষুধ না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ি আর ঘুম থেকে উঠে দেখি মাথা যন্ত্রণা ঠিক হয়ে গেছে। এছাড়াও অনেক ধরনের রোগ আছে যার ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে। তবে ঘুমানোর সময় আমাদের অবশ্যই মোবাইল ফোন জাতীয় জিনিসপত্র দূরে রাখা দরকার। কারণ এইসব জিনিসের যে রেডিয়েশন সেটা আমাদের শরীরকে সবসময় ক্ষতি করে চলেছে। তাই ঘুমানোর সময় অন্তত এসব জিনিস থেকে দূরে থাকা দরকার। কারণ ঘুমের সময় আমাদের শরীর বিভিন্ন মেরামতির কাজ করে। তাই ক্লান্ত শরীর নিয়ে আমরা ঘুমালেও সকালবেলা উঠে একদম নিজেকে ফ্রেশ ফিল করতে পারি। তাই আমাদের সুস্থ থাকার জন্য ঘুমের প্রতি যথেষ্ট খেয়াল রাখা প্রয়োজন।



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

1000027937.jpg

1000027936.jpg

1000027935.jpg

ঘুম আমাদের শরীরকে সচল রাখে। নিজেকে ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। ঘুমের পাশাপাশি আমাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রত্যেক দিন জল পান করা উচিত। শুধু ব্রেন নয় আপু সারা শরীরটাকে ভালো রাখে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লিখেছেন আপনি।

মানব দেহ সুস্থ এবং সবল রাখার জন্য ঘুমের প্রয়োজন অনেক। একজন সুস্থ মানুষকে কমপক্ষে দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমানো খুবই প্রয়োজন। ঘুম গেলে মানুষের দৈহিক এবং শারীরিক অবস্থা ভালো থাকে। মস্তিষ্ক সচল হয়ে থাকে। আমাদের সুস্থ থাকার জন্য ঘুমের প্রয়োজন খুব বেশি। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

আমাদের জন্য ঘুম একান্ত প্রয়োজন। যত বেশি সঠিক সময়ে ঘুম দেওয়া যাবে তত নিজেরা ভালো থাকতে পারবো। এছাড়াও পানি পান করাটা আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার। এই দুইটা বিষয় আমাদের সব সময় মেনে চলার প্রয়োজন।