আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি আমরা আজকের পোস্ট।
প্রথম অনলাইন ইনকামের অভিজ্ঞতা
বরাবরের মতো আজ ও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে মানুষের প্রথম ইনকামের টাকার তুলনা হয়। আর সেই ইনকাম যদি হয় ঘরে বসে তাহলে তো কথায় নেই। সত্যি অনলাইন ইনকাম করার মধ্যে অনেক আনন্দ লুকিয়ে আছে। জীবনে যতই ইনকাম করি না কেনো প্রথম ইনকামের মতো আনন্দ পাওয়া যায় না।
আমরা ছিলাম পাঁচ ভাই বোন।আমি যখন কলেজে ভর্তি হয় তখন আমার বাবা মারা যায়। আমার বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে বাবা মারা যাবার আগেই। বড় ভাই ছোট একটা চাকরি করতো। আর আমি আর আমার ছোট ভাই পড়াশোনা করতাম। তবে আমরা দুই ভাই বোন পড়াশোনায় অনেক ভালো ছিলাম। আমার ভাই আমার চেয়ে এক ক্লাস নিচে পড়ত।যাইহোক অনেক কষ্ট না হলে ও মোটামুটি ভাবে দুই ভাই বোন পড়াশোনা করেছি।তবে অনেক না পেলেও যেটা প্রয়োজন সেটা সব সময় পেয়েছি। তবে আমার জীবনে লক্ষ ছিল পড়াশোনা করে ভালো একটা চাকরি করব। সত্যি বলতে আমাদের সমাজ বলে ছেলে মেয়ের বিভেদ নেই কিন্তু আসলে কি বিভেদ নেই? আমি মনে করি ছেলে মেয়ের পার্থক্য রয়েছে। মেয়েরা একটু বড় হলে বিয়ে না দিলে সমাজ তাকে খারাপ নজরে দেখে। কিন্তু ছেলেদের ক্ষেতে তা কিন্তু নয়।
আমি যখন অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। তখন আমার ভাই আমাকে বিয়ে দিয়ে দিল। যদিও আমি বিয়ে করতে চেয়েছিলাম না।তারপর ভাইয়ের কথা ফেলতে পারলাম না। আসলে আমি চেয়েছিলাম একটা চাকরি করার জন্য। সত্যি বলতে বিয়ের আগের জীবন আর পরের জীবন কখনো এক হয় না। তারপর আমাকে অনেক ভালো জায়গা দেখে বিয়ে দিয়ে দিল। ছেলেদের সব কিছু আছে, তবে ছেলেটা তেমন কিছু করে না।এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক হলো।আমি ভাবলাম গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট একটা ছেলে হয়তো বিয়ের পরে কিছু একটা করবে। আমরা দুজন মিলে ইনকাম করব।আসলে ভাবলে তো আর সব কিছু হয় না। যাইহোক বর্তমান কিন্তু অনেক কিছু করে। পুরো পরিবর্তন হয়েছে।
আমার শশুরের মাঠে অনেক জমি ছিল, এখনো ৩০০-৪০০ মণ ধান পায়। বিয়ের পর দেখি অনেক দিনমজুর কাজ করছে। আসলে আমি কখনো বাবার বাড়িতে কাজ করিনি তবে টিউশনি করতাম অনেক। এখন শশুর বাড়ি কোন কাজ পারি না আর এদের তো অনেক কাজ। তারপর আমরা হলাম যৌথ পরিবার। আবার আমার স্বামী তেমন কিছু করে না। আর আপনারা সবাই জানে মেয়েদের স্বামীর ইনকাম সবচেয়ে বড় ইনকাম।যার স্বামীর ইনকাম বেশি তার বউকে কেউ কিছু বলে না এটাই আমাদের সমাজের নিয়ম। আমার বাড়িতে অনেক কাজ করতাম বিনিময়ে একটা থ্রি পিস ও পেতাম না। আসলে এটা শশুর বাড়ি। কাজ তো করতেই হবে। এভাবে চলে গেল দুটি বছর। এদিকে বাড়িতে কাজ না করলে টিকে থাকা মুশকিল অন্য দিকে আমার অনার্স ফাইনাল পরিক্ষা। পরিক্ষার দিন ও যেন আমার জার সাথে কাজ করে যেতে হয়। এর মধ্যে জন্মনিল আমার প্রথম সন্তান। ওযে আপনাদের বললাম না বিয়ের আগে আর পরে কখনো এক কথা নয়। আমি পড়ে গেলাম মহাবিপদে। এদিকে চাকরির জন্য চেষ্টা করবকি গ্রাজুয়েশনই কমপ্লিট করতে পারছিনা।
যাইহোক প্রতিকূল পরিবেশ হলে মানুষের যা হয় আর কি।এভাবে একপর্যায়ে আমি চাকরির আশা ছেড়ে দিলাম । কোনরকম মাস্টার্স শেষ করলাম। আমি চাকরি করতে চেয়েছিলাম কিন্তু আপনাদের ভাই বলে প্রাইমারিতে হলো হবে না হলো আর চাকরি করতে হবে না। মাস্টার্স শেষ করার কিছুদিন পরে জন্ম নিল আমার দ্বিতীয় সন্তান।এদিকে সংসার অন্যদিকে দুটি বাচ্চা সামলিয়ে চাকরির জন্য প্রিপারেশন নেওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়লো আমার জন্য । বিয়ে পাঁচ ছয় বছর পরে আমাদের যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবারে পরিণত হলো। আমার ভাসুরের মেয়ে মাঝে মাঝে আমাকে বলতো কাকি অনলাইনে টাকা ইনকাম করা যায়। এভাবে আমরা মাঝে মাঝে অনলাইনে কাজ খুঁজতাম। আমরা দুজনে মিলে বেশ কয়েক জায়গা কাজ করতে গিয়ে ধরা খেয়েছি। মানে আগে কিছু টাকা জামা দিয়েছি তারপর কিছু দিন কাজ করেছি কিন্তু পরবর্তীতে আর কিছুই পায় নি।এভাবে দুই তিনবার লস খাওয়ার পর আমি বললাম যেখানে টাকা লাগবে না সেখানে কাজ করব।
অবশেষে আমার বড় ননদের কাছ থেকে আমার বাংলা ব্লগের কথা জানতে পারলাম। আসলে সে ও তেমন জানে না। আমাদের অনেকেই এখানে কাজ করে। সে তাদের কাজ থেকে শোনে আমাকে বললো।আমার ননদ বললো তুমি গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করছো তুমি অবশ্যই এই কাজ পারবে। কিন্তু উনি আর কিছু বলতে পারে না। তারপর আমার ভাসুরের মেয়ে উনাদের বাসায় গিয়ে একাউন্ট খোলে আসে। ও আস্তে আস্তে কাজ করতে থাকে। আমাকে বলেছিল কিন্তু ও একাউন্ট খোলতে পারে না। তার কিছু দিন পরে আমি আমার ননদের বাসায় গিয়ে একাউন্ট খোলে আসি। সেখানে থেকেই আমার কাজ শুরু হলো। তবে প্রথমে অনেক কিছুই পারতাম না। আস্তে আস্তে এখন অনেক কিছুই পারি। এক্ষেত্রে আমাকে উনারা অনেক সাহায্য করেছে। একদিন আমার কিছু টাকার প্রয়োজন হলো, তখন আমি আমার স্টিম বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। আসলে কখনো বিক্রি করিনি তাই একা সাহস পেলাম না। তারপর আমি আমার ভাসুরে ছেলেদের সাহায্য নিয়ে বাইন্যান্স থেকে ১৭৮ স্টিম উইথড্র দিয়েছি। তখন আমার ৮৫০০টাকার মতো হয়েছিল। আসলে টাকা গুলো তুলতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আসলে সেই ভালো লাগা বলে প্রকাশ করা যাবে না।তখন আমি ভেবেছিলাম সত্যি তাহলে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করা যায় । সত্যি এখন যতই ইনকাম করি না সেই অনুভৃতি গুলো আর পাওয়া সম্ভব নয় । তারপর আমি সাত থেকে আট মাস পরে ভেরিফাইড মেম্বর হয়। আর ভেরিফাইড মেম্বর হওয়ার পরে আমি ভেবেছিলাম।আমার বিশেষ কোন কারণ ছাড়া আমি যে সুপার লিস্ট থেকে বাদ না যায়।সত্যি আজ পর্যন্ত সুপার লিস্টে আছি আশাকরি যতদিন কাজ করব থাকার চেষ্টা করব।আমার বাংলা ব্লগের জন্যই হয়তো অনলাইন ইনকাম করতে পেরেছি। আপনারা সবাই দোয়া করবেন যেনবেঁচে থাকি, সুস্থ থাকি, যেন এখানে কাজ করতে পারি।আশাকরি আপনাদের কাছে আমার লেখা গুলো ভালো লাগবে।
প্রয়োজনীয় | তথ্য |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @parul19 |
ডিভাইস | LGK30 |
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্মনিয়ে নিজেকে ধন্যমনে করি।ধন্যবাদ বাংলা ব্লগে এই বাংলা সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
আজকের পোস্টটি আপনি কনটেস্টে অংশগ্রহণ করে বিস্তারিত অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার এই বিস্তারিত বিষয় পড়ে জানতে পেরে। আমার অনেক ভালো লাগলো ধারণা অর্জন করলাম আপনার অনলাইন জগত সম্পর্কে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্ট পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জীবনে অনেক কিছু আছে যেগুলো ইচ্ছা করলেই সেই চাওয়া গুলো পূর্ণ হয় না। তারপরও মানুষ চাওয়া পাওয়ার মধ্য দিয়ে নিজের জীবন প্রতিভাবিত করে। আপনি স্টিমিটে কাজ করে একবারে ৮৫০০ টাকা তুলেছিলেন এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। এটা যেন বেশ ভালো লাগলো আপনি এখন পর্যন্ত সুপারলিস্ট থেকে কখনো নিজের নামটাকে বাদ রাখেননি। আশা করি পরবর্তীতেও রাখবেন না আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাইয়া চাওয়া পাওয়ার মধ্যে মানুষ জীবন পার করতে হয়, ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমে কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। অনলাইন থেকে আপনার ইনকামের অভিজ্ঞতা জেনে খুবই ভালো লাগলো আপু। আপনি প্রতিনিয়ত সুপার অ্যাকটিভ লিস্টে থাকেন এটা জেনে বেশ ভালো লাগলো। এভাবেই সামনের দিকে এগিয়ে যান আপু শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দোয়া করবেন ভাইয়া যেন সব সময় এভাবেই থাকতে পারি,ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাহ ১৭৮ স্টিম উইথড্র দিয়ে ৮৫০০টাকা পেয়েছেন। তারমানে প্রতি স্টিম ৪৩ টাকা করে সেল দিয়েছেন। আর এখন প্রতি স্টিম ১৫ টাকা,আশা করি কিছুদিনের মধ্যেই মার্কেট আপ হবে। যায়হোক আপনি প্রতিকুল পরিবেশে থেকেও অনলাইনের ইনকামের চেষ্টা করেছেন এবং সফল হয়েছেন। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে ভাইয়া সফলতার জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়েছে, ধন্যবাদ আপনাকে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit