রাগ।

in hive-129948 •  9 days ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17367518307298143709408371738778.jpg


সোর্স


রাগ মানেই লোকসান। এই রাগ আমাদের জীবনের জন্য খুবই চরমতম ক্ষতিকর জিনিস। তবে আমাদের রাগ হলে যেহেতু মাথা ঠিক থাকে না তাই আমরা বুঝতেও পারি না যে আমাদের জীবনে কি ক্ষতি হচ্ছে এই রাগের কারণে। তবে কিছু কিছু মানুষের এমন বাজে ব্যবহার এবং এমন বাজে আচরণ করতে দেখা যায় যে সেই সব ক্ষেত্রে আমাদের রাগ কন্ট্রোল করা অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে ওঠে। কিন্তু সেই সময় আমরা রাগের মাথায় অনেক বেশি উল্টোপাল্টা কথা বলে ফেলি। আর রাগের মাথায় বলা এসব কথা ভবিষ্যতে আমাদের জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে। আর অনেক ক্ষেত্রে আমরা বুঝতেও পারি না যে এই রাগের কারণে আমাদের আপনজন আমাদের কাছ থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যেতে থাকে। এই রাগের কারণেই অনেক সময় আমরা আমাদের প্রিয় মানুষটিকেও অনেক কটু কথা বলে ফেলি যেটা আমাদের কখনোই বলা উচিত নয়। অনেক সময় আমরা আমাদের সুন্দর মুহূর্তটাকে উপভোগ করতে পারি না এবং রাগের কারণে সেই মুহূর্তটাকে নষ্ট করে ফেলি। যে সময় একবার চলে যায় সেই সময় আর ফিরে আসে না তাই রাগের কারণে আমরা যে সময়টা অবহেলায় হারিয়ে ফেলি সেই সময়টা আর ফিরে পাই না সারা জীবনে।


আসলে রাগ আমাদের জীবনে একটি রোগের মত কাজ করে। তাকে যত বাড়তে দেওয়া হয় সে তার দ্বিগুণ গতিতে বাড়তে থাকে। আর শুধু বাড়তেই থাকে এমনটা নয়, সে আরো ক্ষতিকর হয়ে ওঠে আমাদের জীবনের জন্য। কারণ যেসব মানুষের রাগ প্রচন্ড বেশি রাগ তারা এই রাগকে প্রশ্রয় দিতে দিতে এতটাই ভয়াবহ করে ফেলে যে, অন্য কোন সাধারণ ব্যক্তি এসব মানুষের সাথে মেলামেশা বা কথা বলা পছন্দ করবে না। তাই এসব মানুষ জীবনে একা হয়ে পরে। আর এই একাকীত্ব থাকার কারণে তাদের জীবনে কারো কষ্টকর মুহূর্ত তৈরি হতে থাকে। আমাদের জীবনের রাগ সবসময়ই কন্ট্রোল করার চেষ্টা করা উচিত কারণ রাগকে যদি আমরা ইগনোর করি, তাহলে ধীরে ধীরে এই রাগ প্রশ্রয় পেয়ে বিপদজনক হয়ে উঠতে থাকে এবং এতে আমাদের নিজের জীবনের সাথে সাথে অন্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেমন কোন এক ব্যক্তি কোন কারনে প্রচন্ড রেগে আছে এবং সেই সময়ে তার সাথে কোন ভালো কথাও বলার চেষ্টা করলে তার দিক থেকে খুবই খারাপ কথা আসতে পারে এবং তারপর দুটি ব্যক্তির মধ্যেই কথা কাটাকাটির সৃষ্টি হতে হতে চরমতম ঝামেলা এবং হাতাহাতি পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।


আর আমরা বিভিন্ন ক্রাইম থ্রিলার মুভি, নাটক, এছাড়া বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখে থাকি যে প্রচন্ড রাগের মাথায় ঝগড়াঝাঁটির মাধ্যমে মারধর শুরু হয়ে যায়। এবং তারপরে দেখা যায় কোনভাবে প্রচণ্ড আঘাতে সেই রেগে থাকা ব্যক্তি অপরজনকে মেরে ফেলে। কিন্তু সেই ব্যক্তিটি ইচ্ছাকৃতভাবে অপরজনকে কিন্তু মার্ডার করে না বা করতে চায়না। সে সম্পূর্ণ রাগের কারণে তার জীবনের সবথেকে ক্ষতিকারক এই ভুল কাজটি করে বসে। এই কাজটি করার পরে হঠাৎ তার মাথা ঠান্ডা হয়ে গেলে সে বুঝতে পারে যে সে কতটা ভুল করে ফেলেছে। কিন্তু তখন কিছু করার থাকে না। প্রচন্ড রাগের কারণে মানুষ তার নিজের ওপরে কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে, তাই প্রচন্ড রাগের কারণে সে কি করে বসে, সে নিজেও বুঝতে পারে না। আসলে প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে আবেগ থাকে আর রাগও একটি আবেগের মধ্যে পড়ে অর্থাৎ আবেগেরই একটি অংশ। কিন্তু আমাদের প্রত্যেকটি জিনিস পরিমাণ মতো এবং ব্যালেন্স করে চলা উচিত। তাই রাগ করারও একটি নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। কিন্তু সেই মাত্রা অতিক্রম করলে আমাদের জীবনে নেমে আসবে দুর্ভাগ্য। তাই আমাদের প্রতিনিয়ত আমাদের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করা উচিত। যাতে আমাদের রাগের কারণে আমাদের জীবনে এবং অন্য কারোর জীবনে ক্ষতি না হয়।


আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা করা উচিত আমাদের রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখা। আর এই রাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন উপায় আছে,
যেমন:- * আমরা যখন কথা বলবো তখন খুবই শান্তভাবে এবং শান্ত মাথায় কথা বলার চেষ্টা করতে হবে। কারো কথা শোনা মাত্রই চটজলদি তার উত্তর দেওয়া যাবে না তার কথা শুনে ভেবেচিন্তে শান্ত স্বরে সুন্দরভাবে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
**প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে কিছু ব্যায়াম করা। যেসব যোগ ব্যায়াম করলে মন শান্ত হয়ে যায়, যেমন ধ্যানের মতো করে বসে চোখটা বন্ধ করে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করা এবং তুলনামূলকভাবে একটু জোরে দীর্ঘ নিঃশ্বাস নেওয়া।
***নিজের পছন্দমত সুন্দর গান শোনা।
****যখন প্রচন্ড পরিমাণ রাগ হতে থাকে তখন সাথে সাথে রাগ কমাতে গেলে মনে মনে উল্টো করে ১০০ থেকে ১ পর্যন্ত গুনলে রাগ অনেকটাই কমে আসে।
*****আবার নাক দিয়ে একটু বড় করে নিশ্বাস নিয়ে কিছুক্ষণ ভেতরে রেখে মুখ দিয়ে আস্তে আস্তে বের করে দিতে হবে। এভাবে কিছুক্ষণ নাক দিয়ে নিশ্বাস নিয়ে রেখে মুখ দিয়ে বের করতে থাকলে রাগ অনেকটাই কমে আসতে থাকে। আর তার সাথে মনে মনে যদি নিজেকে বলা হয় শান্ত হতে তাহলে মনটা অনেকটাই শান্ত হয়ে আসে।
******প্রতিদিন অন্তত আধাঘন্টা কোন একটা শান্ত পরিবেশে খোলা আকাশের নিচে, অথবা গাছপালা অর্থাৎ সবুজে ঘেরা কোন জায়গায় শান্তভাবে বসে নিজেকে সময় দেওয়া উচিত। তাহলে মনটা অনেকটাই শান্ত হয়ে যায় এবং রাগ অনেকটাই কমে যেতে থাকে।
*******নিজের প্রিয় মানুষের সাথে সময় কাটালে এবং মন খুলে কথা বললে অর্থাৎ মনের সব কথা শেয়ার করলে মন ভালো থাকে এবং রাগ নিয়ন্ত্রণে থাকে।



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

সত্যি আপু রাগ এমন একটা জিনিস যেটা একটা জীবনকে নষ্ট করে দিতে পারে। আপনি তো রাগ কমানোর দারুন দারুন টিপস দিয়েছেন। তবে রাগের মাথায় এইসব কিছু মনে থাকে না। তারপরেও চেষ্টা করব মনে রাখার জন্য। আপনার পোস্ট পড়ে ভীষণ ভীষণ ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

সত্যিই আপু রাগ মানেই লস।কথায় আছে না রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। কিন্তু রাগ হলে মাথা একদম ই ঠিক থাকে না।আপনি তো আপু রাগ কমানোর অনেক দারুন টিপস্ শেয়ার করেছেন। রাগের সময় এসব কিছুই মাথায় থাকে না তবে চেষ্টা করবো মনে রাখার জন্য। ধন্যবাদ আপু আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

একদম ঠিক বলেছেন আপু রাগ প্রতিটি মানুষের ধ্বংসের কারণ। রাগের বশবর্তী হয়ে মানুষ অনেক ধরনের কাজ করে ফেলে।পরে আফসোস করা ছাড়া উপায় থাকে না। রাগ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য টিপসগুলো বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।

আসলে আমাদের কোন ভাবে রাগ করা উচিত নয়। কারণ রাগ মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। রাগ যখন হয় তখন মানুষের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। তাই যে কোন রকমের ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারে। রাগ আমাদেরকে যে কোন উপায়ে কন্ট্রোল করতে হবে যে কোন পরিস্থিতিতে। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।