গুলশান লেকের সমস্যা ও এর প্রতিকার (প্রথম পর্ব)

in hive-129948 •  2 months ago 

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


প্রথম আলোর একটি খবর দেখে কিছুটা খারাপ লাগলো। আসলে এটা খবর ছিলো না। একজন প্রাক্তন সচিব প্রথম আলোতে একটি কলাম লিখেছেন। সেই কলামে তিনি গুলশান লেকের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। বেশ কিছুদিন আগে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে গুলশান লেক সংস্কার করা হয়েছিলো। তারপরে সবাই চিন্তা করেছিলো এই লেকটি একটি দৃষ্টিনন্দন লেকে পরিণত হবে। লেকের আশেপাশে যারা বসবাস করেন তারা চমৎকার একটা পরিবেশ পাবেন। কিন্তু আদতে হয়েছে তার উল্টো। গুলশান লেকটা একটা ময়লা আবর্জনার ভাগারে পরিণত হয়েছে। লেকের পানি পচে গিয়ে চরম দুর্গন্ধময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সেই দুর্গন্ধ এতোটাই ভয়াবহ যে লেকের আশে পাশের বাড়ি ঘরগুলোর বাসিন্দাদের জীবন রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তাদেরকে বছরের নয় মাস লেকের দিকের জানালা দরজা সব বন্ধ করে রাখতে হয়।

workout_20240420_113802_0000.png

ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা।

শুধু যে দুর্গন্ধের সমস্যা তা নয়। লেকের এই দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশের কারণে প্রচুর মশা হয়েছে। গুলশানের সেই মশা লেকের আশেপাশের বাসিন্দাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। তবে এই সমস্যার জন্য লেকের আশেপাশের বাসিন্দারাও কম দায়ী নয়। কারণ তাদের সবার বাড়ির শুয়ারেজের লাইন দেয়া হয়েছে। যার ফলে মল মুত্র মিশ্রিত সেই পানি লেকের পানি একেবারে দূষিত করে তুলেছে। সেই সাথে যোগ হয়েছে কিছু মৎস্য চাষীদের উপদ্রব। এরা লেকের বিভিন্ন জায়গা ঘিরে সেই সমস্ত জায়গায় মাছ চাষ শুরু করেছেন। মাছ চাষ করার জন্য লেকে বিভিন্ন রকমের মাছের খাবার দিতে হয়। তার ভেতরে এমন কিছু উপাদান থাকে যেগুলো লেকের পানির জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই মাছ চাষ লেকের জন্য আরও খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


তাছাড়া গুলশানের এই লেকের সাথে আশেপাশের লেক গুলোর যোগাযোগ খুব একটা ভালো নয়। বিভিন্ন রকম ছোটখাট ব্রিজের নিচ দিয়ে অন্যান্য লেকের সাথে এগুলো মিলিত হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় শুরু কিছু পাইপের মাধ্যমে পাশের লেকের সাথে যোগাযোগ রক্ষা হয়েছে। যার ফলে সবকিছু মিলিয়ে লেকের পরিবেশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। কয়দিন আগে ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিক সাহেব তিনি গুলশানের বাসিন্দাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন এই এলাকায় সমস্ত বিত্তবান লোকেরা থাকেন। তারপরেও তারা তাদের সুয়ারেজ লাইন সিটি কর্পোরেশনের সুয়ারেজ লাইনের সাথে না দিয়ে কেন লেকে দিয়েছেন সেটা তিনি বুঝতে পারছেন না। তিনি প্রস্তাব করেছেন হয় সবাই শুয়ারেজের লাইন সিটি কর্পোরেশনের সুয়ারেজ লাইনের সাথে দেবে আর না হলে প্রত্যেকটা বাড়িতে ইটিএফ স্থাপন করতে হবে। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা সাথে সাথেই দ্বিতীয় মতটা খারিজ করে দিয়েছেন। কারণ আমাদের দেশে যেখানে শিল্প কলকারখানা গুলোই ইপিএফ ব্যবহার করছে না। সেখানে বাসা বাড়িতে ইটিএফ স্থাপনের উদ্যোগটা একেবারেই অবাস্তব। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



ধন্যবাদ

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দিনশেষে আমাদের এটা স্বীকার করতে হবে পরিবেশের এরকম বিদ্রুপ প্রভাবের জন্য আমরাই দায়ী। গুলশানের মত জায়গায় যেখানে ধনীরা বসবাস করে তারপরও সেখানে এরকম অনিয়ম লেকের মধ্যে সুয়ারেজ লাইন দেওয়া হয়েছে।