পুঁই মিচুরি ভাজা।

in hive-129948 •  17 days ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000025998.jpg



আজকে আমি যে রান্নাটা করতে চলেছি এই রান্নাটা অনেকেই জানে না বা অনেকেই খায় না। আমি নিজেই শুনেছি আমার এক বান্ধবীর কাছ থেকে যে, তার বাপের বাড়ির এলাকাতে নাকি পুঁইশাকের ফল অর্থাৎ মিচুরি যে খাওয়া যায় সেটা জানেই না। কিন্তু মিচুরি বিভিন্নভাবে রান্না করা যায়। আর এই মিচুরি খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমি শুনেছি মিচুরি খেলে নাকি শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিন ভালো হয়। এছাড়াও পুঁইশাকের ফল অর্থাৎ মিচুরি যেহেতু আশ জাতীয় খাবার তাই এই খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়। এই মিচুরিতে ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন এবং জিংক রয়েছে যা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন।

1000025984.jpg



এছাড়াও যেমন সবুজ শাকসবজির মধ্যে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ থাকে তেমনি মিচুরি ও সবুজ শাকসবজির মধ্যে পড়ে এবং এতেও প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ থাকে। আর কেবল মাত্র এই শীতের সময় দেখা যায় পুঁইশাকে ফল হতে। আর আমিও এই পুইমিচুরি খেতে খুবই পছন্দ করি। আর আমার তো কিনেও খাওয়ার প্রয়োজন হয় না কারণ আমাদের বাড়িতেই পুইশাক হয় এবং সেই পুইশাকে এই সময় প্রচুর পরিমাণে ফল ধরে। তাই আমার যখন পুঁইশাকের ফল অর্থাৎ মিচুরি খেতে ইচ্ছা করে বা রান্না করার প্রয়োজন হয় তখন আমি সেখান থেকেই তুলে নিয়ে আসি। আর আমার সব থেকে বেশি পছন্দ পুইমিচুরি ভাজা। তাই আমি এই রান্নাটাই বেশি সময় করে থাকি।তাহলে দেরি না করে শুরু করে দিয়ে পুইমিচুরি রান্না।


1000025999.jpg


-:উপকরণ:-

পুঁইশাকের ফল
পেঁয়াজ
কাঁচা লঙ্কা
হলুদ
লবণ

-:রন্ধন প্রণালী:-


আমি প্রথমেই পুঁইশাকের ফল অর্থাৎ মিচুরি গুলো ছোট ছোট আকারে টুকরো করে কেটে নিলাম। কাটার সময় ভালো করে কোন নোংরা বা কিছু আছে নাকি সেটাও দেখে নিয়েছি। এবার বেশ কয়েকবার ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে নিলাম যেন ভেতরে কোন নোংরা ধুলোবালি না থাকে। কারণ আমাদের বাড়িতে যেখানে এই পুই মিচুরি হয়েছে সেই জায়গাটা পুরোই মাটি এবং বালি রয়েছে। তাই একটু ভালো করেই ধুয়ে নিতে হবে যেন খাওয়ার সময় বালি দাঁতে না পরে। মিচুরি গুলো ভালো করে ধুয়ে একটি ঝাজরিতে জল ঝরাতে দিয়ে দিলাম।


1000026008.jpg


1000026009.jpg


এবার অন্যদিকে একটা মাঝারি আকারের পেঁয়াজ কুচি করে নিলাম এবং তার সাথে পাঁচটি কাঁচালঙ্কা মাঝ খানে বরাবর চিরে নিলাম। এবার একটি কড়াইতে ২ চামচ পরিমাণ তেল দিয়ে দিলাম। কড়াইএর তেল একটু গরম হতে দিয়ে দিলাম পেঁয়াজ কুচি। কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে যেই একটু বাদামি রঙের হয়ে গেল তখন দিয়ে দিলাম পরিমাণ মতো হলুদ এবং লবণ। তারপর আরো কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে দিয়ে দিলাম পুইমিচুরি। এবার বেশ কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে সবকিছু মিশিয়ে নিলাম। তারপর কিছুক্ষণের জন্য একটি ঢাকনা দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পরপর ঢাকনা তুলে একটু নাড়াচাড়া করে আবার ঢাকা দিয়ে দিলাম।

1000026010.jpg



এভাবেই বেশ কিছুক্ষণ ঢাকা দিতে দিতে মিছরিগুলো ভালো করে সেদ্ধ হয়ে গেল। অপর্যায় দেখতে পাচ্ছি একটু জল বেরিয়েছে। এবার চিড়ে রাখা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে দিলাম। এবার ঢাকা না দিয়েই ভালো করে নাড়াচাড়া করে ভাঁজতে লাগলাম। বেশ কিছুক্ষণ ভাজার পরে জল টেনে শুকিয়ে গেল। এবার আমার রান্না হয়ে গেলো। এই পুঁইমিচুরি দিয়ে ভাত মাখলে ভাতের রং পুরো লাল টকটকে হয়ে যায় তাই ভাত যেমন দেখতে খুব সুন্দর লাগে তেমন খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে।

1000026014.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

পুইশাকের যে বিচিগুলোও এভাবে খাওয়া যায় এটা তো জানা ছিল না। নতুন আপনার পোস্ট থেকে জানতে পারলাম। বলতে পারেন এই রেসিপিটি আমার কাছে একদম ইউনিক। সেই সাথে রন্ধন প্রণালী যেহেতু উপস্থাপন করেছেন সুন্দর করে। তাই বাসায় তৈরি করে খেয়ে দেখবো একদিন।পুঁইশাকের ফল এর রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

image.png

1000026541.jpg

1000026540.jpg

1000026539.jpg

পুঁই মিচুরি ভাজার অনেক সুন্দর পদ্ধতি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। ওই রেসিপিটা ব্যক্তিগতভাবে খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আপু আপনার জন্য একটাই পরামর্শ প্রথমের দিকে সর্বশেষ ছবিটা ব্যবহার করবেন তাহলে পোস্ট দেখতে আরো বেশি সুন্দর হবে।

বেশ অসাধারন একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। এই রেসিপি দেখলে মায়ের কথা বেশ মনে পড়ে। মনে হয় যেন মায়ের হাতের রান্নার সাধ এখনও মুখে লেগে আছে। বেশ সুন্দর করে পুরো রেসিপিটি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ সুন্দর এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।

পুঁইশাকের ফল কে মিচুরি বলা হয় এটা জানা ছিল না। এই খাবারটা খেতে খুবই সুস্বাদু। তবে এবার এখনো খাওয়া হয়নি। আপনি খুব মজার একটা রেসিপি তৈরি করেছেন আপু। পরিবেশনের ছবিটা সবার আগে দিলে দেখতে আরো বেশি ভালো লাগতো। লোভনীয় এই রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

এ বছরে মিস করে গেলাম। গত বছর প্রায় দুই মাস এর বেশি পুঁইশাকের মিসরি খেয়েছি। আমাদের সবজি বাগানে অনেক হয়েছিল গত বছরে। এবার সামান্য হয়েছিল কিন্তু ইদুরে নষ্ট করে ফেলেছে। আপনার এই প্রিয় রেসিপি দেখে মুগ্ধ হলাম। এটা আমার খুবই ফেভারিট।

অনেকেই রয়েছেন যারা পুই ফল যে খাওয়া যায়, সেটাই জানেন না।
যাইহোক এই রেসিপিটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। আপনি বেশ চমৎকার উপস্থাপনার মাধ্যমে পোস্ট শেয়ার করেছেন।

সত্যি বলতে আমি এর আগে জানতাম না যে পুঁই শাকের ফল খাওয়া যায় সেটা আবার ভাঁজি করে। আপনি আজকে পুঁই মিশুরি ভাজি রেসিপি শেয়ার করেছেন। আপনার রেসিপিটি দেখে তো আমার খেতে ইচ্ছে করছে। আপনার রেসিপিটি দারুন হয়েছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

আসলে পুঁই মিচুরি ভাজা রেসিপি এখন পর্যন্ত কোন দিন খাওয়া হয়নি। আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর করে পুঁই মিচুরি ভাজা রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা রেসিপি টি দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার হয়েছিল। আপনি প্রতিটি উপকরণ একদম সমান ভাবে মিশ্রণ করে রেসিপি টি সম্পন্ন করেছেন।

1000026587.jpg

আমিও পুঁইশাকের বিচি অনেক পছন্দ করি। এটা অন্যান্য সবজি বা মাছ দিয়ে রান্না করলে খেতে ভালো লাগে। খুব সুস্বাদুভাবে আপনি রেসিপি তৈরি করেছেন। অনেক ভালো লাগলো এত চমৎকার রেসিপি তৈরি করতে দেখে।

আপু যেহেতু এটা রেসিপি পোস্ট তাই প্রোফাইলে রান্নার শেষে যে পরিবেশনের ফটোগ্রাফি করা হয় তা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। যাই হোক পুঁই শাকের ফলের ভাজি দেখে খুব খেতে ইচ্ছে করছে। গরম ভাতের সাথে এই ভাজি খেতে দারুণ লাগে। অনেক দিন হয়েছে পুঁই শাকের ফল ভাজি খাওয়া হয় না। ধন্যবাদ আপু মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

পুঁই শাকের ফুল জীবনে দুবার খেয়েছিলাম। আমাদের এলাকায় এই ফুল খাওয়ার প্রচলন কম তবে খেতে কিন্তুু দারুন।পুষ্টি ও বেশ।ধাপে ধাপে পুঁই শাকের ফুল ভাজা পদ্ধতি চমৎকার করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে লোভনীয় পুষ্টিকর রেসিপি টি আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।