আজকে আমি একটি ইন্টারেস্টিং সিরিজের রিভিও দিব। সিরিজটি বর্তমান ট্রেন্ডিং নিউজ ইউক্রেনে ঘটে যাওয়া একটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট ডিজাস্টারকে কেন্দ্র করে নির্মিত। অনেকে যারা সিরিজটি দেখেছেন তারা অবশ্যই বুঝতে পারছেন আমি কেমন মর্মান্তিকতার কথা বলছি। সিরিজটি দেখার পর বাংলাদেশের অনেকেই আমাদের দেশের পাওয়ার প্লান্ট গুলোকে নিয়ে চিন্তিত অবস্থায় থাকেন, এমনকি স্বয়ং আমিও। কারন এসব পাওয়ার প্লান্ট গুলায় সামান্য মিস-ম্যানেজমেন্টের জন্য কত বড় দূর্ঘটনা যে ঘটে যেতে পারে তা আপনার ও আমাদের কল্পনার বাহিরে।
নিউক্লিয়ার শক্তি বর্তমান সময়ে অনেক পপুলার একটি বিষয় সকল দেশের ক্ষেত্রে। বর্তমানে বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। ইউক্রেনে ও ঠিক এভাবে স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু কি ঘটেছিল এখানে যার জন্য এটি ইতিহাসের একটি মর্মান্তিক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে।আজকের পোস্টে আমি এটাই ব্যখ্যা করব।তবে চলুন শুরু করা যাক।
সিরিজটি শুরু হয় ইউক্রেনের একটি পাওয়ার প্লান্টকে নিয়ে যার নাম চার্ণবেল(Chernobyl) পাওয়ার প্লান্ট। এই পাওয়ার প্লান্টের দায়িত্বে থাকেন একজন কোর রিয়েক্টর টেকনিশিয়ান যিনি হলেন খুব বদমেজাজী এবং বাজে স্বভাবের। তিনিই পুরো পাওয়ার প্লান্ট ম্যানেজমেন্ট করতেন। যে দিন রাতে ঘটনাটা ঘটে সেদিন ছিলো ২৫ এপ্রিল ১৯৮৬। সেই কোর টেকনিশিয়ান একটি খুবই নিম্ন মানের পদক্ষেপ নিয়ে কোর রিয়েক্টর টেস্ট করার সিন্ধান্ত নেয় যাতে পরীক্ষার কথা বলে সে কিছু টাকা হাতিয়ে নিতে পারে। ইউক্রেনের পাওয়ার প্লান্ট তখন চারটি কোর দ্বারা নির্মিত ছিল এবং এটির ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্য করার ক্ষমতা ছিলো।
২৫ শে এপ্রিল রাতে শ্রমিকরা পাওয়ার প্লান্ট পরীক্ষার ব্যবস্থা করে এবং এর সাথে জরুরী নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বন্ধ করে দেয় সেই প্রধান ইলেকট্রিশিয়ানের কথা মতো। পাওযার প্লান্ট চুল্লিটিকে জরুরি নিরাপত্তা ছাড়াই তখন 7 শতাংশ শক্তিতে চলতে দেওয়ার সময় তারা রিয়েক্টরের বেশির ভাগ নিয়ন্ত্রন বন্ধ করে দেয়া শুরু করে । এই ভুলগুলিই আস্তে আস্তে নিয়ত্রন হারানোর কারন হয়ে উঠতে থাকে এবং 26 এপ্রিল মধ্যরাতে রিয়েক্টর কোরের চেইন প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ একটি বড় অগ্নিগোলককে ট্রিগার করে এবং চুল্লির ভারী ইস্পাত এবং কংক্রিটের ঢাকনা উড়িয়ে দেয়। এটি তখন তার ভিতরের গ্রাফাইট চুল্লির কোরের প্রচুর পরিমাণ তেজস্ক্রিয় পদার্থ বায়ুমণ্ডলে ছেড়ে দেয়, যেখানে এটি বাতাসের মাধ্যমে অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছিলো। কোরের একটি আংশ গলতেও দেখা যায় তখন।
আসল ঘটনা অনুযায়ি চারনোবেলে দুর্ঘটনার মারাত্মক বিস্ফোরকের ঘটনার পর প্রথম চার মাসে সাইটের 600 জন শ্রমিকের মধ্যে 28 জন মৃত্যু বরন করেছিল। আরও 106 জন কর্মীদের তীব্র রেডিয়েশন জনিত অসুস্থতার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে ডোজ দেয়া হয়েছিলো। রিয়েক্টর গলিত হয়ে হাই রেডিয়েশনের জন্য চুল্লি বিস্ফোরণের কয়েক ঘন্টার মধ্যে দুই শ্রমিক মারা যান। 1986 এবং 1987 সালে আরও 200,000 পরিচ্ছন্নতা কর্মী 1 থেকে 100 রেম রেডিয়েশন ডোজ গ্রহণ করেছিলেন যা একজন সাধারন মানুষের ক্ষেত্রে মাত্র. ৬ রেম। চেরনোবিল পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের জন্য শেষ পর্যন্ত প্রায় 600,000 শ্রমিকের প্রয়োজন ছিল, যদিও এই কর্মীদের মধ্যে মাত্র একটি ক্ষুদ্র অংশই উচ্চ মাত্রার রেডিয়েশনের সংস্পর্শে এসেছিল। যারা ঐ রাতে ঘটনাটি দেখার জন্য উৎসুক হয়ে কাছে গিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন তারাও রেডিয়েশনের কারনে মৃত্যুবরন করেন। বাতাসের মাধ্যমে তখন এই রেডিয়েশন বেলারুশ, রাশিয়া আর ইউক্রেন জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিলো।
যারা ঐ ইন্সিডেন্টের কর্মী ছিলো এবং চারনোবেল বাসির অনেকেই তার পরবর্তীতে ক্যান্সার জনিত রোগে আক্রান্ত হয় এবং অনেক শিশুও মৃত্যু বরন করে। চারনোবেলের ঐ রেসিডেন্টে যারা থাকতেন তাদেরকে ঐ এরিয়া থেকে চিরতরে ইমারজেন্সিতে সরিয়ে ফেলা হয়। এখনও পর্যন্ত সেখানে কেউ বসবাস করতে পারে না। এখনও চারনোবেলের অনেক স্খানে রেডিয়েশন বিদ্ধমান। নির্দিষ্ট জায়গাটি বর্তমানে গোস্ট টাইন হিসেবেও পরিচিত।
সিরিজটিতে দেখানো হয় সেই রিয়েক্টর ইলেকট্রিশিয়ান যিনি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন তিনি চেয়েছিলেন ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে। কিন্তু একজন নিউক্লিয়ার এক্সপার্ট ছিলেন যিনি এ ঘটনায় ইনভেস্টিগেশন এর দায়িত্বে নিয়োগ হন। কিন্তু ক্ষমতার মারপ্যাঁচে তিনি সত্যটা সবার সামনে তুলে ধরতে পারেন না।এতগুলো নিরপরাধ মানুষ মৃত্যুর পরও বিচার পাবে না ভেবে সে ধীরে ধীরে ডিপ্রেশনে ভুগছি থাকেন। একসময় তিনি ঘটনার পুরো সত্যটা টেপ রেকর্ডারে রেকর্ড করে একজন উর্ধতম অফিসারের কাছে পাঠিয়ে দেন এবং ডিপ্রেশনের কারণে তিনি নিজে আত্মহত্যা করবেন। হয়তো তিনি সামান্য একটু বোকামির কারণে এতগুলো নির্দোষ মানুষের মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি।
সিরিজটির শেষ প্রান্তে ঐ করো ইলেকট্রিশিয়ানের শাস্তি হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তার নাম ছিলো Viktor Bryukhanov এবং ৮৫ বছর বয়সে তিনি মৃত্যু বরন করেন। তার এই ঘটনাকে মাথায় রেখে বর্তমান পাওয়ার প্লান্ট গুলো আরো বিচক্ষনতার সাথে নির্মান করা হয়। তবু বলা হয় ইতিহাস নাকি বারবার ফিরে আসে কিন্তু আমরক চাই না আমাদের জন্মভূমিতে যেন এমন নির্মম মর্মান্তিক ঘটনা না ঘটে।
যারা সিরিজটি দেখেননি দেখে নিতে পারেন। অনেক কিছু জানতে পারবেন নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট সম্পর্কে। গল্পটি সত্য হওয়ায় আশাকরি আপনাদের ভালো লাগতেও বাধ্য।
This is a one-time notice from SCHOOL OF MINNOWS, a free value added service on steem.
Getting started on steem can be super hard on these social platforms 😪 but luckily there is some communities that help support the little guy 😊, you might like school of minnows, we join forces with lots of other small accounts to help each other grow!
Finally a good curation trail that helps its users achieve rapid growth, its fun on a bun! check it out. https://som-landing.glitch.me/
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit