তারিখ-২৬.০৫.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন।আমিও বেশ ভালোই আছি। আজকে আমি আপনাদের সামনে দীর্ঘদিন পর একটা রেসিপি পোস্ট নিয়ে এলাম। আসলে আজকাল দেখছি এই রেসিপিটা বেশ ভাইরাল হচ্ছে। আর যুগটাই এখন ভাইরালের।তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমিও নিজের গা ভাসিয়ে দিলাম। তার সাথে এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। সুতরাং আমের সময় এটা। এই একটা দুটো মাসই মন ভরে আমরা আম খেতে পারি। আর আমার বাবা এই সময়টাতে প্রায় প্রতিদিনই হিমসাগর আম নিয়ে আসে। এই রেসিপিটা আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি হিমসাগর আম দিয়েই সবথেকে বেশি সুস্বাদু হয়। কারণ অন্য আমের তুলনায় হিমসাগর আম একটু শাঁসালো হয় সাথে ভীষণ মিষ্টি হয়।সেই কারণে হিমসাগরে করলে টেস্টটা আরো ভালো বোঝা যায়। খেতে কিন্তু বেশ জবরদস্ত হয়েছে। যদিও আমার থেকেও বেশি আমার স্টুডেন্টরা ভালো খেয়েছে। এটা এত চট জলদি একটা রেসিপি আমি ভাবতেই পারিনি যে আধা ঘন্টার মধ্যে আমি এই রেসিপি টা বানাতে পারবো! যদিও আমার ঘরে সব জিনিস ছিল। আর আমার মনে হয় এই রেসিপিটা বানানোর জন্য যা যা জিনিস দরকার তা প্রায় সবই আমাদের সবার ঘরে থাকে।
ছোটবেলা থেকেই আমরা কুলফি খেতে খুবই ভালোবাসি। মনে পড়ে ছোটবেলায় বাড়িতে থাকা কাঁচের বোতল দিয়ে কুলফিওয়ালা কাকুর থেকে কুলফি কিনে খেতাম। দুর্দান্ত লাগতো খেতে। তারপরই এলো মটকা কুলফি। মটকার থেকে কুলফি বার করে একটা টিনের কৌটা থেকে কেটে বাদাম দেওয়া সুন্দর সুস্বাদু কুলফি বিক্রি হতো। এখন দামী দামী আইসক্রিমের যুগে এই কুলফির প্রচলনটা একটু হলেও কমে গেছে। সেই কারণে ছোটবেলায় আবার ফিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যই বলুন অথবা ভাইরাল রেসিপি ট্রাই করার কথা ক্ষেত্রেই বলুন আজ আম কুলফি বানিয়ে ফেললাম।
নিচে উপকরণ এবং পদ্ধতি ভাগ করে নিলাম।
🌼উপকরণ🌼
১.আম-১টা
২.দুধ-১ কাপ
৩.গুঁড়ো দুধ-২ টেবিল চামচ
৪.কাজু-৪-৫টা
৫.পেস্তা-১০-১২ টা
৬.চিনি-১.৫ টেবিল চামচ
৭.কেশর-১ চিমটে
৮.জল-হাফ কাপ
🌼প্রণালী🌼
প্রথম ধাপ
প্রথমে আমের মুখটা খানিকটা কেটে নিলাম।
দ্বিতীয় ধাপ
এবার মুখের ভেতর থেকে আমের আটিটা আলগা করে কেটে বার করে নিলাম।
তৃতীয় ধাপ
এবার কাজু এবং পেস্তা ছোট ছোট করে টুকরো করে নিলাম।
চতুর্থ ধাপ
মিল্ক পাউডার আমি এখানে নিডো ব্যবহার করেছি। দু টেবিল চামচ নিয়ে, হালকা গরম করা দুধে মিশিয়ে নিলাম।
পঞ্চম ধাপ
এইবার দুধটা আমার একটু ঘন লাগছিল, সেই কারণে হাফ কাপের মতো জল তাতে মিশিয়ে নিলাম।
ষষ্ঠ ধাপ
এবার পুরো মিশ্রণটাকে নিয়ে গ্যাসে বসালাম ফোটানোর জন্য।
সপ্তম ধাপ
এবার হাফ টেবিল চামচ চিনি নিয়ে দুধটা যখন ফুটতে থাকবে তাতে দিয়ে দিলাম।
অষ্টম ধাপ
টানা একটা কিছু দিয়ে দুধটাকে নাড়িয়ে যেতে হবে। ফোটানোর সময় হাত থামলে চলবে না। এতে দুধ নিচে লেগে যেতে পারে এবং ফলস্বরূপ পুরো ব্যাপারটা পুড়ে যেতে পারে।
নবম ধাপ
এবার এক চিমটে কেশর দিয়ে দিলাম গন্ধ এবং রংটা সুন্দর হওয়ার জন্য।
দশম ধাপ
এবার ড্রাই ফ্রুটসগুলো দিয়ে দিলাম সেই দুধের মধ্যে। যখন কিশোর বা ড্রাই ফ্রুট দুধে দেবো তখন সরাসরি আগুনের থেকে পাত্রটা সরিয়ে এনে তারপরে দেবো, যাতে জিনিসটা জ্বলে না যায়।এরপর কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করব।
একাদশ ধাপ
এইবার আমের খোলাটা সাথে এই মালাইয়ের মিশ্রণটা ফ্যানের তলায় রাখবো কিছুক্ষণ।
দ্বাদশ ধাপ
এবার মিশ্রণটা ঠান্ডা হলে আমের খোলার ভেতরে ভরে দেব।
ত্রয়োদশ ধাপ
এবার আমের খোলার মুখটা আটকে সেটা ফ্রিজে রেখে দেবো।
চতুর্দশ ধাপ
এইবার ফ্রিজ থেকে প্রায় ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা পরে পুরো আমটাকে বার করে নেব।অবশ্যই ডিপ ফ্রিজে রাখতে হবে এবং আমের খোসাটা ছাড়িয়ে নেব।
পঞ্চদশ ধাপ
এবার টুকরো টুকরো করে কুলফিটা কেটে নেব।
শেষ ধাপ
এবার একটা বাটিতে করে সে টুকরো করা কুলফি গুলো নিয়ে, একটা চামচ সহযোগে তাড়িয়ে তাড়িয়ে খেতে হবে।
কি যে সুস্বাদু হয়েছিল তা বলে বোঝানোর মত নয়। আমার ছাত্র বলছিল, "পায়েল দিদি! নিজের বাড়িতে হলে বাটিটা চেটে নিতাম।এখানে একটা ভদ্রতা আছে তো। তাই বাটিটা চাটলাম না।" 😀
নিজে খেয়েও দেখেছি সত্যিই দারুণ লাগে খেতে। আপনারা একবার বানিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন।আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
Facebook
Instagram
YouTube
OR
Set @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আম কুলফি । দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ সুস্বাদু হবে। আসলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি করলে খেতে বেশ ভালোই লাগে। এত সুন্দর ভাবে তৈরি করে ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গ্রীষ্মকাল আমের সময় ,আর চারিদিকে তাই হিমসাগরের ছড়াছড়ি।আপনি আধা ঘন্টায় সুন্দর রেসিপি তৈরি করেছেন কিন্তু ফ্রিজে রেখে দেওয়াতে এটা প্রায় একদিনের অপেক্ষা।রেসিপিটি সুন্দর হয়েছে,তাছাড়া রেসিপিটি সত্যিই বেশ মজার হয়েছে মনে হচ্ছে।আপনার ছাত্রের কথা শুনে মজা পেলাম দিদি, ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ বোন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সম্পন্ন ভিন্নধর্মী নতুন এবং ইউনিক একটি রেসিপি এর সাথে পরিচিত হলাম আজ আপনার মাধ্যমে।।
সত্যিই আম দিয়ে এমন ভাবে মজাদার খাবার প্রস্তুত করা যায় আমি জানতাম না।।
আপনার প্রস্তুত প্রণালী এবং ফটোগ্রাফি দেখে খুব লোভ হচ্ছে খেতে নিশ্চয়ই খুব মজা হবে।।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার নিজের কাছেই এটা আলাদা লেগেছে। ধন্যবাদ ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাহ্! দারুণ একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। রেসিপিটা খুব ইউনিক হয়েছে। আম কুলফি রেসিপি দেখেই তো খেতে ইচ্ছে করছে। আম দিয়ে তৈরি যেকোনো জিনিস আমার দারুণ লাগে খেতে। দারুণ একটি রেসিপি শিখে নিলাম। হয়তো কখনো কাজে লাগবে। রেসিপির উপস্থাপনা এবং পরিবেশনাও এককথায় চমৎকার হয়েছে। যাইহোক এতো মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit