|| জেনারেল রাইটিং : অতিরিক্ত অর্থ লোভ মানুষকে অন্ধ করে তোলে ||

in hive-129948 •  6 months ago  (edited)

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

man-5794295_1280.png

সোর্স


জেনারেল রাইটিং আসলে আমার খুব বেশি একটা লেখা হচ্ছে না অনেকদিন ধরে। কিন্তু একটা বিষয় মাথার ভিতরে বেশ কিছুদিন ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে। আমরা দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা করতে কত ধরনের মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করি এবং এই প্রত্যেকটা মানুষের ব্যবহার আচার একজনের থেকে আরেকজনের সম্পূর্ণ আলাদা। আজকাল তো একটা মানুষের সাথে বছরের পর বছর থেকেও তাকে ঠিক করে চিনতে পারা যায় না। তাহলে আমরা নিয়মিত বাইরের যে মানুষগুলোর সাথে মিশি বা তাদের সাথে নিজেদের মনের কথা শেয়ার করছি, এটা আসলে কতটা সেফ সেটা আমরা নিজেরাও জানিনা।

আজকে আমাদের বনগাঁর দুটো ছোট্ট ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। একটা মানুষের টাকার লোভ ঠিক কতটা মাথা চাপা দিয়ে উঠলে এরকম কাজ করতে পারে। আমি যে জায়গাটাতে এখন থাকি ঠিক তার পাশে একটা বেশ নামকরা মিষ্টির দোকান আছে এবং তাদের মিষ্টি তাদের দোকানের নামেই চলে। তবে অনেকদিন ধরেই ওখানকার লোক বলাবলি করছে যে এদের মিষ্টির কোয়ালিটি কিংবা এরা যে ঘি বিক্রি করে তার কোয়ালিটি অনেকটাই কমে গেছে। তবে যেহেতু দোকানটা নামে চলছে তাই তেমন কিছু সন্দেহ কেউ কখনো করতে পারেনি। হঠাৎ করে দেখলাম একদিন সেই দোকানের সামনে পুলিশ এসেছে এবং তাদের দোকান উল্টাপাল্টা করে ফেলে দিয়েছে। সাধারণত তারা যে মিষ্টি গুলো বিক্রি করে সেগুলো অনেক সময় দেখা যায় যে, থেকে যাওয়া মিষ্টি কিংবা বাসি মিষ্টির সাথে নতুন মিষ্টি যুক্ত করে তারপর সেগুলো বিক্রি করে। তারপর ঘি এর সাথে ডালডা আর তার সাথে বিভিন্ন প্রকার ফ্লেভার আর রঙ মিশিয়ে দেখতে বেশ আকর্ষণীয় ঘি তৈরি করে।

আমার কথা হচ্ছে যে সৎ ভাবে ব্যবসা করতে সমস্যাটা কোথায়...? হয়তো লাভ একটু কম হবে কিন্তু মনের দিক থেকে তো শান্তি পাওয়া যায়। কিন্তু মানুষের বিবেক দিন দিন এতটাই কমে যাচ্ছে যে তারা বুঝতেই পারছে না কোনটা ভালো কিংবা কোনটা খারাপ। আর অন্য একটা ঘটনা বলব সেটা আজ থেকে কিছুদিন আগে ঘটা আমাদের বনগা স্টেশনের পাশে একটা ঘটনা। বনগাঁ স্টেশন থেকে নেমে বেশ কিছুটা এগিয়ে বাঁদিকে আসলে একটা বেশ বড় চপের দোকান রয়েছে। এই দোকানের চপগুলো বরাবরই অনেক ভালো খেতে ছিল। তবে হঠাৎ করেই দেখলাম যে রিসেন্টলি তাদের কেনাবেচা অনেক কমে গেছে। আমি যখন আগে স্টেশন দিয়ে বাড়ি আসতাম তখন এখান থেকে চপ কিনে নিয়ে আসতাম। কিন্তু শেষবার যখন এনেছিলাম এখান থেকে চপ কিনে নিয়ে, তখন দেখি যে চপের গায়ে পঁচা তেলের গন্ধ।

প্রথমদিকে এই চপের দোকানে তারা কোয়ালিটি ধরে রাখলেও, আস্তে আস্তে সেটা অনেকটাই কমে গেছে এবং একই তেল খুব সম্ভবত তারা ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করে। আমার তো মনে হয় তার থেকে আরো বেশি হবে। আসলে এরা শুধুমাত্র লাভটাই দেখছে, এই খাবারগুলো খেয়ে যে সাধারণ মানুষের পেট খারাপ হতে পারে কিংবা তারা অসুস্থ হতে পারে সেই ব্যাপারে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। আমার কথা হচ্ছে জীবনে ভালো থাকতে গেলে কি এতটাই টাকা প্রয়োজন যে টাকা ইনকাম করতে গিয়ে অন্য মানুষের ক্ষতি করাটা অনেক বেশি ইম্পরট্যান্ট হয়ে দাঁড়ায়...? এ প্রশ্নের উত্তর যদি আপনাদের কারো জানা থাকে অবশ্যই দিয়ে যাবেন।


পোস্ট বিবরণজেনারেল রাইটিং

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।






🪔আমার পরিচয়🪔

InShot_20240217_224020693.jpg

আমি পূজা ঘোষ(রাজশ্রী)। বনগাঁতে বসবাস করি। আমি বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, বিজ্ঞান বিভাগে ।পাশাপাশি কম্পিউটার এবং স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করেছি। বর্তমানে আমি ফার্মাসিতে অধ্যায়নরত । ভবিষ্যতে এইগুলো নিয়ে ভালো কিছু করার আশায় এগোচ্ছি। কবিতা আবৃত্তি করতে আমি খুবই ভালোবাসি। ছোটো বয়েস থেকেই কবিতা আবৃত্তি শিখছি। এছাড়া ছবি আঁকতে,ঘুরতে যেতে,নতুন নতুন খাবার খেতে,গান শুনতে,ফোটোগ্রাফি করতে আর মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসি।

🎯 সমাপ্ত🎯

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলে মানুষ আর এখন মানুষ নেই।
সবার ভেতরে লোভ এবং লালসা এমনভাবে ছড়িয়ে গেছে, যে তারা বিভিন্ন ক্ষতিকর কাজ করতেও পিছপা হচ্ছেনা। শুধুমাত্র অর্থের লোভে মানুষ পারেনা এমন কোন কাজ নেই। এমনকি দোকানদাররা খদ্দেরকে পচা বাসি খাবার এবং নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করছে। এতে করে অনেক মানুষ অসুস্থ হচ্ছে এবং একটা সময় পর সেই দোকানের ব্যবসা কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারপরও তারা তাদের অর্থের লোভটা ছাড়তে পারছে না।।
আমাদের এই হীনমন্যতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে পুরো বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন আপু। অনেক ধন্যবাদ মূল্যবান পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

আপনার কাছে আমার লেখা পোস্টটি ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

খুব সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন আপনি৷ আসলে অর্থের লোভে মানুষজন এখন অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছে, যা বলে প্রকাশ করা যাবে না৷ প্রতিনিয়তই মানুষজন বিভিন্নভাবে তাদের লাভের পরিমাণকে বৃদ্ধি করার জন্য মানুষজনকে বিভিন্ন ধরনের খারাপ পণ্য দিয়ে দিচ্ছে ও প্রতারণা করে যাচ্ছে। যার ফলে তারা আজ এরকম অতিরিক্ত লাভ করে ফেলতে পারছে এবং তাদের এই লাভের প্রতি যে আক্ষেপ রয়েছে সেটিও প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ এর ফলে মানুষ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে৷ মানুষজনদেরকেও বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে৷ এর ফলে তাদের জীবন যেরকম ঝুঁকির দিকে পড়ে যাচ্ছে তাদের অর্থেরও ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে৷ এর ফলে যারা লোভী ব্যক্তি রয়েছে তারা প্রতিনিয়তই তাদের অর্থের পরিমাণকে বৃদ্ধি করে যাচ্ছে৷ অনেক ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷

পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য, অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

আসলে এখন তো টাকার লোভ মানুষের মাথার উপরেই উঠে গিয়েছে এরকমটা বলা চলে। কারণ মানুষ এখন টাকার জন্য সবকিছুই করতেছে। অন্যের কোন জিনিসে ক্ষতি হবে তারা এই কথাটা ভাবতেছে না। তারা ভাবতেছে কিভাবে তারা আরো বেশি করে টাকা রোজগার করতে পারবে। ওই মিষ্টি দোকানদার সৎ ভাবেই করছিল সবকিছু, কিন্তু পরবর্তীতে তার সাথে এরকমটা হয়েছে। আর ওই চপ দোকানদারের লোভের কথা শুনে সত্যি অন্যরকম লেগেছে। তেল এতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করে বিষয়টা সত্যি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। বাস্তবিক দুইটা ঘটনাকে আপনি তুলে ধরেছেন দেখে ভালো লেগেছে।

আজকাল বাইরের খাবার মানেই অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে আপু। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

আজকাল তো দেখছি মানুষ অর্থের লোভে পড়ে নিজের অস্থিত্ব কেই ভুলে যাচ্ছে। আর অর্থ লোভ মানুষ কে অমানুষ বানিয়ে দিচেছ। খুব সুন্দর করে এই বিষয়টি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আশা করি এমন শিক্ষনীয় পোস্ট আরও শেয়ার করবেন।ধন্যবাদ আপনাকে।

পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু। ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

অতিরিক্ত টাকা-পয়সা এবং অর্থের লোভ মানুষকে যেমন অন্ধ করে তুলে, তেমনি পিচাশ করে তোলে। বেশিরভাগ দোকানদার টাকার জন্য খাবারের মধ্যে বিভিন্ন রকম ভেজালযুক্ত করে। এমন কি পাবলিকের কাছে বিক্রি করে। এটা সবার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর হয়ে থাকে। তাদের এটা মাথায় আনা উচিত, টাকার জন্য তারা যা করতেছে, এটা অন্যের জন্য ঠিক হবে কিনা। কারণ এই সমাজটা এখন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এবং নষ্টের পথে চলে যাচ্ছে। আপনি একেবারে বাস্তবিক সব কথাকে এখানে উল্লেখ করেছেন দেখে, পুরোটা আমার কাছে ভালো লেগেছে।

হ্যাঁ ভাই,অতিরিক্ত লাভের আশায় মানুষ এখন সবই করছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

আসলে অসৎ উপায়ে ব্যবসা করলে কখনোই সে ব্যবসা ধরে রাখা সম্ভব নয়।মিষ্টির দোকান ও চপের দোকান তার উদাহরণ। অতিরিক্ত অর্থ লোভ মানুষকে অন্ধ করে দেয়। অর্থের মোহে মানুষ যা নয় তাই করতে পারে তাতে কার কি সমস্যা হলো তা তাদের দেখার বিষয় নয়।ভালো লাগলো আপনার পোস্ট টি পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম দিদি। ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

অর্থের লোভ মানুষকে সত্যিই অন্ধ করে তোলে দিদি। আসলে এখন শুধুমাত্র তেলে ভাজার দোকানগুলো কিংবা মিষ্টির দোকান নয়, প্রত্যেকটা জায়গায় প্রতারণা চলছে এবং মানুষকে ঠকিয়ে টাকা ইনকাম করার প্রবণতা বেড়েছে।

আমার কথা হচ্ছে জীবনে ভালো থাকতে গেলে কি এতটাই টাকা প্রয়োজন যে টাকা ইনকাম করতে গিয়ে অন্য মানুষের ক্ষতি করাটা অনেক বেশি ইম্পরট্যান্ট হয়ে দাঁড়ায়...?

আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা তো দরকার নেই জীবনে, তবে মানুষকে ঠকিয়ে টাকার পাহাড় তৈরি করা একটা রোগ। এ রোগে কেউ আক্রান্ত হলে, সেখান থেকে তাকে বের করা অনেক কঠিন।

ঠিক বলেছেন ভাই, মানুষকে ঠকানোর রোগ একবার তৈরি হলে তা থেকে বেরোনো মুশকিল।

Posted using SteemPro Mobile

মানুষকে ঠকানোর রোগ খুবই খারাপ জিনিস , এটা করা মোটেও উচিত নয়।

Posted using SteemPro Mobile