তারিখ-২২.০৫.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন।আমিও বেশ ভালোই আছি। আজকে আমি আপনাদের সামনে একটা সিনেমার রিভিউ নিয়ে এলাম।সিনেমা ঠিক বলবো না। এটা আসলে একটা ওয়েব সিরিজ। এই ওয়েব সিরিজটা নিয়ে ভীষণ উত্তেজনা ছিল সকলের মধ্যেই।একটা বাংলা ওয়েব সিরিজ আর যথেষ্ট সাসপেন্স ছিল ওয়েব সিরিজটার মধ্যে। সেই কারণে আরো অপেক্ষা করা ওয়েব সিরিজটার জন্য। অবশেষে জি ফাইভে যখন রিলিজ করল ওয়েব সিরিজটা তখন আর দেখার থেকে নিজেকে আটকাতে পারলাম না আসলে আপনারা অনেকেই জানেন আমি খাবারের রিভিউ যেমন করি তেমন মুভি রিভিউ করতে পছন্দ করি। আসলে দুটোই আমার খুব পছন্দের বিষয়।সেই কারণে আমি ছুটির দিনে বা একটু অবসর সময় পেলে অবশ্যই সিনেমা দেখি সাথে ভালো খাবার খাই । সেই কারণে আরো প্রত্যেক সপ্তাহে চেষ্টা করা সিনেমা এবং খাবারের রিভিউ করার। এটা নিয়ে যদিও আমার পরিচিত অনেকেই আমার লেগ পুলিং করে। তবুও আমার কিছু যায় আসে না। লোকে বাঁচার জন্য খায়। আমি খাওয়ার জন্য বাঁচি। দৃষ্টিভঙ্গিটা হয়তো আলাদা,তাতে আমার কোন অসুবিধা নেই।
যাইহোক খাওয়ার কথা আজকে বলবো না।আজকে শুধু সিনেমার কথা হবে থুরি ওয়েব সিরিজের কথা হবে। ওয়েব সিরিজটা রিলিজ করেছিল 24 শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এ।অর্থাৎ বেশ কিছু মাস হয়ে গেল। যখন আমি দেখেছিলাম তখন আমি আমার বাংলা ব্লগে লেখালেখি করাটা প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিলাম। সেই কারণে আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয়নি। গল্পটা খানিকটা এরকম উরবি এবং পলাশ পলাশদের গ্রামের বাড়িতে যায় তাদের বাগদানের অনুষ্ঠান পালন করতে।সাথে ভাবে কিছুদিন সময় অতিবাহিত করবে পরিবারের সাথে। সেই কারণে তারা যাবে জানার পরেই বাড়িটি সুন্দর করে সাজানো গোছানো হবে ভেবেই যারা আগাগোড়াই ওই বাড়িতে থাকতেন, তারা আর একটু নড়েচড়ে বসেন বাড়িটা সাজানোর জন্য। পলাশ এবং উর্বির সাথে সেখানে যায় পলাশের জেঠতুতো দাদা। জায়গাটার নাম ছিল খাড়াপানি।
এরপরে তারা পৌঁছানোর সাথে সাথেই বেশ কিছু অলৌকিক ঘটনা সেখানে ঘটতে থাকে। প্রথমেই সবথেকে অলৌকিক যে ঘটনা ঘটে তা হল প্রথমেই পাওয়া যায় মা কালীর শ্বেত মূর্তি। সহজে কোথায় মা কালীর শ্বেতমূর্তি পুজো হয় না।এর কারণ একটা ব্যাখ্যা রয়েছে- কথায় আছে শ্বেতকালী পুজো ঠিক তখনই হয় যখন মায়ের রক্ত পিপাসা পায়। অর্থাৎ চারিদিকে মৃত্যু,হাহাকার, জরা, রোগব্যাধি এগুলো দেখা দিলে তখনই শ্বেতকালী পুজো করা হয়। আর ঠিক সেই সময় মায়ের কাছে পরপর তিনদিন পূর্ণিমাতে পুজো করে বলি দিতে হয়। বলি দেওয়ার পরে কথিত আছে মায়ের সাদা মূর্তি নাকি লাল হয়ে যায় রক্ত পান করে। যদিও এগুলো লৌকিক কথা আর কিছুই না। তবে এই সব শুনে উর্বি প্রথমেই মানা করে দেয় যে সে কোনভাবেই বলি প্রথার পক্ষে নয়।কিন্তু গ্রামের মানুষ ধর্মপ্রাণ হয় সেই কারণে তারা কোনভাবেই উর্ভির এই সিদ্ধান্তকে মানতে পারে না।তারা বলে যেভাবেই হোক মায়ের কাছে বলি দিতেই হবে। নয়তো মা রুষ্ট হবেন আর গ্রামের প্রত্যেকটা মানুষ হয়তো তাতে মৃত্যুমুখী হবে।
ফলস্বরূপ উর্বি না চাইলেও বলি প্রথার জন্য রাজি হয়ে যায়। এরপর এই রাত্রিবেলা মায়ের পুজো শুরু হয়। প্রথম বলি দেওয়ার সময়ই দেখা যায় ঘটনার ঘনঘটা।বলির পাঁঠাকে সবসময়ই নিখুঁত হতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা যায় পাঁঠার কানে একটা খুঁতের চিহ্ন।কিন্তু সেই রাতে বলি দিতেই হবে, নয়তো কথায় আছে মায়ের বলি মা নিজেই নেন। অবশেষেই ঘটে সেই রাতেই একজনের মৃত্যু। এইভাবে এক এক করে তিন দিন তিনজনের মৃত্যু ঘটে। অর্থাৎ একদিক দিয়ে ভাবলে দেখা যায় তিনটে বলি মা ঠিক নিয়েই নেয়। ঠিক সেই সময়েই সবাই যখন ভীষণ উত্তেজিত হয়ে উঠেছে, সেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে- তখনই সেই বাড়ির ঠাকুর মশাই জানান এই পরিবার এই এক পূর্বপুরুষ ছিলেন যিনি নিজের পুরুষত্ব অর্জন করার জন্য নিজের মাকেও বলি দিয়েছিলেন নিজের এক বন্ধুর উস্কানি তে এসে।যা এক নৃশংস ঘটনা। সেই বন্ধু তার অজান্তেই তার স্ত্রী কে নিয়ে পালিয়ে যায়।
ওই সময় থেকেই পরিবারে শ্বেতকালী পুজোর প্রচলন। আর ঠিক সেই জিনিসই এত বছর পরে আবার কেউ রিপিট করছে।
এরপর এই সমস্ত যবনিকা পতনের সময়। আর এর চেয়ে বেশি বলবো না। যদিও পুরোটা বলিনি কারণ স্পয়লার দিয়ে রিভিউ দেওয়া আমার কাজ নয়। একটা ইন্টারেস্ট তৈরি করে দিয়ে সরে যাওয়াটাই আমার কাজ। 😀 যাতে করে পাঠক আর উদগ্রীব হয়ে সিনেমাটি দেখে। অবশেষে কিভাবে সেই বাড়ি থেকে সকলে বের হতে পারল, কিভাবে সকলে রক্ষা পেল এই মৃত্যু চক্র থেকে, সবটা নিয়েই এই ওয়েব সিরিজ। দেখলে আপনাদের মনে প্রশ্ন উঠবে সত্যি কি মা তার সন্তানের কখনো বলি নিতে পারে? হয়তো পারেনা।মানুষের তৈরি নৃশংস প্রথাই মানুষকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে। ধর্ম নিয়ে কোন মন্তব্য আমি করব না।তবে সিনেমাটার বিষয়বস্তু খানিকটা সেরকমই। তাই এটুকু বলতে বাধ্য হলাম।
এবার আসি আমার মতামতে-
আমার কাছে সিনেমাটা ব্যক্তিগতভাবে ঠিক ঠাক লেগেছে।খুব বেশি ভালো বা খুব বেশি মন্দ কোনটাই বায়াস্ড হয়ে বলবো না। তবে ধার্মিক কিছু বিষয় নিয়ে টানা হেচঁড়া আমার পছন্দ হয়নি। এমনভাবে এখানে একটা দেখানো হয়েছে যেগুলো না দেখানো হলেই ভালো হতো। বাকি সবার অভিনয় এবং মিউজিক, গান কোনটাই মন্দ নয়। আপনারা দেখলে অবশ্যই জানাবেন আপনাদের কেমন লেগেছে।
সিনেমা | শ্বেতকালী |
---|---|
পরিচালক | সানি ঘোষ রায় |
অভিনয় | ঐন্দ্রিলা, সাহেব, সৌরভ প্রমুখ |
IMDb রেটিং | ৭/১০ |
আমার রেটিং | ৫.৫/১০ |
[স্ক্রিনশটগুলো নেওয়া হয়েছে অফিশিয়াল ট্রেলার থেকে]
আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
পরিচিতি
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দিদি আমি সাধারন কোন ওয়েব সিরিজ দেখি না। তবে আমার করা রিভিউ দেখে বেশ ভালোই লাগছে। আসলে মন ফ্রেশ করার জন্য মাঝে মধ্যে আমাদের কে নাটক বা সিনেমা দেখা উচিত। সম্পন্ন সিরিজটির বেশ সুন্দর করে রিভিউ তুলে ধরেছেন আপনি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ সোনা দিদি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit