এক কাপ চা
মোঃ নিরব সরকার
এই শুনছো!
এক কাপ চা করে দিবে?
চিনি ছাড়া দুধ চা?
আচ্ছা দু-কাপ করো।
নিয়ে বারান্দায় এসো।
আমি কবিতার বই টা নিয়ে আসছি।
তোমার ওই পছন্দের বইটা।
আমি আবৃত্তি করবো, তুমি শুনবে।
চা খাওয়া শেষে তুমি আমার কোলে মাথা রেখে শুনবে।
আচ্ছা তোমার লাল শাড়িটা পরবে আজ?
কপালে টকটকে লাল টিপটাও দিও।
কুচি নিয়ে ভেবোনা।
আমি ঠিক করে দিবো।
চোখে চিকন করে কাজল দিতে ভুলোনা কিন্তু।
তাতে তোমায় বেশ মায়াবিনী লাগে।
খোপা বেঁধে বোলো।
তোমার যত্নে গড়া বারান্দার বাগান থেকে
একটা লাল টুকটুকে রক্তজবা এনে
তোমার খোপায় গুজে দিবো।
দেখ
শরতের আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভাসছে।
আজ কিন্তু আমরা রিক্সায় চড়বো।
তুমি আমার কাঁধে মাথা রেখে
তোমার নরম দুখানা হাত দিয়ে
শক্ত করে আমাকে ধরে রাখবে।
তুমিতো আবার ঝাকুনিতে ভয় পাও।
মনে আছে সেদিন রাগ করে মুখ ঘুরিয়ে বসে ছিলে?
আর রিক্সার পেছনের চাকা বেইলী রোডের স্পীড ব্রেকারের উপরে থেকে নামার সাথে সাথে
কিভাবে আছড়ে পরে ছিলে?
হা হা হা, তারপর কখনোই রিক্সায় আমার হাত না ধরে বসোনি।
মীরপুরের শাহীন মামার চায়ের দোকানটার কথা মনে আছে?
দুর থেকেই কিরকম মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলতো;
"মামা ভালো আছেন?"
তুমি হেসে বলতে "হ্যা মামা, চা খেতে এসেছি"
মামা বলতো
"বসুন, দিচ্ছি"
আমি চায়ের সাথে একটা সিগারেট চাইতাম।
তুমি ভীষন আপত্তি করতে।
কিন্তু মামা সায় দিয়ে বলতো,
"দিন না খেতে, অভ্যাস কি আর ছাড়া যায়?"
এরপর যেদিন বৃষ্টি হবে, আমরা কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজব।
শেষ বার আমার সর্দি হয়েছিলো বলে তুমি কিন্তু না করতে পারবেনা।
জানোইতো, বৃষ্টি আমার ভীষন পছন্দ।
তুমি কিন্তু পায়ে নুপুর পরবে।
আমি গান গাইবো,
আর তুমি দুহাত মেলে নাচবে।
বৃষ্টি শেষে যখন বাসায় ফিরবো,
তোমার ভেজা চুলগুলো মুছতে মুছতে বলবো,
আচ্ছা, এক কাপ চা করে দিবে?
ওগো শুনছো,
ছবি থেকে একটু বাহিরে বেরিয়ে আসবে?
আমার কোলে মাথা রেখে একবার কবিতা শুনবে?
তোমার লাল শাড়িটা একটু বারান্দায় মেলে দিবে?
আমার সাথে একটু কথা বলবে?
এক কাপ চা করে দিবে?
.............................................................
Free image used from the link: https://unsplash.com/s/photos/a-cup-of-tea?license=free