তারিখ-২১.০৫.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালোই আছি। আজকে আপনাদের সামনে একটা খাবারের রিভিউ নিয়ে এলাম। সপ্তাহে রোজ অন্যরকম পোস্ট দিতে বেশ ভালই লাগে। একই রকম পোস্ট দু-তিন দিন হয়ে গেলে আমার নিজেরও ভালো লাগেনা। তাই আজকে নিয়ে এসেছি পিৎজা রিভিউ নিয়ে। এই পিৎজা আমি গতকাল খেয়েছিলাম। কিন্তু খাওয়ার সময় এমন বিভোর ছিলাম যে ঠিকভাবে একটা প্রেজেন্টেবল ছবি তুলব সেই সময়টাও মাথায় ছিল না। সে কারণে হাফ খেয়ে তারপরে ছবি তুলেছি। ভাবলাম যখন ছবিটা তুলেছি তাহলে রিভিউ নিয়েও আসা যাক। আবার দু তিন দিন ধরে বেশ গরম পড়ছে।এই গরম যে মোট কতদিন চলবে ঠিক বুঝতে পারছি না।তবে তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাওয়াই ভালো। বেশি গরম একদমই সহ্য হয় না। বরং তার থেকে অল্প বৃষ্টি,হালকা ঠান্ডা এরম পরিবেশ সবারই মনে হয় ভালো লাগে। আপনাদের বাংলাদেশে যারা রয়েছেন তাদের ওখানকার ওয়েদার কেমন অবশ্যই জানাবেন। এখানে আবহাওয়া দিনকে দিন দুর্বিসহ হয়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে কাজ করতে বসি। যদিও বাইরে যাওয়া হয় না বলে বুঝিও না রোদ কেমন রয়েছে তবে একটা ভ্যাপসা গরম অনুভব করতে পারি। কালকে কাজ করে উঠে কি খাব ভাবছিলাম। কারণ খিদে পাচ্ছিল তারপরে মা আবার বলল কালকে যেহেতু শনিবার ছিল ভাই তাই অফিস ছুটি থাকার কারণে ওর ফ্ল্যাটে বসে ফ্রাইড রাইস আর চিকেন কারি বানিয়েছে। মায়ের কাছে শুনেই আমার লোভ লেগে গেল। তাই আমিও ভাবলাম বাড়িতে তো চিকেন খেতে পারব না রান্না করে। কারণ আমাদের বাড়িতে খায় না চিকেন। সেই কারণে বাইরে থেকে কিছু একটা এনে খাব। অবশেষে ভাবলাম অনেকদিন পিৎজা খাব ইচ্ছা করছিল, তাই পিজ্জা টাই অর্ডার করি। আমাদের কল্যাণীতে একটা লোকাল দোকান এত সুন্দর পিৎজা বানায় যে আমার মনে হয় ডমিনোস বা পিৎজা হাটে এত সুন্দর পিৎজা বানাতে পারে কিনা সন্দেহ।
আর সত্যি কথা বলতে ডমিনোস বা পিজ্জা হাটে এত কম পরিমাণে চিকেন দেয় আর দাম একগাদা নিয়ে নেয় সেটা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।সেই কারণে আমি সহজে ডমিনোজ বা পিৎজা হাট থেকে পিজ্জা খাইনা। কিছুদিন আগেই মধুমিতা কানাডা চলে যাওয়ার আগে প্রথম আমরা কল্যাণীর এই দোকানটা থেকে পিজ্জা খেয়েছিলাম। খেয়ে আমার এত ভালো লেগেছিল আমি তখনই মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম এরপরে যেদিন পিজ্জা খাব সেদিন এই দোকানটার থেকেই খাব। অবশেষে পিজ্জা অর্ডার করলাম। গতকাল অর্ডার করার পরে প্রায় দেড় ঘন্টা সময় নিল ডেলিভারি হওয়ার জন্য। ডেলিভারি করতে যে এসেছিল তাকে জিজ্ঞাসা করায় সে বলল, "ম্যাডাম দোকানটা যেহেতু এই বিকেল পাঁচটার সময় খোলে তারপরে এদের দোকানের সামনে অসম্ভব ভিড় হয়। বড় লাইন পরে।যেই কারণে অর্ডারটা আনতে এতটা দেরী হল।" আমি তখন ওনাকে বললাম, "এর আগেও আমরা এখান থেকে অর্ডার করেছিলাম। একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল। আসলে এরা খুব সুস্বাদু পিজ্জা বানায়।"
অবশেষে পিজ্জা নিয়ে ঘরে ঢুকলাম।ওহ্ আপনাদের তো আরেকটা কথাই বলা হয়নি, আমি একটা চিকেন পিজ্জা অর্ডার করেছিলাম আর একটা ভেজ পিজ্জা। চিকেন পিজ্জা টায় এক্সট্রা চিকেন অ্যাড করার জন্য ৩৫ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়েছিল। আর ভেজ পিজ্জাতে অনেক কিছুই অ্যাড করেছিলাম। যেমন হ্যালো পিনো অলিভ, এক্সট্রা পনির এসব। আসলে ভেজ পিৎজা অর্ডার করার কারণ ছিল আমার মা কখনো পিজ্জা খেতে চায় না। কারণ মায়ের ধারণা পিজ্জা মানেই তাতে চিকেন দেওয়া হবেই। সেই কারণে মায়ের কথা ভেবে ভেজ পিজ্জা অর্ডার করলাম। মায়ের পিৎজা প্যাকেটটা মাকে দিলাম। ৮ ইঞ্চি পিজ্জা ছিল।যদিও একার পক্ষে পুরোটা একদিনে খাওয়া সম্ভব না। সেই কারণে মা সেখান থেকে দু টুকরো খেলো আর আমি আমার পিৎজা থেকে দু টুকরো খেলাম।
স্বাদ, বর্ণ,গন্ধ কেমন ছিল সবটাই এখন চলুন আপনাদের সঙ্গে ভাগ করেনি-
প্রথমে আসি ভেজ পিৎজার ব্যাপারে। আমি এক টুকরো ভেজ পিজ্জা খেয়েছিলাম। শুধু স্বাদটা বোঝার জন্য যে কেমন হয়েছে! দেখলাম ভেজ পিৎজায় কোনরকম পেঁয়াজ তারা ব্যবহার করেনি। ভেজ মানে পুরোটাই ভেজ। এটা দেখে মনে হল বাড়িতে ইচ্ছে হলে আমিও এইভাবে বানাতেই পারি। ভেজ পিৎজা যে বেসটা সেটা খুব মোটাও ছিল না, আবার একদম পাতলাও ছিল না। আর ভীষণ নরম ছিল কিছু কিছু পিৎজার দোকানে বেসটা শক্ত পাথরের মত হয়ে যায়। এটা কিন্তু মোটেই সেরকম নয়। আর ওভারলোডের চিজ মোটেই ছিল না। কারণ অতিরিক্ত চিজ দিলে খাবারের আসল স্বাদটা নষ্ট হয়ে যায় বলে আমার মনে হয় সাথে পিৎজা সস দেওয়া হয়েছিল আর তার উপরে আমি যেহেতু এক্সট্রা পনির, অলিভ, হ্যালোপিনো আর সুইট কর্ন অ্যাড করতে বলেছিলাম।সেই কারণে জিনিসটা স্বাদটা আরো ব্যালেন্স হয়ে গিয়েছিল। তার উপরে সাথে ছিল অরিগানো এবং চিলি ফ্লেস্কের একটা ব্যালেন্স স্বাদ।সব মিলিয়ে ভেজ পিজ্জা টা বেশ ভালই লেগেছে। আমার মা খেয়ে অভিভূত হয়ে গেছিলো। আমি খুব কমই এত ভালো ভেজ পিৎজা খেয়েছি কোথাও।
এর পরে আসি চিকেন পিজ্জাটা নিয়ে।চিকেন পিজ্জায় আগেই বললাম এক্সট্রা চিকেন আমি অ্যাড করিয়েছিলাম। 35 টাকা নিয়েছিল তার জন্য। কিন্তু তাতে করে এতটা ওভারলোড করে চিকেন দিয়েছিল সেটা প্রত্যেকটা কামড়ে অনুভব করছিলাম। চিকেনটা ছিলো তন্দুরি মশলা দিয়ে তন্দুর করা ছিলো
তার সঙ্গে ক্যাপসিকাম টমেটো হালকা চিজ, চিকেন এবং চিলি ফ্লেস্ যেকোনো পিজ্জা তে চিজ অতিরিক্ত হলে ভালো লাগে না ঠিকই।তবে চিকেন অতিরিক্ত হলে কিন্তু খারাপ লাগে না।আসলে আমরা যারা ননভেজ খেতে পছন্দ করি তাদের কাছে কোন সময়ই মাছ-মাংস জাতীয় জিনিস বেশি হলেও ভালোই লাগে।সবমিলিয়ে আমার কাছে পিজ্জা প্লেসের দুটো পিজাই দুর্দান্ত লেগেছে।
ওদের একগাদা আইটেম ওরা রাখে না।খুব লিমিটেড আইটেম আছে। কিন্তু সেগুলো প্রত্যেকটাই সুস্বাদু।এর আগেও ওদের দোকান থেকে আমি পেপারনি পিজ্জা খেয়েছিলাম বন্ধুদের সাথে সেটার স্বাদও অসাধারণ লেগেছে।এটাও ঠিক একই রকম লাগলো।আমার কল্যাণীর কাছাকাছি যদি কেউ থাকেন বা কখনো আসেন,তবে অবশ্যই একবার ট্রাই করে দেখতে পারেন এই পিজ্জা। মনে করি আশাহত হবেন না।আজকে আমার রেটিং ভেজ পিৎজা-৯/১০ চিকেন পিৎজা-৯.৫/১০
আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে।কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
পরিচিতি
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন দিদি আপনার মত আমারও গরম ভালো লাগে না আমারও শীতকাল ভীষণ পছন্দের। যাইহোক পিজ্জা গুলো দেখে খেতে ইচ্ছে করছে। ধন্যবাদ দিদি, পিজ্জার রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ বৌদি। তুমি তারমানে আমার দলের লোক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বার্গার বা অন্যান্য স্ন্যাকস থেকে পিৎজা খেতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে । ঠিক বলেছেন ডমিনস বা পিৎজা হাটের পিৎজা তে চিকেন কম থাকে তবে ওদের বেস টা খুব ভালো হয়। আপনার শেয়ার করা পিৎজা এর ছবি দেখেই আমার ক্ষুধা বেড়ে গেল। চিকেন ত ভরপুর দিয়েছে মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ দিদি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যিই দারুণ টেস্ট। আমারও বার্গারের তুলনায় দেশী স্টাইলের পিৎজা ভালো লাগে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দিদি আমাদের এখানকার আবহাওয়াটাও বেশ গরম। গরমে তো অসহ্য হয়ে যাচ্ছি। তা যাই হোক কাজ করলে তো ক্ষুদা লাগবেই। তবে আমি কিন্তু আপনার মত প্রায়ই করি। খাওয়ার পর ছবি তোলার কথা মনে হয়। তাই অনেক সময় আর রিভিউ দেওয়া হয়ে উঠে না। তা আপনার চিকেন পিজ্জা তো ৩৫ টাকা বেশী দিয়ে নিয়ে আসলেন। আবার কল্যাণীর পিজ্জা একবার খাওয়ার পর আবার আনালেন। সব মিলিয়ে বেশ ভালোই ছিল কিন্তু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই দোকানটা সেরা। তুমি এলে খাওয়াব
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তুমি পোস্টগুলো এত বড় বড় করে লেখ না, যে পড়তে অনেক সময় লেগে যায়। চাইলে একটু ছোট করেও লিখতে পারো, এতে করে তোমার সময় বাঁচবে। অন্যদিকে যারা পড়বে তাদের ভালো লাগবে পড়তে।
এই কথার সাথে আমি একেবারেই একমত। কারণ লোকাল পিজ্জা ওর থেকে অনেক বেশি ভালো খেতে
যেমনটা তোমার রিভিউ পড়ে বুঝলাম। তবে তুমি পোষ্টের ভিতর যদি টাকার কথা উল্লেখ করতে তাহলে হয়তো দুটোর সাথে কম্পেয়ার করতে পারতাম। বেশ ভালো গুছিয়ে লিখেছ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে মনের কথা লিখতে লিখতে হাত থামে না। মানুষের নিজেকে উজার করার জায়গা ব্লগিং। তাই উজার করতে গিয়ে এমন হয়ে যায়। 😌
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
নাহ! এগুলো আজকাল মোটেও ভালো লাগে না, পিৎজার ফটোগ্রাফি শেয়ার করা খুব অন্যায়। এই জন্যই তারা দ্রুত ফ্যাটি হয়ে যায় যারা বেশী বেশী পিৎজার রিভিউ শেয়ার করেন, হা হা হা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
😒😒 এবার ভাবছি ট্যাগ করে করে শেয়ার করব নাকি?
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit