৬ ই শ্রাবন ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
২১ জুলাই ২০২২ খ্রিস্টাব্দ ।
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা সবাই? নিশ্চয় ভালো আছেন আলহামদুলিল্লাহ আমি ও ভালো আছি।
কার জীবনে কখন যে প্রেম আসে তা কেউ জানে না। সে নিজেও বোঝেনা। প্রেম মানে না কোন বাধা,প্রেম মানেনা কোন শক্তিকে, সকল শক্তিকে জয় করে নেয় এই প্রেমের বন্ধনে। আসলে প্রেমহীন মানুষ পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। প্রেম ছাড়া জীবন যেন জীবনের মধ্যে পড়ে না। যে মানুষের জীবনে প্রেম নেই সে কখনো মানুষ হতে পারে না। শুধু মানুষ কেনো যেকোন প্রাণির মধ্যেই প্রেম রয়েছে। কার জীবনে কখন যে প্রেম আসে তা বুঝা মুশকিল। প্রেম নদীর স্রোতের মতোই জীবনে চলে আসে।। কেউ হয়তো নদীর স্রোতের মতো হাবুডুবু খেয়ে তলিয়ে যায়। আবার কেউ হয়তো হাবুডুবু খেয়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখে। আসলে প্রেম মানুষের জীবনে হঠাৎ করে চলে আসে। এই প্রেম আসে হৃদয়ের থেকে। হৃদয়ের প্রেম কখন ও থামিয়ে রাখা যায়না। হৃদয়ের মানুষটিকে নিয়ে অনুভূতি সব সময় প্রকাশ করে থাকে। সব সময় প্রিয় মানুষটির সাথে চলতে ইচ্ছা করে।প্রেম মানুষকে একে অপরের সাথে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আবদ্ধ করে। আসলে একটি স্বর্গী থেকে আসে হৃদয়ে বসে যা মানুষ কখনোই ভুলতে পারে না। প্রথম প্রেম মানুষের জীবনে কখন আসে কিভাবে আসে তার অনুভূতি মানুষের জীবনকে অনেক পরিবর্তনকরে দেয়।
আমার জীবনে প্রথম প্রেমের অনুভূতির গল্পঃ
শুরুটা ছিল শিক্ষক ছাএীর মাধ্যমে। আমি যখন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি তখনকার ঘটনা। আমাদের পাশের বাড়ি একদাদার দুটি ছেলে ছিল।তাদের পড়ালেখা করানোর জন্য তিনি বাসায় গৃহ শিক্ষক রেখেছিলেন।দাদার ছেলে দুইটি আমার সাথে পড়ত।আমাদের বাড়ি থেকে স্কুল অনেক দূর ছিল।কি আর করা পড়ালেখা করার জন্য দূরে যেতে হবে।আমরা কয়েকজন বন্ধু- বান্ধবী মিলে দাদার বাড়ির সামনে দিয়ে যেতাম।একদিন আমার এক বান্ধবী বলল ওদেখ একটা ছেলে, উনাকে আগে কখন দেখিনি।
এই বলে আমরা পথ চললাম।যখন আমরা স্কুলে গিয়ে পৌঁছাই,তখন আমি ভাবতে লাগি আসলে ছেলেটিকে। কিছু সময় পর স্কুলের মাঠের মধ্যে দাদার ছেলেকে দেখতে পেলাম।তখন ওকে বললাম, তোমাদের বাড়িতে ছেলেটাকে।ছেলেটা বলল আব্বু আমাদের জন্য শিক্ষক রেখেছে। তখন থেকে ভাবতে লাগলাম উনার কাছে প্রাইভেট পড়ব।
দাদার ছেলের নাম ছিল দিপু।একদিন দিপুকে বললাম তোমাদের স্যারকে জিঙ্গাসা কর,প্রাইভেট পড়াবে কি না। দিপু বলল ঠিক আছে বলল।পরের দিন দিপু আর স্কুলে আসেনি।কি আর করা, দিপু জন্য আমরা অপেক্ষা করতে লাগলাম।দুদিন পর দিপু আবার যখন স্কুলে এলো।তখন দিপুকে বললাম কি বলল তোমার স্যার। দিপু বলল স্যার বলেছে পড়াবে।আমি ও আমার বান্ধবী দুজনে বললাম আমরা ১ তারিখ থেকে পড়ব।দিপু স্যারকে বলেছে স্যার বলেছে ঠিক আছে আসতে বল।
আমরা পড়তে থাকলাম।এভাবে বেশকিছু দিন চলে গেল।স্যারের নাম ছিল জাকির। আমার বড় ভাইয়ের নাম ছিল জাকির।আমার এক চাচাতো ভাইয়ের সাথে স্যার পড়ালেখা করত।তাই স্যার প্রাই আসতেন আমাদের বাড়িতে। এসে ভাইয়ের সাথে কথা বলত ও আমাদের সাথে গল্প করত।আমরা ছিলাম ৫ ভাই বোন। আমার বড় বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল।আমার মেঝো বোন তখন এস এস সি পরিক্ষা দেবে।স্যার আমাদের বাড়িতে আসতো কিন্তু আমি বুঝতাম না সে কেনো আসে।একদিন স্যার আমাকে বলল আমি তোমাদের বাড়িতে যাই কেউ কিছু বলে না। আমি তো তখন না ভেবে বলে দিলাম, কি বলবে।আমরা ২০০২ সালের জুন মাস থেকে পড়া শুরু করেছি। প্রায়( ৬-৭) মাস পড়ার পরে স্যার সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে।এর মধ্যে হঠাৎ একদিন স্যার চলে যাবে।আমাদের বলল আমি আর তোমাদের পড়াতে পারব না, কেনো কি হয়েছে।সে বলল এখান থেকে আমার ক্লাস করতে অনেক দূর হয়ে যায়।এই বলে পরের আর পড়ানো হলো না।নিজের অজান্তেই স্যারকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি। তার ও আমার প্রতি একটা দূর্বলতা তৈরি হয়েছিল। তবে কথায় আছে না চোখের আড়াল হলে মনের আড়াল হয়।স্যার চলে গেলেন আমরা যখন ৭ম শ্রেণির মাঝামাঝি থাকাকালিন সময়ে।তারপর মাঝে মাঝে একটু ফোনে কথা হতো।আমি ও স্যার কখন ও মুখে বলেনি যে আমরা দুজন দুজনকে পছন্দ করি।
এভাবে বেশকিছু দিন চলে গেল।আমি ক্লাস ৮ এ পড়ি তখন স্যার মেসে থাকতেন। সে খবর নিয়েছে যে আমাদের বৃত্তি পরিক্ষা কোন স্কুলে হবে।সে জানতো আমি বৃত্তি পরিক্ষা দেব।তারপর বৃত্তি পরিক্ষা দিতে গিয়েছি।সকালে পরিক্ষা দেবার পরবেরিয়ে দেখি স্যার গেটের সামনে হাজির। দেখেতো আমি অবাক।তারপর কথা বলার পরে সে আমাদের নিয়ে একটা হোটেলে খায়ালো। খাবার শেষ করে আবার পরিক্ষার হলে ঢোকলাম।পরিক্ষা শেষ করে স্যারের সাথে কিছু কথা বলে চলে আসলাম।বললাম আমরা আবার কালকে আসব।পরের দিন ও ঠিক একই অবস্হা। পরের তার কাছ থেকে ফোন নম্বর নিলাম,আর আমার ভাইয়ের ফোন নম্বর দিলাম।আর বললাম আপনি কখনও ফোন দেবেনা। আমি ফোন দিলে কথা বলবেন।বলল ঠিক আছে তাহলে তুমি ফোন দিও।
এভাবে প্রায় ২বছর চলে গেল শুধু মাঝেমাঝে কথা বলতাম। তারপর আমি যখন এসএসসি পরিক্ষা দেব ঠিক সবগুলো পরিক্ষার সময় স্যার আমার সাথে দেখা করতো।তারপর রিজাল্ট হলে সে ফোন করে খবর নিল।তার পর আমি যখন কলেজে ভর্তি হলাম। তখন স্যার ফরিদপুর থেকে চলে গেলেন।তিনি তখন মাষ্টার্স এ পড়েন। ইতিমধ্যে উনার একটা প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি হয়ে যায়।উনি ঢাকাই চলে যান আমি তখন ফরিদ পুর সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজে ভর্তি হলাম। স্যার যখন পড়তেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে মাষ্টার্স এ পড়েন। তিনি পরিক্ষা দিতে এলে আমি ও আমার বান্ধবী মিলে স্যারের সাথে ঘুরতাম ও খাওয়া দাওয়া করতাম।ইতিমধ্যে স্যারের বোনের বিয়ে ঠিক হলো আমাদের সবাইকে দাওয়াত করেছিল। তিনি ছিলেন পরিবারের সবার বড়। তাই তাদের বোনেদের বিয়ে দিয়ে বিয়ে করবে।আমি ইন্টার মিডিয়েট পাশ করার পর আমাকে বিয়ে দিয়ে দেবে।আমি যখন অনার্স ভর্তি হলাম। তখন আমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়েছিল। ইতিমধ্যে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। তখন তার নম্বরটা হাড়িয়ে ফেলেছিলাম।বিয়ের কিছু দিন পর আমরা বান্ধুবীরা মিলে গেলাম ইসলামিক ব্যাংকে।সেখানে গিয়ে দেখি আমাদের স্যার ঢাকা থেকে ফরিদপুরে এসেছে।তারপর আমার শশুর বাড়ি সম্পর্কে সব কিছু জিঙ্গাসা করল।আামাদের হোটেলে খাওয়ালো।এভাবেই আমাদের প্রথম প্রের ইতি ঘটে।আসলে কথায় আছে ভাগ্যে লেখন না যায় খন্ডন।ভালোবাসা মানে শুধু পাওয়া না। হারিয়ে ফেলার মাঝে ভালোবাসা বেঁচে থাকে অনন্ত কাল।তবে আমি আজ ও আমার স্যারের সাথে কথা বলি, সে ও আমাকে ফোন দেই।তবে আগের থেকে অনেক কম।তবে যাইহোক প্রথম প্রেমের অনুভূতি কখন ভুলার মতো নয়।
আজ এখানে শেষ করছি। আবার দেখা হবে অন্য সময় অন্য কোন লেখা নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্হ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
এতদিনের প্রণয় তবুও বলা হলোনা ভালবাসি
অপেক্ষার পরেও প্রেম পেলনা পরিণতি।
ভালবাসা এমনি হয়। ভালবাসা যায় কিন্তু তাকে পাওয়ার আশা করা যায় না।
বেচে থাকুক আপনাদের প্রথম প্রেম।
মনে মনে আজীবন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি বলেছেন ভাইয়া অপেক্ষার পরের প্রেম পরিণতি পেল না,মনে মনে প্রেম বেঁচে থাকবে আজীবন।ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বেশ দারুণ প্রেমের অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনি। খুবই ভালো লাগলো আপনার এই ঘটনাটি পড়ে। চমৎকার ছিল আপনার ঘটনা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমরা ও ভালো লাগল, ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit