নমস্কার সবাইকে। ভগবানের আশির্বাদে আমি ভালো আছি। আশা করি সকলে ভালো আছেন।
আজ একটা প্রয়োজনীয় কাজে কলকাতা এলাম। কলকাতাতে এবার এলাম বেশ কিছুদিন পরেই। কালীপুজোর দিন দশেক আগে শেষবার কলকাতা এসেছিলাম। কলকাতাতে যেহেতু মামা বাড়ি তাই মাঝে মাঝেই আসতে হয়। তবে আমার ছোটোবেলায় মামারা কলকাতায় থাকতেন না। তারা থাকতেন বশিরহাট মহকুমার এক সীমান্তবর্তী গ্রামে। গ্রামের নাম আমুদিয়া। গ্রামের উত্তর দিকে ছিল সোনাই নদী। আমার ছোটোবেলার বেশিরভাগ সময় কেটেছিল সেই আমুদিয়া গ্রামেই। ওখান থেকে কলকাতার সোদপুরে চলে আসেন ২০০০ সালে বন্যার আগেই। বলে রাখি ২০০০ সালে আমাদের রাজ্যে এক ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। রাজ্যের অধিকাংশ স্থান সেবারের বন্যায় জলের তলায় চলে যায়।
আমার যখন এক মাস বয়স তখন থেকে আমি ট্রেনে যাতায়াত করছি। তখন অবশ্য মায়ের কোলে করেই যাতায়াত করেছি। আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি, তখন থেকে আমি বহরমপুর থেকে কলকাতা একা যাতায়াত করি। তখন সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগতো। কৃষ্ণনগর থেকে লালগোলা পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ছিল, ইলেকট্রিফিকেশনও তখন হয়নি। এখন অবশ্য চার ঘন্টায় চলে আসি। একা যাতায়াত করতে করতে এখন কেমন যেন একটা অভ্যাস হয়ে গেছে।
বেলা একটার ট্রেন ধরে আজ কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। স্টেশনে তখন বেশ কিছু যাত্রী বসেছিল। হঠাৎ এক পরিচিত দাদার সাথে দেখা হওয়াতে বেশ কিছুক্ষণ গল্প করতে করতে ট্রেন চলে এলো। প্রথমে যে কামরায় উঠলাম সেখানে খুব ভিড় থাকায় সঙ্গে সঙ্গে নেমে এগিয়ে গিয়ে অন্য কামরায় উঠলাম। সেখানে কিছুক্ষণ পরেই বসার জায়গা পেয়ে গেলাম। ব্যাগ থেকে হেড ফোন বের করে গান শুনতে লাগলাম। এক্ষেত্রে পুরোনো দিনের গানই আমার পছন্দ।
স্টেশনে বসে তোলা সেল্ফি
গান শুনতে শুনতে এগিয়ে চলেছি গন্তব্যের দিকে। একটার পর একটা স্টেশন আসছে আর যাচ্ছে। এদিকে সমান তালে চলছে হকারদের আনাগোনা। জলের বোতল, রকমারি জিনিস সহ নানান মুখরোচক খাবার, নানা রকম ফল। ভেজ প্যাটিস, গজা, ঘুগনী, ছোলা মাখা কী নেই সেই তালিকায়। ভাত খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলাম তাই আধা ঘন্টা পর একটা পেয়ারা কিনে খেলাম। এরপর গান শুনতে শুনতে হঠাৎ ঘুমিয়ে গেছিলাম। যখন ঘুম ভাঙলো তখন কৃষ্ণনগরের কাছাকাছি এসে গেছি। তাই উঠে পরলাম সীট ছেড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে নেমে পড়লাম কৃষ্ণনগর সিটি জংশন স্টেশনে, ঘড়িতে তখন দুপুর ২.৩৫।
প্রথম ট্রেনে তোলা সেল্ফি
প্রথম ট্রেনের কামরা
কৃষ্ণনগরে এসে দেখি তিন নম্বর প্লাটফর্মে ৩.২০ এর কৃষ্ণনগর-শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনটি দাঁড়িয়ে আছে। সীট ধরার জন্য ট্রেনের রং সাইড দিয়ে নেমে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে এলাম। ট্রেনে উঠে সীটে ব্যাগ রেখে একটা জলের বোতল আর কেক কিনে ফিরে এলাম। প্রায় 20 মিনিট পরে ট্রেন ছাড়লো। এগিয়ে চললাম শিয়ালদহের দিকে।
কৃষ্ণনগর লোকাল থেকে কৃষ্ণনগর স্টেশনের দৃশ্য
কৃষ্ণনগর লোকালে তোলা সেল্ফি
কৃষ্ণনগর লোকালের ভেতরের দৃশ্য
এরপর আবার গান শুনতে শুরু করি। গান শুনতে শুনতে প্রায় দুঘন্টা পর পৌঁছালাম সোদপুর স্টেশনে। স্টেশন থেকে বেরিয়ে দিদার জন্য কমলালেবু কিনে অটো ধরে চলে এলাম মামা বাড়িতে।
সকলে ভালো থাকবেন আর সবাইকে ভালো রাখবেন।
ভাইয়া আপনি হঠাৎ করে আপনার জরুরি কাজের জন্য কলকাতায় যাচ্ছেন আর তার সাথে আমাদের মাঝে স্টেশনের কিছু সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করে যাচ্ছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো কিন্তু খুব সুন্দর হয়েছে এবং তার সাথে আপনার জার্নির খুব সুন্দর কাহিনীও বর্ণনা করেছেন। আপনার যাত্রা পথ যেন শুভ হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ট্রেন জার্নি আমার বরাবরই পছন্দের। আগে সাড়ে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগলেও, এখন চার ঘন্টা সময় লাগে, তাহলে তো কিছুটা জার্নি কমেছে। ট্রেনে দেখছি প্রায় দারুন দারুন খাবার বিক্রি করে হকাররা। যদিও আপনি খাবার খেয়ে আশাতে শুধুমাত্র একটি পেয়ারা খেলেন। আসলে গাড়িতে অথবা ট্রেনে এই ধরনের খাবারগুলো খেতে ভীষণ ভালোই লাগে। দেখতে দেখতে খুব সুন্দর ভাবে পৌঁছে গেলেন। আপনার জার্নির গল্প পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ট্রেনে প্রায় সব রকমের খাবার পাওয়া যায়। ফলে কিছু না খেয়ে এলেও খাবার জিনিসের অভাব হয় না। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কৃষ্ণনগর নামটা একটু চেনা চেনা। কই যেনো শুনেছি মনে আসছে না। যাক ট্রেন জার্নি আমার খুবই ভালো লাগে। আপনি দরকারি কাজে কোলকাতা এসেছেন। মামার বাড়ি থাকায় সুবিধাই হয়েছে। কলকাতায় যেতে ট্রেন পাল্টাতে হয়? ডিরেক্ট ট্রেন নাই?
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ডাইরেক্ট ট্রেন বহু আছে। তবে আমি যখন ট্রেন ধরতে গেছি সেই সময় ডাইরেক্ট ট্রেন নেই। তাই ট্রেন পাল্টে আসতে হয়েছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হঠাৎ করে আসার কারণ কি সেই চাকরী রিলেটেড বিষয়টা? যা ই হোক অফ সাইডে নামার কাজটা মোটেই ঠিক করিস নি। এটা না করারই চেষ্টা করবি। জানি অনেকটা পথ, দাঁড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না। তবুও জীবনের ঝুঁকি নেওয়ার দরকার কী?
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সেটা তো ঠিকই রিস্ক নেওয়া ঠিক না। জীবন মানেই রিস্ক। আমিও চেষ্টা করি না করার। হ্যাঁ ঐ আন্দোলনে যোগ দিতেই কলকাতা যাওয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সোনাই নদী বাহ, ভারী সুন্দর নাম।বন্যা আসলেই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে ।পুরোনো দিনের গান শুনতে আমার ও বেশ ভালো লাগে।আপনি আপনার দিদার জন্য কমলালেবু কিনেছেন জেনে ভালো লাগলো।মামাবাড়ি যাওয়ার আনন্দটাই আলাদা।আপনার কলকাতা যাওয়ার অভিজ্ঞতা পড়ে ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুব সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit